
স্বপ্নের মেট্রোরেল এখন বাস্তবে রূপ নেবে। ২৮ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে দেশের প্রথম মেট্রোরেল। উদ্বোধনের দিন প্রথম টিকিট কেটে যাত্রী হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর সাধারণ যাত্রীরা ২৯ ডিসেম্বর থেকে চড়তে পারবেন মেট্রোরেলে। মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া হবে ২০ টাকা। এ ছাড়া কার্ডেও কাটা যাবে মেট্রোরেলের টিকিট। গতকাল রবিবার ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ এন ছিদ্দিক এসব তথ্য জানান।
এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, ‘২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের প্রথম টিকিট কাটবেন প্রধানমন্ত্রী। তবে প্রধামন্ত্রীর সঙ্গে মন্ত্রী, সচিব, জাইকা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্টরা ভ্রমণ করবেন। প্রধানমন্ত্রী নিজে টিকিট কেটে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলে চড়বেন। এখন পর্যন্ত এমন সিদ্ধান্তই হয়েছে।’
মেট্রোরেল সংশ্লিষ্টরা জানান, সাপ্তাহিক, মাসিক বা পারিবারিক কার্ডে আগে থেকে টিকিট কিনতে হবে। মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে থাকা যন্ত্রে কার্ডে টাকা ভরা (রিচার্জ) যাবে। পরবর্তী সময়ে মুঠোফোনে রিচার্জের মতো করে যেকোনো জায়গা থেকে কার্ড রিচার্জের ব্যবস্থা চালু করা হবে।
প্ল্যাটফর্মে ঢোকার সময় যাত্রীদের কার্ড পাঞ্চ করতে হবে, তা না হলে দরজা খুলবে না। এরপর নেমে যাওয়ার সময় আবার কার্ড পাঞ্চ করতে হবে, তা না হলে যাত্রী বের হতে পারবেন না। আরেকটি কার্ড সাময়িক, যা প্রতি যাত্রায় দেওয়া হবে। এটাকে সিঙ্গেল জার্নি টিকিটও বলা হয়। স্টেশন থেকে নির্দিষ্ট গন্তব্যের ভাড়া দিয়ে এ কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। এটিও স্মার্ট কার্ডের মতো। ভাড়ার অতিরিক্ত যাতায়াত করলে ওই কার্ড দিয়ে দরজা খুলতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে দায়িত্বে থাকা কর্মীদের কাছে বাড়তি ভাড়া পরিশোধ করেই বের হতে হবে।
এদিকে মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া হবে ২০ টাকা। এখন দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত দূরত্ব অতিক্রম করতে ভাড়া দিতে হবে ৬০ টাকা। উত্তরা নর্থ স্টেশন থেকে উত্তরা সেন্টার ও উত্তরা সাউথ স্টেশনের ভাড়া একই ২০ টাকা। এ ছাড়া প্রথম স্টেশন (উত্তরা নর্থ) থেকে পল্লবী ও মিরপুর-১১ স্টেশনের ভাড়া ৩০ টাকা, মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৪০ টাকা এবং শেওড়াপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৫০ টাকা।
আবার পল্লবী থেকে মিরপুর-১১ বা কাজীপাড়া যেকোনো স্টেশনে নামলেই ২০ টাকা ভাড়া দিতে হবে। তবে পল্লবী থেকে শেওড়াপাড়া বা আগারগাঁও যেকোনো স্টেশনে নামলে ভাড়া দিতে হবে ৩০ টাকা। তবে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের মেট্রোরেলে চলাচলে কোনো ভাড়া দিতে হবে না।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ সাইফুন নেওয়াজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রাজধানীর বড় একটা অংশের যাত্রীদের এ মেট্রোরেলে চড়াতে পারলে এর সুফল পাওয়া যাবে। আর মেট্রোরেল যানজটের শহরে নিরাপদ একটি বাহন হবে দেশের মানুষের জন্য।’
শূন্যপদের দুই দিক। একদিকে কর্তৃপক্ষ, অন্যদিকে বেকার। দুই পক্ষ দুই মেরুতে অবস্থান করে। কর্তৃপক্ষ শূন্যপদ পূরণে বরাবরই অনীহা দেখায়। আর চাকরিপ্রার্থীরা হাহাকার নিয়ে অপেক্ষা করে।
এই দুই পক্ষের মধ্যে সেতুবন্ধের কাজটি ঠিকমতো করতে পারছে না সরকার। জনগোষ্ঠীর বিশাল অংশ যখন বেকার, তখন শূন্যপদ পূরণে যে তৎপরতা দেখানো দরকার তা অনুপস্থিত। দীর্ঘদিনে এই জায়গাটিতে কোনো দক্ষতাও গড়ে ওঠেনি।
নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার দায়িত্ব নিয়েই যেসব কাজে গুরুত্ব দিয়েছেন তার মধ্যে শূন্যপদ পূরণ অন্যতম। প্রশাসনের রেওয়াজ হচ্ছে তিন থেকে ছয় মাস পর সচিব সভা করা। মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের এ সভায় প্রশাসনের সামগ্রিক অবস্থা নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী আলোচনার আলোকে নানা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কিন্তু নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছয় মাস অপেক্ষা করতে চাচ্ছেন না। এ কারণে সচিব সভা হওয়ার মাত্র ৩০ দিনের মধ্যেই তিনি নতুন করে সচিব সভা ডেকেছেন। আগের সচিব সভাটি ছিল বিদায়ী মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের অধীনে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সভা। এবারের সচিব সভাটি হবে বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব কীভাবে প্রশাসনকে সাজাতে চান তার বার্তা দেওয়ার সভা।
আজ সোমবার অনুষ্ঠেয় সভার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা হচ্ছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের শূন্যপদে নিয়োগের বিষয়ে আলোচনা। বৈঠকে মন্ত্রণালয় ও অধীনস্ত দপ্তরের শূন্যপদ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার জন্য সচিবদের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, বৈঠকে শূন্যপদ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন দর্শন বাস্তবায়নে সচিবদের ভূমিকা এবং ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মন্ত্রণালয়গুলোর ভূমিকা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হবে। তবে শূন্যপদ কীভাবে পূরণ করা যায় সেটাই মুখ্য। সচিবদের শূন্যপদ সংক্রান্ত সব তথ্য সঙ্গে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া শূন্যপদের তথ্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগও সংগ্রহ করেছে। সরকারের মোট শূন্যপদের সংখ্যা ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৬৩৭। এর মধ্যে সাতটি মন্ত্রণালয়ের অধীনেই ২ লাখ ৩০ হাজার ৩৯৬। সবচেয়ে বেশি শূন্যপদ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের, ৬৬ হাজার ৫৩৪টি। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শূন্যপদ ৫৬ হাজার ১৩৮, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৩০ হাজার ৫৯১, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২৭ হাজার ৬১০, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ২২ হাজার ৭৭৬, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ১৪ হাজার ৬২৪, শিল্প মন্ত্রণালয়ের ১২ হাজার ১২৩, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ১১ হাজার ১০২।
