শিক্ষক পিটিয়ে হত্যার আসামি জিতু গ্রেপ্তার
এজাহারে বয়স কম দেখানোর অভিযোগ
রূপান্তর ডেস্ক | ৩০ জুন, ২০২২ ০০:০০
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলার প্রধান আসামি আশরাফুল আহসান ওরফে জিতুকে হেফাজতে নেওয়ার কথা জানিয়েছে র্যাব। গতকাল বুধবার সন্ধ্যার পর গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে জিতুর বাবা হাজী উজ্জ্বল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখা জানিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে জিতুকে হেফাজতে নেওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
এদিকে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলার এজাহারে প্রধান আসামি আশরাফুল আহসান ওরফে জিতুর বয়স কম দেখানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের নথিপত্র অনুযায়ী জিতুর বয়স ১৯ হলেও মামলার এজাহারে তার বয়স ১৬ দেখানো হয়েছে।
র্যাবের এক কর্মকর্তা জানান, গাজীপুরের শ্রীপুরের নগরহাওলা গ্রামে অভিযান চারিয়ে জিতুকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিতু ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করছিল। শিক্ষক হত্যার ঘটনা গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার হলে র্যাব ছায়াতদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে জিতুর অবস্থান শনাক্ত করে তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়। তাকে আটকে র্যাবের একাধিক টিম কাজ করেছে।
আশুলিয়া থানা পুলিশ জানায়, গত শনিবার স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে গুরুতর আহত করে একই প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির ছাত্র আশরাফুল আহসান ওরফে জিতু। পরে গত সোমবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই শিক্ষক মারা যান। এর আগের দিন রবিবার ওই শিক্ষকের বড় ভাই অসীম কুমার সরকার আশুলিয়া থানায় ওই ছাত্রের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার পরপরই বিভিন্ন স্থানে আসামি ধরতে অভিযান শুরু করে পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার মধ্যরাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে ওই শিক্ষার্থীর বাবা হাজী উজ্জ্বল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আশুলিয়া থানা পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার এসআই মো. এমদাদুল হক জানান, কুমারখালীর একটি ভাড়া বাসা থেকে হাজী উজ্জ্বল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে ঢাকায় এনে আদালতে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, ‘চিত্রশাইল এলাকার উজ্জ্বলের বাড়ির এক ভাড়াটিয়ার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। তার বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন উজ্জ্বল। তাকে সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
আদালতে হাজিরের পর হাজী উজ্জ্বল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই এমদাদুল হক গতকাল ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মুজাহিদুল ইসলামের আদালতে হাজী উজ্জ্বল হোসেনকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করার পর আশুলিয়ায় চিত্রশাইলে হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেছিলেন উৎপল কুমার সরকার।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, শনিবার দুপুরে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী জিতু ক্রিকেট খেলার স্টাম্প দিয়ে অতর্কিতভাবে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারের ওপর হামলা চালায়। প্রথমে সে শিক্ষকের মাথায় আঘাত করে এবং পরে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। এ ছাড়া স্টাম্পের সুচালো অংশ দিয়ে পেটের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় উৎপলকে প্রথমে আশুলিয়া নারী ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হয়। আঘাত গুরুতর হওয়ায় পরে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার ভোরে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এজাহারে জিতুর প্রকৃত বয়স কমিয়ে দেখানোর অভিযোগ : শিক্ষক উৎপল হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলার এজাহারে প্রধান আসামি আশরাফুল আহসান ওরফে জিতুর বয়স কম দেখানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের নথিপত্র অনুযায়ী জিতুর বয়স ১৯ হলেও মামলার এজাহারে তার বয়স ১৬ দেখানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের আইসিটি বিভাগের শিক্ষক মনির হোসেন বলেন, ‘জিতু দশম শ্রেণিতে পড়লেও তার বয়স ১৯। সে ক্লাস নাইনে আমাদের এখানে ভর্তি হয়েছিল। এর আগে সাভারের রাজফুলবাড়িয়া এলাকার একটা মাদ্রাসায় পড়ত। সে ছাত্র হিসেবে খুবই দুর্বল প্রকৃতির, উচ্ছৃঙ্খলও। স্কুলের নথিতে উল্লেখ আছে, জিতুর বয়স ১৯। তবে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে ১৬।’
