সেই মুশফিক লিটনেই ভরসা
শিহাব উদ্দিন | ২৭ মে, ২০২২ ০০:০০
পাড়ার ক্রিকেটে ব্যর্থ হলে কোনো ব্যাখ্যা লাগে না। কিন্তু আন্তর্জাতিকে ব্যর্থতা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। মিরপুর টেস্টে কাল বিকেলে পাড়ার ক্রিকেটের মতোই ব্যাটিং করল বাংলাদেশ। এর কী ব্যাখ্যা হবে? পাঁচ উইকেটের কীর্তি গড়া সাকিব আল হাসান সংবাদ সম্মেলনে মানসিকতার সমস্যার কথা সামনে এনে বললেন দ্বিতীয় ইনিংসে ক্লান্তি, ভয় সব কিছুই জেঁকে ধরে তাদের। তাই প্রথম ইনিংসে ২৪ রানে ৫ উইকেটের পুনরাবৃত্তি দ্বিতীয় ইনিংসে, (প্রায়) ২৩ রানে ৪টি। ১৪১ রানে পিছিয়ে থেকে কালই অল আউট হওয়ার ভয় ধরেছিল। প্রথম ইনিংসের দুই সেঞ্চুরিয়ান এসে সামাল দেন পরিস্থিতি। মুশফিক ১৪ ও লিটন ১ রানে অপরাজিত থেকে বাংলাদেশকে ৪ উইকেটে ৩৪ রানে রেখেছেন দিন শেষে।
ম্যাথিউস ও চান্দিমালের সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কার ৫০৬ রানের জবাবে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের শুরুটা একদম নড়বড়ে ছিল। কোনো ব্যাটারই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বল খেলতে পারছিলেন না। তাই ৫ ওভার পর নামে ধস। মাত্র ৪ ওভারে ৪ ব্যাটার ফিরলেন হতাশার চোরাগলিতে দলকে ফেলে। ম্যাচ বাঁচাতে হলে এখন মুশফিক-লিটনেই তাকিয়ে বাংলাদেশ। সাকিব চাইছেন প্রথম ইনিংসের মতো আরেকটি জুটি যা টেস্ট বাঁচাতে দলকে সাহায্য করবে। তবে দলের এমন ব্যর্থতা সামাল দিতে একটু মানবিকই হলেন সাকিব, ‘আসলে আমাদের জন্য পরিস্থিতিটা খুব কঠিন হয়ে গেছে। উইকেট খুব কঠিন না, কিন্তু এতক্ষণ খেলার পর ক্রিকেটাররা একটু ক্লান্ত, ঠিক এই সময়ে ব্যাটে নেমে টিকে থাকাটা কঠিন টপঅর্ডারদের জন্য। আসলে এটা বেশ কিছুদিন ধরে হচ্ছে বাংলাদেশ দলের। আমি যখন দলে ছিলাম না তখনো হয়েছে। দ্বিতীয় ইনিংসে অনেকবারই আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। এই চ্যালেঞ্জটা আমরা নিতে পারছি না। আসলে এই জায়গাটায় উন্নতির সুযোগ আছে। কিন্তু এখনো যখন হারিনি তাই আগে থেকে ব্যর্থ বলা যায় না। মুশফিক ভাই ও লিটনের মতো যদি দ্বিতীয় ইনিংসে কেউ ব্যাট করতে পারে তাহলে ম্যাচ বাঁচানো সম্ভব।’
শেষ হওয়ার আগে নিজেদের ব্যর্থ বলবেন না সাকিব। কিন্তু আগে থেকেই যে টানা ১০ দিন ভালো খেলতে না পারার অভিযোগ উঠে আছে। তার কী জবাব? সাকিব জানালেন এমন পরিস্থিতিতে যখন ভালো করেছেন সেসব মনে রাখতে হবে, ‘আমরা টেস্টে সবচেয়ে ফিট দল। কারণ, সবচেয়ে বেশি ফিল্ডিং করি। সমস্যাটা হলো মানসিকতায়। এখানে অবশ্যই অনেক কাজ করার আছে। আমরা আসলে অনেক বেশি ব্যর্থতার ভয় করি। এজন্য এমনটা হয়ে যায়। টেস্ট ক্রিকেটের মজাটাই এখানে। আর আমাদের সবারই সমস্যা আছে। সবাই ক্ষেত্রবিশেষে সফল হয়েছে আবার বিফল হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ হলো এই সময়গুলোয় আমরা কীভাবে সফল হয়েছি তা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমরা এই রকম অবস্থায় খুব কম পড়ি তাই ওগুলো ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই ওই সময়গুলোর কাজ আমাদের মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।’
