রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন
এশিয়ার দেশগুলোর সহযোগিতা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
বিশেষ প্রতিনিধি | ২৮ মে, ২০২২ ০০:০০
এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে যেকোনো সংকট আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে এশিয়ার দেশগুলোর নেতাদের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার এশিয়ার ভবিষ্যৎবিষয়ক ২৭তম আন্তর্জাতিক নিক্কেই সম্মেলনে এক ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। জাপানের রাজধানী টোকিওতে দুই দিনব্যাপী সম্মেলন স্ট্রিমিং এবং অন-সাইট উপস্থিতি উভয় ক্ষেত্রেই হচ্ছে। এর শিরোনাম হচ্ছে ‘বিভক্ত বিশ্বে এশিয়ার ভূমিকা পর্যালোচনা করা।’
এই সময় বাংলাদেশকে সহজে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে জাপান এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার (ওইসিডি) দেশগুলোর প্রতি অন্তত ২০২৯ সাল পর্যন্ত অগ্রাধিকারমূলক সুবিধাগুলো অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ থাকব যদি জাপান এবং অন্যান্য ওইসিডির দেশগুলো কমপক্ষে ২০২৯ সাল পর্যন্ত অগ্রাধিকার সুবিধাগুলো প্রসারিত করে। যাতে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের সর্বোচ্চ লক্ষ্য অর্জন আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়।’ সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার শর্ত অর্জন করে জাতিসংঘের স্বীকৃতি পেয়েছে।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশ জাতিসংঘের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বন্ধুদেশ ও অংশীদারদের প্রতি ২০২৬ সালের পরও বর্ধিত সময়ের জন্য বাংলাদেশকে অগ্রাধিকারমূলক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর কথা বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে এফটিএ নিয়ে আলোচনার বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে এবং জাপানসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে এফটিএ এবং সিইপিএ নিয়ে আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনে স্মরণ করিয়ে দেন যে, বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আতিথ্য দিচ্ছে এবং তাদের অবশ্যই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিজ বাসভূমে নিরাপদ, নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে ফেরত পাঠাতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা এই সংকটের একটি গ্রহণযোগ্য মীমাংসা খুঁজে পেতে অবদান রাখতে এবং আমাদের সাহায্য করার জন্য আপনাদের সবার প্রতি অনুরোধ করছি।’
এশিয়াকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ও জনবহুল মহাদেশ হিসেবে বর্ণনা করে শেখ হাসিনা বলেন, এখানে বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশ বাস করে। এটি বিশ্বের অধিকাংশ দরিদ্র মানুষেরও আবাসস্থল। ‘অতএব, আলোচনার মাধ্যমে মতপার্থক্য মিটিয়ে বিরোধপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে শান্তি নিশ্চিত করা অপরিহার্য। শুধু শান্তি ও স্থিতিশীলতার পরিবেশ সৃষ্টি করেই এশিয়ার দেশগুলো জনগণের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারে।’ প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যৎ এশিয়া গড়ার জন্য সম্মেলনে পাঁচটি ধারণা তুলে ধরে বলেন, ‘আপনাদের প্রতিফলনের জন্য কিছু ধারণা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করে শেষ করছি।’
শেখ হাসিনা তার প্রথম প্রস্তাবে বলেন, এশিয়ার দেশগুলোকে একে অপরের প্রতি বন্ধুত্ব, বোঝাপড়া ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে এবং বিভাজন মোকাবিলায় সংহতি প্রচার করতে হবে। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় প্রস্তাবে তিনি বলেন, কীভাবে আইসিটির সফ্ট পাওয়ারকে আমাদের দেশ এবং এশীয় দেশগুলো ন্যায্যতা, সম্মান, ন্যায়বিচার, অন্তর্ভুক্তি এবং অন্তর্ভুক্তি রক্ষার প্রয়োজনীয়তার মধ্যকার ব্যবধান পূরণের জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে সর্বোত্তমভাবে ব্যবহার করতে পারে, আমাদের কাজের মধ্যে সমতা আনয়ন করতে পারে এবং তারা তা অন্বেষণ করতে পারে; তা নিয়ে কাজ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী তার চতুর্থ এবং পঞ্চম ধারণার বর্ণনা করার সময় অভিমত ব্যক্ত করেন যে, এশিয়ার ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে টেকসই ও ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার উন্নতি এবং উভয় পক্ষের জন্য সুবিধাজনক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্থাপনের ওপর এবং এশিয়ার দেশগুলোর অভিন্ন উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ রয়েছে এবং তাদের তা ঐক্যবদ্ধভাবে ও সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করা উচিত।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আমাদের অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহায্য করার জন্য ভালো অনুশীলন, জ্ঞান ও প্রযুক্তি ভাগ করে নিতে আমাদের বাহিনীকে একত্রিত করতে হবে।’