সরকারের মোট ৪৪টি মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে কিছু মন্ত্রণালয়ের একাধিক বিভাগ রয়েছে। সাধারণত একজন মন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রণালয় পরিচালিত হলেও প্রতিটি বিভাগের আলাদা সচিব রয়েছেন। এসব সচিবই আজকের সচিব সভায় অংশ নেবেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, যে সাত মন্ত্রণালয়ে শূন্যপদ বেশি সেগুলোতে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া হবে। বাকিগুলো তদারকির আওতায় থাকলেও কম গুরুত্ব পাবে। আর খেয়াল রাখা হবে এগুলোতে জনবল নিয়োগ করতে না করতেই যেন আবারও পদ শূন্য না হয়ে যায়। সংস্থাগুলো সাধারণত শূন্যপদ জমিয়ে রাখে। অর্থাৎ একসঙ্গে অনেক শূন্যপদ হলে তারা নিয়োগের উদ্যোগ নেয়। এই অবস্থা থেকেও বের হয়ে আসা যাবে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের শূন্যপদের বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, শূন্যপদ পূরণে কৃষি মন্ত্রণালয় তৎপর। কৃষির এত বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী যে, একদিকে লোক নেওয়া হয়, অন্যদিকে অবসরে চলে যায়। এসব শূন্যপদে যেন কোনো শূন্যতার সৃষ্টি না হয় সেটা আমরা বরাবরই লক্ষ রেখেছি।
দেশে যে পরিমাণ চাকরিপ্রত্যাশী তার তুলনায় চাকরির সুযোগ অত্যন্ত সীমিত। শ্রম মন্ত্রণালয়ের মতে, প্রতি বছর ২০ থেকে ২৫ লাখ জনশক্তি শ্রমবাজারে প্রবেশ করে। এই কর্মসংস্থানের মাত্র ৫ শতাংশ সরকারি আর ৯৫ শতাংশ বেসরকারি খাতের। উচ্চশিক্ষা শেষ করে অনেকে সরকারি চাকরির জন্য অপেক্ষা করেন বছরের পর বছর। একাধিক বিসিএস এবং একের পর এক সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিতে দিতে তাদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) এক জরিপে দেখা গেছে, দেশে উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বেকারত্বের হার ৩৪ শতাংশ আর স্নাতক পর্যায়ে এই হার ৩৭ শতাংশ। মহামারীর আগে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২৮টি দেশের মধ্যে উচ্চশিক্ষিত বেকারত্বের দিক থেকে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। আইএলও’র এ বছর প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই অঞ্চলে মহামারীর পর বেকারের সংখ্যা মহামারীর আগের তুলনায় ৫০ লাখ বেড়েছে।
২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল চাকরির সুবিধা পরিবারে পরিবারে পৌঁছে দেওয়া। যেখানে রাজস্ব খাতভুক্ত পদের বড় সংখ্যা শূন্য থাকে, সেখানে ক্ষমতাসীন দলের এ প্রতিশ্রুতি যে পূরণ হয়নি তা সহজেই অনুমান করা যায়। বছরে সরকার গড়ে ৫০ হাজার শূন্যপদ পূরণ করতে পারে। গত অর্থবছরে সরকার ৫১ হাজার ৯০৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছে। মহামারীর কারণে তার আগের অর্থবছর এই সংখ্যা ছিল ২৪ হাজার ৫৫৩, যা অর্ধেকেরও কম।
বিপুলসংখ্যক পদ শূন্য থাকার পরও সরকার শূন্যপদে জনবল নিয়োগ করতে পারে না। এই ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা দপ্তরের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা শূন্যপদ পূরণে আগ্রহী হন না। জনবল নিয়োগ করতে গেলে ‘বদনাম’ হওয়ার আশঙ্কায় তারা হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকেন। বদনাম হলে আরও ওপরের পদে পদোন্নতি পাওয়ার আশা ভঙ্গ হতে পারে এ কারণে কর্মকর্তারা নিয়োগে আগ্রহ হারান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সচিব দেশ রূপান্তরকে বলেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলেই সবার আগে ডেকে পাঠান মন্ত্রী। তিনি জানতে চান নিয়োগে তার সুপারিশমতো কত শতাংশ নেওয়া হবে। অনেক ক্ষেত্রেই মন্ত্রীর কথা রাখতে গেলে আর কোনো প্রার্থী নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ থাকে না। কখনো কখনো মন্ত্রীরা শূন্যপদের চেয়ে বেশিসংখ্যক প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য চাপ দেন।
কিন্তু সচিবের বক্তব্যের ঠিক উল্টো অভিযোগ করেন মন্ত্রীরা। গত মাসে সচিবালয়ে চার নম্বর ভবনে গিয়েছিলেন একজন চাকরিপ্রার্থী। নওগাঁ থেকে আসা ওই প্রার্থী একটি অধিদপ্তরে জনবল নিয়োগের সর্বশেষ অবস্থার খবর নিতে গিয়েছিলেন। ঘটনাচক্রে তিনি মন্ত্রীর রুমে পৌঁছে যান। শূন্যপদে নিয়োগের খবর নিতে মন্ত্রী ফোনে কথা বলেন ওই অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে। ফোনে কথা বলা শেষ করে মন্ত্রী উপস্থিত দেশ রূপান্তরের প্রতিনিধিকে জানান, টাকা খাওয়ার হিসাব চূড়ান্ত করতে পারছেন না। যতক্ষণ পর্যন্ত টাকার হিসাব না মিলবে ততক্ষণ নিয়োগ আটকে রাখেন আমলারা।
মন্ত্রী-সচিবদের ধাক্কাধাক্কিতে একদিকে শূন্যপদ বাড়ছে। অন্যদিকে বেকারদের হাহাকার দীর্ঘতর হচ্ছে। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের একজন সাবেক শিক্ষার্থী জানান, অনেকে মনে করেন ইংরেজিতে পাস করলেই চাকরি পাওয়া যায়। আসলে তা নয়। মাস্টার্স করতে করতেই ২৭ বছর পার হওয়া ওই তরুণ বলেন, বিশ^বিদ্যালয় শেষ করে চেষ্টা করলে দুটো বিসিএস দেওয়া যায়। এছাড়া নন-ক্যাডার চাকরিই ভরসা। কিন্তু তিন বছরে কত আর দরখাস্ত করা যায়। দরখাস্ত করলেই লিখিত পরীক্ষা বা ইন্টারভিউ কার্ড আসে না। আবার অনেক সময় একদিনে পাঁচটি লিখিত পরীক্ষারও চিঠি এসেছে। আর ক্যাডার পদের সংখ্যা কম থাকায় এতে তীব্র প্রতিযোগিতা হয়। এসব কারণে বেসরকারি চাকরিই ভরসা। সেই বেসরকারি চাকরি করতেও ইদানিং ঘুষ দিতে হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন।
নিজে কিছু করছেন না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, যুব উন্নয়নে গিয়েছিলাম। তারা এক লাখ টাকা ঋণ দেবে। কিন্তু তারা সাপোর্ট হিসেবে জমির দলিল চায়। আমি জমির দলিল পাব কী করে। আমার বাবা বেঁচে থাকা অবস্থায় তো আমার নামে কোনো জমি হবে না।
বাংলাদেশ মধ্য ও উন্নত আয়ের দেশের দিকে যাচ্ছে। দেশে অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। এসব প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তারা বলছেন, দেশে উচ্চশিক্ষিত ছেলেমেয়ের অভাব নেই। কিন্তু সমস্যা হলো এই তরুণদের উপযুক্ত শিক্ষা নেই। ইংরেজি বা অন্য কোনো ভাষায়ও তারা দক্ষ নন। এই কারণে দেশীয় তরুণদের বাদ দিয়ে বিদেশিদের নিয়োগ দিতে হচ্ছে। এসব বিদেশি নাগরিক বছরে কয়েক বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যাচ্ছেন।
