মন্ত্রীর ছায়া থেকেও দূরে
আশরাফুল হক | ২৬ মে, ২০২২ ০০:০০
কয়েকজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীকে এড়িয়ে চলছেন কর্মকর্তারা। বদলির আদেশ হলেও তারা ওই মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের মন্ত্রণালয়ে যোগ দিতে চান না। বদলি করার ১৪ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগ দেওয়ার নিয়ম থাকলেও কর্মকর্তারা তা আমলে না নিয়ে অনেক ক্ষেত্রে আদেশ বাতিল করানোর চেষ্টা করেন।
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নানা কারণে কর্মকর্তারা বদলি করা পদে যোগ দেন না। এর মধ্যে দুটি কারণই বড়। একটি হলো যেখানে বদলি করা হয়েছে, সেই পদের আকর্ষণ কম। নানা কারণে এই আকর্ষণ কম থাকতে পারে। বাড়তি আয়ের সুযোগ না থাকা বা পদের জৌলুশ না থাকা। আর যেখানে বদলি করা হয়েছে, সেই কার্যালয়ের নীতিনির্ধারকদের ব্যবহারও এর কারণ হতে পারে। এসবের বাইরে আরও কারণ থাকতে পারে। কেস টু কেস বিশ্লেষণ না করে বিষয়টি বলা সম্ভব নয়।’
গত ৮ মে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজমকে চিঠি লিখে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন দপ্তর বা সংস্থা ও বিভিন্ন প্রকল্পে পদায়নকৃত কর্মকর্তাদের অনতিবিলম্বে তাদের বর্তমান কর্মস্থল থেকে স্ট্যান্ড রিলিজ (তাৎক্ষণিক অবমুক্ত) করার অনুরোধ করেন।
প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন যে মন্ত্রণালয়, দপ্তর, অধিদপ্তর ও প্রকল্পে দুই মাস থেকে দুই বছর পর্যন্ত কর্মকর্তাদের পদ খালি রয়েছে। এ সময় পাঁচজন কর্মকর্তাকে পদায়ন করা হলেও তারা অদ্যাবধি যোগদান করেননি। আরও ৫টি পদে কোনো কর্মকর্তাকে এখনো পদায়ন করা হয়নি। মোট ১০ জন কর্মকর্তার নাম ও পদবি উল্লেখ করে তাদের স্ট্যান্ড রিলিজ করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছেন ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদটি ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে শূন্য রয়েছে। এই পদে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের পরিচালক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামানকে বদলি করা হলেও তিনি যোগ দেননি। গত ২৯ মার্চ এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তথ্য আপা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক পদে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কেয়া খানকে গত ২৪ মার্চ বদলি করা হলেও তিনি যোগ দেননি। প্রকল্প পরিচালকের পদটি ২০২১ সালের ২ অক্টোবর থেকে শূন্য আছে। তৃণমূল পর্যায়ে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক পদে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. হূমায়ুন কবীরকে গত ২৩ মার্চ বদলি করা হলেও তিনি যোগ দেননি। জয়িতা ফাউন্ডেশনের সক্ষমতা বিনির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক পদে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এ বি এম সফিকুল হায়দারকে গত ২৪ মার্চ বদলি করা হলেও তিনি যোগ দেননি। ইনকাম জেনারেটিং অ্যাকটিভিটিজ অব উইমেন অ্যাট উপজেলা লেভেল প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক পদে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের উপসচিব মো. কেরামত আলীকে গত ৯ মার্চ বদলি করা হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত ৯ মার্চ এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করলেও তিনি এখনো এ পদে যোগ দেননি।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক পদটি গত ৪ মার্চ থেকে শূন্য রয়েছে। আগের প্রকল্প পরিচালকের অবসরজনিত কারণে পদটি শূন্য হয়। শিশু একাডেমিতে সংযুক্তিতে দায়িত্ব পালনের জন্য যুগ্ম সচিব ও উপসচিব পদমর্যাদার দুটি পদ খালি রয়েছে। ডিএনএ ল্যাবরেটরি ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের জন্য অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার একজন মহাপরিচালক এবং উপসচিব মর্যাদার পরিচালক পদ দুটিও শূন্য রয়েছে। এ পদ দুটি ২০২০ সালের ৯ আগস্ট গেজেটভুক্ত হলেও কোনো কর্মকর্তা পদায়ন করা হয়নি। ইনভেস্টমেন্ট কম্পোনেন্ট ফর ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট (আইসিভিজিডি) প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক পদটিও শূন্য রয়েছে। এ পদে পঞ্চম গ্রেডের উপসচিব নিয়োগ করার কথা।