
নতুন পে-স্কেল কিংবা মহার্ঘ ভাতা নয়, সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়বে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্ট অনুযায়ী। তাদের বেতন প্রতি বছর যতটা বাড়ার কথা এবার তার চেয়ে বেশি বাড়বে। আর তা চলতি বছরের মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে বাড়ানো হবে। অর্থাৎ আগামী অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়মিত ইনক্রিমেন্ট ৫ শতাংশের বাইরে বাড়ানো হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে পলিসি রিচার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর দেশ রূপান্তরকে বলেন, গত প্রায় এক বছর ধরে দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষ কষ্টে আছেন। সরকারি কর্মকর্তাদের বেশিরভাগের একমাত্র আয় বেতন-ভাতা। বৈশি^ক মন্দার কারণে সরকারও খানিকটা সংকটে আছে। এ পরিস্থিতিতে পে-স্কেল দেওয়ার মতো বড় ধরনের ব্যয় বাড়ানো সরকারের পক্ষে কঠিন হবে। ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হলে সরকারের ওপর চাপ বেশি হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে সরকারি কর্মরতদের খানিকটা স্বস্তি দিতে কোন খাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় এমন প্রস্তাব চাওয়া হয়। একই সঙ্গে বাজেটবিষয়ক বিভিন্ন বৈঠকে সরকারি নীতিনির্ধারকরাও এ বিষয়ে আলোচনা করেন। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যাচাই-বাছাই করে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার প্রস্তাব করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উপস্থাপন করে। চলতি মাসে গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী এ বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী ওই বৈঠকে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে কত বাড়তি ব্যয় হবে তা হিসাব করে পরের বৈঠকে উপস্থাপন করতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বড় ধরনের ব্যয় না বাড়িয়ে একটা উপায় বের করতেও বলেন। শেষ পর্যন্ত ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা চলতি মাসে প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে নিজেই জানিয়েছেন।
বর্তমানে সরকারি কর্মচারীরা ২০১৫ সালের বেতন কমিশন অনুযায়ী বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এ বেতন কমিশন প্রণীত হয়েছিল। এ কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, আর নতুন বেতন কমিশন গঠন করা হবে না। প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট বা বেতন বাড়ানো হবে। এ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী তা হয়ে আসছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি হিসাব অনুযায়ী, দেশে সরকারি কর্মচারী ১৪ লাখ। বিভিন্ন করপোরেশন এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নিয়ে হিসাব করলে প্রায় ২২ লাখ।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের বাজেটে নিয়মিত ইনক্রিমেন্টের বাইরে আরও কতটা বাড়ানো যায় তা হিসাব করে নির্ধারণ করা হবে। এ কাজ করতে বাজেট প্রস্তাব পেশ করার পর আলাদা কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটি মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে যাচাই-বাছাই শেষে ইনক্রিমেন্টের হার সুপারিশ করবে। এ ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে বিদ্যমান ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের সঙ্গে প্রতি মাসে বেতন বাড়ানো হবে, নাকি গড় মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে ইনক্রিমেন্টের হার বাড়ানো হবে, তা খতিয়ে দেখা হবে। ২০তম গ্রেড থেকে প্রথম গ্রেড পর্যন্ত সবার জন্য একই হারে বেতন বাড়নো হবে কি না, তা আরও খতিয়ে দেখা হবে। চূড়ান্ত হিসাব অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষে প্রকাশ করা হবে। যে তারিখেই প্রকাশ করা হোক না কেন, আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকরী ধরা হবে।
এখানে মহার্ঘ ভাতা ১০ শতাংশ দেওয়া হলে এ হিসাবে ৪ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। ১৫ শতাংশ দেওয়া হলে ৬ হাজার কোটি এবং ২০ শতাংশ দেওয়া হলে ৮ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। অর্থাৎ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে আগামী অর্থবছরে সরকারের ব্যয় বাড়বে। আর এতে সরকার ব্যয় কমিয়েও সরকারি কর্মকর্তাদের সন্তুষ্টিতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো পথে হেঁটেছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতা বাবদ রাখা হয়েছে ছিল ৭৪ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। খরচ না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ১ হাজার ৯৩ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা বাজেট হওয়ার কথা আছে। এ বাজেট সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতার জন্য বরাদ্দ ৭৭ হাজার কোটি টাকা রাখা হতে পারে। সরকারি কর্মকর্তাদের অনেক পদ এখনো খালি আছে। এতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো হলেও সরকারের ব্যয়ে বড় ধরনের চাপ বাড়বে না।
পাহাড় কাটার সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছর কারাদন্ড। দেশের পরিবেশ আইনে এ কথা বলা আছে। বাস্তবে শাস্তি সর্বনিম্ন জরিমানাতে সীমাবদ্ধ। পাহাড় কেটে আবাসন বা বিভিন্ন স্থাপনা তৈরির জন্য কিছু সাধারণ মানুষ জরিমানা গুনেছে।
পাহাড় কাটা নিষিদ্ধ। বিষয়টা শুধু নথিতেই আছে। বাস্তবে সরকারিই উদ্যোগী হয়েছে পাহাড় কাটতে। পাহাড় কেটে আবাসিক প্লট তৈরির প্রকল্প নিয়েছে সরকার। সরকার নিজেই যখন আইন ভাঙছে, তখন কার কী বলার আছে!
দীর্ঘদিন পরিবেশ অধিদপ্তর প্রকল্পের ছাড়পত্র দেয়নি। সম্প্রতি ‘বিশেষ ইশারায়’ কৌশলী ছাড়পত্র দিয়েছে। পরিবেশবাদীরা বলছেন, পাহাড় কেটে এমন প্রকল্প হলে ইকোসিস্টেম ধ্বংস হবে। তবে উদ্যোগী মন্ত্রণালয় বলছে, পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন নিয়েই তারা প্রকল্প বাস্তবায়নে মনোযোগী হয়েছে।
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার পাহাড়ি এলাকায় এ আবাসন প্রকল্প নিয়েছে সরকার। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের অধীনে বাস্তবায়নাধীন ‘চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় সাইট অ্যান্ড সার্ভিসেস আবাসিক প্লট উন্নয়ন প্রকল্প’ প্রকল্পটি অনুমোদিত হয় ২০২০ সালের মার্চে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না পাওয়ায় প্রকল্পটির কাজ এখনো শুরু করা যায়নি। এ অবস্থাতেই একবার ব্যয় না বাড়িয়ে সংশোধন করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল চলতি বছর জুন পর্যন্ত, সে মেয়াদও শেষ হতে চলেছে। কোনো কাজ হয়নি। নতুন করে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে।
জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় পরিবেশ অধিদপ্তর ছাড়পত্র দিতে চায়নি। গত ফেব্রুয়ারিতে ‘ছাড়পত্র’ পাওয়ার পর কোনো ব্যয় না বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর অনুমোদন চাওয়া হয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে।