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ মো. ফিরোজ মিয়া দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সরকারের শূন্যপদ পূরণ করতে হলে ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নিতে হবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছাড়া এসব পদ পূরণ করা সম্ভব হবে না। কার বদনাম হবে বা কে টাকা ঘুষ নিচ্ছে এগুলো উপেক্ষা করে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। শুধু সিদ্ধান্তেই চলবে না নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তা না হলে বিপর্যয়ের সময় শুনতে হবে জনবল নেই। নারায়ণগঞ্জের হাশেম ফুডের কারখানায় দীর্ঘ সময় আগুন জ¦লছিল। এ আগুন দ্রুত নেভানো গেল না দক্ষ জনবলের অভাবে।
আগামী দিনগুলোতে আওয়ামী লীগকে কী করতে হবে সেটা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। দলের নবনির্বাচিত কমিটিকে সে অনুযায়ী কাজ করার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। এ অবস্থায় আগের কমিটির অধিকাংশ নেতাকে রেখেই নতুন যে কমিটি করা হয়েছে সেটা নিয়ে নানা আলোচনাও তৈরি হয়েছে। দলের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এই কমিটি কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে সেই অঙ্ক নিয়ে বসেছেন সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় ত্রিবার্ষিক সম্মেলন শেষ হয়েছে গত শনিবার। সভাপতি শেখ হাসিনা ও টানা তৃতীয়বার সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের ৪৮ নেতা নির্বাচন করেছেন দলের কাউন্সিলররা। সভাপতিমণ্ডলীর দুটি পদ, ৫টি সম্পাদকীয় পদ ও ২৮টি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্যের পদ এখনো শূন্য রয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের সম্মেলনে যেমন উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা থাকার কথা ছিল এবার শুরু থেকেই তাতে ঘাটতি দেখা গেছে। কারণ সম্মেলনে তেমন বড় পরিবর্তন হবে নাআগে থেকেই এই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তবু কেউ কেউ যেমন পদোন্নতির আশায় ছিলেন, তেমনি বাদ পড়ার আশঙ্কাও ছিল।
নেতা নির্বাচনের অধিবেশনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, সামনে নির্বাচনএ বিষয়টি মাথায় রেখে দলের নেতৃত্বে খুব বেশি পরিবর্তন চান না তিনি। নেতৃত্ব নির্বাচন শেষ হওয়ার পর দেখা গেছে সারা বছর যারা সক্রিয় থেকেছেন, এবারের সম্মেলনে পদোন্নতির আশায় ছিলেনতারা নিরাশ হয়েছেন। আবার আগামী নির্বাচনের স্বার্থে যে ধরনের কার্যকর নেতৃত্ব মনে মনে ভেবে রেখেছিলেন সেটা না হওয়ায়ও নিরাশ হয়েছেন নেতাকর্মীদের বড় একটি অংশ।
ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের বড় একটি অংশ এবারের সম্মেলনে তাদের মূল্যায়ন হবে আশা করেছিল, নেতা হতে না পারায় বড় ওই অংশটিও হতাশ হয়েছে। আবার টানা দুই-তিনবার একই পদে পড়ে থাকা নেতারাও পদোন্নতি না হওয়ায় অসন্তুষ্টিতে আছেন।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে পাঁচবার থাকা মাহাবুবউল আলম হানিফ ও ডা. দীপু মনিকে পেছনের দিকে রেখে এ পদের নেতাদের তালিকা ঘোষণা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। সভাপতি শেখ হাসিনা প্রথমে হাছান মাহমুদের নাম ঘোষণা করেন, এরপর হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম ও সর্বশেষ নাম ঘোষণা করেন দীপু মনির। সঙ্গে সঙ্গেই সম্মেলনস্থলে আলোচনার কেন্দ্র হয়ে ওঠেন হানিফ। উপস্থিত কাউন্সিলর-ডেলিগেটসহ সবার প্রশ্ন, ঘোষণা কী ভুল হলো? না হানিফ ও দীপু মনির পদাবনতি ঘটল? এরপর অনেকেই আওয়ামী লীগের ওয়েবসাইটে ঢু মারতে শুরু করেন। গতকাল এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বাইরে আর কোনো নাম নেই। ২০তম সম্মেলনের পরও এ পদ নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়। সেবারও প্রথম হানিফের নাম ঘোষণা করা হয়। দ্বিতীয় নাম ঘোষণা করা হয় জাহাঙ্গীর কবির নানকের। পরের দিন নানক গণভবনে গিয়ে তাকে এক নম্বর বানাতে সভাপতি শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করেন। এসময় তিনি রাজনীতিতে জ্যেষ্ঠতার কথা ও নিজের ত্যাগের কথা তুলে ধরেন, কিন্তু সংশোধন করা হয়নি।
অবশ্য গতকাল সকালে ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, যেভাবে ঘোষণা হয়েছে সেটাই থাকবে। এই নিয়ে কমিটির সংশ্লিষ্ট পদের নেতাসহ কয়েক নেতার কাছে জানতে চাইলে কোনো কথা বলতে রাজি হননি তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রসঙ্গটি নিয়ে কোনো কথা বলতে পারব না।’ তবে তিনি বলেন, দুয়েকদিন পর বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সম্পাদকীয় পদের এক নেতা দেশ রূপান্তরকে বলেন, অধিবেশন মঞ্চ থেকে যেভাবে ঘোষণা হয় সাধারণত ক্রমিক নম্বরও সেভাবেই থাকে। ঘোষণা অনুযায়ী থেকে থাকলে ৫ বারের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হানিফ ও দীপুর পদাবনতি ঘটেছে।
একাধিক সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, বিশেষ পরিকল্পনায় ক্রমিকে হাছান মাহমুদকে এগিয়ে এক নম্বরে আনা হয়েছে। আগামী বছর রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। সেখানে রাষ্ট্রপতি হিসেবে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে এগিয়ে রাখা হয়েছে। তেমন কিছু ঘটলে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়ার সম্ভাবনা হাছান মাহমুদের। এ ছাড়া আগামী সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তাকে এগিয়ে রাখার পরিকল্পনা থেকেও এটি হতে পারে। এবারও একই জটিলতায় পড়লেন হানিফ। এটি অনেক নেতাকর্মীর মধ্যে এক ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
সম্মেলন ও নতুন নেতা নির্বাচন প্রসঙ্গে ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নেত্রী (শেখ হাসিনা) যাকে নিয়ে দল পরিচালনা করবেন আমরাও তাকে চাই।’ আগামী নির্বাচনে জয় ছিনিয়ে আনা ও আন্দোলন মোকাবিলায় এই কমিটি কতটা উপযুক্ত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই উপযুক্ত।’
নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুভাষ বোস দেশ রূপান্তরকে বলেন, নতুন এই কমিটির সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, এরমধ্যে অন্যতম দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রাখাও চ্যালঞ্জ বলেন তিনি।
নতুন কমিটির চার চ্যালেঞ্জ
আওয়ামী লীগের নতুন নির্বাচিত কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে দলের নবনির্বাচিত সভাপতি শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন। গতকাল রবিবার নির্বাচিত নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গেলে এসব কথা বলেন তিনি।
সেখানে উপস্থিত থাকা একাধিক নেতা আওয়ামী লীগ সভাপতিকে উদ্ধৃত করে দেশ রূপান্তরকে বলেছেন, দলের মধ্যে যেখানে যে ছোটখাটো ভুলত্রুটি আছে তা মিটিয়ে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে বলেছেন তিনি।