কাল ইনিংসের শুরুতেই শূন্য’র পর ৯ রানে রাজিথার বলে আবারও জীবন পান জয়। এবার সিøপে তার ব্যাটের আউটসাইডে লেগে সরাসরি ফিল্ডারের হাতে গেলেও তা হাতে রাখতে পারেননি কুশল মেন্ডিস। তবে দুবার জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি জয়। আসিথা ফার্নান্ডোর এক্সট্রা বাউন্স হওয়া বলে আউটসাইডেজ হয়ে ফেরেন ২৭ বলে ১৫ রানে। জয় নড়বড়ে শুরুতেও তিনটি চার পেয়েছেন কিন্তু তামিম ক্যারিয়ারে প্রথমবার টেস্টে জোড়া শূন্য পেলেন (পেয়ার)। আসিথার বলেই সিøপে ক্যাচ দিয়ে ৫ হাজার রান থেকে ১৯ রান দূরেই থাকতে হলো তামিমকে। তামিমের মতোই অফস্টাম্পের বাইরের বল ছাড়তে ভুলে গেলেন মুমিনুল। এতে ব্যাটিং ব্যর্থতার আরও একটি প্রমাণ রেখে শূন্য রানে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অধিনায়ক। সবচেয়ে দৃষ্টিকটু ছিল নাজমুল হোসেন শান্তর রান আউট। টেস্টে মাত্রই ক্রিজে এসে এমন দ্রুত রান হয়ত কোনো ব্যাটারই নিতে চাইবেন না। সেই ভুলটা করে শান্ত ছুটলেন আর জয়াভিক্রমার থ্রোতে ২ রানে রান আউট হলেন। রান আউটের হতাশায় সাকিবও যেন একটু ব্যথিত, ‘রান আউট যেকোনো ম্যাচে-সিচুয়েশনে খুবই খারাপ দিক। টেস্ট ম্যাচের এ রকম সিচুয়েশন তো আরও ভয়ংকর। বেশ কিছুক্ষণ ধরেই আমরা চাপে ছিলাম, যার শেষ ফলটা হলো রান আউট দিয়ে। এই মুহূর্তে ঠা-া থাকা জরুরি ছিল।’
এর আগে পুরো দিনই হতাশায় কেটেছে বাংলাদেশের। শেষ বিকেলে উইকেটের মুখ দেখেন বোলাররা। দিনের শুরুতে লঙ্কানদের দ্রুত অল আউট করার লক্ষ্য নিয়ে নামে বাংলাদেশ। অথচ দুই সেশনে সেই সুযোগটাই তৈরি করা যায়নি। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও দিনেশ চান্দিমালের ম্যারাথন জুটিতে পুরোপুরি ব্যাকফুটে চলে যায় স্বাগতিকরা। ম্যাথিউস ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরি তুলে নেন এই ইনিংসে। আর চান্দিমাল ১২তম সেঞ্চুরির দেখা পেলেন চার বছর পর। প্রায় ৩২০ মিনিটের মতো উইকেটে থেকে ৬৯.৫ ওভারে ১৯৯ রানের জুটি গড়েছেন তারা। অথচ তাদের আউটের সুযোগ বেশ কয়েকবারই এসেছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য রিভিউ হারানো ও আউট পেয়েও লঙ্কানদের রিভিউ নিয়ে জিতে যাওয়ার হতাশা জুটেছে বাংলাদেশের। দুই সেশনে পাঁচবার এমন হয়েছে। ম্যাথিউস তিনবার, চান্দিমাল দুবার জীবন পান। চান্দিমাল ৪৩ রানে মুমিনুলের প্রথম ওভারেই এলবিডব্লিউ হন, তবে সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান। পরে ৭৫ রানে খালেদ আহমেদের বলে তার বিপক্ষে এলবিডব্লিউর রিভিউ নিয়ে বিফল হয় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ২১৯ বলে ১২৪ রানে এবাদতের