‘১০ বছর আগে সেতু হলে আমার ছেলেটা বাঁচত’
উম্মুল ওয়ারা সুইটি | ১৩ জুন, ২০২২ ০০:০০
‘এই সেতুর কাজে কোনো খুঁত নাই। সবসময় বড় স্যাররা তদারকি করেন। প্রথমদিকে সেতুমন্ত্রী প্রত্যেক সপ্তায় আসতো। এখন তো সব মন্ত্রী-এমপি এসে দেখশোনা করছেন। খুব নিরাপত্তা। কারণ সেতুর কাজ শুরুর সময় এখানে অনেক গুজব হইতো। পাইলিংয়ের কাজ ছিল অনেক কঠিন’ সেতু শ্রমিক নাদের এভাবেই জানাচ্ছিলেন স্বপ্নের সেতু নিয়ে তার মনের কথা। নাদের মিয়া সেতু দেখিয়ে বলেন, ‘দেখেন এই কেমন সুন্দর সেতু দেখা যায়। ষড়যন্ত্রকারীদের মুখে কালি দিয়ে গর্বের সঙ্গে দাঁড়িয়েছে পদ্মা সেতু।’
নাদের মিয়ার সঙ্গে একমত পোষণ করে আরও কয়েকজন শ্রমিক বলেন, ‘এই সেতু চালু হলে দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। মানুষ আসে হাজার হাজার। আমাদের পরিবারের লোকজন ও বন্ধুবান্ধব ফোন করে সেতুর কাজের খবর নেয়। ২৫ তারিখ তো আইসা গেল। আর প্রতিদিন তো সেতু দেখতে এপাশে ঢাকা, চিটাগংসহ সারা দেশের মানুষ গাড়ি নিয়ে আসে। অবশ্য তারা ঢুকতে পারে না। আবার ওই পাশে ফরিদপুর, বরিশাল, ঝিনাইদহ, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুরসহ সব জেলা থেকে প্রতিদিন লোক আসে। অবশ্য এই এরিয়ায় কেউ ঢুকতে পারে না।’
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আয়োজনে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে সরেজমিন গিয়ে এবং সেখানে কর্মরত শ্রমিক ও আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, পদ্মা সেতুকে ঘিরে গত এক মাস আগ থেকেই মাওয়া ও বাংলাবাজার শিমুলিয়া প্রান্ত রূপ নিয়েছে পর্যটন কেন্দ্রে। প্রতিদিন সেতু দেখতে দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলাগুলো থেকে হাজার হাজার মানুষ আসছে। নৌকায় চড়ে তারা সেতুর কাছাকাছি আসে।
৬৭ বছরের হানিফ মোল্লা সেতুর দিকে তাকিয়ে তার আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, ‘এত অকথা-কুকথার পর দেখেন ব্রিজটা হইয়াই গেল। কতভাবে যে সেতুটা বন্ধ করার চেষ্টা হইছিল তা আমরা জানি। আমি খালি চিন্তা করি আর ১০ বছর আগে যদি এই সেতুটা হইতো তাইলে মনে হয় আমার ছেলেটা আর নতুন বউটা বাঁইচা যাইতো। যাক আল্লাহ নিয়ে গেছে। এখন আর ঝড়ের কবলে পড়ে কোনো বরযাত্রীর নৌকা উল্টাইয়া যাইবো না। পদ্মার পাড়ে দমফাটা আর্তনাদ শোনা যাবে না হয়তো। আমরা খুব খুশি। শেখের বেটি এই কাজ করতে পারছে।’
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বাসিন্দা হারিস মিয়া জানান, তার সবচেয়ে বড় খুশি হলো তার জমির ওপর পদ্মা সেতু হয়েছে। এখন তিনি মাওয়া প্রান্তে একটা দোকান দিয়েছেন। এই সেতু হওয়ার আগে তাদের চার ভাই ও দুই বোনের তিন বিঘা জমি ছিল। জমির কোনো দাম নেই। কোনোরকমে দিনমজুর করে তাদের দিন চলত। সরকার সেতুর জন্য দুই বিঘা জমি নিয়েছে, দেড়গুণ দাম দিয়ে। তার ছেলে মাওয়া প্রান্তে কাজ করে। এখন তাদের কোনো অভাব নেই। আবার যে এক বিঘা জমি আছে তার দাম কয়েকগুণ বেড়েছে।
আসছে কোরবানির ঈদে আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফেরি পারাপার হতে হবে না। সেতুর ওপর দিয়ে প্রথম দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ মাত্র ৬ মিনিটে পদ্মা পাড়ি দেবেন। এই আনন্দ আর উত্তেজনায় তারা ভাসছেন।
