
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অধীন ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল) উৎপাদিত বিটুমিনের চাহিদা অনেক বেশি থাকায় সিন্ডিকেটের বাইরে গিয়ে কিনতে পারা কঠিন হয়ে গেছে। মানসম্মত এ বিটুমিনের ব্যবসায় সিন্ডিকেটের এ দাপটের চিত্র উঠে এসেছে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ও দেশ রূপান্তরের অনুসন্ধানে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বিপিসি পরিচালক (মার্কেটিং) অনুপম বড়ুয়া এবং প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এবিএম আজাদের খালাতো ভাই মোহাম্মদ ইউসুফ ওরফে ইউসুফ আলী এ সিন্ডিকেটের অন্যতম নিয়ন্ত্রক। এর বাইরে আরও অন্তত চারজন রয়েছেন, যারা আলাদা কিংবা কখনো এ সিন্ডিকেটের সঙ্গে মিলে বিটুমিন কারসাজি করেন। তারা হলেন চট্টগ্রামের মোহাম্মদ আলী লিটন, মোহাম্মদ কামরুল, মোহাম্মদ কামাল হোসেন এবং মোহাম্মদ পারভেজ।
এসব বিষয়ে বিপিসির চেয়ারম্যান এবিএম আজাদের সঙ্গে কথা হয় দেশ রূপান্তরের। ইউসুফকে নিজের খালাতো ভাই স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘দুই বছর আগে তার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়ার পর তাকে সতর্ক করেছি। এরপরও আমার নাম ভাঙিয়ে ব্যবসা করার প্রমাণ মিললে ব্যবস্থা নেব।’
পরিচালক অনুপম বড়ুয়ার বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, তার বিষয়ে তদন্ত চলছে। তাই এখনই কোনো মন্তব্য করার সুযোগ নেই। তিন মাসেও তদন্তকাজ শেষ না হওয়ার বিষয়ে তার মন্তব্য এটা সময়সাপেক্ষ। বাংলাদেশে কোনো তদন্তই তো আলোর মুখ দেখে না। তিনি বলেন, ‘বিটুমিন নিয়ে অনেক কথা শোনা যায়। এতে বিপিসির ইমেজ নষ্ট হয়। কিন্তু এর উৎপাদন বন্ধ হলেও বিপিসির কোনো ক্ষতি নেই।’
সূত্রমতে, বছর দেড়েক আগে বিপিসির পরিচালক হিসেবে যোগ দেন অনুপম বড়ুয়া। এর কিছুদিন পর থেকেই তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আসতে থাকে। সরকারি বিটুমিন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ঠিকাদারদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগ এনে ভুক্তভোগীরা তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে।
গত ১৩ এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় চিঠি দিয়ে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগকে বিষয়টি অবহিত করে। এরপর অনুপম বড়ুয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও জ্বালানি বিভাগকে অবহিত করার জন্য ৩০ এপ্রিল বিপিসির চেয়ারম্যানকে চিঠি দেওয়া হয়।
জ্বালানি বিভাগের উপসচিব একেএম মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই চিঠি পাওয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করতে বিপিসির পরিচালক (অর্থ) কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হককে দায়িত্ব দেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান। এ বিষয়ে মোজাম্মেল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করে বিপিসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
অন্যদিকে অনুপম বড়ুয়া দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে আমার বক্তব্য দিয়েছি। এর বাইরে কোনো মন্তব্য নেই।’