নতুন কমিটির সামনে যে চারটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা তার মধ্যে প্রধান চ্যালেঞ্জটি হলো আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন।
দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ বিএনপির ধ্বংসাত্মক রাজনীতি, মিথ্যাচার-গুজব মোকাবিলা করা। তৃতীয় চ্যালেঞ্জ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিরূপ প্রভাব নিরসনে সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে সেগুলো মানুষের কাছে তুলে ধরা। শেষ চ্যালেঞ্জ দলের ঐক্য অটুট রাখা।
করোনা মহামারী প্রসঙ্গ তুলে শেখ হাসিনা নবনির্বাচিত নেতৃত্বকে বলেছেন, এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে সাবধান থাকতে হবে। কারণ করোনা আবার চোখ রাঙাচ্ছে। এ ছাড়া অপপ্রচারের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেছেন, পাড়া-মহল্লা পর্যন্ত সংগঠনের কার্যক্রম বিস্তার করতে হবে। যেসব জেলায় সংগঠনের দুর্বল অবস্থা সেখানে সবল করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্যোগ নিতে হবে। নির্বাচন পর্যন্ত সবাইকে ঘরে নয়, মাঠে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, গত শনিবারে সম্মেলনে সারা দেশ থেকে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি জানিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগের অবস্থান ভালো। এখন শুধু তাদের উজ্জীবিত রাখাই কেন্দ্রীয় নেতাদের একমাত্র কাজ।
জানতে চাইলে ফারুক খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, আমরা নির্বাচিতরা নেত্রীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গিয়েছি। এসময় তিনি ৪টি চ্যালেঞ্জ নতুন কমিটিকে মোকাবিলা করতে হবে জানিয়ে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।
বাম ঘরানার প্রভাব কমেছে
দেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগে বাম আদর্শের অনুসারী নেতারাও যোগ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগে তাদের একরকম আধিপত্যও ছিল। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সাংগঠনিক সম্পাদক, প্রচার সম্পাদক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদকসহ সম্পাদকম-লীর একাধিক পদে ছিলেন বাম ঘরানা থেকে আসা নেতারা। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর ধীরে ধীরে বাম আদর্শের নেতাদের সংখ্যা কমতে শুরু করে।
সর্বশেষ গত শনিবার দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলনে বিভিন্ন পদে নির্বাচিত ৪৮ নেতার মধ্যে বামপন্থা ছেড়ে আসা দুজন নেতা আছেন। তারা দুজনই সভাপতিম-লীতে আছেন। এ দুজন হলেন মতিয়া চৌধুরী ও শাজাহান খান। বাদ পড়েছেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ ও আবদুল মান্নান খান। তাদের দুজনকেই দলের উপদেষ্টা পরিষদে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
যদিও বাম আদর্শের বিভিন্ন দল নিয়ে ২০০৪ সালে ২৩ দফার ভিত্তিতে ১৪ দলীয় জোট গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। তৎকালীন ক্ষমতায় থাকা বিএনপির বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন শুরু করে আদর্শিক জোট ১৪ দল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন সময় সরকারেও ছিলেন বাম শরিকের নেতারা। বাদ পড়েন বর্তমান সরকারের সময়।
প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহ না করায় প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে আরটি-পিসিআর সংবলিত মডার্ন মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবটি কোনো কাজে আসছে না। বর্তমানে এটি হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের রেস্ট হাউজে পরিণত হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, গত কয়েক মাস ধরে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সুনির্মল রায় ভবনটিকে বাসস্থান হিসেবে ব্যবহার করছেন।
করোনা মহামারীর সময়ে করোনা রোগী শনাক্ত করার জন্য সরকার হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে পিসিআরসহ মাইক্রো বায়োলজি ল্যাব তৈরির জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। কিন্তু ৫ বছরেও শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের নিজস্ব ক্যাম্পাস না হওয়ায় শুরু থেকেই হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালের নতুন ভবনের ২টি ফ্লোর অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও অফিস হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। ফলে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের আইসোলেশন বিভাগটিতে ল্যাব স্থাপন করার জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কক্ষটি দিতে প্রথমে গড়িমসি শুরু করেন। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে দ্রুত সময়ে আইসোলেশন বিভাগ থেকে পুরনো মালামাল সরিয়ে নেওয়া হয়।
হবিগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগ ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে আইসোলেশন বিভাগে ৭টি এসি, নতুন টাইলস, সিলিং, পানি, বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে মডার্ন মাইক্রো বায়োলজি ল্যাব স্থাপনে উপযোগী করে দেয়। কাজ শেষ হওয়ার পর ল্যাবটি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক নাকি মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ গ্রহণ করবেন এ নিয়ে শুরু হয় ঠেলাঠেলি। নানা অজুহাত দেখিয়ে কেউ এর দায়িত্ব নিতে রাজি না হওয়ায় এভাবে প্রায় ৬ মাস পার হয়ে যায়।
অবশেষে গত ১১ এপ্রিল গণপূর্ত বিভাগ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসার ডা. সুনির্মল রায়ের কাছে ল্যাবটি হস্তান্তর করে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ল্যাবের একটি এসি রুমে চেয়ার, টেবিল, পালং, পর্দা, টেলিফোনসহ অন্যান্য সরঞ্জাম দিয়ে সুসজ্জিত করা হয়েছে।
বারান্দায় দাঁড়িয়ে ওই কক্ষে অবস্থানরত অধ্যক্ষ সুনির্মলকে সেখানে থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি উত্তর না দিয়ে দ্রুত বাথরুমে চলে যান। এ সময় তার সঙ্গে কলেজ থেকে আসা পিয়ন স্বাধীন সরকার ভবনের মূল গেটে তালা লাগিয়ে এ প্রতিনিধিকে নিয়ে বের হয়ে যান। স্বাধীন জানান, ‘স্যারের বাসা না থাকায় এখানে থাকেন।’
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় প্রতিনিধি আব্দুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, করোনা মহামারীর বিষয়টি চিন্তা করে ল্যাব উপযোগী করতে দিন-রাত কাজ করিয়েছি। দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য গণপূর্ত বিভাগ দৌড়ের ওপর রেখেছিল। দুঃখের বিষয় এখন তা রেস্টহাউজ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। এখনো কাজের বিল না পাওযায় প্রতিদিন অফিসে ধরনা দিচ্ছি।