এদিকে ২৫ জুন সেতু উদ্বোধনের জন্য কর্মযজ্ঞ চলছে। সেতু কর্র্তৃপক্ষ ও পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বলতে গেলে রাতদিন কাজ করছেন। লাইট বসানোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এদিন প্রধানমন্ত্রী সকাল ১০টায় সেতু উদ্বোধন করবেন। বড় সমাবেশ হবে। ২১ জেলার এমপি ও নেতাকর্মীরা লোক সমাগমের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জমকালো আয়োজনের মধ্যে পাঁচ দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানমালা সাজানো হয়েছে।
সেতু সচিব ও প্রকল্পের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, সেতুর কাজ বলা যায় প্রায় শেষ। এখন মানুষের অপেক্ষা সেতুর ওপর দিয়ে পাড়ি দেওয়ার। তিনি বলেন, ‘দুই পাশের মানুষের আনন্দের শেষ নেই। কারণ রাতারাতি তাদের জীবনের স্বপ্ন অন্য রকম হয়ে গেছে। যাদের কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে তারাও খুব খুশি। আর এই সেতু হলে দক্ষিণ-পশ্চিমের ২১ জেলার জীবনযাত্রার মানই পাল্টে যাবে। শিক্ষা-স্বাস্থ্য এবং অর্থনীতিতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে।’
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘এটা এমন একটা অনুভূতির জায়গা যেখানে অনেক মানুষের কষ্ট লুকিয়ে আছে। পদ্মা সেতু হওয়ার আগে ফেরিঘাটে দক্ষিণবঙ্গের মানুষের কত দুঃখ-কষ্ট, কত আহাজারি, কত মানুষের স্মৃতি, কত হয়রানি, রোদের মধ্যে বিশেষ করে ঈদ বা উৎসবের সময়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা কত মানুষের কষ্ট এখানে লুকায়িত আছে।’ তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর জন্য যারা জমি দিয়েছেন তাদের সবারই মোটামুটি অর্থ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পুনর্বাসনের আওতায় নেওয়া হয়েছে।’
জেলা প্রশাসক ড. রহিমা বলেন, ‘যারা জমি দিয়েছে বা জমি দেয়নি সবাই মিলে চেষ্টা করেছে। কষ্টগুলো যেন দূর হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী সেই সুযোগটা করে দিয়েছেন। মানুষ খুব খুশি। যাদের জমি গেছে তারাও খুশি। এটা দেশকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে, জিডিপি গ্রোথ থেকে শুরু করে সব দিক বিবেচনায় অনেক ভূমিকা পালন করবে এই সেতু। আমি মনে করি, যারা জমি দিয়েছেন তারা তো সৌভাগ্যবান। কারণ তাদের জমির ওপর দিয়েই পদ্মা সেতুটা গেছে। তারাও এই গৌরবের অংশীদার। তারা গর্ব করে বলতে পারবেন, “আমার জায়গার ওপর দিয়ে পদ্মা সেতু গেছে”।’
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও সেতু মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সেতুর উদ্বোধনকে ঘিরে কোনো পক্ষ যেন নাশকতা করতে না পারে সে বিষয়ে বিশেষ সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। ২৫ জুনের উৎসবে যোগ দেওয়ার জন্য দেশি-বিদেশি অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানোর কাজ চলেছে।
সেতু সচিব মনজুর হোসেন বলেন, ‘পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ভেন্যুর সাজসজ্জা যেন জাঁকজমকপূর্ণ এবং নিখুঁত হয়, সেজন্য প্রস্তুতি চলছে সেতু বিভাগের। ভেন্যুর সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। ১০০ কর্মচারী থাকার জন্য সেখানে তাঁবু তৈরি করা হচ্ছে। সেতু সাজসজ্জার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ আপাতত সেতু ব্যবহার করতে পারবেন না। যারা সেখানে কাজ করছেন, তাদের ছবি সরবরাহ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের আসন ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ২০ জুনের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে।’