যার বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং যিনি তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন তারা দুজনই সরকারের যুগ্ম সচিব। তিন মাস পরও তদন্ত প্রতিবেদন না দেওয়ায় এ নিয়ে নানারকম প্রশ্নও উঠেছে।
সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রতি বছর দেশে বিটুমিনের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৮ থেকে ৯ লাখ টন। ইআরএলের বার্ষিক উৎপাদন সক্ষমতা ৭০ হাজার টন। কিন্তু গড়ে উৎপাদন হয় ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টন। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, যমুনা অয়েল, এশিয়াটিক স্ট্যান্ডার্ড অয়েল ও ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস ব্লেন্ডার্স লিমিটেডের মাধ্যমে এ বিটুমিন বিক্রি করে ইআরএল।
অভিযোগ রয়েছে, অনেক সময় নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে কারসাজির মাধ্যমে সরকারি বিটুমিন বরাদ্দ নেয়। পরে তার সঙ্গে নিম্নমানের আমদানিকৃত বিটুমিন মিশিয়ে বেশি দামে বিক্রি করে। অনেকে আবার সংযুক্ত আরব আমিরাত, দুবাই থেকে উন্নত মানের বিটুমিন আমদানির কথা বলে বাড়তি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তবে বাস্তবে সেখানে বিটুমিন কারখানা নেই।
সরকারি বিটুমিন কিনতে সরকারের যে দপ্তরের কাজ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে সেই কার্যালয়ের কার্যাদেশসহ অন্যান্য কাগজপত্র জমা দিয়ে আবেদন করতে হয়। যাচাই-বাছাই শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত যেকোনো বিতরণ কোম্পানির নামে পে-অর্ডারের মাধ্যমে বিটুমিনের দাম পরিশোধ করতে হয়। সব প্রক্রিয়া শেষে সিরিয়াল অনুযায়ী বিটুমিন সরবরাহ করার কথা থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত লেগে যায়। এজন্য অনেকেই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাড়তি টাকা দিয়ে বিটুমিন কেনেন। কয়েকজন মধ্যস্বত্বভোগী, বিপিসি ও এর অধীন প্রতিষ্ঠানের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মিলেমিশে বাড়তি টাকার ভাগ নেন।
ঠিক কী পরিমাণ অবৈধ অর্থ লেনদেন হয় তার সুনির্দিষ্ট চিত্র পাওয়া না গেলেও বিভিন্ন সূত্রে কথা বলে যে ধারণা মিলেছে, তাতে এর পরিমাণ বছরে গড়ে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকা।
জ্বালানি বিভাগের একাধিক সূত্রমতে, বিপিসি এবং এর অধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে চেয়ারম্যানের সঙ্গে তার পরিবারের সদস্য হিসেবে ইউসুফকে দেখা যায়। সামনের দিকে পরিবারের জন্য নির্ধারিত সারিতেই তার বসার ব্যবস্থা থাকে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী বলেন, দুই বছর আগে ইউসুফকে সতর্ক করেছেন বলে চেয়ারম্যানের যে দাবি সেটি যদি সত্যি হয় তাহলে এরপরও তিনি কীভাবে এ অপকর্ম করে যাচ্ছেন? এর পেছনে রহস্য থাকতে পারে বলে ধারণা তাদের।
সাংবাদিক পরিচয় গোপন রেখে বিটুমিন কেনার সিরিয়াল দ্রুত পাইয়ে দিতে ইউসুফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘সিরিয়াল পেতে সমস্যা হবে না। তবে যমুনা থেকে নেওয়া যাবে না। কারণ ওরা একটা ফরম্যাটে চলে গেছে। যদি পদ্মা থেকে মাল নিতে চান তাহলে এমডির সঙ্গে কথা বলব। ঢাকার মালিবাগ এলাকায় আবুল হোটেলের কাছে আমার অফিস। আসেন, সরাসরি কথা হবে।’
