কাঁকরোল, বরবটি ও গাজরের সেঞ্চুরি
তাওসিফ মাইমুন | ২৮ মে, ২০২২ ০০:০০
গেল কয়েক দিন ধরেই নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা। চাল থেকে শুরু করে তেল, নুন, আটাসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের দামই বেড়েছে। বেড়েছে মাছ-মাংস ও ডিমের দামও। সবজির দাম নিয়মিত ওঠা-নামার মধ্যে থাকলেও কিছু কিছু সবজির দাম গেল এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। খুচরা বাজারে কাঁকরোল, বরবটি ও গাজরের মতো কয়েকটি সবজির দামে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা করে বেড়ে ১০০ টাকার বেশি দরে বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া গাজর গতকাল ঢাকার কয়েকটি বাজারে ১০০-১২০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া বরবটি ও কাঁকরোল গেল সপ্তাহে ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও গতকাল তা ছিল ১০০ টাকার ওপর।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মালিবাগ, মতিঝিল ও জিগাতলার কাঁচাবাজার ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।
এদিকে দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। আর বিক্রেতারা দেখাচ্ছেন বিক্রি কমে যাওয়া ও সরবরাহ সংকটের অজুহাত। মালিবাগের ব্যবসায়ী দৌলত দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আগের মতো আমাদের বিক্রি নেই। বর্তমানে আমরা কম বাজার মোকাম করি এবং স্বল্প লাভে তা দ্রুত বেচে দেওয়ার চেষ্টা করি। কাঁচা সবজিগুলোর মধ্যে এমন অনেক সবজি আছে যার মজুদ অল্প থাকায় তা পাইকারি বাজারেও কিনতে পাওয়া যাচ্ছে না।’
জিগাতলা বাজারের পাশেই ডিম বিক্রি করছিলেন সাইফুল ইসলাম। নতুন করে ডিমের দাম বাড়ার বিষয় তার কাছে জানতে চাইলে তিনি দেশ রূপান্তরকে জানান, খুচরা বাজারে ডিমের দাম বাড়ায় তাদের তেমন লাভ নেই। আগে প্রতি ডজনে ৫-৬ টাকা লাভ করলেও বর্তমানে থাকছে ৩-৪ টাকা।
তিনি আরও বলেন, ‘এখন মুরগির লাল ডিম বিক্রি করছি ৪৩-৪৬ টাকা, যা সপ্তাহখানেক আগেও বিক্রি হয়েছে ৩৫-৩৮ টাকা। হালিতে ৮ টাকা করে বাড়লেও আমি ডিম বিক্রি করে লাভের মুখ দেখছি না।
এদিকে সপ্তাহ আগের বাড়া মুদি পণ্য চাল, ডাল, আটাসহ অন্যান্য পণ্যের দামের তেমন একটা পরিবর্তন দেখা যায়নি। তবে কেজিপ্রতি ৫ টাকা কমে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা দরে। যা গত সপ্তাহেও ৫০ টাকা করে কেজিতে বিক্রি হয়েছে। দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকায়। আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকায়। চায়না আদা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৬০ টাকা।
মুদি পণ্যের মতো মাছের বাজারেও তেমন একটা পরিবর্তন আসেনি। আগের দরে রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪৫০ টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা। এ ছাড়া ৫০০-৬০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। তেলাপিয়া, পাঙাশ মাছ ১৬০-১৮০, চাষের শিং ৩০০-৪৬০, শোল মাছ ৪০০-৬০০ ও পাবদা মাছের কেজি ৩০০-৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মতিঝিলে বাজার করতে আসার ওমর আহমেদ অভ্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, সম্ভবত বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যার পরিস্থিতির কারণে বাজারে এমন অবস্থা। তবে আমদানিকৃত পণ্যগুলো দাম বাড়ার পেছনে সিন্ডিকেট দায়ী।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা বাজারের ওপর গবেষণা করে চাহিদাতুল্য খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি করে দেয়। ঈদের আগেও যেমনটি করেছিল তেল সিন্ডিকেটের হোতারা। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান হচ্ছে, তবুও তাদের দৌরাত্ম্য কমছে না।