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার পর কর্মকর্তারা জানান, প্রতিমন্ত্রী এসব বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চান না। তারা মোবাইল ফোনে কথা বলার পরামর্শ দেন। ফোন করার আগে প্রতিমন্ত্রীকে এমএমএস বা খুদে বার্তা দেওয়ার পরামর্শও দেন। তাদের পরামর্শমতো এসএমএস দিয়ে ফোন করার পরও সাড়া দেননি প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা।
প্রতিমন্ত্রী হিসেবে যোগ দেওয়ার পর মন্ত্রণালয়ের প্রায় সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দফায় দফায় পরিবর্তন করেছেন ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা। যেসব মন্ত্রণালয়ের সচিব দ্রুত বদল হয় তার মধ্যে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় অন্যতম। এর আগে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদে কর্মকর্তা পদায়ন নিয়েও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে বদলিকৃত কিন্তু কাজে যোগদান না করা একজন কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, তিনি যেখানে কাজ করছেন, সেখানে বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে; যা তিনি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাবেন না। এ ছাড়া বর্তমান মন্ত্রণালয় থেকে পরবর্তী পদে পদোন্নতির সম্ভাবনা উজ্জ্বল। কিন্তু মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে তার সেই সুযোগ কমে যাবে।
গত বছরের ১৬ মার্চ কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে যোগ দিয়েছিলেন সংস্থাটির বর্তমান মহাপরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ। তিনি স্বেচ্ছায় এ পদে যোগ দেননি। ওই সময় তিনি ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ওই বছরের ২৪ জানুয়ারি এক প্রজ্ঞাপনে তাকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক হিসেবে প্রেষণে নিয়োগ করে। তিনি ১৪ মার্চ পর্যন্ত বদলি স্থানে যোগ দেননি। ১৪ মার্চ তাকে এক দিনের মধ্যে বদলি হওয়া কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওই আদেশেই বলা হয়, বদলিকৃত পদে যোগ না দিলে পরদিন, অর্থাৎ আগামী ১৫ মার্চ স্ট্যান্ড রিলিজ বলে গণ্য হবেন। পরদিন বদলিকৃত পদে যোগ দেন মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ।
নাসির উদ্দিনের আগে ওই পদে বদলি করা হয়েছিল বাংলাদেশ টেলিযোযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) মহাপরিচালক দেলোয়ার হোসেনকে। তিনি বদলিকৃত পদে যোগ দেননি। পরে তার আদেশ বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
গত ৬ এপ্রিল শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এহছানে এলাহী জনপ্রশাসন সচিবকে জানান, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক হিসেবে যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা প্রেষণে বদলির মাধ্যমে নিযুক্ত হবেন। বদলিজনিত কারণে ২ ফেব্রুয়ারি থেকে পদটি শূন্য থাকায় অধিদপ্তরের স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এই পদের কর্মকর্তা অধিদপ্তরের বিভাগীয় নির্বাচন কমিটি, খসড়া জ্যেষ্ঠতা প্রণয়ন কমিটি, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালনসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন। এসব বিবেচনা করে এবং গতিশীলতা আনার জন্য অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (যুগ্ম সচিব) পদে কর্মকর্তা পদায়ন করার অনুরোধ জানান।