বাড়তি খরচ কেমন? জবাবে হাসি দিয়ে ইউসুফ বললেন, ‘আমার কাছ থেকে অনেকেই মাল নেয়। যেমন কর্ণফুলী টানেলে আমি অনেক মাল দিয়েছি। টনপ্রতি একটা হিসাব করে আমাকে টাকা দিয়েছে তারা। এখানে তো আমি একা (আবার হাসি) করতে পারব না। যে কোম্পানি থেকে নেবেন সেই কোম্পানির এমডি, ইআরএলের লোকজন আছে। তাদের সঙ্গে আমি আগে একটু কথা বলি।’
আলাপচারিতার একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘ইআরএল এবং বিভিন্ন কোম্পানিকে ম্যানেজ করে বিপিসি। তারা তো বিপিসির কথা ছাড়া সিরিয়ালে হাত দিতে চায় না। এ ক্ষেত্রে আমি কাকে ব্যবহার করব সেটা আমার বিষয়।’
আপনি তো বিপিসির চেয়ারম্যানের ভাই, তাই না? আবার হাসি দিয়ে ইউসুফ বলেন, ‘আপনি আমাকে খুঁজে বের করেছেন। আপনিই জানেন আমি কে? আসলে এর আগে নানারকম ঝামেলা হয়েছে। ব্যাপারটা খুব সেনসিটিভ (স্পর্শকাতর)। আপনারা যদি বেশি পরিমাণে মাল নেন, তাহলে আপনাকে সহযোগিতা করব।’
একপর্যায়ে নিজেকে চেয়ারম্যানের আপন খালাতো ভাই পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘অনেক বছর ধরে ব্যবসা করছি। তা প্রায় চার-পাঁচ বছর। এর মধ্যে উনি (চেয়ারম্যান) আসছেন। এতে প্লাস পয়েন্ট হয়েছে। ব্যবসা বড় করতে চাইলে সুযোগ আছে।’
ব্যবসা বড় করতে বিপিসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে বসানোর প্রস্তাবে ইউসুফ বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে আগে আমার বসতে হবে। জ্বালানি খাতে আমাদের আরও অনেক ব্যবসা আছে। চাইলে আপনারাও করতে পারবেন। চেয়ারম্যান আগামী এপ্রিল পর্যন্ত আছেন।’ এপ্রিলের পর এ চেয়ারম্যান না থাকলে তখন কী হবে? অভয় দিয়ে বললেন, ‘আপনার পথ আমিই বাতলে দেব। ইআরএলের অনেক কর্মকর্তা, বিপিসির পরিচালকরা আছেন, যারা আমার পরিচিত। আমি উনার (বিপিসির চেয়ারম্যান) ভাই হলেও সবাইকে ম্যানেজ করেই চলি।’
ইউসুফের সহযোগী হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ আলী লিটন। তাকে ফোন দিয়ে ইআরএলের বিটুমিন কেনার আগ্রহ প্রকাশ করতেই সাবলীল ভঙ্গিতে বললেন, ‘দেওয়া যাবে। আমার নম্বর কি ইউসুফ ভাই দিয়েছেন?’ কোন ইউসুফ? জবাবে বললেন, ‘বিপিসির চেয়ারম্যান স্যারের ভাই। তার সঙ্গে আমার ভালো রিলেশন। একসঙ্গেই ব্যবসা করি। উনি যেহেতু আছেন ইনশা আল্লাহ সিরিয়াল নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। বাকি আল্লাহ ভরসা।’
একটা হাসি দিয়ে এবার লিটন বললেন, ‘ব্যবসা আরেকটা আছে। যেমন সড়ক ও জনপথ এবং এলজিইডির ডকুমেন্ট থাকলে সেটা দেখিয়ে আপনার নামে বিটুমিন নিয়ে অন্য জায়গায় বাড়তি দামে বিক্রি করে দিলেন। এতে সবাই মিলে কিছু টাকা পাওয়া যাবে। আমরা যাদের মাল দিই তারা অধিকাংশই ব্যবসা করে এভাবে। অনেকে গুদামজাত করে বেশি দামে বিক্রি করে।’
‘প্রত্যেকটা ডিপার্টমেন্টে টাকা লাগে। টাকা না দিলে কী কাজ হয় ভাইজান? ২৩ বছর ধরে ব্যবসা করছি। এ লাইনে ব্যবসা করে অনেকে আজ কোটিপতি। কিন্তু আমি এখনো ফকির। চিটারি, বাটপারি করি না। কাউকে খারাপ পরামর্শ দিই না’ যোগ করেন লিটন।
তিনি বলেন, ‘বিপিসির তিনজন পরিচালকের মধ্যে একজনকে ম্যানেজ করতে হবে। এটা নিয়ে সমস্যা হবে না। ডকুমেন্ট ছাড়া মাল নিতে হলে আমার অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দেবেন। যেকোনো একটা কোম্পানি থেকে আপনাকে মাল দেওয়া হবে।’