প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদনের পর এটির মূল্যায়ন করে বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। আইএমইডি বলেছে, প্রকল্প বাস্তবে রূপ দিতে হলে পাহাড় কাটতে হবে। মাঠপর্যায়ের তথ্যের ভিত্তিতে প্রাকৃতিক পরিবেশ বিবেচনায় নিয়ে প্রকল্পটির ব্যয় না বাড়িয়ে সময় বাড়ানো ঠিক হবে না বলে মনে করে সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে আইএমইডি বলেছে, প্রকল্প এলাকার অনেক ছোট পাহাড় ও প্রাকৃতিক জলাধার পরিবর্তনে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। প্রকল্প এলাকার প্রায় ৭০ শতাংশ জায়গায় ছোট পাহাড় এবং ৩০ শতাংশ জায়গায় প্রাকৃতিক জলাধার রয়েছে। জলাধারের পাশেই কৃষিজমি। ছোট ছোট পাহাড়ে প্রচুর কলাগাছ রয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক মো. নিজাম উদ্দিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘টিলা পুরো কাটা হবে না, লেভেল মেইনটেইন করে যেসব টিলা নরমাল সেগুলোকে নিয়ে ১৬ একর জমিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকল্প এলাকার মধ্য দিয়ে ১৩২ কিলোভোল্টের ন্যাশনাল গ্রিড লাইন যাওয়ায় ভবনসহ স্থাপনাদি যথেষ্ট ঝুঁকিতে পড়ে যাবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে গেলে পাহাড় কাটতেই হবে। সে কথা চিন্তা করেই ছাড়পত্র দিতে দেরি করেছিল পরিবেশ অধিদপ্তর। তবে ‘বিশেষ ব্যক্তির’ প্রভাবে ছাড়পত্র দিতে বাধ্য হয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রকল্পসংশ্লিষ্ট একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ইতিমধ্যে স্থানীয় প্রভাবশালীরা প্লটের ভাগ-ভাটোয়ারা সেরে ফেলেছে। প্রভাবশালী এক সরকারি নেতার কথায় “ছাড়পত্র” দিতে বাধ্য হয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।’
পরিবেশবাদীরা বলছে, পাহাড় কাটা হলে ইকোসিস্টেম নষ্ট হয়। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘কোনোভাবে ইকোসিস্টেম ঠিক রাখা যায় কি না, সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। প্রাকৃতিকভাবে যেখানে মরুভূমি থাকে সেখানে মরুভূমিই থাকা উচিত, যেখানে পাহাড় আছে সেখানে পাহাড়ই থাকতে হবে। প্রত্যেকটিরই আলাদা বিশেষত্ব আছে।’ তিনি বলেন, ‘যেখানে পাহাড় থাকে সেখানে গাছ থাকবে, জলাধার থাকবে। পশুপাখি সেখানকার খাবারের ওপর নির্ভরশীল। গাছ কাটা হলে তারা তাদের বাসস্থান হারাবে। আমাদের প্রকল্পগুলোতে সিস্টেমেটিক গলদ আছে। যার ফলে এ ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।’
পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রে বলা হয়েছে, এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট (ইআইএ) প্রতিবেদনে দাখিলকৃত লে-আউট প্ল্যান অনুযায়ী খেলার মাঠ, পার্ক, রাস্তা, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা, সবুজায়ন, রিটেনশন পন্ড প্রভৃতির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রকল্প এলাকায় অবকাঠামোর উন্নয়ন চলাকালে প্রয়োজনীয় নিরাপদ বেষ্টনী গড়ে তুলতে হবে। প্রকল্পের চারদিক অস্থায়ী প্রাচীর তৈরি করতে হবে।
স্বল্প ও মধ্যম আয়ের লোকদের আবাসিক সমস্যা সমাধানের জন্য দীর্ঘমেয়াদি কিস্তিতে ৪১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি হাতে নিয়েছিল গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ। পরিকল্পিত উপায়ে অল্প জমির ওপর সর্বাধিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত অত্যাধুনিক প্লট তৈরি করার কথা তাদের।
প্রকল্প এলাকায় যে পাহাড় আছে সেটি প্রমাণিত হয় পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের অনাপত্তি পত্রে। কৌশলে অনাপত্তি জানিয়েছে সংস্থাটি। তারা বলেছে, পিজিসিবির সঞ্চালন লাইনের টাওয়ার যে পাহাড়ে অবস্থিত সে পাহাড় থেকে মাটি কাটা যাবে না। পিজিসিবির টাওয়ারের পাদদেশে অতিরিক্ত মাটি ফেলা যাবে না। টাওয়ার ও লাইন পরিদর্শনের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘পিজিসিবির টাওয়ার থেকে নিরাপদ দূরত্বেই আবাসন প্রকল্পটি করা হবে।’
কেন পাহাড় কাটার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ফেরদৌস আনোয়ার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পাহাড় কাটা হবে না, এ বিবেচনায় তাদের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’ যদি পাহাড় কাটত তখন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পাহাড় কাটার প্রয়োজন হবে কি না সেটি ভালো বলতে পারবে প্রকৌশলীরা। তবে পাহাড় না কেটেও হাউজিং করতে পারবে তারা। তারা পরিকল্পনা দেবে, যদি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয় তাহলে সরকার অনুমোদন দেবে। সেটাই নীতিমালায় বলা আছে।’
পরিবেশ-বিধ্বংসী এমন প্রকল্প কেন নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সচিব এমদাদ উল্লাহ মিয়ান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পরিবেশ ছাড়পত্র দিয়ে থাকলে তারা কেন দিয়েছে তারাই ভালো জানে। আবাসন প্রকল্পে মিনিমাম ক্রাইটেরিয়া মেনে চলা হয়। পরিবেশের ক্ষতি করে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করা ঠিক হবে না।’
প্রকল্পে সময় বাড়ানোর যৌক্তিকতা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে ভূমি বরাদ্দ কমিটির সভায় শর্ত সাপেক্ষে ভূমি বরাদ্দের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। জেলা প্রশাসকের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ দশমিক ১৯ একরের পরিবর্তে ১৪ দশমিক ১৯ একর জমির সংশোধিত আয়তন অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। চলতি বছর ৬ ফেব্রুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তর ও পিজিসিবির ছাড়পত্র এবং নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সুপারিশ গ্রহণ করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর শর্ত সাপেক্ষে ছাড়পত্র দিয়েছে। নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও শর্ত সাপেক্ষে ছাড়পত্র দিয়েছে।
আইএমইডি বলছে, প্রকল্পটি অনুমোদনের পর দ্বিতীয় সংশোধনীর জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। পাহাড়ের মাটি কাটতে হবে, এজন্য এতদিন পরিবেশ অধিদপ্তর ছাড়পত্র দেয়নি। এতদিনে ১ শতাংশ কাজও হয়নি। এর আগে ব্যয় না বাড়িয়ে একবার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আরডিপিপি মোতাবেক ২০২৩ সালের জুনে প্রকল্পটি সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত আছে। প্রায় তিন বছর অতিক্রান্ত হলেও প্রকল্পের কোনো ভৌত ও আর্থিক অগ্রগতি নেই। জমিই এখন পর্যন্ত অধিগ্রহণ করা হয়নি। মৌজার দর অনেক বেড়েছে। কাজেই পুরনো রেট শিডিউল দিয়ে ব্যয় না বাড়িয়ে মেয়াদ বাড়ালে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে এমনটা ভাবা ঠিক হবে না। ঠিকাদার আগ্রহী হবে না।
কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের তালিকা চূড়ান্ত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। ইতিমধ্যে দেশি পর্যবেক্ষকদের খসড়া তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে, তবে বিদেশিরা এখনো আগ্রহ দেখায়নি। দেশি পর্যবেক্ষকদের খসড়া তালিকা নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে রয়েছে। যাচাই শেষে যেকোনো সময় পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।
ইসির সংশ্লিষ্ট দপ্তর বলছে, সাধারণত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিদেশি পর্যবেক্ষকরা পর্যবেক্ষণে আসার প্রক্রিয়া শুরু করে। অবশ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা সেরেছে। তবে ইইউ পর্র্যবেক্ষক পাঠাবে কি না তা নির্ভর করছে অগ্রগতি দলের মূল্যায়ন প্রতিবেদনের ওপর। জুলাই মাসে ওই দল ঢাকায় আসতে পারে।