সম্প্রতি একজন যুগ্ম সচিব সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনে অবস্থিত একটি মন্ত্রণালয় থেকে ৭ নম্বর ভবনে অবস্থিত অন্য একটি মন্ত্রণালয়ে বদলি হয়েছেন। তিনি নাম, পরিচয় গোপন রাখার শর্তে দেশ রূপান্তরকে বলেন, মন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করে তার পাগল হওয়ার উপক্রম। মন্ত্রী বোঝাতে পারেন না, কর্মকর্তারা নিজ থেকে কাজ করলে তাতে খুঁত ধরার চেষ্টা করেন। সিনিয়র কর্মকর্তাদের জুনিয়র কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতেই ভর্ৎসনা করেন। এ কারণে কর্মকর্তারা ওই মন্ত্রণালয় ছাড়তে পারলেই বাঁচেন এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, কয়েকজন মন্ত্রী আছেন যাদের সঙ্গে কর্মকর্তারা কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। তাদের সঙ্গে কর্মকর্তাদের বনিবনাটা ঠিক হয় না। এ ধরনের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে কর্মকর্তারা এড়িয়ে চলেন। মন্ত্রীদের দক্ষতা কর্মকর্তাদের যেমন কাছে টানে, তেমনি তাদের অদক্ষতা বিপরীত অবস্থার সৃষ্টি করে। তাদের ব্যবহার, কড়া মেজাজ এসবও আমলে নেন কর্মকর্তারা। তিনি আরও জানান, স্বাভাবিকভাবে কর্মকর্তারা যেসব মন্ত্রণালয়ে যোগ দিলে সরকারের নীতিনির্ধারকদের ফোকাসে (দৃষ্টিতে) থাকবেন, সেই সব মন্ত্রণালয়ে যোগ দিতে চান। সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডে (এসএসবি) যেসব মন্ত্রণালয়ের সচিব রয়েছেন অনেক কর্মকর্তাই সেসব মন্ত্রণালয়ে পোস্টিং পেতে চান। সচিবরা এসএসবির সদস্য হওয়ার কারণেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, লেজিসলেটিভ বিভাগ ও অর্থ বিভাগে কর্মকর্তারা বদলি হতে চান। তবে এসব মন্ত্রণালয়ে একধরনের সিন্ডিকেট তৈরি হয়; অর্থাৎ যেসব কর্মকর্তা এসব মন্ত্রণালয়ে একবার বদলি হন, তারা সেখানেই ক্যারিয়ার গড়তে চান। তারা পরের ধাপে পদোন্নতি পেলেও যে মন্ত্রণালয়ে কর্মরত থেকে পরের ধাপে পদোন্নতি পেয়েছেন, সেখানেই পোস্টিং নেন। তারা সেখানে ইনসিটো (পূর্বস্থানে) হিসেবে বদলি হন।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি ও পদায়নের ধারা বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, গুরুত্বপূর্ণ একটা মন্ত্রণালয়ে একবার পোস্টিং পেলে সেখানেই তিনি থাকতে চান। অনেক কর্মকর্তা রয়েছেন একটি মন্ত্রণালয় বা বিভাগে সিনিয়র সহকারি সচিব পদে যোগ দিয়েছেন, তিনি সেই মন্ত্রণালয়ে উপসচিব, যুগ্ম সচিব এমনকি অতিরিক্ত সচিব পদে কাজ করছেন। এসব কর্মকর্তা তাদের বলয়ের বাইরে থাকা কর্মকর্তাদের সেই মন্ত্রণালয়ের সিন্ডিকেটে ঢুকতে দেন না। অথচ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় একজন কর্মকর্তার পড়াশোনা, প্রশিক্ষণ দক্ষতা ও উপযুক্ততা বিবেচনা করে পদায়ন করার কথা। অনেক সময় মন্ত্রীরা আধা সরকারিপত্র (ডিও লেটার) লিখে তাদের পছন্দের কর্মকর্তাকে নিজের মন্ত্রণালয়ে বদলি করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অনুরোধ করেন।
সম্প্রতি ঘাটাইলের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ হোসেনকে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব করার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান অনুরোধ করেছেন। কখনো কখনো মন্ত্রণালয়ের সচিবরাও আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি লিখে কর্মকর্তাদের বদলির আদেশ বাতিল করার অনুরোধ করেন। গত ৫ এপ্রিল চিঠি লিখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের সচিব জিয়াউল আলম তার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. তৌহিদ হাসানাত খানকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে বদলির আদেশ বাতিলের অনুরোধ জানান।
মন্ত্রীরা কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর পাইয়ে দিতেও সহায়তা করেন। সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ গত ১৭ এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রীকে জানান, ১৫তম বিসিএসের কর্মকর্তা নাজনীন কাউসার চৌধুরী চা-বোর্ডের সদস্য পদে কর্মরত। তিনি নাজনীনের ডিপ্লোমা, এমএস, পিএইচডি ডিগ্রি সংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করে তাকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অথবা অন্য যেকোনো মন্ত্রণালয়ে পদায়নের সুপারিশ করেন।