বিশ্বের অন্যান্য অংশের মতো বাংলাদেশও চলমান কভিড-১৯ দ্বারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ২০১৯ সালে মহামারীর আগে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। ২০২০ সালে এটি ৩ দশমিক ৫১ এবং ২০২১ সালে ছিল ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ।’
তিনি বলেন, আমরা চলতি অর্থবছরে ৭ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধির হার অর্জনের আশা করছি।
শেখ হাসিনা সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের প্রচেষ্টা ২০২২ সালের এপ্রিলের জন্য নিক্কেইর কভিড-১৯ পুনরুদ্ধার সূচকে স্বীকৃত হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশ ১২১টি দেশের মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে এবং কভিড ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা পারফরম্যান্সকারী দেশ হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘২০২২ সালের জুনে শেষ হওয়া অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি ৪৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছানোর, পণ্য রপ্তানি আয় ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি, রেমিট্যান্স ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত হওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে।’
সাম্প্রতিক কপ-২৬-সহ সব আলোচনায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে বাংলাদেশ সক্রিয় এবং সোচ্চার হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে থাকা ৪৮ সদস্য দেশগুলোর একটি কণ্ঠস্বর হিসেবে কাজ করতে ২০২০-২২ সালের জন্য ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের সভাপতিত্ব গ্রহণ করেছিলাম।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সার্ক, বিমসটেক, আইওআরএ, ওআইসি, ন্যাম, এআরএফ, আসেম, সিকা, কমনওয়েলথের মতো আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সহযোগিতার জন্য সংলাপ প্রচারে সক্রিয় রয়েছে।
শেয়ার করুন
বিশেষ প্রতিনিধি | ২৮ মে, ২০২২ ০০:০০

এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে যেকোনো সংকট আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে এশিয়ার দেশগুলোর নেতাদের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার এশিয়ার ভবিষ্যৎবিষয়ক ২৭তম আন্তর্জাতিক নিক্কেই সম্মেলনে এক ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। জাপানের রাজধানী টোকিওতে দুই দিনব্যাপী সম্মেলন স্ট্রিমিং এবং অন-সাইট উপস্থিতি উভয় ক্ষেত্রেই হচ্ছে। এর শিরোনাম হচ্ছে ‘বিভক্ত বিশ্বে এশিয়ার ভূমিকা পর্যালোচনা করা।’
এই সময় বাংলাদেশকে সহজে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে জাপান এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার (ওইসিডি) দেশগুলোর প্রতি অন্তত ২০২৯ সাল পর্যন্ত অগ্রাধিকারমূলক সুবিধাগুলো অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ থাকব যদি জাপান এবং অন্যান্য ওইসিডির দেশগুলো কমপক্ষে ২০২৯ সাল পর্যন্ত অগ্রাধিকার সুবিধাগুলো প্রসারিত করে। যাতে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের সর্বোচ্চ লক্ষ্য অর্জন আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়।’ সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার শর্ত অর্জন করে জাতিসংঘের স্বীকৃতি পেয়েছে।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশ জাতিসংঘের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বন্ধুদেশ ও অংশীদারদের প্রতি ২০২৬ সালের পরও বর্ধিত সময়ের জন্য বাংলাদেশকে অগ্রাধিকারমূলক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর কথা বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে এফটিএ নিয়ে আলোচনার বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে এবং জাপানসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে এফটিএ এবং সিইপিএ নিয়ে আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনে স্মরণ করিয়ে দেন যে, বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আতিথ্য দিচ্ছে এবং তাদের অবশ্যই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিজ বাসভূমে নিরাপদ, নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে ফেরত পাঠাতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা এই সংকটের একটি গ্রহণযোগ্য মীমাংসা খুঁজে পেতে অবদান রাখতে এবং আমাদের সাহায্য করার জন্য আপনাদের সবার প্রতি অনুরোধ করছি।’
