সরকারি প্রতিষ্ঠান
বকেয়া ৩০ জুনের মধ্যে না দিলে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৪ জুন, ২০২২ ০০:০০
বারবার তাগিদ দিয়েও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে বকেয়া গ্যাস বিল আদায় করতে পারছে না বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ। বকেয়া পরিশোধ করতে কিছুদিন আগে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিল পরিশোধ না করলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পক্ষে মতও দেন তিনি। তারপরও গ্যাস বিল পরিশোধ করছে না সরকারি কোনো দপ্তর। এ অবস্থায় ৩০ জুনের মধ্যে বকেয়া গ্যাস বিল পরিশোধের তাগিদ দিয়ে চিঠি ইস্যু করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
বিল পরিশোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে। গত মঙ্গলবার বিদ্যুৎ বিভাগের সহকারী সচিব সায়মা আক্তার বকেয়া গ্যাস বিল পরিশোধের জন্য মন্ত্রণালয়গুলোর সচিবদের কাছে চিঠি পাঠান।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানির বকেয়া বিলের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ২৭৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বকেয়া ৭৪৩ কোটি টাকা। এছাড়া আবাসিক গ্রাহকদের কাছে বকেয়া ৮১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আর বেসরকারি গ্রাহকদের কাছে বকেয়ার পরিমাণ ৫ হাজার ৮৯৬ কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের চিঠিতে বলা হয়েছে, পেট্রোবাংলার আওতাধীন বিতরণ কোম্পানিগুলোর গ্যাস বিল বাবদ বিপুল পরিমাণ অর্থ বকেয়া পাওনা থাকায় কোম্পানিগুলোর আর্থিক তারল্য সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। গ্যাস বিপণন নিয়মাবলি-২০১৪ অনুযায়ী, বিল ইস্যুর তারিখ থেকে কোনো গ্রাহকের বকেয়া বিল ৪৫ দিন অপরিশোধিত থাকলে তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিধান রয়েছে। এ অবস্থায় মন্ত্রণালয়-বিভাগের আওতাধীন দপ্তর-সংস্থা ও কোম্পানিগুলোর গ্যাস বিল বাবদ বকেয়া পাওনা চলতি বছর ৩০ জুনের মধ্যে আবশ্যিকভাবে পরিশোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আবার করা হলো।
জ¦ালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের ছয় গ্যাস বিতরণ কোম্পানির বকেয়া বিলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। তাদের বকেয়া ৬ হাজার ৬৩৯ কোটি ৫৭ লাখ। বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের বকেয়া ৮১৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বকেয়া ৮০৫ কোটি ৯৭ লাখ। জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশনের বকেয়া ৭৩৯ কোটি ৪ লাখ টাকা। সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির বকেয়া ১৭৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ও পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানির বকেয়া ৯৯ কোটি ২ লাখ টাকা।
অন্যদিকে চলতি বছর জানুয়ারি পর্যন্ত ছয় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশের (ইজিসিবি) কাছে বকেয়া গ্যাস বিলের পরিমাণ ১৯৯ কোটি টাকা। এছাড়া বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে পাওনা ১৯১ কোটি, সশস্ত্র বাহিনীর কাছে ২১ কোটি ৫৩ লাখ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ১৬ কোটি, বিভিন্ন সার কারখানায় ১৩ কোটি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে ১২ কোটি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ৯ কোটি, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে ৯ কোটি, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ৫ কোটি, রেলপথ মন্ত্রণালয়ে ২ কোটি ৯৭ লাখ, কৃষি মন্ত্রণালয়ে ১ কোটি ৯৫ লাখ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ১ কোটি ৮৮ লাখ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে ১ কোটি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে পাওনা গ্যাস বিল বকেয়ার পরিমাণ ১ কোটি টাকা।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৪ জুন, ২০২২ ০০:০০

বারবার তাগিদ দিয়েও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে বকেয়া গ্যাস বিল আদায় করতে পারছে না বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ। বকেয়া পরিশোধ করতে কিছুদিন আগে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিল পরিশোধ না করলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পক্ষে মতও দেন তিনি। তারপরও গ্যাস বিল পরিশোধ করছে না সরকারি কোনো দপ্তর। এ অবস্থায় ৩০ জুনের মধ্যে বকেয়া গ্যাস বিল পরিশোধের তাগিদ দিয়ে চিঠি ইস্যু করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
বিল পরিশোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে। গত মঙ্গলবার বিদ্যুৎ বিভাগের সহকারী সচিব সায়মা আক্তার বকেয়া গ্যাস বিল পরিশোধের জন্য মন্ত্রণালয়গুলোর সচিবদের কাছে চিঠি পাঠান।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানির বকেয়া বিলের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ২৭৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বকেয়া ৭৪৩ কোটি টাকা। এছাড়া আবাসিক গ্রাহকদের কাছে বকেয়া ৮১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আর বেসরকারি গ্রাহকদের কাছে বকেয়ার পরিমাণ ৫ হাজার ৮৯৬ কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের চিঠিতে বলা হয়েছে, পেট্রোবাংলার আওতাধীন বিতরণ কোম্পানিগুলোর গ্যাস বিল বাবদ বিপুল পরিমাণ অর্থ বকেয়া পাওনা থাকায় কোম্পানিগুলোর আর্থিক তারল্য সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। গ্যাস বিপণন নিয়মাবলি-২০১৪ অনুযায়ী, বিল ইস্যুর তারিখ থেকে কোনো গ্রাহকের বকেয়া বিল ৪৫ দিন অপরিশোধিত থাকলে তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিধান রয়েছে। এ অবস্থায় মন্ত্রণালয়-বিভাগের আওতাধীন দপ্তর-সংস্থা ও কোম্পানিগুলোর গ্যাস বিল বাবদ বকেয়া পাওনা চলতি বছর ৩০ জুনের মধ্যে আবশ্যিকভাবে পরিশোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আবার করা হলো।
জ¦ালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের ছয় গ্যাস বিতরণ কোম্পানির বকেয়া বিলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। তাদের বকেয়া ৬ হাজার ৬৩৯ কোটি ৫৭ লাখ। বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের বকেয়া ৮১৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বকেয়া ৮০৫ কোটি ৯৭ লাখ। জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশনের বকেয়া ৭৩৯ কোটি ৪ লাখ টাকা। সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির বকেয়া ১৭৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ও পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানির বকেয়া ৯৯ কোটি ২ লাখ টাকা।
অন্যদিকে চলতি বছর জানুয়ারি পর্যন্ত ছয় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশের (ইজিসিবি) কাছে বকেয়া গ্যাস বিলের পরিমাণ ১৯৯ কোটি টাকা। এছাড়া বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে পাওনা ১৯১ কোটি, সশস্ত্র বাহিনীর কাছে ২১ কোটি ৫৩ লাখ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ১৬ কোটি, বিভিন্ন সার কারখানায় ১৩ কোটি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে ১২ কোটি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ৯ কোটি, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে ৯ কোটি, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ৫ কোটি, রেলপথ মন্ত্রণালয়ে ২ কোটি ৯৭ লাখ, কৃষি মন্ত্রণালয়ে ১ কোটি ৯৫ লাখ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ১ কোটি ৮৮ লাখ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে ১ কোটি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে পাওনা গ্যাস বিল বকেয়ার পরিমাণ ১ কোটি টাকা।