বলে ফেরেন। ম্যাথিউস বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেঞ্চুরির আগেই ফিরতে নিয়েছিলেন। খালেদের বলে ৯৪ রানে আউট হয়েও রিভিউ নেন, পরে ১০৫ রানে মোসাদ্দেকের বলে এলবিডব্লিউ হন; দুবারই রিভিউ নিয়ে সফল ম্যাথিউস। ১৫৯ ওভারে তার বিপক্ষে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। এবারও বেঁচে যান। শেষ পর্যন্ত ৩৪২ বলে ১৪৫ রান করে অপরাজিত থাকেন ম্যাথিউস। ২৭৪ বলে এ ইনিংসে সেঞ্চুরি করে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ধীরগতির শতক উপহার দিলেন। আগেরটি ছিল ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২৭২ বলে। সেই ইনিংসে তিনি করেছিলেন ৪৬৮ বলে অপরাজিত ২০০। এ দুই ব্যাটারের কাঁধে চড়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে দশমবার টেস্টে ৫০০ রানের ইনিংস পেল শ্রীলঙ্কা। তবে তা ৫০৬ রানেই থামে চা বিরতির পর ১০.১ ওভারে ৪৭ রানে শেষ ৫ উইকেট পড়ায়। সাকিব ১৯তম বার ক্যারিয়ারে ইনিংসে ৫ উইকেট পেলেন। কঠিন পরিশ্রম করা এবাদত ১৪৮ রানে নেন ৪টি।
ব্যাটিং অর্ডার বদলে লিটনের পরে নামছেন সাকিব। টেস্ট বাঁচাতে মরিয়া এই অলরাউন্ডার চাইছেন কমপক্ষে তিন ঘণ্টা ব্যাট করতে। তার আগে মুশফিক-লিটনকে লাঞ্চ পর্যন্ত অপরাজিত দেখতে চান। সাকিবের চাওয়া সত্যি হলে ভালো, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম সিরিজ ড্র করবে বাংলাদেশ, নয়ত সেই পুরনো হারের হতাশা।
শেয়ার করুন
শিহাব উদ্দিন | ২৭ মে, ২০২২ ০০:০০

পাড়ার ক্রিকেটে ব্যর্থ হলে কোনো ব্যাখ্যা লাগে না। কিন্তু আন্তর্জাতিকে ব্যর্থতা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। মিরপুর টেস্টে কাল বিকেলে পাড়ার ক্রিকেটের মতোই ব্যাটিং করল বাংলাদেশ। এর কী ব্যাখ্যা হবে? পাঁচ উইকেটের কীর্তি গড়া সাকিব আল হাসান সংবাদ সম্মেলনে মানসিকতার সমস্যার কথা সামনে এনে বললেন দ্বিতীয় ইনিংসে ক্লান্তি, ভয় সব কিছুই জেঁকে ধরে তাদের। তাই প্রথম ইনিংসে ২৪ রানে ৫ উইকেটের পুনরাবৃত্তি দ্বিতীয় ইনিংসে, (প্রায়) ২৩ রানে ৪টি। ১৪১ রানে পিছিয়ে থেকে কালই অল আউট হওয়ার ভয় ধরেছিল। প্রথম ইনিংসের দুই সেঞ্চুরিয়ান এসে সামাল দেন পরিস্থিতি। মুশফিক ১৪ ও লিটন ১ রানে অপরাজিত থেকে বাংলাদেশকে ৪ উইকেটে ৩৪ রানে রেখেছেন দিন শেষে।
ম্যাথিউস ও চান্দিমালের সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কার ৫০৬ রানের জবাবে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের শুরুটা একদম নড়বড়ে ছিল। কোনো ব্যাটারই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বল খেলতে পারছিলেন না। তাই ৫ ওভার পর নামে ধস। মাত্র ৪ ওভারে ৪ ব্যাটার ফিরলেন হতাশার চোরাগলিতে দলকে ফেলে। ম্যাচ বাঁচাতে হলে এখন মুশফিক-লিটনেই তাকিয়ে বাংলাদেশ। সাকিব চাইছেন প্রথম ইনিংসের মতো আরেকটি জুটি যা টেস্ট বাঁচাতে দলকে সাহায্য করবে। তবে দলের এমন