ইউসুফ-লিটন সিন্ডিকেটের বাইরে আরেক হোতা মোহাম্মদ কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘যারা সরকারি দামের অতিরিক্ত টাকা দেয় তাদের কোনো সিরিয়াল লাগে না। যেদিন পে-অর্ডার দেবেন ওইদিনই মাল পাবেন। সরকারি দরের অতিরিক্ত কত টাকা দেবেন, সেটা মাল নেওয়ার আগে জানাব।’
বিটুমিন কিনতে এবার যোগাযোগ হয় মোহাম্মদ পারভেজ নামে আরেকজনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘পে-অর্ডারের টাকা জমা দিয়ে গাড়ি নম্বর দেবেন, মাল চলে যাবে। সিরিয়াল নিয়ে ভাববেন না। সবাইকে ম্যানেজ করেই কাজ করি। বাড়তি টাকা আলাদা অ্যাকাউন্টে দেবেন। এ টাকা শুধু আমরা একা নিই না, কিছু ম্যানেজারদেরও দেওয়া লাগে।’
বিটুমিন কারসাজির আরেক হোতা মোহাম্মদ কামরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও আশ্বাস দিলেন, বাড়তি টাকা দিলে সিরিয়াল পেতে কোনোরকম সমস্যা নেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই বাংলাদেশে খুনিদের রাজত্ব আর চলবে না। সাহস থাকলে তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনুন। জিয়া পরিবার খুনি পরিবার। বাংলাদেশের মানুষ ওই খুনিকে ছাড়বে না। বাংলাদেশের মানুষ ওদের ছাড়বে না। গতকাল সোমবার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ১৯তম বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখার আগে সেখানে নির্মিত ২১ আগস্টে নিহত নেতাকর্মীদের স্মরণে অস্থায়ী শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।
২১ হামলার গ্রেনেড হামলার বিচারের রায়ের প্রসঙ্গ টেনে সরকারপ্রধান বলেন, ‘এ হত্যাকা-ের বিচার হয়েছে। রায় হয়েছে। কাজেই এ রায় কার্যকর করা উচিত। কিছু আছে কারাগারে। কিন্তু মূলহোতা (তারেক রহমান) তো বাইরে। সে তো মুচলেকা দিয়ে বাইরে চলে গেছে। সাহস থাকলে আসে না কেন বাংলাদেশে? আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, সেই সুযোগ নিয়ে বিদেশে বসে লম্বা লম্বা কথা বলে। আর কত হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি করে চলে গেছে সেই টাকা খরচ করে। তো সাহস থাকলে বাংলাদেশে আসুক। ওদের কর্মসূচিতে কিছু লোক হয়, সেই দেখে লম্ফঝম্ফ; কিন্তু বাংলাদেশের মানুষকে চেনেনি। এই বাংলাদেশে খুনিদের রাজত্ব আর চলবে না।’
২১ আগস্ট আহতদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা মানুষের কাছে যান। বলেন কী করে ওই খালেদা জিয়া-তারেক জিয়া আপনাদের জীবনটাকে ধ্বংস করেছে। কীভাবে দেশ লুটপাট করেছে। স্বাধীনতার চেতনা ধ্বংস করেছে। নিজেরা অর্থসম্পদের মালিক হয়েছে।’
দেশবাসীকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মানুষ সজাগ থাকবে। ওই খুনিদের হাতে যেন এ দেশের মানুষ আর নিগৃহীত হতে না পারে। অগ্নিসন্ত্রাস আর জুলুমবাজি করে এ দেশের মানুষকে হত্যা করতে না পারে। মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। খুনি, দুষ্কৃতকারী, অস্ত্র চোরাকারবারি, ঘুষখোররা যেন মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। ওই খুনিদের প্রতি ঘৃণা সব জনগণের। চাই সবাই তাদের ঘৃণা জানাবে। সবাই নিরাপদ থাকেন, ভালো থাকেন। যতক্ষণ বেঁচে আছি, এ দেশের মানুষের সেবা করে উন্নত জীবন দিয়ে যাব। মর্যাদা নিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।’