কমনওয়েলথ থেকে পর্যবেক্ষক পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র থেকে পর্যবেক্ষক পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছেন।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পরবর্তী ইসি বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে। দ্রুত গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সুযোগ রয়েছে।’
ইসির গণসংযোগ অধিশাখার সহকারী পরিচালক মো. আসাদুল হক জানান, ‘এ বিষয়ে কাজ চলছে। কমিশন এখনো গণবিজ্ঞপ্তির সিদ্ধান্ত দেয়নি। দিলেই তা প্রকাশ করা হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিদেশি পর্যবেক্ষকরা সাধারণত তফসিল ঘোষণার পর যোগাযোগ করে। পর্যবেক্ষক হতে আগ্রহীরা ইসির গাইডলাইন মেনে আবেদন করে। ইসি তা স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। প্রক্রিয়া শেষে পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসে। এখন পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়া বিদেশি কোনো সংস্থা আবেদন করেনি।’
ইসি-সূত্র বলছে, ‘বর্তমানে ১১৮টি সংস্থা নিবন্ধিত রয়েছে। এদের মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের ১১ জুলাই। নতুন করে নিবন্ধনের জন্য আবেদন আহ্বান করা হয়েছিল চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ১৯৯টি দেশি সংস্থা আবেদন করেছে। আর নির্ধারিত সময়ের পর ১১টি সংস্থা আবেদন করেছে। সেগুলো আমলে নেওয়া হয়নি। নতুন করে যারা আবেদন করেছে তাদের মধ্যে ৪০টি সংস্থার নিবন্ধন রয়েছে। বাকি ১৫৯টি সংস্থা সম্পূর্ণ নতুন। অধিকাংশই স্থানীয় পর্যায়ের সংস্থা। বর্তমানে যেসব সংস্থা নিবন্ধিত তাদের অধিকাংশই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে না। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছে ৬১টি সংস্থা। নিবন্ধন নিয়েও যারা পর্যবেক্ষণ করে না, তাদের নিবন্ধন না দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।’
ইসির আইন শাখার যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্যের নিবন্ধন আবেদন যাচাই-বাছাই কমিটি গত ৯ মার্চ বৈঠক করেছে। ৫টি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের কারণে ওই বৈঠকের পর কাজ এগিয়েছে ঢিলেতালে। ঈদুল ফিতরের পর যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়। তা এখন নথিভুক্ত হয়ে আছে। কমিশন সিদ্ধান্ত দিলে প্রাথমিক বাছাইয়ে যাদের আবেদন টিকবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আপত্তি আছে কি না জানতে পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। কোনো সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে কমিশন উভয় পক্ষকে ডেকে তাদের কথা শুনবে।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর বলছে, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আবেদনকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ (জানিপপ), ফেমা, আদর্শ পল্লী উন্নয়ন সংস্থা (আপউস), মুভ ফাউন্ডেশন, অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অব বাংলাদেশ, হিউম্যান রাইটস ডিজ-অ্যাবিলিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, পিপলস ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশন (পপি), জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার, উত্তরণ, ডেমোক্রেসিওয়াচ ও প্রিপ ট্রাস্ট।
নবম সংসদ নির্বাচনের আগে প্রথমবারের মতো পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন চালু হয়। প্রথমে এক বছর মেয়াদ নির্ধারণ করা হলেও পরে পাঁচ বছর করে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। ২০০৮ সালে ১৩৮টি প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধন দেয় এটিএম শামসুল হুদা কমিশন। ২০১১ সালে নিবন্ধন দেওয়া হয় ১২০টি প্রতিষ্ঠানকে। এগুলোর নিবন্ধনের মেয়াদ ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে শেষ হওয়ার পর কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ কমিশন তা আরও এক বছর বাড়ায়। নবম সংসদ নির্বাচনে দেশি ৭৫ প্রতিষ্ঠান ভোট পর্যবেক্ষণ করে। দশম সংসদে দেশি পর্যবেক্ষক কমে ৩৫ হয়। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে আবেদন করে ১৯৯টি প্রতিষ্ঠান; কমিশন ১১৯টি প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য নিবন্ধন দিয়েছিল।
দেশি সংস্থার পাশাপাশি বিদেশি সংস্থাকেও অনুমতি দিয়ে থাকে ইসি। এবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়া আর কোনো বিদেশি সংস্থা এখনো আবেদন করেনি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ইতিমধ্যে সিইসির সঙ্গে তিন দফা সাক্ষাৎ করেছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইইউ পর্যবেক্ষক পাঠায়নি। গত ১৮ জানুয়ারি সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে বৈঠক শেষে ইইউ প্রতিনিধিদলের প্রধান চার্লস হোয়াইটলি বলেন, তারা পর্যবেক্ষক পাঠাতে চায়। নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে ইতিবাচক।
জানা গেছে, পর্যবেক্ষক পাঠানোর আগে জুলাই মাসে মাঠপর্যায়ে নির্বাচন-পূর্ব পরিস্থিতি দেখতে একটি প্রতিনিধিদল পাঠাবে ইইউ। তারা সব রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যমকর্মীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করবে। ফিরে গিয়ে ইইউর হাই-রিপ্রেজেনটেটিভ জোসেফ বোরেলের কাছে মূল্যায়ন প্রতিবেদন দেবে। ওই প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইইউ পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি না। গত ৭ মে লন্ডনে ক্লারিজ’স হোটেলে কমনওয়েলথের মহাসচিব ব্যারোনেস প্যাট্রিসিয়া সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে পর্যবেক্ষক পাঠাতে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে সাম্প্রতিক বৈঠক সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ওয়াশিংটনকে নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর অনুরোধ করেছেন।
ইসি-সূত্র বলেছে, ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে ৫৯৩ জন বিদেশি এবং ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৩ জন দেশি পর্যবেক্ষক ছিল। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে মাত্র ৪ জন বিদেশি এবং স্থানীয় ৩৫টি সংস্থার ৮ হাজার ৮৭৪ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করেন। একাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে ৮১টি দেশি প্রতিষ্ঠানের ২৫ হাজার ৯০০ জন প্রতিনিধি। এ ছাড়া ৩৮ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক, বিভিন্ন বিদেশি মিশনের ৬৪ কর্মকর্তা এবং দূতাবাস ও বিদেশি সংস্থায় কর্মরত ৬১ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করেন।