শেয়ার করুন
আশরাফুল হক | ২৬ মে, ২০২২ ০০:০০

কয়েকজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীকে এড়িয়ে চলছেন কর্মকর্তারা। বদলির আদেশ হলেও তারা ওই মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের মন্ত্রণালয়ে যোগ দিতে চান না। বদলি করার ১৪ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগ দেওয়ার নিয়ম থাকলেও কর্মকর্তারা তা আমলে না নিয়ে অনেক ক্ষেত্রে আদেশ বাতিল করানোর চেষ্টা করেন।
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নানা কারণে কর্মকর্তারা বদলি করা পদে যোগ দেন না। এর মধ্যে দুটি কারণই বড়। একটি হলো যেখানে বদলি করা হয়েছে, সেই পদের আকর্ষণ কম। নানা কারণে এই আকর্ষণ কম থাকতে পারে। বাড়তি আয়ের সুযোগ না থাকা বা পদের জৌলুশ না থাকা। আর যেখানে বদলি করা হয়েছে, সেই কার্যালয়ের নীতিনির্ধারকদের ব্যবহারও এর কারণ হতে পারে। এসবের বাইরে আরও কারণ থাকতে পারে। কেস টু কেস বিশ্লেষণ না করে বিষয়টি বলা সম্ভব নয়।’
গত ৮ মে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজমকে চিঠি লিখে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন দপ্তর বা সংস্থা ও বিভিন্ন প্রকল্পে পদায়নকৃত কর্মকর্তাদের অনতিবিলম্বে তাদের বর্তমান কর্মস্থল থেকে স্ট্যান্ড রিলিজ (তাৎক্ষণিক অবমুক্ত) করার অনুরোধ করেন।
প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন যে মন্ত্রণালয়, দপ্তর, অধিদপ্তর ও প্রকল্পে দুই মাস থেকে দুই বছর পর্যন্ত কর্মকর্তাদের পদ খালি রয়েছে। এ সময় পাঁচজন কর্মকর্তাকে পদায়ন করা হলেও তারা অদ্যাবধি যোগদান করেননি। আরও ৫টি পদে কোনো কর্মকর্তাকে এখনো পদায়ন করা হয়নি। মোট ১০ জন কর্মকর্তার নাম ও পদবি উল্লেখ করে তাদের স্ট্যান্ড রিলিজ করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছেন ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদটি ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে শূন্য রয়েছে। এই পদে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের পরিচালক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামানকে বদলি করা হলেও তিনি যোগ দেননি। গত ২৯ মার্চ এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তথ্য আপা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক পদে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কেয়া খানকে গত ২৪ মার্চ বদলি করা হলেও তিনি যোগ দেননি। প্রকল্প পরিচালকের পদটি ২০২১ সালের ২ অক্টোবর থেকে শূন্য আছে। তৃণমূল পর্যায়ে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক পদে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. হূমায়ুন কবীরকে গত ২৩ মার্চ বদলি করা হলেও তিনি যোগ দেননি। জয়িতা ফাউন্ডেশনের সক্ষমতা বিনির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক পদে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এ বি এম সফিকুল হায়দারকে গত ২৪ মার্চ বদলি করা হলেও তিনি যোগ দেননি। ইনকাম জেনারেটিং অ্যাকটিভিটিজ অব উইমেন অ্যাট উপজেলা লেভেল প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক পদে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের উপসচিব মো. কেরামত আলীকে গত ৯ মার্চ বদলি করা হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত ৯ মার্চ এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করলেও তিনি এখনো এ পদে যোগ দেননি।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক পদটি গত ৪ মার্চ থেকে শূন্য রয়েছে। আগের প্রকল্প পরিচালকের অবসরজনিত কারণে পদটি শূন্য হয়। শিশু একাডেমিতে সংযুক্তিতে দায়িত্ব পালনের জন্য যুগ্ম সচিব ও উপসচিব পদমর্যাদার দুটি পদ খালি রয়েছে। ডিএনএ ল্যাবরেটরি ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের জন্য অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার একজন মহাপরিচালক এবং উপসচিব মর্যাদার পরিচালক পদ দুটিও শূন্য রয়েছে। এ পদ দুটি ২০২০ সালের ৯ আগস্ট গেজেটভুক্ত হলেও কোনো কর্মকর্তা পদায়ন করা হয়নি। ইনভেস্টমেন্ট কম্পোনেন্ট ফর ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট (আইসিভিজিডি) প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক পদটিও শূন্য রয়েছে। এ পদে পঞ্চম গ্রেডের উপসচিব নিয়োগ করার কথা।