এশিয়াকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ও জনবহুল মহাদেশ হিসেবে বর্ণনা করে শেখ হাসিনা বলেন, এখানে বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশ বাস করে। এটি বিশ্বের অধিকাংশ দরিদ্র মানুষেরও আবাসস্থল। ‘অতএব, আলোচনার মাধ্যমে মতপার্থক্য মিটিয়ে বিরোধপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে শান্তি নিশ্চিত করা অপরিহার্য। শুধু শান্তি ও স্থিতিশীলতার পরিবেশ সৃষ্টি করেই এশিয়ার দেশগুলো জনগণের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারে।’ প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যৎ এশিয়া গড়ার জন্য সম্মেলনে পাঁচটি ধারণা তুলে ধরে বলেন, ‘আপনাদের প্রতিফলনের জন্য কিছু ধারণা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করে শেষ করছি।’
শেখ হাসিনা তার প্রথম প্রস্তাবে বলেন, এশিয়ার দেশগুলোকে একে অপরের প্রতি বন্ধুত্ব, বোঝাপড়া ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে এবং বিভাজন মোকাবিলায় সংহতি প্রচার করতে হবে। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় প্রস্তাবে তিনি বলেন, কীভাবে আইসিটির সফ্ট পাওয়ারকে আমাদের দেশ এবং এশীয় দেশগুলো ন্যায্যতা, সম্মান, ন্যায়বিচার, অন্তর্ভুক্তি এবং অন্তর্ভুক্তি রক্ষার প্রয়োজনীয়তার মধ্যকার ব্যবধান পূরণের জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে সর্বোত্তমভাবে ব্যবহার করতে পারে, আমাদের কাজের মধ্যে সমতা আনয়ন করতে পারে এবং তারা তা অন্বেষণ করতে পারে; তা নিয়ে কাজ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী তার চতুর্থ এবং পঞ্চম ধারণার বর্ণনা করার সময় অভিমত ব্যক্ত করেন যে, এশিয়ার ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে টেকসই ও ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার উন্নতি এবং উভয় পক্ষের জন্য সুবিধাজনক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্থাপনের ওপর এবং এশিয়ার দেশগুলোর অভিন্ন উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ রয়েছে এবং তাদের তা ঐক্যবদ্ধভাবে ও সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করা উচিত।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আমাদের অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহায্য করার জন্য ভালো অনুশীলন, জ্ঞান ও প্রযুক্তি ভাগ করে নিতে আমাদের বাহিনীকে একত্রিত করতে হবে।’
বিশ্বের অন্যান্য অংশের মতো বাংলাদেশও চলমান কভিড-১৯ দ্বারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ২০১৯ সালে মহামারীর আগে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। ২০২০ সালে এটি ৩ দশমিক ৫১ এবং ২০২১ সালে ছিল ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ।’
তিনি বলেন, আমরা চলতি অর্থবছরে ৭ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধির হার অর্জনের আশা করছি।
শেখ হাসিনা সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের প্রচেষ্টা ২০২২ সালের এপ্রিলের জন্য নিক্কেইর কভিড-১৯ পুনরুদ্ধার সূচকে স্বীকৃত হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশ ১২১টি দেশের মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে এবং কভিড ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা পারফরম্যান্সকারী দেশ হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘২০২২ সালের জুনে শেষ হওয়া অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি ৪৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছানোর, পণ্য রপ্তানি আয় ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি, রেমিট্যান্স ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত হওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে।’
সাম্প্রতিক কপ-২৬-সহ সব আলোচনায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে বাংলাদেশ সক্রিয় এবং সোচ্চার হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে থাকা ৪৮ সদস্য দেশগুলোর একটি কণ্ঠস্বর হিসেবে কাজ করতে ২০২০-২২ সালের জন্য ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের সভাপতিত্ব গ্রহণ করেছিলাম।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সার্ক, বিমসটেক, আইওআরএ, ওআইসি, ন্যাম, এআরএফ, আসেম, সিকা, কমনওয়েলথের মতো আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সহযোগিতার জন্য সংলাপ প্রচারে সক্রিয় রয়েছে।