চোখ রাঙাচ্ছে মসলা
তাওসিফ মাইমুন | ২৬ মে, ২০২২ ০০:০০
প্রায় সব নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বমুখী ধারার ধারাবাহিকতায় এবার নতুন করে চোখ রাঙানি দিতে শুরু করেছে মসলার বাজার। আসছে ঈদুল আজহার প্রায় দেড় মাস আগেই সব ধরনের মসলার দাম এরই মধ্যে কেজিতে ১০ থেকে ২৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বাঙালির রান্নায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হলুদ, রসুন, আদা, মরিচের দাম গেল ঈদুল ফিতরের পর থেকে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে; বিশেষ করে আগের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে এলাচ ও গোলমরিচ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদুল ফিতরের আগে মসলার বাজার স্বাভাবিকই ছিল। কিন্তু গত কয়েক দিনে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানি খরচও বেড়েছে। এ ছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের প্রভাবে ঈদুল ফিতরের পর থেকেই প্রতিদিন মসলার দাম ওঠানামা করছে; বিশেষ করে ৮ মের পর থেকে গোলমরিচ, দারুচিনি, জিরা ও এলাচের মতো মসলার দাম বেড়েছে। খুচরা বাজারে এসব মসলার মধ্যে গোলমরিচ কেজিতে বেড়েছে ১০০ টাকা এবং ভারতীয় এলাচ আকারভেদে কেজিপ্রতি ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর মসলার বাজারগুলো ঘুরে জানা যায়, ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমায় ব্যবসায়ীরা আগের চেয়ে মসলার আমদানি কিছুটা কমিয়েছেন। আর এই সুযোগে হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে দেশি এবং ভারত থেকে আমদানি করা শুকনো মরিচ, এলাচ, দারুচিনি, গোলমরিচ, পেঁয়াজ, আদা, রসন, জিরা ও জাফরানের দাম। আগে ভারতীয় এলাচ আকারভেদে ছোটটি বিক্রি হতো কেজিপ্রতি ১৭০০-১৮০০ টাকা, বড় এলাচ ২ হাজার টাকা, গোল মরিচ ৮০০ টাকা, দারুচিনি ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা, জিরা (মিষ্টি) ৩২০ টাকা এবং সাধারণ জিরা ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা। এসব মসলার দাম বেড়ে বর্তমানে ভারতীয় এলাচ (ছোট) বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২ হাজার ৩০ টাকা এবং বড়টি ২ হাজার ২৫০ টাকায়। গোল মরিচ কেজিপ্রতি ৯০০ থেকে ৯২০ টাকা, দারুচিনি ৩০ টাকা বেড়ে ৪৫০ টাকা। জিরা মানভেদে আগে বিক্রি হতো ৩৭০-৩৮০ টাকা, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৩৯৫-৪০৫ টাকায়।
ঈদের আগে ভারতীয় হলুদ বিক্রি হতো ১১২ টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে ১১৮-১২০ টাকায়। দেশি হলুদ বিক্রি হচ্ছিল ৯২-৯৩ টাকায়। এখন তা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০-১০২ টাকায়। ঈদের আগে দেশি শুকনা মরিচ বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ১৪০-১৪৫ টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৯০-২০০ টাকা করে।
শুকনা মরিচের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৫০ টাকারও বেশি। ধনিয়া ১০-১২ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকা কেজি। এ ছাড়া মসুরডাল ও মটরডাল কেজিপ্রতি বেড়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা।
দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের মসলা ব্যবসায়ী রাকিব দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা খুচরা বাজারে মসলা বিক্রি করি। আড়ত থেকে যেমন কিনে আনি দোকানে এনে সামান্য লাভে বিক্রি করি। দাম বাড়ার বিষয় মসলা আমদানিকারকদের বলতে শুনেছি, তারা বলেছেন বর্তমানে টাকার থেকে ডলারের মান বাড়ায় আমদানি করতেও আগের থেকে বেশি খরচ পড়ছে। তাই মসলার দামটাও বেড়েছে অনেক।’
কারওয়ান বাজারের মাদারীপুর মসলা স্টোরের মালিক রহিম মিয়া বলেন, ‘আমরা কম দামে আনতে পারলে জনগণও কম দামে কিনতে পারবে। বেশি দামে আনলে তো বেশিই বিক্রি করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত কয়েক মাস থেকেই একটু একটু করে মসলার বাজার বাড়ছিল; বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের পর থেকে এই সমস্যা বেশি হয়েছে। এখন সঙ্গে যুক্ত হয়েছে টাকার মান কমা। সরকার এসব বিষয়ে নজর দিলে সবকিছু আগের মতো ঠিক হবে এবং আমাদের ব্যবসা ভালোর পাশাপাশি দেশের মানুষ ভালো থাকবে।’