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার পর কর্মকর্তারা জানান, প্রতিমন্ত্রী এসব বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চান না। তারা মোবাইল ফোনে কথা বলার পরামর্শ দেন। ফোন করার আগে প্রতিমন্ত্রীকে এমএমএস বা খুদে বার্তা দেওয়ার পরামর্শও দেন। তাদের পরামর্শমতো এসএমএস দিয়ে ফোন করার পরও সাড়া দেননি প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা।
প্রতিমন্ত্রী হিসেবে যোগ দেওয়ার পর মন্ত্রণালয়ের প্রায় সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দফায় দফায় পরিবর্তন করেছেন ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা। যেসব মন্ত্রণালয়ের সচিব দ্রুত বদল হয় তার মধ্যে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় অন্যতম। এর আগে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদে কর্মকর্তা পদায়ন নিয়েও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে বদলিকৃত কিন্তু কাজে যোগদান না করা একজন কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, তিনি যেখানে কাজ করছেন, সেখানে বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে; যা তিনি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাবেন না। এ ছাড়া বর্তমান মন্ত্রণালয় থেকে পরবর্তী পদে পদোন্নতির সম্ভাবনা উজ্জ্বল। কিন্তু মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে তার সেই সুযোগ কমে যাবে।
গত বছরের ১৬ মার্চ কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে যোগ দিয়েছিলেন সংস্থাটির বর্তমান মহাপরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ। তিনি স্বেচ্ছায় এ পদে যোগ দেননি। ওই সময় তিনি ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ওই বছরের ২৪ জানুয়ারি এক প্রজ্ঞাপনে তাকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক হিসেবে প্রেষণে নিয়োগ করে। তিনি ১৪ মার্চ পর্যন্ত বদলি স্থানে যোগ দেননি। ১৪ মার্চ তাকে এক দিনের মধ্যে বদলি হওয়া কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওই আদেশেই বলা হয়, বদলিকৃত পদে যোগ না দিলে পরদিন, অর্থাৎ আগামী ১৫ মার্চ স্ট্যান্ড রিলিজ বলে গণ্য হবেন। পরদিন বদলিকৃত পদে যোগ দেন মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ।
নাসির উদ্দিনের আগে ওই পদে বদলি করা হয়েছিল বাংলাদেশ টেলিযোযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) মহাপরিচালক দেলোয়ার হোসেনকে। তিনি বদলিকৃত পদে যোগ দেননি। পরে তার আদেশ বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
গত ৬ এপ্রিল শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এহছানে এলাহী জনপ্রশাসন সচিবকে জানান, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক হিসেবে যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা প্রেষণে বদলির মাধ্যমে নিযুক্ত হবেন। বদলিজনিত কারণে ২ ফেব্রুয়ারি থেকে পদটি শূন্য থাকায় অধিদপ্তরের স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এই পদের কর্মকর্তা অধিদপ্তরের বিভাগীয় নির্বাচন কমিটি, খসড়া জ্যেষ্ঠতা প্রণয়ন কমিটি, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালনসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন। এসব বিবেচনা করে এবং গতিশীলতা আনার জন্য অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (যুগ্ম সচিব) পদে কর্মকর্তা পদায়ন করার অনুরোধ জানান।