ব্যর্থতা সামাল দিতে একটু মানবিকই হলেন সাকিব, ‘আসলে আমাদের জন্য পরিস্থিতিটা খুব কঠিন হয়ে গেছে। উইকেট খুব কঠিন না, কিন্তু এতক্ষণ খেলার পর ক্রিকেটাররা একটু ক্লান্ত, ঠিক এই সময়ে ব্যাটে নেমে টিকে থাকাটা কঠিন টপঅর্ডারদের জন্য। আসলে এটা বেশ কিছুদিন ধরে হচ্ছে বাংলাদেশ দলের। আমি যখন দলে ছিলাম না তখনো হয়েছে। দ্বিতীয় ইনিংসে অনেকবারই আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। এই চ্যালেঞ্জটা আমরা নিতে পারছি না। আসলে এই জায়গাটায় উন্নতির সুযোগ আছে। কিন্তু এখনো যখন হারিনি তাই আগে থেকে ব্যর্থ বলা যায় না। মুশফিক ভাই ও লিটনের মতো যদি দ্বিতীয় ইনিংসে কেউ ব্যাট করতে পারে তাহলে ম্যাচ বাঁচানো সম্ভব।’
শেষ হওয়ার আগে নিজেদের ব্যর্থ বলবেন না সাকিব। কিন্তু আগে থেকেই যে টানা ১০ দিন ভালো খেলতে না পারার অভিযোগ উঠে আছে। তার কী জবাব? সাকিব জানালেন এমন পরিস্থিতিতে যখন ভালো করেছেন সেসব মনে রাখতে হবে, ‘আমরা টেস্টে সবচেয়ে ফিট দল। কারণ, সবচেয়ে বেশি ফিল্ডিং করি। সমস্যাটা হলো মানসিকতায়। এখানে অবশ্যই অনেক কাজ করার আছে। আমরা আসলে অনেক বেশি ব্যর্থতার ভয় করি। এজন্য এমনটা হয়ে যায়। টেস্ট ক্রিকেটের মজাটাই এখানে। আর আমাদের সবারই সমস্যা আছে। সবাই ক্ষেত্রবিশেষে সফল হয়েছে আবার বিফল হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ হলো এই সময়গুলোয় আমরা কীভাবে সফল হয়েছি তা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমরা এই রকম অবস্থায় খুব কম পড়ি তাই ওগুলো ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই ওই সময়গুলোর কাজ আমাদের মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।’
কাল ইনিংসের শুরুতেই শূন্য’র পর ৯ রানে রাজিথার বলে আবারও জীবন পান জয়। এবার সিøপে তার ব্যাটের আউটসাইডে লেগে সরাসরি ফিল্ডারের হাতে গেলেও তা হাতে রাখতে পারেননি কুশল মেন্ডিস। তবে দুবার জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি জয়। আসিথা ফার্নান্ডোর এক্সট্রা বাউন্স হওয়া বলে আউটসাইডেজ হয়ে ফেরেন ২৭ বলে ১৫ রানে। জয় নড়বড়ে শুরুতেও তিনটি চার পেয়েছেন কিন্তু তামিম ক্যারিয়ারে প্রথমবার টেস্টে জোড়া শূন্য পেলেন (পেয়ার)। আসিথার বলেই সিøপে ক্যাচ দিয়ে ৫ হাজার রান থেকে ১৯ রান দূরেই থাকতে হলো তামিমকে। তামিমের মতোই অফস্টাম্পের বাইরের বল ছাড়তে ভুলে গেলেন মুমিনুল। এতে ব্যাটিং ব্যর্থতার আরও একটি প্রমাণ রেখে শূন্য রানে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অধিনায়ক। সবচেয়ে দৃষ্টিকটু ছিল নাজমুল হোসেন শান্তর রান আউট। টেস্টে মাত্রই ক্রিজে এসে এমন দ্রুত রান হয়ত কোনো ব্যাটারই নিতে চাইবেন না। সেই ভুলটা করে শান্ত ছুটলেন আর জয়াভিক্রমার থ্রোতে ২ রানে রান আউট হলেন। রান আউটের হতাশায় সাকিবও যেন একটু ব্যথিত, ‘রান আউট যেকোনো ম্যাচে-সিচুয়েশনে খুবই খারাপ দিক। টেস্ট ম্যাচের এ রকম সিচুয়েশন তো আরও ভয়ংকর। বেশ কিছুক্ষণ ধরেই আমরা চাপে ছিলাম, যার শেষ ফলটা হলো রান আউট দিয়ে। এই মুহূর্তে ঠা-া থাকা জরুরি ছিল।’