এদিকে মেডিকেল কলেজের মাইক্রো বায়োলজি বিভাগের প্রধান ডা. কান্ত্রিপ্রিয় দাশের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘মেশিনপত্র কবে আসবে তা তারা জানেন না। ভবনটি খালি পড়ে থাকায় সেখানে অধ্যক্ষ সুনির্মল রায় আপাতত বসবাস করছেন। মেশিনপত্র এলে তিনি সরে যাবেন।’
দেশে বছরজুড়ে করোনা নিয়ন্ত্রণেই ছিল। বছরের শেষের দিকে সংক্রমণ সর্বনিম্নে এসে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ভারত ও চীনে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট রোগটি নিয়ে দেশে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ঠেকাতে আবার নতুন সতর্কতা দিয়েছে।
চলতি বছর ডেঙ্গুর সর্বোচ্চ প্রাদুর্ভাব দেখেছে মানুষ। ডেঙ্গুতে ২২ বছরের ইতিহাসে এ বছরই সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষ মারা গেছে। নতুন রোগ মাঙ্কিপক্স নিয়ে বেশ আতঙ্কে ছিল মানুষ। ডেঙ্গুও ভুগিয়েছে বেশ। সে হিসেবে এ বছর রোগ-শোক নিয়েই দিন কেটেছে মানুষের। স্বাস্থ্য বিভাগও ব্যস্ত ছিল এসব রোগ প্রতিরোধে, চিকিৎসাসেবায়।
অবশ্য স্বাস্থ্য খাতে বছরের বড় সাফল্য ছিল করোনার টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে। গত বছরের শেষের দিকে শুরু হওয়া করোনা টিকার বুস্টার বা তৃতীয় ডোজ কর্মসূচি এ বছর আরও গতি পায়। নতুন করে শুরু হয় ১২-১৭ বছর ও ৫-১১ বছর বয়সী শিশু-কিশোরদের প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ টিকাদান কর্মসূচি।
চলতি বছর স্বাস্থ্য খাতে নতুন কোনো পরিবর্তন আসেনি বলে মনে করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জনস্বাস্থ্য পরামর্শক কমিটির সদস্য ও জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. আবু জামিল ফয়সাল। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে একটা জিনিস পরিলক্ষিত হয়েছে যে আমরা সব সময় রি-অ্যাকটিভ, কোনো সময় প্রো-অ্যাকটিভ হতে পারলাম না; অর্থাৎ আমরা বুঝতে পারি সমস্যা আসছে, কিন্তু সমাধানে আগেভাগেই কোনো কাজ করতে পারি না। যখন সমস্যা আসে, তখন খুব প্রো-অ্যাকটিভ হই, হুড়োহুড়ি শুরু করি। ফলে শুরুর দিকে বেশ দুর্ভোগে পড়তে হয় মানুষকে, অনেক ক্ষতি হয়ে যায়।’
এই জনস্বাস্থ্যবিদ চলতি বছর স্বাস্থ্য খাতে দুটি সাফল্যের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কভিডকে ভালোভাবে মোকাবিলা করতে পেরেছি। আমাদের মৃত্যুর সংখ্যা ও গুরুতর অসুস্থতা কম হয়েছে। দ্বিতীয় সাফল্য টিকা। কভিড টিকার সাফল্য অনেক বেশি। তবে এই সফলতার মধ্যেও অনেক ব্যর্থতা আছে। তৃতীয় ডোজ ঠিকমতো দিতে পারছি না। এখন চতুর্থ ডোজের লোকই পাওয়া যাচ্ছে না।’
বছর শেষে করোনায় নতুন উদ্বেগ : ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়। এরপর এর প্রকোপ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। ২০২২ সালের শুরুর দিক থেকে কমে আসে সংক্রমণ। তবে দফায় দফায় সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ভীতির সৃষ্টি করে জনমনে। এ বছর জুন-জুলাইয়ে করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়লে চতুর্থ ঢেউয়ের আশঙ্কা করেন বিশেষজ্ঞরা। প্রতিবেশী দেশ ভারত, চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধিতে সে শঙ্কা আরও প্রবল হয়। বছরের শেষ দিকে এসে করোনা সংক্রমণের ধারা নিম্নমুখী হয়। কিন্তু এ মাসের শুরু থেকেই করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট নতুন করে উদ্বেগে ফেলেছে বাংলাদেশকে। ভারতে নতুন ভ্যারিয়েন্ট দেখা দেওয়ায় এবং চীনে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগ নতুন করে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
এ ব্যাপারে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা এবং সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে সংক্রমণ সর্বনিম্ন। টিকা নেওয়ার হার ভালো। অনেকে সংক্রমিত হয়ে গেছে। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, সারা বিশে^ ৯০ শতাংশ লোক হয় টিকা অথবা সংক্রমিত হয়ে করোনা প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করেছে। আমাদের দেশে সেই হার ৯৫ শতাংশ। সারা বিশে^র মধ্যে শুধু আফ্রিকার কয়েকটি দেশে টিকার অবস্থা ভালো নয়। বাংলাদেশে টিকার হার ভালো। কিন্তু নতুন ভ্যারিয়েন্ট যদি ছড়াতে থাকে, তাহলে সেটা আরও বেশি মিউটেশন বা পরিবর্তিত হয়ে আরও খারাপ হতে পারে। কাজেই সতর্ক থাকতে হবে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সাত দিন পর গতকাল করোনায় একজনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত করোনায় দেশে মোট মারা গেল ২৯ হাজার ৪৩৯ জন। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগী আরও কমে ছয়জনে ও শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ৪৪ শতাংশে নেমে এসেছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত হলো ২০ লাখ ৩৭ হাজার ২৪ জন।
সাফল্য করোনা টিকায় : চলতি বছর করোনা টিকা সংগ্রহ ও দেওয়ার ক্ষেত্রে সাফল্য দেখিয়েছে স্বাস্থ্য খাত। বিশে^ যে পাঁচটি দেশ প্রথম টিকার ব্যাপারে পরিকল্পনা করেছিল তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। টিকাদানের হারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম এবং বিশে^র মধ্যে পঞ্চম অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে।
টিকার সংকট কেটে যাওয়ায় গণটিকা ও বুস্টার ডোজ দেওয়ার নানা উদ্যোগ নেয় সরকার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গতকাল রবিবার পর্যন্ত মোট জনসংখ্যার ৮৭ শতাংশ টিকার প্রথম ডোজ, ৭৪ শতাংশ দ্বিতীয় ডোজ ও ৪৮ শতাংশ তৃতীয় ডোজ নিয়েছে। ২০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া টিকার চতুর্থ ডোজ নিয়েছে ৬৬ হাজার ২৩৯ জন।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘গত বছরের মতো এ বছরও আমাদের সবচেয়ে বড় সফলতা টিকা কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা কভিড নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি। কয়েক দফায় বিশেষ কর্মসূচি নেওয়ায় দ্বিতীয় ডোজের হার বেড়েছে। এখন তৃতীয় ও চতুর্থ ডোজ চলছে। করোনা কমে যাওয়ায় মানুষের টিকা নেওয়ার আগ্রহ কিছুটা কমেছে। কিন্তু করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকতে হলে টিকা নিতে হবে।’