সম্প্রতি একজন যুগ্ম সচিব সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনে অবস্থিত একটি মন্ত্রণালয় থেকে ৭ নম্বর ভবনে অবস্থিত অন্য একটি মন্ত্রণালয়ে বদলি হয়েছেন। তিনি নাম, পরিচয় গোপন রাখার শর্তে দেশ রূপান্তরকে বলেন, মন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করে তার পাগল হওয়ার উপক্রম। মন্ত্রী বোঝাতে পারেন না, কর্মকর্তারা নিজ থেকে কাজ করলে তাতে খুঁত ধরার চেষ্টা করেন। সিনিয়র কর্মকর্তাদের জুনিয়র কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতেই ভর্ৎসনা করেন। এ কারণে কর্মকর্তারা ওই মন্ত্রণালয় ছাড়তে পারলেই বাঁচেন এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, কয়েকজন মন্ত্রী আছেন যাদের সঙ্গে কর্মকর্তারা কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। তাদের সঙ্গে কর্মকর্তাদের বনিবনাটা ঠিক হয় না। এ ধরনের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে কর্মকর্তারা এড়িয়ে চলেন। মন্ত্রীদের দক্ষতা কর্মকর্তাদের যেমন কাছে টানে, তেমনি তাদের অদক্ষতা বিপরীত অবস্থার সৃষ্টি করে। তাদের ব্যবহার, কড়া মেজাজ এসবও আমলে নেন কর্মকর্তারা। তিনি আরও জানান, স্বাভাবিকভাবে কর্মকর্তারা যেসব মন্ত্রণালয়ে যোগ দিলে সরকারের নীতিনির্ধারকদের ফোকাসে (দৃষ্টিতে) থাকবেন, সেই সব মন্ত্রণালয়ে যোগ দিতে চান। সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডে (এসএসবি) যেসব মন্ত্রণালয়ের সচিব রয়েছেন অনেক কর্মকর্তাই সেসব মন্ত্রণালয়ে পোস্টিং পেতে চান। সচিবরা এসএসবির সদস্য হওয়ার কারণেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, লেজিসলেটিভ বিভাগ ও অর্থ বিভাগে কর্মকর্তারা বদলি হতে চান। তবে এসব মন্ত্রণালয়ে একধরনের সিন্ডিকেট তৈরি হয়; অর্থাৎ যেসব কর্মকর্তা এসব মন্ত্রণালয়ে একবার বদলি হন, তারা সেখানেই ক্যারিয়ার গড়তে চান। তারা পরের ধাপে পদোন্নতি পেলেও যে মন্ত্রণালয়ে কর্মরত থেকে পরের ধাপে পদোন্নতি পেয়েছেন, সেখানেই পোস্টিং নেন। তারা সেখানে ইনসিটো (পূর্বস্থানে) হিসেবে বদলি হন।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি ও পদায়নের ধারা বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, গুরুত্বপূর্ণ একটা মন্ত্রণালয়ে একবার পোস্টিং পেলে সেখানেই তিনি থাকতে চান। অনেক কর্মকর্তা রয়েছেন একটি মন্ত্রণালয় বা বিভাগে সিনিয়র সহকারি সচিব পদে যোগ দিয়েছেন, তিনি সেই মন্ত্রণালয়ে উপসচিব, যুগ্ম সচিব এমনকি অতিরিক্ত সচিব পদে কাজ করছেন। এসব কর্মকর্তা তাদের বলয়ের বাইরে থাকা কর্মকর্তাদের সেই মন্ত্রণালয়ের সিন্ডিকেটে ঢুকতে দেন না। অথচ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় একজন কর্মকর্তার পড়াশোনা, প্রশিক্ষণ দক্ষতা ও উপযুক্ততা বিবেচনা করে পদায়ন করার কথা। অনেক সময় মন্ত্রীরা আধা সরকারিপত্র (ডিও লেটার) লিখে তাদের পছন্দের কর্মকর্তাকে নিজের মন্ত্রণালয়ে বদলি করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অনুরোধ করেন।
সম্প্রতি ঘাটাইলের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ হোসেনকে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব করার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান অনুরোধ করেছেন। কখনো কখনো মন্ত্রণালয়ের সচিবরাও আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি লিখে কর্মকর্তাদের বদলির আদেশ বাতিল করার অনুরোধ করেন। গত ৫ এপ্রিল চিঠি লিখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের সচিব জিয়াউল আলম তার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. তৌহিদ হাসানাত খানকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে বদলির আদেশ বাতিলের অনুরোধ জানান।
মন্ত্রীরা কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর পাইয়ে দিতেও সহায়তা করেন। সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ গত ১৭ এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রীকে জানান, ১৫তম বিসিএসের কর্মকর্তা নাজনীন কাউসার চৌধুরী চা-বোর্ডের সদস্য পদে কর্মরত। তিনি নাজনীনের ডিপ্লোমা, এমএস, পিএইচডি ডিগ্রি সংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করে তাকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অথবা অন্য যেকোনো মন্ত্রণালয়ে পদায়নের সুপারিশ করেন।