চলতি বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের প্রচারণা শেষ হচ্ছে আজ মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে। শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। নির্বাচনে দেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি অংশগ্রহণ না করায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজমতউল্লা খান কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছে বলে মনে করছেন অনেকে। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন তার জন্য ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারেন। এদিকে প্রচারণায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এ স্বতন্ত্র প্রার্থীর। গত রবিবার বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের কাছে লেখা এক চিঠিতে তিনি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ এবং অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনে সেনাবাহিনী মোতায়েন ও প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
গাজীপুর সিটিতে ভোটের মাঠে কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে সরকারদলীয় সমর্থিত প্রার্থীর সংখ্যাই বেশি। প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই আওয়ামী লীগ সমর্থক একাধিক প্রার্থী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৫৭টি ওয়ার্ডে বিএনপির ২৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও সম্প্রতি তাদের দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তারপরও নির্বাচনী মাঠে তারা থেকে যাচ্ছেন। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির এক নেতা কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতও হয়েছেন। তবে মেয়র প্রার্থীদের নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণায় বাধা ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে রয়েছে নানা অভিযোগ।
আজমত উল্লা খান আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ায় দলের জনপ্রিয়তা, ব্যক্তি আজমত উল্লার জনপ্রিয়তা ও সরকারি দলের প্রার্থী হিসেবে পরিচিতি বেশি থাকায় তিনি প্রচার-প্রচারণায় অনেক এগিয়ে আছেন। ভোটের মাঠে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের কাজে লাগিয়ে ভোটের ফসল ঘরে তোলার অপেক্ষায় আছেন। গত রবিবার তিনি ২৮ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা দিয়ে গাজীপুরকে স্মার্ট ও দুর্নীতিমুক্ত নগরী হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। অন্যদিকে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন টেবিল ঘড়ি প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ভোটের মাঠে ব্যাপক জনসমর্থন পাচ্ছেন। তিনি মূলত তার ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের জনপ্রিয়তা ও জনসমর্থনে নির্বাচনী মাঠে আজমত উল্লা খানের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
গাজীপুর মহানগরীর বিভিন্ন এলাকার ভোটারদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, ৯ মে থেকে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শুরু হলে আজমত উল্লা খান প্রচরণায় অনেকটা পেছনে ছিলেন। ক্রমেই তার জনপ্রিয়তা বাড়ছে। তিনি নেতা হিসেবে অনেক বড় নেতা হলেও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল কম। তাছাড়া মিডিয়ার সঙ্গে ছিল তার দূরত্ব সবসময়।
জায়েদা খাতুনের যত অভিযোগ : টেবিল ঘড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় বের হলে টঙ্গীতে চারবার তার ওপর হামলা করা হয়েছে। গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে, কয়েকটি নির্বাচনে তার এজেন্টদের পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। তাদের কর্মী-সমর্থকদের ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ধরে নিয়ে বিভিন্ন জেলায় রাখলেও তাদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। নিখোঁজদের পরিবার-পরিজনের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। তার প্রচারণায় একাধিকবার গাড়ি থামিয়ে জরিমানা করা হয়েছে। কর্মীদের মারধর, নির্যাতন ও প্রতিনিয়িত হুমকি প্রদান করা হচ্ছে। টেবিল ঘড়ি প্রতীকের কর্মীদের প্রচারণায় বাধা ও ভোটকেন্দ্রে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে।
গাজী আতাউর রহমানের পক্ষে অভিযোগ : নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান। তার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট এমএ হানিফ সরকার রিটার্নিং অফিসারের কাছে গতকাল দুপুরে একটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
টঙ্গীর ভোটে ভাগ বসাবেন রনি : গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। এর মধ্যে টঙ্গীতে ১৫টি ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯০০ এবং সাবেক গাজীপুর পৌরসভাসহ সাবেক ছয়টি ইউনিয়ন বাসন, কোনাবাড়ী, কাশিমপুর, কাউলতিয়া, পুবাইল ও গাছায় মোট ভোটার সংখ্যা ৮ লাখ ১৮ হাজার ৫৭৬ জন। আঞ্চলিকতার কারণে বিশাল এ ভোটের ব্যবধানের প্রভাব বিগত সংসদ নির্বাচন ও সিটি নির্বাচনেও পড়তে দেখা গেছে। এ ছাড়া টঙ্গী থেকে বিএনপি নেতা কারাবন্দি নুরুল ইসলাম সরকারের ছেলে সরকার শাহনুর ইসলাম রনি হাতি প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি টঙ্গী এলাকার বিশাল একটি অংশ তার বাক্সে ভরবেন বলে সাধারণ মানুষ ও ভোটারদের ধারণা।
২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হবে। নির্বাচনে ৪৮০ প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ৩ হাজার ৪৯৭ সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এবং ৬ হাজার ৯৯৪ পোলিং কর্মকর্তাসহ ১০ হাজার ৯৭১ জন ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তা থাকবেন।
প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী : গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে আগামী বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। ইতিমধ্যে নির্বাচনে সার্বিক প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্বাচনে প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার ও এজেন্টদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচন উপলক্ষে এলাকায় বৃহস্পতিবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। গত রবিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সোনিয়া হাসান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ জারি করা হয়।
রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্র জানায়, নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা বিধানকল্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হবে। এজন্য গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অস্ত্রসহ একজন এসআই অথবা এএসআই ও চারজন কনস্টেবল, অস্ত্রসহ একজন আনসার, একজন অস্ত্রসহ এপিসি, লাঠিসহ চারজন মহিলা ও ছয়জন পুরুষ আনসার-ভিডিপি সদস্যসহ ১৭ জন মোতায়েন থাকবে। আর সাধারণ কেন্দ্রগুলোতে অস্ত্রসহ একজন এসআই অথবা এএসআই ও তিনজন কনস্টেবল, অস্ত্রসহ একজন আনসার, একজন অস্ত্রসহ এপিসি, লাঠিসহ চারজন মহিলা ও ছয়জন পুরুষ আনসার-ভিডিপি সদস্যসহ ১৬ জন মোতায়েন থাকবে।
দেশে বর্তমানে ১৫ কোটি কেজি বস্ত্র বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। এসব বস্ত্র বর্জ্য রিসাইকেল বা পুনঃব্যবহার উপযোগী করার ক্ষেত্রে শুল্ককর দিতে হয়। বাজেটে এই শুল্ককর প্রত্যাহার করা হলে তুলা আমদানি ১৫ শতাংশ কমানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী।
আগামী অর্থবছরে বৈশি্বক মন্দার মধ্যে টিকে থাকতে কেমন বাজেট প্রয়োজন এমন প্রশ্নের উত্তরে ব্যবসা খাতের এই নেতা এসব কথা বলেন।
মোহাম্মদ আলী বলেন, রিসাইকেল ফাইবার, ম্যান মেইড ফাইবারসহ সব ধরনের আমদানি পর্যায়ে যাবতীয় শুল্ক, মূসক ব্যতীত আমদানির সুযোগ, সব ধরনের পাওয়ার লুমে উৎপাদিত কৃত্রিম আঁশের সুতার তৈরি ফেব্রিকসের ওপর মূসক অব্যাহতি দেওয়া প্রয়োজন।