মাঙ্কিপক্স নিয়ে আতঙ্ক : করোনার মধ্যেই নতুন রোগ মাঙ্কিপক্স আতঙ্ক দেখা দেয় দেশে। এ বছর আফ্রিকা, ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশে^র প্রায় ১২টি দেশে এ রোগের সংক্রমণ ঘটে। গত আগস্টে ভারতেও মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত রোগী শনাক্তের খবর পাওয়া যায়। এ নিয়ে বাংলাদেশেও ভীতিকর অবস্থা তৈরি হয়। সংক্রমণ এড়াতে সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেশের স্থল, বিমান ও নৌপথে সতর্কতা জারি করে। এর মধ্যে ঢাকায় চর্মরোগে আক্রান্ত একজন তুরস্কের নাগরিকের দেহে মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হয়েছে এমন খবরে হইচই পড়ে যায়। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ওই ব্যক্তি মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত রোগী নয় বলে জানায়। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশে মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব ঘটেনি।
ডেঙ্গুর সর্বোচ্চ প্রাদুর্ভাব : দেশে ডেঙ্গুর ২২ বছরের ইতিহাসে এবারই সর্বোচ্চ ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিল বাদে বছরের প্রায় পুরোটা সময়ই দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ ছিল। জুন থেকে ডেঙ্গুর প্রকোপ ভয়াবহ হয়ে ওঠে। সেপ্টেম্বরে ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকা ছাড়াও কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়ে। এ সময় দেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর শয্যা সংকট দেখা দেয়। আগের বছরগুলোতে সেপ্টেম্বরের শেষে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে এলেও এ বছর সেপ্টেম্বরের পর সংক্রমণ ছিল ঊর্ধ্বমুখী।
অতীতের যেকোনো বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু দেখেছে বাংলাদেশ। চলতি বছর এ পর্যন্ত মারা গেছে ২৭৬ জন, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল রবিবার পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৬২ হাজার ২১ জন। এর মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৩৯ হাজার ৫৬ এবং ঢাকার বাইরের ২২ হাজার ৯৬৫ জন।
ছিল অন্যান্য রোগের প্রকোপ : ব্যাকটেরিয়াজনিত ডায়রিয়ার প্রকোপও শঙ্কা ছড়িয়েছিল বছরের মার্চ ও এপ্রিলের দিকে। গরমের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মাঝে এই পানিবাহিত ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়তে থাকে। এ অবস্থা চলমান থাকে অক্টোবর পর্যন্ত। এতে রাজধানীর মহাখালী কলেরা হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীদের চাপ বাড়ে।
এ বছর দেশে অসংক্রামক রোগের প্রবণতাও বেড়েছে। হৃদরোগ, ক্যানসারসহ অনেক রোগের ব্যাপারে বছরজুড়ে সভা-সেমিনারে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
আওয়ামী লীগ নেতারা যা বলেন করেন তার উল্টোটা। কথা দিয়ে কথা না রাখাই তাদের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট। তাই আগামীদিনে বিএনপিকে নিজেদের সিদ্ধান্ত কর্মসূচি ঘোষণা ও বাস্তবায়ন করতে হবে। গতকাল রবিবার দেশ রূপান্তরকে এসব কথা বলেন বিএনপির একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পঞ্চগড়ে বিএনপির গণমিছিলে অংশ নিতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন যুবদল নেতা আরেফিন। তার মৃত্যু বিফলে যাবে না। জনগণ আগামীদিনে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটিয়ে শহীদদের আত্মার শান্তি ফিরিয়ে আনবেন।’
গত ১৩ ডিসেম্বর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্মেলনের মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপকমিটির প্রস্তুতি সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের দিন ঢাকায় বিএনপির গণমিছিলের ডাক দেওয়ার সমালোচনা করে বলেন, ঐদিন আমাদের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু বিএনপি গণমিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এটি উসকানি বা সংঘাত চাওয়ার শামিল। বিএনপি সেদিন গণমিছিল করতে চাইলে তাদের ঢাকার বাইরে করার পরামর্শও দেন ওবায়দুল কাদের।
পরে ১৭ ডিসেম্বর দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক আচরণ করতে চাই। এজন্য ১০ দফার আলোকে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পুনঃবিন্যাস করছি। আমরা ২৪ ডিসেম্বর ঢাকায় গণমিছিল করব না। ঢাকা বাদে সারাদেশে যে কর্মসূচি রয়েছে তা অব্যাহত থাকবে। ঢাকায় ২৪ তারিখের পরিবর্তে ৩০ তারিখ গণমিছিল করবে বিএনপি।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অনুরোধ আমরা কর্মসূচি পেছালাম, সৌজন্যতা দেখালাম। বিনিময়ে তারা পঞ্চগড়ে আমাদের লাশ উপহার দিয়েছে। এই হলো আওয়ামী লীগের চরিত্র।’
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অতীত অপকর্মের বিভিন্ন ঘটনার উল্লেখ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ইতিহাস কথা দিয়ে কথা না রাখার ইতিহাস। তারা যা বলে করে তার উল্টোটা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে কাজ করে স্বৈরাচারের স্টাইলে। উনি একাধিকবার বলেছেন, বিরোধী দলীয় কর্মসূচিতে বাধা না দেওয়ার জন্য। কিন্তু তার কথার কোনো বাস্তবায়ন হয়নি। গত ২২ আগস্ট ও ১২ অক্টোবরের কর্মসূচিতে বিএনপির ১৫ জন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলায়। এরপর গত ২৪ ডিসেম্বর সারাদেশে গণমিছিলের কর্মসূচি পালনকালে পঞ্চগড়ে পুলিশ গুলি করে যুবদল নেতা আরেফিনকে হত্যা করেছে।’
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনকে বলা হয় ‘লাশের সাক্ষ্য’। সেই প্রতিবেদনে প্রায়ই ভুল থাকছে। হত্যা হয়ে যাচ্ছে আত্মহত্যা বা দুর্ঘটনা। দেশের মর্গগুলোর আধুনিকায়ন না হওয়া, চিকিৎসকদের অদক্ষতা এবং মর্গে আসার আগেই মরদেহের আলামত নষ্ট হয়ে যাওয়া ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ভুলের অন্যতম কারণ। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য এরকমই।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেশের বেশিরভাগ মর্গে মরদেহের ভিসেরা বা বিভিন্ন নমুনা সংরক্ষণের আধুনিক সুবিধাসংবলিত জায়গা নেই। এসব ধারণের জন্য কনটেইনার, প্রিজারভেটিভ বা রাসায়নিকের সরবরাহও প্রয়োজনের তুলনায় কম। অনেক সময় প্রিজারভেটিভ না থাকলে লবণ পানির সাহায্যে মর্গে লাশ সংরক্ষণ করা হয় এবং হিস্টোপ্যাথলজিক্যাল ল্যাবে যেসব স্যাম্পল বা নমুনা পাঠানো হয়, সেসব ভালোমানের ফরমালিন দিয়ে সংরক্ষিত করে পাঠানো হয় না। ফলে আলামত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনেও ভুলের আশঙ্কা বাড়ে। কখনো চিকিৎসক প্রভাবিত হয়েও ভুল ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেন।