গত এক সপ্তাহে অপরিবর্তিত দামেই গতকাল রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের পাইকারি আড়তে আদা, রসন, পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে। চায়না আদা কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা, দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা, কেরালার আদা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭৬ টাকা। অন্যদিকে পেঁয়াজ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা, এক মাস আগেও যা ২৬-৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ১২০ টাকা দামের রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়।
কৃষি মার্কেটের আড়ত মালিক আবুল মিঞা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমার জীবনে খাদ্যের দাম এত বেশি হতে দেখিনি। দোকানদার হয়ে মানুষের কষ্ট দেখে আমি নিজেও কষ্ট পাই। ব্যবসা করি বলে কিছুই বলতে পারছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘দাম বাড়েনি দেশে এমন কোনো জিনিস নেই। আপনি যাই কিনতে যাবেন, তাতেই বাড়তি দাম দিয়ে কিনতে হবে। মানুষ এখন ২০০ টাকায় তেল কিনে খাচ্ছে। যাদের টাকা আছে তারা কিনতে পারছে, আর যাদের অর্থিক অবস্থা খারাপ, তারা যে কী কষ্ট করে তা আমরা বাজারে বসে দেখি।’
এদিকে মুদিদোকানগুলোতে প্যাকেটজাত মসলা আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। খবর নিয়ে জানা যায়, হলুদ ১০০ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, মরিচ ১০০ গ্রামের প্যাকেট ৫০ টাকা, জিরার গুঁড়ো ১০০ গ্রাম ৪৮ টাকা, মুরগির মসলা ছোট ১৫ টাকা, গরম মসলা ছোট প্যাকেট ৪৮ টাকা।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, যেহেতু খোলাবাজারে হলুদ, মরিচ ও জিরার দাম বেড়েছে তাই কোম্পানিগুলো আসছে ঈদের আগে এক দফা প্যাকেটজাত মসলার দামও বাড়াতে পারে।
ফার্মগেটের মুদিদোকানদার আহসান আলী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমার কাছে যা আছে তা একেবারেই কম। হয়তো আর মাত্র এক সপ্তাহ চলবে। এরই মধ্যে মাল কিনতে টাকা দিলে তারা মাল দিতে চাইছে না। তাদের কাছে মাল না থাকার অজুহাত দিচ্ছে প্রতিনিয়তই; অর্থাৎ আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে প্যাকেটজাত মসলার দামও বাড়ার সম্ভাবনা খুব বেশি।’
শেয়ার করুন
তাওসিফ মাইমুন | ২৬ মে, ২০২২ ০০:০০

প্রায় সব নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বমুখী ধারার ধারাবাহিকতায় এবার নতুন করে চোখ রাঙানি দিতে শুরু করেছে মসলার বাজার। আসছে ঈদুল আজহার প্রায় দেড় মাস আগেই সব ধরনের মসলার দাম এরই মধ্যে কেজিতে ১০ থেকে ২৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বাঙালির রান্নায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হলুদ, রসুন, আদা, মরিচের দাম গেল ঈদুল ফিতরের পর থেকে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে; বিশেষ করে আগের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে এলাচ ও গোলমরিচ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদুল ফিতরের আগে মসলার বাজার স্বাভাবিকই ছিল। কিন্তু গত কয়েক দিনে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানি খরচও বেড়েছে। এ ছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের প্রভাবে ঈদুল ফিতরের পর থেকেই প্রতিদিন মসলার দাম ওঠানামা করছে; বিশেষ করে ৮ মের পর থেকে গোলমরিচ, দারুচিনি, জিরা ও এলাচের মতো মসলার দাম বেড়েছে। খুচরা বাজারে এসব মসলার মধ্যে গোলমরিচ কেজিতে বেড়েছে ১০০ টাকা এবং ভারতীয় এলাচ আকারভেদে কেজিপ্রতি ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর মসলার বাজারগুলো ঘুরে জানা যায়, ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমায় ব্যবসায়ীরা আগের চেয়ে মসলার আমদানি কিছুটা কমিয়েছেন। আর এই সুযোগে হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে দেশি এবং ভারত থেকে আমদানি করা শুকনো মরিচ, এলাচ, দারুচিনি, গোলমরিচ, পেঁয়াজ, আদা, রসন, জিরা ও জাফরানের দাম। আগে ভারতীয় এলাচ আকারভেদে ছোটটি বিক্রি হতো কেজিপ্রতি ১৭০০-১৮০০ টাকা, বড় এলাচ ২ হাজার টাকা, গোল মরিচ ৮০০ টাকা, দারুচিনি ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা, জিরা (মিষ্টি) ৩২০ টাকা এবং সাধারণ জিরা ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা। এসব মসলার দাম বেড়ে বর্তমানে ভারতীয় এলাচ (ছোট) বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২ হাজার ৩০ টাকা এবং বড়টি ২ হাজার ২৫০ টাকায়। গোল মরিচ কেজিপ্রতি ৯০০ থেকে ৯২০ টাকা, দারুচিনি ৩০ টাকা বেড়ে ৪৫০ টাকা। জিরা মানভেদে আগে বিক্রি হতো ৩৭০-৩৮০ টাকা, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৩৯৫-৪০৫ টাকায়।