ব্যবসায়ী এই নেতা বলেন, বর্তমানে সুতা তৈরির জন্য ক্রেতা বা আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো তাদের তৈরি পোশাকসামগ্রী কী ধরনের ফাইবারের দ্বারা প্রস্তুত করতে হবে তা নির্ধারণ করে দেয়। স্পিনিং মিলগুলো সুতা তৈরির জন্য বিভিন্ন ধরনের ফাইবার আমদানি করে থাকে। এসব ফাইবারের ওপর উচ্চহারে রাজস্ব ধার্য আছে। বৈশি^ক মন্দার কারণে আগে যে দামে কেনা যেত, এখন তার চেয়ে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ফলে সুতা তৈরিতে খরচ বেড়েছে। এতে সামগ্রিকভাবে উৎপাদন খরচও বেড়েছে। এ বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে আগামী বাজেটেই পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
সভাপতি আরও বলেন, ‘বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচকে বাংলাদেশের শিল্প খাতের অবস্থানকে দৃঢ় করতে ব্যবসায়িক খরচ (কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস) কমিয়ে এনে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বিনিয়োগ সুরক্ষা, বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি, সুষম বিনিয়োগ সহায়ক মুদ্রা ও শুল্ক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা, শিপিং খরচসহ সব ধরনের পরিবহন খরচ হ্রাস, বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি বলে মনে করছি।’ উৎপাদন এবং আয় বাড়াতে সব রপ্তানি এবং শিল্প খাতে করমুক্ত রেয়াতি হারে বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস সরবরাহ করতে হবে। জমি কেনা, ভবন নির্মাণ এবং শিল্প ও সেবা খাতের ইউটিলিটি বিলসহ সব উৎপাদনশীল খাতে প্রদেয় যাবতীয় প্রশাসনিক সেবা পরোক্ষ করমুক্ত রাখার দাবি করেছেন ব্যবসা খাতের এই শীর্ষ নেতা।
উৎসে করে ছাড়ের জোরালো দাবি জানিয়ে বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, আগামী বাজেটে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের সিদ্ধান্ত বহাল রাখতে হবে। একই সঙ্গে কারখানা নির্মাণ, সৌরবিদ্যুৎ, বর্জ্য শোধনাগার নির্মাণের যন্ত্রপাতিতে বিশেষ সুবিধা দেওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘গ্যাস-বিদ্যুতের সরবরাহ যথাযথ না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। জানুয়ারি মাসে গ্যাসের মূল্য বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুতের দাম তিনবার বেড়েছে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির মধ্যে। এসব কারণে আমাদের ব্যবসায়ের খরচ বেড়েছে। এ সমস্যা আগামী বাজেটেই সমাধানে পদক্ষেপ নিতে হবে।’
ব্যবসায়ী এই নেতা বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ-পরবর্তী কাস্টমস, মূসক ও আয়করসংক্রান্ত যেসব বিধিবিধান ও পদ্ধতি আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ থাকবে না, সেগুলো চিহ্নিতকরণ এবং প্রয়োজনীয় আইনি ও পদ্ধতিগত সংস্কার করতে হবে। একই সঙ্গে রাজস্ব প্রশাসনে ব্যবসাবান্ধব ও করদাতা সহায়ক প্রয়োজনীয় সংস্কারের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিতকরণ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ জোরদারকরণ এবং আমদানি শুল্ক, আয়কর এবং মূল্য সংযোজন কর বিষয়ে বিদ্যমান বিধিবিধানের ব্যবসা এবং শুল্ককরবান্ধব সংস্কারের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিতকরণ এবং সমাধানে পদক্ষেপ নিতে হবে। ব্যবসায়ীদের ওপর রাজস্বের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে তা বাড়ানো যাবে না; বরং ব্যবসা করার সুযোগ দিতে রাজস্বের হার কমাতে হবে। এতে শেষ পর্যন্ত সরকার লাভবান হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৩-২৫ মে অনুষ্ঠেয় কাতার ইকোনমিক ফোরাম (কিউইএফ) ২০২৩-এ যোগ দিতে তিন দিনের সরকারি সফরে গতকাল সোমবার কাতারের রাজধানী দোহা পৌঁছেছেন। শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট গতকাল স্থানীয় সময় ৫টা ৩২ মিনিটে হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
কাতার সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি এবং দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট গতকাল বিকেল ৩টা ১৩ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, চিফ হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সেনা, বিমান ও ভারপ্রাপ্ত নৌবাহিনী প্রধান, পুলিশের মহাপরিদর্শক এবং কূটনৈতিক কোরের ডিন বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রী কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল সানির আমন্ত্রণে ‘তৃতীয় কাতার অর্থনৈতিক ফোরাম : নতুন বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির গল্প’ শীর্ষক ফোরামে যোগ দেবেন।
কিউইএফ হলো মধ্যপ্রাচ্যের শীর্ষস্থানীয় কণ্ঠস্বর, যা বিশ্বব্যাপী ব্যবসা এবং বিনিয়োগের জন্য নিবেদিত। এই ফোরামের মূল উদ্দেশ্য হলো বিশ্বব্যাপী চলমান বহুমুখী চ্যালেঞ্জ ও সংকট এবং এর ফলে উদ্ভূত বিরূপ অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সমাধান খুঁজে বের করা।
শেখ হাসিনা ২৩ মে তৃতীয় কিউইএফের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেবেন। দোহায় কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন এবং কাতারের জ¦ালানিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সা’দ বিন শেরিদা আল কাবি এবং সৌদি আরবের বিনিয়োগ মন্ত্রী খালিদ এ আল-ফালিহের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করবেন।
প্রধানমন্ত্রী ২৪ মে কিউইএফ-এ যোগ দেবেন। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল সানির (আমিরি দিওয়ানে) সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং আওসাজ একাডেমি (একটি বিশেষায়িত স্কুল) পরিদর্শন করবেন।
প্রধানমন্ত্রী ২৫ মে সকালে দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বাসস
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে জেলেখা বেগম নামে এক বৃদ্ধাকে মৃত দেখিয়ে তার বয়স্ক ভাতার কার্ড বাতিল করা হয়েছে। বিগত ৫ মাস যাবৎ তিনি বয়স্ক ভাতা বঞ্চিত রয়েছেন বলে জানা গেছে। অপরদিকে তার নাম পরিবর্তন করে আমিনা নামে অন্যজনকে বয়স্ক ভাতার কার্ড বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মেম্বার বাদশার বিরুদ্ধে।
রানীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের সাতঘরিয়া গ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলেখা বেগম নন্দুয়ার ইউনিয়নের সাতঘরিয়া গ্রামের আ. রহিমের স্ত্রী। পূর্বের চেয়ারম্যান ওই বৃদ্ধার নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেন।
ভুক্তভোগী বলেন, আমি ভাতার কার্ড পাওয়ার পর থেকে প্রতি তিন মাস অন্তর ১৫০০ টাকা করে পেয়েছিলাম। কিন্তু গত তারিখে আমার টাকার কোনো মেসেজ না আসায় আমি উপজেলা সমাজসেবা অফিসে গিয়ে জানতে পারি আমাকে মৃত দেখিয়ে আমিনা নামে ভাতার কার্ড করে দিয়েছেন মেম্বার বাদশাহ।
ইউনিয়ন পরিষদে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মৃত্যুর নিবন্ধন বইয়ের ২০২১ সালের রেজিস্ট্রারে বৃদ্ধার মৃত্যু নিবন্ধিত নেই। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এমন একটি সনদ দেওয়ায় তার ভাতাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তিনি এ বিষয়ে আরও বলেন, আমি জীবিত থাকার পরও মেম্বার বাদশাহ আমাকে মৃত দেখিয়ে আরেকজনের নামে কিভাবে টাকা খেয়ে ভাতার টাকা পরিবর্তন করে দেয়! আমি জীবিত থাকার পরও মেম্বার আমাকে মৃত দেখাল। আমি গরিব মানুষ। আমার কোনো ছেলেমেয়ে নাই। এই টাকা দিয়ে ওষুধ খেয়ে বেঁচে আছি। আমি এর বিচার চাই।