শেয়ার করুন
উম্মুল ওয়ারা সুইটি | ১৩ জুন, ২০২২ ০০:০০

‘এই সেতুর কাজে কোনো খুঁত নাই। সবসময় বড় স্যাররা তদারকি করেন। প্রথমদিকে সেতুমন্ত্রী প্রত্যেক সপ্তায় আসতো। এখন তো সব মন্ত্রী-এমপি এসে দেখশোনা করছেন। খুব নিরাপত্তা। কারণ সেতুর কাজ শুরুর সময় এখানে অনেক গুজব হইতো। পাইলিংয়ের কাজ ছিল অনেক কঠিন’ সেতু শ্রমিক নাদের এভাবেই জানাচ্ছিলেন স্বপ্নের সেতু নিয়ে তার মনের কথা। নাদের মিয়া সেতু দেখিয়ে বলেন, ‘দেখেন এই কেমন সুন্দর সেতু দেখা যায়। ষড়যন্ত্রকারীদের মুখে কালি দিয়ে গর্বের সঙ্গে দাঁড়িয়েছে পদ্মা সেতু।’
নাদের মিয়ার সঙ্গে একমত পোষণ করে আরও কয়েকজন শ্রমিক বলেন, ‘এই সেতু চালু হলে দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। মানুষ আসে হাজার হাজার। আমাদের পরিবারের লোকজন ও বন্ধুবান্ধব ফোন করে সেতুর কাজের খবর নেয়। ২৫ তারিখ তো আইসা গেল। আর প্রতিদিন তো সেতু দেখতে এপাশে ঢাকা, চিটাগংসহ সারা দেশের মানুষ গাড়ি নিয়ে আসে। অবশ্য তারা ঢুকতে পারে না। আবার ওই পাশে ফরিদপুর, বরিশাল, ঝিনাইদহ, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুরসহ সব জেলা থেকে প্রতিদিন লোক আসে। অবশ্য এই এরিয়ায় কেউ ঢুকতে পারে না।’
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আয়োজনে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে সরেজমিন গিয়ে এবং সেখানে কর্মরত শ্রমিক ও আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, পদ্মা সেতুকে ঘিরে গত এক মাস আগ থেকেই মাওয়া ও বাংলাবাজার শিমুলিয়া প্রান্ত রূপ নিয়েছে পর্যটন কেন্দ্রে। প্রতিদিন সেতু দেখতে দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলাগুলো থেকে হাজার হাজার মানুষ আসছে। নৌকায় চড়ে তারা সেতুর কাছাকাছি আসে।
৬৭ বছরের হানিফ মোল্লা সেতুর দিকে তাকিয়ে তার আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, ‘এত অকথা-কুকথার পর দেখেন ব্রিজটা হইয়াই গেল। কতভাবে যে সেতুটা বন্ধ করার চেষ্টা হইছিল তা আমরা জানি। আমি খালি চিন্তা করি আর ১০ বছর আগে যদি এই সেতুটা হইতো তাইলে মনে হয় আমার ছেলেটা আর নতুন বউটা বাঁইচা যাইতো। যাক আল্লাহ নিয়ে গেছে। এখন আর ঝড়ের কবলে পড়ে কোনো বরযাত্রীর নৌকা উল্টাইয়া যাইবো না। পদ্মার পাড়ে দমফাটা আর্তনাদ শোনা যাবে না হয়তো। আমরা খুব খুশি। শেখের বেটি এই কাজ করতে পারছে।’
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বাসিন্দা হারিস মিয়া জানান, তার সবচেয়ে বড় খুশি হলো তার জমির ওপর পদ্মা সেতু হয়েছে। এখন তিনি মাওয়া প্রান্তে একটা দোকান দিয়েছেন। এই সেতু হওয়ার আগে তাদের চার ভাই ও দুই বোনের তিন বিঘা জমি ছিল। জমির কোনো দাম নেই। কোনোরকমে দিনমজুর করে তাদের দিন চলত। সরকার সেতুর জন্য দুই বিঘা জমি নিয়েছে, দেড়গুণ দাম দিয়ে। তার ছেলে মাওয়া প্রান্তে কাজ করে। এখন তাদের কোনো অভাব নেই। আবার যে এক বিঘা জমি আছে তার দাম কয়েকগুণ বেড়েছে।
আসছে কোরবানির ঈদে আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফেরি পারাপার হতে হবে না। সেতুর ওপর দিয়ে প্রথম দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ মাত্র ৬ মিনিটে পদ্মা পাড়ি দেবেন। এই আনন্দ আর উত্তেজনায় তারা ভাসছেন।