জিতুর প্রকৃত বয়সের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের একটি নথি সরবরাহ করেন কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান। যেখানে আশরাফুল ইসলাম জিতুর বাবা মো. উজ্জ্বল, মা জুলেখা বেগম ও তার জন্ম তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০০৩ সাল উল্লেখ রয়েছে। সে হিসাবে জিতুর বয়স ১৯ বছর।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘মামলায় কী দেখানো হলো এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। প্রয়োজনে ডাক্তারি পরীক্ষা করে নিয়ে আসব। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা চেষ্টা করি ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য।’
এদিকে গতকাল সকালে তৃতীয় দিনের মতো আশুলিয়ার বিভিন্ন জায়গায় এবং হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। এছাড়া সাভার সরকারি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও উৎপল কুমার সরকারকে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন।
আমরণ অনশনে ঢাবির পাঁচ ছাত্র : শিক্ষক উৎপল হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার দাবিতে গতকাল আমরণ অনশন শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী। বেলা সোয়া ৩টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ওই শিক্ষার্থীরা অনশন শুরু করেন।
আমরণ অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন নাঈম পারভেজ, মেহেদী হাসান, চৌধুরী শামীম আফফান, তরিকুল ইসলাম ও মোস্তফা কামাল রনি।
নাঈম ও মেহেদী ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। শামীম, তরিকুল ও মোস্তফা ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার দা সূর্য সেন হলের শিক্ষার্থী।
অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষক উৎপল কুমারের হত্যাকারী গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত তারা আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন।
প্রতিবেদনটি তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট জেলা, উপজেলা প্রতিনিধি ও সংবাদদাতারা এবং আদালত প্রতিবেদক
শেয়ার করুন
এজাহারে বয়স কম দেখানোর অভিযোগ
রূপান্তর ডেস্ক | ৩০ জুন, ২০২২ ০০:০০

ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলার প্রধান আসামি আশরাফুল আহসান ওরফে জিতুকে হেফাজতে নেওয়ার কথা জানিয়েছে র্যাব। গতকাল বুধবার সন্ধ্যার পর গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে জিতুর বাবা হাজী উজ্জ্বল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখা জানিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে জিতুকে হেফাজতে নেওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
এদিকে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলার এজাহারে প্রধান আসামি আশরাফুল আহসান ওরফে জিতুর বয়স কম দেখানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের নথিপত্র অনুযায়ী জিতুর বয়স ১৯ হলেও মামলার এজাহারে তার বয়স ১৬ দেখানো হয়েছে।
র্যাবের এক কর্মকর্তা জানান, গাজীপুরের শ্রীপুরের নগরহাওলা গ্রামে অভিযান চারিয়ে জিতুকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিতু ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করছিল। শিক্ষক হত্যার ঘটনা গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার হলে র্যাব ছায়াতদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে জিতুর অবস্থান শনাক্ত করে তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়। তাকে আটকে র্যাবের একাধিক টিম কাজ করেছে।
আশুলিয়া থানা পুলিশ জানায়, গত শনিবার স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে গুরুতর আহত করে একই প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির ছাত্র আশরাফুল আহসান ওরফে জিতু। পরে গত সোমবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই শিক্ষক মারা যান। এর আগের দিন রবিবার ওই শিক্ষকের বড় ভাই অসীম কুমার সরকার আশুলিয়া থানায় ওই ছাত্রের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার পরপরই বিভিন্ন স্থানে আসামি ধরতে অভিযান শুরু করে পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার মধ্যরাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে ওই শিক্ষার্থীর বাবা হাজী উজ্জ্বল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আশুলিয়া থানা পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার এসআই মো. এমদাদুল হক জানান, কুমারখালীর একটি ভাড়া বাসা থেকে হাজী উজ্জ্বল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে ঢাকায় এনে আদালতে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, ‘চিত্রশাইল এলাকার উজ্জ্বলের বাড়ির এক ভাড়াটিয়ার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। তার বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন উজ্জ্বল। তাকে সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