ময়নাতদন্তসংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা বলেন, আমাদের দেশে আধুনিক মর্গ ব্যবস্থাপনা নেই। তাছাড়া লাশ মর্গে আসার আগেই অনেক আলামত নষ্ট হয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে প্রথমে থানায় নেয়; তারপর থানা থেকে নেয় মেডিকেল কলেজে। এরপর অ্যাম্বুলেন্স, লেগুনা বা ট্রাকে বা ভ্যানে করে আনে মর্গে। এত আলামত নষ্ট হয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে। এসব কারণে ভুল ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আসে।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ময়নাতদন্তের ভুল প্রতিবেদনের প্রধান কারণ আধুনিক যন্ত্রপাতি ও আধুনিক মর্গের অভাব। দ্বিতীয় কারণ, লাশ যখন আমাদের কাছে আসে তখন আমরা সিন অব দ্য ক্রাইম (অপরাধের দৃশ্য) ভিজিট করি না। ফলে অনেক ইনফরমেশন ধরা পড়ে না। উন্নতবিশ্বে কোথাও অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে পুলিশ ওই স্থানকে হলুদ টেপ দিয়ে ঘিরে রাখে এবং সবার আগে ভিজিট করে একজন ফরেনসিক স্পেশালিস্ট। ওখান থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগৃহীত হয়ে মর্গে চলে আসে। মর্গে লাশ পাঠায় পুলিশ, পরে পোস্টমর্টেম করে সংগৃহীত তথ্য-উপাত্তের সঙ্গে মরদেহের ফাইন্ডিংস মিলিয়ে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। সেটাই সঠিক ও নির্ভরযোগ্য হয়। কিন্তু আমাদের দেশে এমন হয় না।’
ময়নাতদন্ত কী : খুন বা অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর ভুক্তভোগীর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানার জন্য একজন ফরেনসিক চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞ মরদেহের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন অঙ্গ বা অঙ্গবিশেষের গভীর নিরীক্ষণ করেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করে মন্তব্যসহ যে প্রতিবেদন দেওয়া হয় তাই পোস্টমর্টেম রিপোর্ট বা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন। তদন্তকারী কর্মকর্তা যদি মনে করেন, ময়নাতদন্ত হওয়া জরুরি, তখন মৃতদেহ সিভিল সার্জন বা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।
সম্প্রতি ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে আত্মহত্যা ও রেল দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর কথা উল্লেখ থাকা ২২টি মামলা তদন্ত করে পিবিআই জানায়, এগুলো ছিল পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। ওই মামলাগুলোতে পুলিশের অন্যান্য সংস্থা তদন্ত করে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল।
পিবিআইপ্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘হত্যা বা অপমৃত্যুর মামলার তদন্তে ময়নাতদন্তের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ভালো ময়নাতদন্ত মামলার রহস্য উদঘাটনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। অন্যদিকে ময়নাতদন্ত সঠিক না হলে তদন্ত ভিন্ন পথে মোড় নেয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তদন্তকারী কর্মকর্তাকে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছতে সাহায্য করে, ঘটনার রহস্য উদঘাটনে দারুণভাবে সহায়তা করে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিটফোর্ড বা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মর্গে ২০২১ সালে ৭৪০টি, ২০২২ সালে ৬০০টি ও চলতি বছর ১৫ মে পর্যন্ত ১৪৫টি মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। গত ১৫ মে দুপুরে সেখানকার মর্গে গিয়ে দেখা গেছে জরাজীর্ণ দশা। দুটি মরদেহ পড়ে আছে পোস্টমর্টেমের অপেক্ষায়। মর্গ সহকারী নাম প্রকাশ না করে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘মর্গের লাশ রাখার একমাত্র ফ্রিজটি তিন বছর ধরে নষ্ট। ময়নাতদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় মালামালের সংকট সবসময়ই থাকে। নেই আধুনিক কোনো সুবিধা। তিনজন মর্গ সহকারীই বছরের পর বছর চুক্তিভিত্তিতে কাজ করছেন।’
জানা গেছে, রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য মর্গের দশা একই।
ময়নাতদন্ত সম্পর্কিত সমস্যা নিয়ে পিবিআইয়ের এক প্রতিবেদনে দেশের মর্গসংশ্লিষ্টদের ফরেনসিক বিষয়ে আধুনিক ও বিশ্বমানের প্রশিক্ষণের অভাব, বিশেষজ্ঞ ফরেনসিক চিকিৎসকের তুলনায় লাশের সংখ্যা বেশি, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও হিমাগারসহ মানসম্মত অবকাঠামো না থাকাকে ভুল ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের জন্য দায়ী করা হয়েছে। এ ছাড়া মর্গ অ্যাসিস্ট্যান্ট বা ডোমের স্বল্পতা, জটিল ও চাঞ্চল্যকর মরদেহের ময়নাতদন্তের ক্ষেত্রে বোর্ড গঠন করে ময়নাতদন্ত না করা, আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা থাকায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ময়নাতদন্ত কাজে অংশ নিতে চান না বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ময়নাতদন্ত বিষয়ে পিবিআইয়ের প্রতিবেদন ও দেশ রূপান্তরের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বাংলাদেশের মর্গগুলোতে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ ও আলোর ব্যবস্থাসহ আধুনিক অবকাঠামো ও বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির ঘাটতি রয়েছে। অনেক জেলায় মর্গে বিদ্যুতের বিকল্প হিসেবে জেনারেটর নেই। অনেক জেলায় মর্গে পর্যাপ্ত দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল নেই। বংশ পরম্পরায় মর্গ অ্যাসিস্ট্যান্ট বা ডোমরা ময়নাতদন্তের সহযোগী হিসেবে কাজ করলেও তাদের কোনো মৌলিক প্রশিক্ষণ নেই। তাছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ ব্যস্ত মর্গগুলোতে মর্গ অ্যাসিস্ট্যান্টদের স্বল্পতা প্রকট। অনেক জায়গায় দেখা গেছে, লাশ সংরক্ষণের সুরক্ষিত পরিবেশ ও প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার অভাব। বিদেশি নাগরিক ও বিশেষ ক্ষেত্রে মরদেহ প্রচলিত নিয়মে হিমঘরে সংরক্ষণ করার প্রয়োজন পড়ে। অল্পসংখ্যক মর্গে কুলিং বা ফ্রিজিং বা মর্চুয়ারি কুলার সিস্টেম থাকলেও অধিকাংশ সময় নষ্ট থাকে বলে গরমের সময় লাশে দ্রুত পচন ধরে।