এদিকে ২৫ জুন সেতু উদ্বোধনের জন্য কর্মযজ্ঞ চলছে। সেতু কর্র্তৃপক্ষ ও পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বলতে গেলে রাতদিন কাজ করছেন। লাইট বসানোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এদিন প্রধানমন্ত্রী সকাল ১০টায় সেতু উদ্বোধন করবেন। বড় সমাবেশ হবে। ২১ জেলার এমপি ও নেতাকর্মীরা লোক সমাগমের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জমকালো আয়োজনের মধ্যে পাঁচ দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানমালা সাজানো হয়েছে।
সেতু সচিব ও প্রকল্পের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, সেতুর কাজ বলা যায় প্রায় শেষ। এখন মানুষের অপেক্ষা সেতুর ওপর দিয়ে পাড়ি দেওয়ার। তিনি বলেন, ‘দুই পাশের মানুষের আনন্দের শেষ নেই। কারণ রাতারাতি তাদের জীবনের স্বপ্ন অন্য রকম হয়ে গেছে। যাদের কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে তারাও খুব খুশি। আর এই সেতু হলে দক্ষিণ-পশ্চিমের ২১ জেলার জীবনযাত্রার মানই পাল্টে যাবে। শিক্ষা-স্বাস্থ্য এবং অর্থনীতিতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে।’
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘এটা এমন একটা অনুভূতির জায়গা যেখানে অনেক মানুষের কষ্ট লুকিয়ে আছে। পদ্মা সেতু হওয়ার আগে ফেরিঘাটে দক্ষিণবঙ্গের মানুষের কত দুঃখ-কষ্ট, কত আহাজারি, কত মানুষের স্মৃতি, কত হয়রানি, রোদের মধ্যে বিশেষ করে ঈদ বা উৎসবের সময়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা কত মানুষের কষ্ট এখানে লুকায়িত আছে।’ তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর জন্য যারা জমি দিয়েছেন তাদের সবারই মোটামুটি অর্থ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পুনর্বাসনের আওতায় নেওয়া হয়েছে।’
জেলা প্রশাসক ড. রহিমা বলেন, ‘যারা জমি দিয়েছে বা জমি দেয়নি সবাই মিলে চেষ্টা করেছে। কষ্টগুলো যেন দূর হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী সেই সুযোগটা করে দিয়েছেন। মানুষ খুব খুশি। যাদের জমি গেছে তারাও খুশি। এটা দেশকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে, জিডিপি গ্রোথ থেকে শুরু করে সব দিক বিবেচনায় অনেক ভূমিকা পালন করবে এই সেতু। আমি মনে করি, যারা জমি দিয়েছেন তারা তো সৌভাগ্যবান। কারণ তাদের জমির ওপর দিয়েই পদ্মা সেতুটা গেছে। তারাও এই গৌরবের অংশীদার। তারা গর্ব করে বলতে পারবেন, “আমার জায়গার ওপর দিয়ে পদ্মা সেতু গেছে”।’
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও সেতু মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সেতুর উদ্বোধনকে ঘিরে কোনো পক্ষ যেন নাশকতা করতে না পারে সে বিষয়ে বিশেষ সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। ২৫ জুনের উৎসবে যোগ দেওয়ার জন্য দেশি-বিদেশি অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানোর কাজ চলেছে।
সেতু সচিব মনজুর হোসেন বলেন, ‘পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ভেন্যুর সাজসজ্জা যেন জাঁকজমকপূর্ণ এবং নিখুঁত হয়, সেজন্য প্রস্তুতি চলছে সেতু বিভাগের। ভেন্যুর সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। ১০০ কর্মচারী থাকার জন্য সেখানে তাঁবু তৈরি করা হচ্ছে। সেতু সাজসজ্জার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ আপাতত সেতু ব্যবহার করতে পারবেন না। যারা সেখানে কাজ করছেন, তাদের ছবি সরবরাহ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের আসন ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ২০ জুনের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে।’