আদালতে হাজিরের পর হাজী উজ্জ্বল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই এমদাদুল হক গতকাল ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মুজাহিদুল ইসলামের আদালতে হাজী উজ্জ্বল হোসেনকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করার পর আশুলিয়ায় চিত্রশাইলে হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেছিলেন উৎপল কুমার সরকার।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, শনিবার দুপুরে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী জিতু ক্রিকেট খেলার স্টাম্প দিয়ে অতর্কিতভাবে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারের ওপর হামলা চালায়। প্রথমে সে শিক্ষকের মাথায় আঘাত করে এবং পরে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। এ ছাড়া স্টাম্পের সুচালো অংশ দিয়ে পেটের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় উৎপলকে প্রথমে আশুলিয়া নারী ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হয়। আঘাত গুরুতর হওয়ায় পরে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার ভোরে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এজাহারে জিতুর প্রকৃত বয়স কমিয়ে দেখানোর অভিযোগ : শিক্ষক উৎপল হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলার এজাহারে প্রধান আসামি আশরাফুল আহসান ওরফে জিতুর বয়স কম দেখানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের নথিপত্র অনুযায়ী জিতুর বয়স ১৯ হলেও মামলার এজাহারে তার বয়স ১৬ দেখানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের আইসিটি বিভাগের শিক্ষক মনির হোসেন বলেন, ‘জিতু দশম শ্রেণিতে পড়লেও তার বয়স ১৯। সে ক্লাস নাইনে আমাদের এখানে ভর্তি হয়েছিল। এর আগে সাভারের রাজফুলবাড়িয়া এলাকার একটা মাদ্রাসায় পড়ত। সে ছাত্র হিসেবে খুবই দুর্বল প্রকৃতির, উচ্ছৃঙ্খলও। স্কুলের নথিতে উল্লেখ আছে, জিতুর বয়স ১৯। তবে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে ১৬।’
জিতুর প্রকৃত বয়সের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের একটি নথি সরবরাহ করেন কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান। যেখানে আশরাফুল ইসলাম জিতুর বাবা মো. উজ্জ্বল, মা জুলেখা বেগম ও তার জন্ম তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০০৩ সাল উল্লেখ রয়েছে। সে হিসাবে জিতুর বয়স ১৯ বছর।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘মামলায় কী দেখানো হলো এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। প্রয়োজনে ডাক্তারি পরীক্ষা করে নিয়ে আসব। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা চেষ্টা করি ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য।’
এদিকে গতকাল সকালে তৃতীয় দিনের মতো আশুলিয়ার বিভিন্ন জায়গায় এবং হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। এছাড়া সাভার সরকারি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও উৎপল কুমার সরকারকে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন।
আমরণ অনশনে ঢাবির পাঁচ ছাত্র : শিক্ষক উৎপল হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার দাবিতে গতকাল আমরণ অনশন শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী। বেলা সোয়া ৩টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ওই শিক্ষার্থীরা অনশন শুরু করেন।
আমরণ অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন নাঈম পারভেজ, মেহেদী হাসান, চৌধুরী শামীম আফফান, তরিকুল ইসলাম ও মোস্তফা কামাল রনি।
নাঈম ও মেহেদী ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। শামীম, তরিকুল ও মোস্তফা ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার দা সূর্য সেন হলের শিক্ষার্থী।
অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষক উৎপল কুমারের হত্যাকারী গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত তারা আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন।
প্রতিবেদনটি তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট জেলা, উপজেলা প্রতিনিধি ও সংবাদদাতারা এবং আদালত প্রতিবেদক