এর আগে পুরো দিনই হতাশায় কেটেছে বাংলাদেশের। শেষ বিকেলে উইকেটের মুখ দেখেন বোলাররা। দিনের শুরুতে লঙ্কানদের দ্রুত অল আউট করার লক্ষ্য নিয়ে নামে বাংলাদেশ। অথচ দুই সেশনে সেই সুযোগটাই তৈরি করা যায়নি। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও দিনেশ চান্দিমালের ম্যারাথন জুটিতে পুরোপুরি ব্যাকফুটে চলে যায় স্বাগতিকরা। ম্যাথিউস ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরি তুলে নেন এই ইনিংসে। আর চান্দিমাল ১২তম সেঞ্চুরির দেখা পেলেন চার বছর পর। প্রায় ৩২০ মিনিটের মতো উইকেটে থেকে ৬৯.৫ ওভারে ১৯৯ রানের জুটি গড়েছেন তারা। অথচ তাদের আউটের সুযোগ বেশ কয়েকবারই এসেছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য রিভিউ হারানো ও আউট পেয়েও লঙ্কানদের রিভিউ নিয়ে জিতে যাওয়ার হতাশা জুটেছে বাংলাদেশের। দুই সেশনে পাঁচবার এমন হয়েছে। ম্যাথিউস তিনবার, চান্দিমাল দুবার জীবন পান। চান্দিমাল ৪৩ রানে মুমিনুলের প্রথম ওভারেই এলবিডব্লিউ হন, তবে সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান। পরে ৭৫ রানে খালেদ আহমেদের বলে তার বিপক্ষে এলবিডব্লিউর রিভিউ নিয়ে বিফল হয় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ২১৯ বলে ১২৪ রানে এবাদতের বলে ফেরেন। ম্যাথিউস বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেঞ্চুরির আগেই ফিরতে নিয়েছিলেন। খালেদের বলে ৯৪ রানে আউট হয়েও রিভিউ নেন, পরে ১০৫ রানে মোসাদ্দেকের বলে এলবিডব্লিউ হন; দুবারই রিভিউ নিয়ে সফল ম্যাথিউস। ১৫৯ ওভারে তার বিপক্ষে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। এবারও বেঁচে যান। শেষ পর্যন্ত ৩৪২ বলে ১৪৫ রান করে অপরাজিত থাকেন ম্যাথিউস। ২৭৪ বলে এ ইনিংসে সেঞ্চুরি করে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ধীরগতির শতক উপহার দিলেন। আগেরটি ছিল ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২৭২ বলে। সেই ইনিংসে তিনি করেছিলেন ৪৬৮ বলে অপরাজিত ২০০। এ দুই ব্যাটারের কাঁধে চড়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে দশমবার টেস্টে ৫০০ রানের ইনিংস পেল শ্রীলঙ্কা। তবে তা ৫০৬ রানেই থামে চা বিরতির পর ১০.১ ওভারে ৪৭ রানে শেষ ৫ উইকেট পড়ায়। সাকিব ১৯তম বার ক্যারিয়ারে ইনিংসে ৫ উইকেট পেলেন। কঠিন পরিশ্রম করা এবাদত ১৪৮ রানে নেন ৪টি।
ব্যাটিং অর্ডার বদলে লিটনের পরে নামছেন সাকিব। টেস্ট বাঁচাতে মরিয়া এই অলরাউন্ডার চাইছেন কমপক্ষে তিন ঘণ্টা ব্যাট করতে। তার আগে মুশফিক-লিটনকে লাঞ্চ পর্যন্ত অপরাজিত দেখতে চান। সাকিবের চাওয়া সত্যি হলে ভালো, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম সিরিজ ড্র করবে বাংলাদেশ, নয়ত সেই পুরনো হারের হতাশা।