মেম্বার বাদশাহ বলেন, প্রথমবারের মতো এমন ভুল করেছি। সামনের দিকে সর্তকতার সাথে কাজ করব।
নন্দুয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বারী বলেন, জীবিত মানুষ মৃত দেখিয়ে ভাতার কার্ড পরিবর্তনের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে মেম্বার যদি করে থাকেন তাহলে খুবই খারাপ করেছেন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়নপত্রের ভিত্তিতে জানতে পারি, জেলেখা বেগম ৭ ডিসেম্বর ২০২১ এ মৃত্যু বরণ করেন। তাই ভাতাটি বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু ওয়েবসাইটে মৃত্যু সনদ যাচাই ছাড়া সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর কাউকে মৃত দেখাতে পারবে না- সাংবাদিকের এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের এভাবেই হয়। আমরা এভাবেই করে থাকি, প্রত্যায়নপত্র দেখে প্রতিস্থাপন করে থাকি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সমাজসেবা অফিসে প্রেরিত প্রত্যায়নটির কোনো তথ্য ইউনিয়ন পরিষদের ফাইলে সংরক্ষণ করা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির বলেন, এটি সংশোধনের কার্যক্রম চলমান। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, এটি একটি গুরুতর অভিযোগ। আমরা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেব।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত করা, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠাসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে আজ রোববার ঢাকা ছাড়া সব মহানগরে পদযাত্রা কর্মসূচি করবে বিএনপি। আজকের পদযাত্রা কর্মসূচির মাধ্যমে সপ্তাহব্যাপী সরকারবিরোধী কর্মসূচির প্রথম ধাপ শেষ হচ্ছে দলটির।
এর আগে, গত ২৩ মে দেশের ১১টি মহানগরে ‘পদযাত্রা’ করে বিএনপি। ঢাকার বাইরে মহানগরগুলোতে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের ১০ দফাসহ দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, হয়রানি, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ ও অন্যান্য জনগুরুত্বপূর্ণ দাবিতে এই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে দলটি।
সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কারসহ ১৪ দফা দাবিতে আজ রোববার (২৮ মে) পদযাত্রা করবে ৬ দলীয় জোট (দল ও সংগঠন) গণতন্ত্র মঞ্চ। এদিন বেলা ১১টায় রাজধানীর মালিবাগ থেকে এই পদযাত্রা শুরু হবে, যা শেষ হবে বাড্ডায়।
গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রোববার ১১টায় রাজধানীর মালিবাগ রেলগেট থেকে বাড্ডা পর্যন্ত গণতন্ত্র মঞ্চের ঢাকা উত্তরের পদযাত্রা শুরু হবে। অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কারসহ ১৪ দফা দাবিতে এ পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। মালিবাগ রেলগেটে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে পদযাত্রা শেষ হবে।
পদযাত্রায় অংশ নেবেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারীসহ গণতন্ত্র মঞ্চের কেন্দ্রীয় নেতারা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ব শান্তির পক্ষে সোচ্চার ছিলেন এবং মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।
বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা বলেন।
ড. মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উৎসব আমাদের বিদেশস্থ সকল মিশনে উদযাপন করছি। জুলিও কুরি পদক ছিল জাতির পিতার কর্মের স্বীকৃতি এবং বাংলাদেশের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মান।
তিনি বলেন, বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে কারাবরণ করেন বঙ্গবন্ধু। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বৈষম্য, সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালির ওপর নির্যাতন ও নিপীড়ন বঙ্গবন্ধু মেনে নিতে পারেননি। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বাংলার নিপীড়িত, শোষিত, বঞ্চিত মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে স্বাধীনতার ডাক দেন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলার মানুষ দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর “সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো প্রতি বৈরীতা নয়”- এই বৈদেশিক নীতি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আজ আমাদের মধ্যে নেই, কিন্তু তার শান্তির বার্তা নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতিসংঘে এক নম্বর শান্তিরক্ষী দেশের মর্যাদা পেয়েছে। দেশে দেশে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ চালু করেছে।
‘বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনে আমাদের অঙ্গীকার হবে বিশ্বে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যে কাজ করে যাওয়া। তাহলেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন অর্জিত হবে’।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বিশ্ব শান্তি পরিষদ ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদকে ভূষিত করে।
অপারেশন ছাড়াই সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায় আব্দুল মোতালেব হোসেন (৩৫) নামের এক মানসিক রোগীর পেট থেকে ১৫টি কলম বের করেছেন চিকিৎসক।
এ কাজ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সিরাজগঞ্জের শহীদ এম.মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুই চিকিৎসক। তাদের এই সাফল্যে রীতিমত হৈচৈ পড়ে গেছে নেট দুনিয়ায়।
এ বিষয়ে আব্দুল মোতালেবের মা লাইলী খাতুন বলেন, তার ছেলে মোতালেব খুব ভাল ছাত্র ছিল। ২টি লেটার মার্ক নিয়ে এসএসসি পাস করে কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। এরপর খারাপ সঙ্গদোষে সে আস্তে আস্তে মাদকাসক্ত হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। এরপর থেকে পথে ঘাটে ঘুরে বেড়ানোর সময় কুড়িয়ে পাওয়া কলমগুলি খাদ্য মনে করে খেয়ে ফেলে। বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। গত এক বছর ধরে তার শরীরে জ্বর ও পেটে ব্যথা শুরু হয়। অনেক চিকিৎসার পরও তা ভালো হচ্ছিল না। অবশেষে গত ১৬ মে তাকে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এনে ভর্তি করি। এখানে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তার অসুখের কারণ ধরা পড়ে। পরে চিকিৎসকরা তার পেটের ভিতর থেকে বিনা অপারেশনে কলমগুলো বের করে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. আমিনুল ইসলাম খান বলেন, মোতালেব হোসেন প্রথমে পেটে ব্যথা নিয়ে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়। মেডিসিন ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা এক্সরে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম করেও পেটে কি সমস্যা সেটা শনাক্ত করতে পারছিলেন না। ফলে রোগীটিকে আমার কাছে রেফার্ড করেন। এন্ডোস্কপির মাধ্যমে পরীক্ষা করে তার পেটের ভেতর ১৫টি কলম দেখে প্রথমে চমকে যাই। এটা কীভাবে সম্ভব। পরে এন্ডোস্কপির মাধ্যমেই অপারেশন ছাড়াই আমরা কলমগুলো বের করার সিদ্ধান্ত নেই। তিনি আরও বলেন, কাজটি আমাদের জন্য দারুণ চ্যালেঞ্জিং ছিল। কলমগুলো একে একে পাকস্থলীতে সেট হয়ে গিয়েছিল। কলমগুলো বের করতে আমাদের প্রথমে মাথায় চিন্তা ছিল যেন, কলমগুলোর কারণে কোনোভাবেই শ্বাসনালিতে গিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ না হয়ে যায়। এছাড়াও রক্তক্ষরণের একটা চিন্তাও মাথায় ছিল। অতঃপর প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আমরা কলমগুলো বের করে নিয়ে আসতে সক্ষম হই।
শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, এন্ডোস্কপি করা ব্যক্তি মানসিক অসুস্থ হওয়ায় তার কলম খাওয়ার অভ্যাস ছিল। এভাবে খেতে খেতে সে অনেক কলম খেয়ে ফেলে। কলমগুলো তার পেটের মধ্যে জমা হয়েছিল। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে তার পেটের ভিতর ১৫টি কলম থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হই। এবং অপারেশন ছাড়াই এন্ডোস্কপির মাধ্যমে তার পেটের ভেতর থেকে একে একে ১৫টি আস্ত কলম বের করে আনি। বর্তমানে রোগীটি সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকদের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং সুস্থ আছেন।
তিনি আরও বলেন, এন্ডোস্কপির মাধ্যমে মানুষের পেট থেকে কলম বের করার মতো ঘটনা বাংলাদেশে এটাই প্রথম। তাও আবার একটি-দু‘টি নয় ১৫টি কলম। এর আগে ঢাকা মেডিকেলে এক ব্যক্তির পেট থেকে এন্ডোসকপির মাধ্যমে একটি মোবাইল বের করেছেন চিকিৎসকরা।
এ বিষয়ে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে এমন সাফল্য এটাই প্রথম। আমরা অত্যাধুনিক ভিডিও এন্ডোস্কপি মেশিনের মাধ্যমে এবং আমাদের দক্ষ ডাক্তার দ্বারা অপারেশন ছাড়াই শুধু এন্ডোস্কপির মাধ্যমে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষের পেট থেকে ১৫টি কলম বের করে আনতে সক্ষম হয়েছি। শুধু এটাই নয়, আমরা বিনা অপারেশনে পেটের পাথর, কিডনিতে পাথর থেকে শুরু করে অনেক কিছুই অপারেশন ছাড়াই সেগুলো অপসারণের কাজ করে যাচ্ছি।
বিরতি কাটিয়ে আবারও আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরছে আর্জেন্টিনা। গত মার্চে ঘরের মাঠে সবশেষ আকাশী-নীলদের দেখা গিয়েছিল তিন মাস পর আগামী জুনে তারা আসছে এশিয়া সফরে। সফরকালে ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচও খেলবেন লিওনেল মেসিরা।
আগামী ১৫ জুন বেইজিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামবে আর্জেন্টিনা। চারদিন পর ১৯ জুন জাকার্তায় ইন্দোনেশিয়ার মুখোমুখি হবেন তারা। সেই ম্যাচ দুটিকে সামনে রেখে আজ দল ঘোষণা করেছেন দেশটির কোচ লিওনেল স্কালোনি। লিওনেল মেসিকে অধিনায়ক করে ২৭ সদস্যের দল ঘোষণা করা হয়েছে।
বিশ্বকাপজয়ী খেলোয়াড়দের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন কিছু নাম। এই দলে এই দলে চমক হিসেবে রয়েছে আলেজান্দ্রো গার্নাচো। যিনি বিশ্বকাপের পর আর্জেন্টিনার প্রথম প্রীতি ম্যাচের দলে ছিলেন। তবে চোটের কারণে অভিষেকের সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায়।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে আলো ছড়িয়েছেন গার্নাচো। গত বছরের জুলাইয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মূল দলে জায়গা হয় তার। এখন পর্যন্ত ক্লাবটির হয়ে ৩৫ ম্যাচ খেলেছেন এই লেফট উইঙ্গার। এখন পর্যন্ত নিজে করেছেন ছয়টি গোল, করিয়েছেন আরও ছয়টি। এমন পারফরম্যান্স নজর এড়ায়নি স্কালোনির। তাই জাতীয় দলে জায়গা পেতে বেগ পেতে হয়নি।
দলের তৃতীয় গোলকিপার হিসেবে জায়গা পেয়েছেন ওয়াল্টার বেতিনেজ। এছাড়া বেশ কয়েক বছর পর দলে ফিরেছেন লিওনার্দো বলের্দি। ফরাসি ক্লাব মার্সেইয়ের হয়ে চলতি মৌসুমে তিনি দুর্দান্ত খেলছেন। তবে স্কোয়াডের মাঝ মাঠের ফুটবলারদের নিয়ে কোনো চমক নেই।
তবে এই স্কোয়াডে নেই লাউতারো মার্তিনেজের নাম। গোড়ালির চোটের কারণে এই দুই প্রীতি ম্যাচে তাকে পাচ্ছে না আর্জেন্টিনা। তবে তার জায়গায় মাঠ মাতাতে দেখা যাবে জিওভানি সিমিওনেকে।
আর্জেন্টিনার ২৭ সদস্যের দল
গোলরক্ষক:
এমিলিয়ানো মার্টিনেজ (অ্যাস্টন ভিলা), জেরনিমো রুলি (আয়াক্স), ওয়াল্টার বেনিটেজ (পিএসভি)।
ডিফেন্ডার:
নাহুয়েল মোলিনা (অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ), গঞ্জালো মন্তিয়েল (সেভিয়া), জার্মান পেজেল্লা (রিয়েল বেটিস), ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো (টটেনহ্যাম হটস্পার), লিওনার্দো বলের্দি (অলিম্পিক মার্সেই), নিকোলাস ওতামেন্ডি (বেনফিকা), ফ্যাকুন্ডো মদিনা (আরসি লেন্স), নিকোলাস তাগলিয়াফিকো (লিয়ন), মার্কোস অ্যাকুনা (সেভিলা)।
মিডফিল্ডার:
লিয়ান্দ্রো পেরেদেস (জুভেন্তাস), এনজো ফার্নান্দেজ (চেলসি), গুইডো রদ্রিগেজ (রিয়েল বেটিস), রদ্রিগো ডি পল (অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ), এজেকিয়েল পালাসিওস (বেয়ার লেভারকুসেন), অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার (ব্রাইটন), থিয়াগো আলমাদা (আটলান্টা ইউনাইটেড), জিওভানি লো সেলসো (ভিলারিয়াল)।
ফরোয়ার্ড:
লুকাস ওকাম্পোস (সেভিয়া), অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া (জুভেন্তাস), লিওনেল মেসি (পিএসজি), জুলিয়ান আলভারেজ (ম্যানচেস্টার সিটি), জিওভানি সিমিওনে (নাপোলি), আলেজান্দ্রো গার্নাচো (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), নিকোলাস গঞ্জালেজ (ফিওরেন্টিনা)।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোট শেষ হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
দায়িত্বশীল সূত্র থেকে এখন পর্যন্ত ৪৫০টি কেন্দ্রের প্রাথমিক ফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে নৌকা প্রতীকে আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ১ লাখ ৮৫ হাজার ৩৭৯ ভোট এবং টেবিলঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন পেয়েছেন ২ লাখ ৫ হাজার ৪১৩ ভোট।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
গাজীপুর সিটিতে মেয়র পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে আওয়ামী লীগের আজমত উল্লা খান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের মধ্যে। দুজনই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। অপরদিকে ভোটের পরিবেশ ভালো বলে জানান আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহনূর ইসলাম রনি।
কোটা পদ্ধতি তুলে দেওয়ার পরও বিসিএস পরীক্ষায় নারীদের চাকরি পাওয়ার হার প্রায় একই রয়েছে। ১০ শতাংশ কোটা থাকা অবস্থায় তারা যে পরিমাণ চাকরি পাচ্ছিলেন, কোটা তুলে দেওয়ার পরও প্রায় একই হারে চাকরি পাচ্ছেন। সাধারণ ক্যাডার বা কারিগরি ক্যাডারে পিছিয়ে পড়লেও শিক্ষার মতো পেশাগত ক্যাডারগুলোতে এগিয়ে গিয়ে বিসিএসে মোট চাকরি পাওয়ার হারে প্রায় একই অবস্থান ধরে রেখেছেন নারীরা।
অথচ কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় বলা হয়েছিল, কোটা তুলে দিলে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। প্রশাসনে নারীর অংশগ্রহণের গ্রাফ নিম্নমুখী হবে। আসলে তা হয়নি। কোটা তুলে দেওয়ার পরও তারা প্রায় সমানতালে এগিয়ে চলছেন।
৪০তম বিসিএস দিয়ে চাকরিতে ঢুকে বর্তমানে ঢাকা বিভাগে কর্মরত একজন নারী কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, যে বয়সে ছেলেরা চাকরির জন্য প্রতিযোগিতা করে সেই বয়সে অধিকাংশ নারীকেই বিবাহিত জীবনে প্রবেশ করতে হয়। সংসার করে, সন্তান লালনপালন করে নারীরা ভালো প্রস্তুতি নিতে পারে না। ফলে অনেক মেধাবী নারী প্রতিযোগিতায় উতরে যেতে পারেন না। অনেক নারী পারিবারিক কারণে বিয়ের পর চাকরির আবেদনই করেন না। বিয়ের পর পরীক্ষায় অংশ নিতে বাধা আসে। এসব কাটিয়ে উঠে চাকরিতে প্রবেশ করা কঠিন। আর বিসিএসের চাকরি মানেই বদলিযোগ্য। সংসার-সন্তান রেখে বদলিকৃত পদে যোগ দেওয়া কঠিন বিষয়। সবকিছু মিলিয়ে নারীদের জন্য এ চাকরি সহজ নয়। একজন পুরুষ বেকার নারী বিয়ে করে, কিন্তু একজন নারী বেকার পুরুষ বিয়ে করে না। এ বিষয়টাও ছেলেদের প্রস্তুত হতে সাহায্য করে। এ বাস্তবতা থেকেও পুরুষ প্রতিযোগী বেশি হয়। অন্যদিকে যোগ্য হলেও অনেক নারী প্রতিযোগিতাই করে না।