শেয়ার করুন
তাওসিফ মাইমুন | ২৮ মে, ২০২২ ০০:০০

গেল কয়েক দিন ধরেই নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা। চাল থেকে শুরু করে তেল, নুন, আটাসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের দামই বেড়েছে। বেড়েছে মাছ-মাংস ও ডিমের দামও। সবজির দাম নিয়মিত ওঠা-নামার মধ্যে থাকলেও কিছু কিছু সবজির দাম গেল এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। খুচরা বাজারে কাঁকরোল, বরবটি ও গাজরের মতো কয়েকটি সবজির দামে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা করে বেড়ে ১০০ টাকার বেশি দরে বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া গাজর গতকাল ঢাকার কয়েকটি বাজারে ১০০-১২০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া বরবটি ও কাঁকরোল গেল সপ্তাহে ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও গতকাল তা ছিল ১০০ টাকার ওপর।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মালিবাগ, মতিঝিল ও জিগাতলার কাঁচাবাজার ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।
এদিকে দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। আর বিক্রেতারা দেখাচ্ছেন বিক্রি কমে যাওয়া ও সরবরাহ সংকটের অজুহাত। মালিবাগের ব্যবসায়ী দৌলত দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আগের মতো আমাদের বিক্রি নেই। বর্তমানে আমরা কম বাজার মোকাম করি এবং স্বল্প লাভে তা দ্রুত বেচে দেওয়ার চেষ্টা করি। কাঁচা সবজিগুলোর মধ্যে এমন অনেক সবজি আছে যার মজুদ অল্প থাকায় তা পাইকারি বাজারেও কিনতে পাওয়া যাচ্ছে না।’
জিগাতলা বাজারের পাশেই ডিম বিক্রি করছিলেন সাইফুল ইসলাম। নতুন করে ডিমের দাম বাড়ার বিষয় তার কাছে জানতে চাইলে তিনি দেশ রূপান্তরকে জানান, খুচরা বাজারে ডিমের দাম বাড়ায় তাদের তেমন লাভ নেই। আগে প্রতি ডজনে ৫-৬ টাকা লাভ করলেও বর্তমানে থাকছে ৩-৪ টাকা।
তিনি আরও বলেন, ‘এখন মুরগির লাল ডিম বিক্রি করছি ৪৩-৪৬ টাকা, যা সপ্তাহখানেক আগেও বিক্রি হয়েছে ৩৫-৩৮ টাকা। হালিতে ৮ টাকা করে বাড়লেও আমি ডিম বিক্রি করে লাভের মুখ দেখছি না।
এদিকে সপ্তাহ আগের বাড়া মুদি পণ্য চাল, ডাল, আটাসহ অন্যান্য পণ্যের দামের তেমন একটা পরিবর্তন দেখা যায়নি। তবে কেজিপ্রতি ৫ টাকা কমে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা দরে। যা গত সপ্তাহেও ৫০ টাকা করে কেজিতে বিক্রি হয়েছে। দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকায়। আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকায়। চায়না আদা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৬০ টাকা।
মুদি পণ্যের মতো মাছের বাজারেও তেমন একটা পরিবর্তন আসেনি। আগের দরে রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪৫০ টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা। এ ছাড়া ৫০০-৬০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। তেলাপিয়া, পাঙাশ মাছ ১৬০-১৮০, চাষের শিং ৩০০-৪৬০, শোল মাছ ৪০০-৬০০ ও পাবদা মাছের কেজি ৩০০-৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মতিঝিলে বাজার করতে আসার ওমর আহমেদ অভ্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, সম্ভবত বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যার পরিস্থিতির কারণে বাজারে এমন অবস্থা। তবে আমদানিকৃত পণ্যগুলো দাম বাড়ার পেছনে সিন্ডিকেট দায়ী।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা বাজারের ওপর গবেষণা করে চাহিদাতুল্য খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি করে দেয়। ঈদের আগেও যেমনটি করেছিল তেল সিন্ডিকেটের হোতারা। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান হচ্ছে, তবুও তাদের দৌরাত্ম্য কমছে না।