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মৃত্যুর সম্ভাব্য সময়ের উল্লেখ থাকা জরুরি। মর্গে আধুনিক প্রযুক্তি না থাকায় অভিমত প্রদানে বিশেষজ্ঞদের সমস্যা হয়। পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ১ জুন রাজধানীর কলাবাগান থানা এলাকায় নিজ বাসা থেকে ডা. কাজী সাবিরা রহমান লিপির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি খুন হয়েছিলেন। মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে। খুনের ধরন মোটামুটি স্পষ্ট হলেও ঘটনার রহস্য উন্মোচনে খুনের ‘সম্ভাব্য সময়’ জানার জন্য পিবিআই ঢামেক ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকদের সুযোগ-সুবিধা কম হওয়ায় চিকিৎসা শিক্ষায় এ শাখাটি অবহেলিত এবং কম গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত। ফলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে বিশেষজ্ঞ ফরেনসিক ডাক্তারের স্বল্পতা রয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে আরেকটি উদাহরণ দেওয়া হয়েছে, সিএমএম আদালতের নির্দেশে ২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগরের লালমোহন থানা এলাকা থেকে কামাল মাঝির (৪৫) ৩৮ মাসের পুরনো মরদেহ তুলে ভোলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়। সেখানে কর্মরতদের কারও এ ধরনের মরদেহের ময়নাতদন্তের অভিজ্ঞতা না থাকায় মরদেহটি ভোলা থেকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে নেওয়া হয়। দায়িত্বরত প্রভাষক জানান, ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপকের পদে কেউ কর্মরত নেই। তিনি মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য অন্য কোনো মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে নেওয়ার অনুরোধ করেন। পিবিআই মরদেহটি বরিশাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সংশ্লিষ্ট বিভাগে নিয়ে যায়।
হত্যা কেন ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে আত্মহত্যা বা দুর্ঘটনা হিসেবে আসে জানতে চাইলে ফরেনসিক চিকিৎসকরা জানান, কাউকে হত্যা করে রেললাইনে ফেলে রাখলে তার ওপর দিয়ে ট্রেন গিয়ে একেবারে ক্ষতবিক্ষত হয়ে হাড়গোড় বেরিয়ে দলিত হয়ে যায়। একে চিকিৎসাশাস্ত্রে মিউটিলেডেট লাশ বলে। ওইসব লাশের আলামত বোঝা যায় না। আগের আলামত নষ্ট হয়ে নতুন আলামত তৈরি হয়। তখন রেল দুর্ঘটনাই মনে হয়। এতে অনেক সময় চিকিৎসকরা মিসগাইডেড হয়।
ফরেনসিক বিভাগে চিকিৎসকের সংকট বিষয়ে এক চিকিৎসক বলেন, ‘আমি ঢাকায়ে আছি, অথচ আমাকে কক্সবাজার বা পঞ্চগড় গিয়ে স্বাক্ষর দিতে হচ্ছে। বাইরে যাওয়ার, বিশেষ করে একা, বিপদ আছে অনেক, সংক্ষুব্ধ পক্ষ হামলা চালাতে পারে। এজন্য অনেক চিকিৎসক এ বিভাগে থাকতে চান না। এখানে সুবিধাও অনেক কম। মফস্বলে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসককে মিসগাইড করে, মিথ্যা তথ্য দিয়ে রিপোর্ট লেখানো হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রথম সেট ২৫ মিনিট, দ্বিতীয়টি ২৮ মিনিটে জিতলেন কার্লোস আলকারাজ। মনে হচ্ছিল কোয়ালিফায়ার ফ্যাভিও কোবোলিকে বুঝি উড়িয়েই দিচ্ছেন শীর্ষ বাছাই।
না, তৃতীয় সেটতে প্রতিরোধ গড়লেন ইতালিয়ান। সময় গড়ালো ঘন্টায়। শেষপর্যন্ত জয় এসেছে ৬৬ মিনিটে। ৬-০, ৬-২, ৭-৫ গেমে প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ জিতে রাফায়েল নাদালের উত্তরসুরি ক্লে কোর্টের সর্বোচ্চ আসর শুরু করলেন।
নাদালের চোটজনিত অনুপস্থিতিতে শীর্ষবাছাই আলকারাজ। ২০২১ এ তৃতীয় রাউন্ড, গতবার কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিয়েছিলেন। এবার আরো এগোলে সেমিফাইনালে নোভাক জকোভিচের সংগে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা।
সে দেখা যাবে। আপাতত দ্বিতীয় রাউন্ডে আলকারাজকে টপকাতে হবে জাপানের টি. দানিয়লেকে।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।
ফ্যাটি লিভার রোগটি এখন ঘরে ঘরে। প্রাথমিকভাবে এই রোগের লক্ষণ না বুঝতে পারলে, অনেক সমস্যাই দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকরা জানান, এই রোগ থেকে বাঁচতে জীবনধারায় বদল আনতে হবে।
কোন কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন? শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া, হঠাৎ ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়া, হলুদ রঙের দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব, ওজন অত্যন্ত বেড়ে যাওয়া, সারাক্ষণ ক্লান্তিভাব— এই উপসর্গগুলি ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ হতে পারে। অনেকের ধারণা, মদ্যপান করলেই এই রোগের ঝুঁকি বাড়ে। তবে কেবল মদ্যপান ছেড়ে দিলেই এই রোগের ঝুঁকি কমবে না। কম তেলমশলার খাবার খাওয়া, বাড়ির খাবারে অভ্যস্ত হওয়া, মদ ছেড়ে দেওয়া— এই অভ্যাসগুলিই লিভারকে ভাল রাখার অন্যতম উপায়। এই অসুখকে ঠেকিয়ে রাখতে ডায়েটের ওপর বিশেষ নজর দিতে হবে। তবে এগুলিই শেষ কথা নয়। লিভার ভাল রাখতে মেনে চলতে হয় আরও কিছু নিয়মকানুন। কিন্তু কী কী?
চিনির মাত্রা কমানো
সহজে রোগা হতে চেয়ে অনেকেই নিজের খুশি মতো ডায়েট প্ল্যান বানিয়ে নেন। চিনি বাদ দিয়ে দেদারে কৃত্রিম চিনির উপরেই ভরসা করেন। এতেই আসলে চরম ক্ষতি করছেন শরীরের। অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার অভ্যাস আমাদের লিভারের ব্যাপক ক্ষতি করে। ফ্রুকটোজ হোক কিংবা কৃত্রিম চিনি, লিভারের অসুখ ডেকে আনে।
ব্যথার ওষুধ কম খান
বেশকিছু বেদনানাশক ওষুধ লিভারের ক্ষতি করে। কিছু প্যারাসিটামল বা কোলেস্টেরলের ওষুধও লিভারের প্রভূত ক্ষতি করে। ঘুম না হলে অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঘুমের ওষুধ খেতে শুরু করেন। এই অভ্যাসের কারণে লিভারের জটিল রোগে ভুগতে হতে পারে।
পানি বেশি করে খান
শরীর থেকে যতটা দূষিত পদার্থ বার করে দিতে পারবেন, লিভার ততটাই সুস্থ থাকবে। তাই বেশি করে পানি খেতে হবে। তবেই প্রস্রাবের সঙ্গে শরীরের টক্সিন পদার্থগুলি বেরিয়ে যাবে। দিনে কয়েক বার গরম পানিতে পাতিলেবুর রস দিয়ে সেই পানি খান। ডায়েটে রাখুন টক দইয়ের মতো প্রোবায়োটিক।
পর্যাপ্ত ঘুম
সারাদিন কর্মব্যস্ততা আর রাত জেগে মোবাইলে চোখ রেখে সিনেমা দেখা— সব মিলিয়ে ঘুমের সঙ্গে আপস। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ঘুমের অভাব হলে তার প্রভাব পড়ে লিভারের উপরেও।
ওজন কমান
শুধু সুন্দর দেখানোর জন্যই নয়, লিভার সুরক্ষিত রাখতে চাইলেও কিন্তু ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। আমাদের শরীরে কার্বহাইড্রেট-প্রোটিন-ফ্যাটের সঠিক ভারসাম্য থাকা ভীষণ জরুরি। তবে ইদানিং বাড়ির খাবার নয়, বরং রেস্তোরাঁর খাবার, রেড মিট, বাইরের ভাজাভুজি, প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খেয়ে অভ্যস্ত। আর এর জেরেই শরীরে ট্রান্স ফ্যাটের মাত্রা বাড়ছে। লিভারের পক্ষে এই ফ্যাট মোটেই ভাল নয়।
আইপিএলের পঞ্চম শিরোপা জিততে চেন্নাই সুপার কিংসের চাই ১৫ ওভারে ১৭১ রান। আহমেদাবাদে রাত ১২.৪০ মিনিটে শুরু হবে খেলা। গুজরাট টাইট্যান্সের ২১৪ রানের জবাবে খেলতে নেমে ৩ বলে ৪ রান করার পর বৃ্স্টিতে বন্ধ হয় ফাইনাল। অর্থাৎ বাকি ১৪.৩ ওভারে আরো ১৬৭ রান চাই ধোনীর দলের।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।