একজন নারী ইউএনও বলেন, পরীক্ষার হলে বা মৌখিক পরীক্ষার সময় অনেক নারীকে দুগ্ধপোষ্য সন্তানকে সঙ্গে আনতে হয়। এগুলোও অনেক সময় নারীকে চাকরির ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করে। ঘরে ঘরে বাধা পায় নারীর অগ্রযাত্রার নানা চেষ্টা। নগর-জীবনে নারীর অস্তিত্ব অনেকটা স্বচ্ছন্দের। কিন্তু নগরসভ্যতার বাইরে বিশাল বিস্তৃত গ্রামীণ জনজীবনে পুরুষতন্ত্রের নানা ধরনের অনাকাক্সিক্ষত বেষ্টনী এখনো নারীকে ধরাশায়ী করে রাখে। হাজার হাজার বছর ধরে পৃথিবীর পথ হাঁটছে নারী-পুরুষ। তবু তাদের মধ্যে ভারসাম্য নেই।
কোটা না থাকার পরও নারীরা তাদের অবস্থান কীভাবে ধরে রাখলেন জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ শাইখ ইমতিয়াজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নারী শিক্ষায় বাংলাদেশের অর্জন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। প্রাথমিকের পর মাধ্যমিকেও মেয়েরা অনেক এগিয়েছে। উচ্চশিক্ষায়ও মেয়েদের অংশগ্রহণের হার বেড়েছে। সবকিছু মিলে বিসিএসে এর প্রতিফল ঘটেছে। যে পরিমাণ মেয়ে উচ্চশিক্ষা নিচ্ছে, সেই তুলনায় চাকরিতে প্রবেশের হার বেশি। উচ্চশিক্ষায় যায় হয়তো ৮০ ভাগ ছেলে। আর মেয়েদের মধ্যে উচ্চশিক্ষায় যাওয়ার হার ৩০ বা ৩৫ শতাংশ। তাদের মধ্যে ২৬ বা ২৭ শতাংশ মেয়ে বিসিএস দিয়ে চাকরি পাচ্ছে। এদিক দিয়ে চিন্তা করলে মেয়েরা অনেক ভালো করছে।’
এক প্রশ্নের জবাব ড. ইমতিয়াজ বলেন, ‘মেয়েদের কাছে শিক্ষা এখনো অপরচুনিটি (সুযোগ) আর ছেলেদের কাছে অধিকার। মেয়েরা যখন এ সুযোগটা পায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা কাজে লাগাতে চায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘পরিবারের ছেলেসন্তানের জন্য যে বিনিয়োগ, মেয়েসন্তানের জন্য এখনো তার চেয়ে অনেক কম। এখনো মনে করা হয় মেয়ে তো অন্যের ঘরে চলে যাবে। অথচ মজার বিষয় হচ্ছে, পরিবারের দায়িত্ব উচ্চশিক্ষিত ছেলের তুলনায় উচ্চশিক্ষিত মেয়ে অনেক বেশি বহন করে। এসব প্রতিবন্ধকতা হাজার বছরে তৈরি হয়েছে। এগুলো দূর হতে আরও সময় লাগবে।’
অন্যান্য কোটার মতো প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে নারীদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা ছিল। নারীরা যোগ্যতা অনুযায়ী মেধা কোটায়ও নিয়োগ পেতেন। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতে মেধাভিত্তিক জেলা কোটার পাশাপাশি ১৫ শতাংশ নারী কোটা রয়েছে এখনো। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাভিত্তিক জেলা কোটার পাশাপাশি ৬০ শতাংশ নারী কোটা সংরক্ষিত রেখে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এভাবে নারীরা সরকারি চাকরিতে পুরুষ প্রার্থীর সঙ্গে মেধা কোটায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নিয়োগ লাভের পাশাপাশি সংরক্ষিত কোটায়ও নিয়োগ লাভের সুবিধা পেয়ে থাকেন।
শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে ছাত্রীর হার বাড়ছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে এক দশকের বেশি সময় ধরে ছাত্রের চেয়ে ছাত্রীর হার বেশি। কলেজ পর্যায়ে ছাত্র ও ছাত্রীর হার প্রায় সমান। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর হার ৩৬ শতাংশের বেশি।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে সরকার। ৪০তম সাধারণ বিসিএস হচ্ছে কোটামুক্ত প্রথম বিসিএস। ধাপে ধাপে বাছাই করে গত বছর ৩০ মার্চ এই বিসিএসের চূড়ান্ত সুপারিশ করে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। প্রায় ১৩ মাস পর গত মাসে সেই সুপারিশের বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে পিএসসি। সেখানে বলা হয়েছে, ৪০তম বিসিএসে মোট ২৬ দশমিক ০৩ শতাংশ নারী চূড়ান্তভাবে সুপারিশ পেয়েছেন। যা কোটাযুক্ত ৩৮তম বিসিএসে ২৬ দশমিক ৯১ ও ৩৭তমে ২৪ দশমিক ৬০ শতাংশ ছিল। গত ১ নভেম্বর এ বিসিএসের কর্মকর্তারা চাকরিতে যোগ দিয়েছেন।
পিএসসির একজন সাবেক চেয়ারম্যান বলেছেন, কোটামুক্ত একটি সাধারণ বিসিএসে ২৬ দশমিক ০৩ শতাংশ নারী চূড়ান্তভাবে সুপারিশ পেয়েছেন এটা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় নারীদের শক্ত সক্ষমতা প্রকাশ করে। কারণ এর আগে কোটাযুক্ত ৩৮তম বিসিএসের তুলনায় মাত্র দশমিক ৮৮ শতাংশ কম। অর্থাৎ কোটা তুলে দেওয়ার পরও নারীরা ১ শতাংশও পিছিয়ে পড়েননি। আরেকটি বিষয় লক্ষণীয় যে, প্রত্যেক বিসিএসে নারীদের আবেদনের হার অর্থাৎ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের হার পুরুষের তুলনায় কম অর্থাৎ গড় হার কম। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতেও নারী প্রার্থীদের পুরুষের তুলনায় অনেক কম চোখে পড়ে। এমনকি কোনো কোনো কক্ষে নারী প্রার্থী থাকেই না। একই সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ধাপগুলো অতিক্রম করার ক্ষেত্রে নারীদের অনুত্তীর্ণ হওয়ার পরিমাণ বেশি থাকে। ৪০তম বিসিএসে যোগ্য আবেদনকারী নারী ছিলেন ৩৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ। তাদের মধ্যে ১৯ দশমিক ১৯ শতাংশ নারী প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হন। অথচ পুরুষদের ক্ষেত্রে ভিন্ন চিত্র। যোগ্য আবেদনকারী পুরুষ ছিলেন ৬১ দশমিক ৬২ শতাংশ। প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ পুরুষের হার ৮০ দশমিক ৮১ শতাংশ।
৪০তম বিসিএসের সাধারণ ক্যাডারে ২১ দশমিক ০৮ শতাংশ নারী সুপারিশ পেয়েছেন। এই হার ৩৮ ও ৩৭তম বিসিএসে ছিল যথাক্রমে ২৪ দশমিক ১৪ ও ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ।
৪০তম বিসিএসের কারিগরি ক্যাডারে ২৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ নারী সুপারিশ পেয়েছেন। এই হার ৩৮ ও ৩৭তম বিসিএসে ছিল যথাক্রমে ২৯ দশমিক ৫৩ ও ২৫ দশমিক ২ শতাংশ।
সাধারণ এবং কারিগরি ক্যাডারে নারীরা পিছিয়ে পড়লেও শিক্ষার মতো পেশাগত ক্যাডারে এগিয়েছেন। ৪০তম বিসিএসে ২৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ নারী সুপারিশ পেয়েছেন। যা ৩৮তমে ২৬ দশমিক ৩০ এবং ৩৭তমে ২৫ দশমিক ২ শতাংশ ছিল।
পুরোপুরি মেধার ভিত্তিতে নেওয়া ৪০তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারেও নারীরা পিছিয়েছেন। জেলা কোটাও না থাকায় নাটোর, ভোলা, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি থেকে প্রশাসন ক্যাডারে কেউ সুপারিশ পাননি।
গত বছর প্রকাশিত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সরকারি চাকরিজীবীদের তথ্যসংক্রান্ত ‘স্ট্যাটিসটিকস অব সিভিল অফিসার্স অ্যান্ড স্টাফস’ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, সিভিল প্রশাসনের ১৪ লাখ সরকারি কর্মচারীর মধ্যে ২৬ শতাংশ নারী। সরকারি দপ্তরের মধ্যে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে কাজ করেন সবচেয়ে কমসংখ্যক নারী। মন্ত্রণালয়ের মোট জনবলের ১৯, অধিদপ্তরের ৩১, বিভাগীয় কমিশনার ও ডেপুটি কমিশনারের কার্যালয়ের ১২ এবং আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ১২ শতাংশ কর্মী নারী।