ঈদের আগে ভারতীয় হলুদ বিক্রি হতো ১১২ টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে ১১৮-১২০ টাকায়। দেশি হলুদ বিক্রি হচ্ছিল ৯২-৯৩ টাকায়। এখন তা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০-১০২ টাকায়। ঈদের আগে দেশি শুকনা মরিচ বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ১৪০-১৪৫ টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৯০-২০০ টাকা করে।
শুকনা মরিচের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৫০ টাকারও বেশি। ধনিয়া ১০-১২ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকা কেজি। এ ছাড়া মসুরডাল ও মটরডাল কেজিপ্রতি বেড়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা।
দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের মসলা ব্যবসায়ী রাকিব দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা খুচরা বাজারে মসলা বিক্রি করি। আড়ত থেকে যেমন কিনে আনি দোকানে এনে সামান্য লাভে বিক্রি করি। দাম বাড়ার বিষয় মসলা আমদানিকারকদের বলতে শুনেছি, তারা বলেছেন বর্তমানে টাকার থেকে ডলারের মান বাড়ায় আমদানি করতেও আগের থেকে বেশি খরচ পড়ছে। তাই মসলার দামটাও বেড়েছে অনেক।’
কারওয়ান বাজারের মাদারীপুর মসলা স্টোরের মালিক রহিম মিয়া বলেন, ‘আমরা কম দামে আনতে পারলে জনগণও কম দামে কিনতে পারবে। বেশি দামে আনলে তো বেশিই বিক্রি করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত কয়েক মাস থেকেই একটু একটু করে মসলার বাজার বাড়ছিল; বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের পর থেকে এই সমস্যা বেশি হয়েছে। এখন সঙ্গে যুক্ত হয়েছে টাকার মান কমা। সরকার এসব বিষয়ে নজর দিলে সবকিছু আগের মতো ঠিক হবে এবং আমাদের ব্যবসা ভালোর পাশাপাশি দেশের মানুষ ভালো থাকবে।’
গত এক সপ্তাহে অপরিবর্তিত দামেই গতকাল রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের পাইকারি আড়তে আদা, রসন, পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে। চায়না আদা কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা, দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা, কেরালার আদা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭৬ টাকা। অন্যদিকে পেঁয়াজ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা, এক মাস আগেও যা ২৬-৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ১২০ টাকা দামের রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়।
কৃষি মার্কেটের আড়ত মালিক আবুল মিঞা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমার জীবনে খাদ্যের দাম এত বেশি হতে দেখিনি। দোকানদার হয়ে মানুষের কষ্ট দেখে আমি নিজেও কষ্ট পাই। ব্যবসা করি বলে কিছুই বলতে পারছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘দাম বাড়েনি দেশে এমন কোনো জিনিস নেই। আপনি যাই কিনতে যাবেন, তাতেই বাড়তি দাম দিয়ে কিনতে হবে। মানুষ এখন ২০০ টাকায় তেল কিনে খাচ্ছে। যাদের টাকা আছে তারা কিনতে পারছে, আর যাদের অর্থিক অবস্থা খারাপ, তারা যে কী কষ্ট করে তা আমরা বাজারে বসে দেখি।’
এদিকে মুদিদোকানগুলোতে প্যাকেটজাত মসলা আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। খবর নিয়ে জানা যায়, হলুদ ১০০ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, মরিচ ১০০ গ্রামের প্যাকেট ৫০ টাকা, জিরার গুঁড়ো ১০০ গ্রাম ৪৮ টাকা, মুরগির মসলা ছোট ১৫ টাকা, গরম মসলা ছোট প্যাকেট ৪৮ টাকা।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, যেহেতু খোলাবাজারে হলুদ, মরিচ ও জিরার দাম বেড়েছে তাই কোম্পানিগুলো আসছে ঈদের আগে এক দফা প্যাকেটজাত মসলার দামও বাড়াতে পারে।
ফার্মগেটের মুদিদোকানদার আহসান আলী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমার কাছে যা আছে তা একেবারেই কম। হয়তো আর মাত্র এক সপ্তাহ চলবে। এরই মধ্যে মাল কিনতে টাকা দিলে তারা মাল দিতে চাইছে না। তাদের কাছে মাল না থাকার অজুহাত দিচ্ছে প্রতিনিয়তই; অর্থাৎ আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে প্যাকেটজাত মসলার দামও বাড়ার সম্ভাবনা খুব বেশি।’