বিএনপি-জামায়াতের প্রতি অভিযোগ তুলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা আমাদের নেতাকর্মীদের তো হামলা করেছেই। সাধারণ মানুষও ওদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। ঘাতক-ঘাতকই। ওরা তো জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। ওরা তো জনগণকে হত্যা করেছে। বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারছে। পেট্রোল ঢেলে আগুন দিচ্ছে। হাত-পা ধরে কান্নাকাটি করলেও ছাড়ে না। এটাই তো বিএনপির আসল চেহারা। এটাই বিএনপির চরিত্র।’
বাংলাদেশের নির্বাচন ও গণতন্ত্র নিয়ে সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে তারা ভোটের অধিকারের কথা বলে, আর কিছু আছে তাদের ভাড়া করাÑ তারা মানবাধিকারের কথা বলে। যারা বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তোলে তাদের কাছে আমার প্রশ্নÑ আমরা যারা আপনজন হারিয়েছিÑ আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী তাদের আপনজন হারিয়েছে, বিএনপি-জামায়াতের কাছে তাদের মানবাধিকার কোথায়? আমরা বিচার পাইনি। আমরা কেন বিচার-বঞ্চিত ছিলাম। আন্তর্জাতিক অনেক সংস্থা দেখি বাংলাদেশের মানবাধিকারের কথা বলে। তাদের কাছে আমার প্রশ্নÑ তাদের শেখানো বুলি যারা বলেন, এ দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন বারবার হয়েছে, যার মূলহোতা জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া-তারেক জিয়াসহ জামায়াত যুদ্ধাপরাধীর। তারা এখনো করে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কিন্তু বিচার পাইনি। কেন ৩৩ বছর সময় লেগেছে বিচার পেতে। কী অপরাধ করেছিলাম যে আমরা বিচার পাইনি। বিচারের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। এ সময় তিনি আবেগে-আপ্লুত হয়ে পড়েন।’
২১ আগস্টের ঘটনা বর্ণনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে র্যালি করছিলাম। আর সেখানেই প্রকাশ্য দিবালোকে হাজার হাজার মানুষের মধ্যে আর্জেস গ্রেনেড হামলা হয়, যে গ্রেনেড ছোড়া হয় যুদ্ধের সময়, যেটা সেখানে ছোড়া হলো। যখন আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছি মানুষের নিরাপত্তার জন্য, সেই মিছিলের ওপর ১৩টি গ্রেনেড হামলা হলো। আর কতগুলো যে ওদের হাতে ছিল কে জানে? সেদিন যে বেঁচে গিয়েছিলাম সেটাই অবাক বিস্ময়।’
২১ আগস্ট ঘটনার বর্ণনা করে হামলার অন্যতম লক্ষ্য শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি যখন ৫ নম্বরে (সুধা সদনে) ফিরি, আমার সারা শরীরে রক্ত। রেহানা দেখে স্তব্ধ হয়ে যায়। আমি বলি আমার কিছু হয়নি। আমি চলে এসেছি কিন্তু ওখানে কী অবস্থা, আমি জানি না! সেখানে লাশের ওপর লাশ পড়ে আছে। আমি লোক পাঠাই। গাড়ি পাঠাই যত পারা যায় সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো। বাসার সবাইকে পাঠিয়ে দিই।’
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘তখন খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী। কী ভূমিকা সে পালন করেছিল সেটাই প্রশ্ন? সে কেন বাধা দিল পুলিশকে? কেন সে কোনো রকম উদ্যোগ নিল না আলামত রক্ষা করতে। এতে কী প্রমাণ হয়? এই গ্রেনেড হামলার সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে খালেদা, তারেক গং জড়িত এতে কোনো সন্দেহ নেই। এবং তদন্তেও সেটা বেরিয়েছে।’
হত্যা-খুনের রাজনীতিটাই বিএনপি জানে এমন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খুনের রাজনীতি করা, মানুষ হত্যা, একটি দলকে নিশ্চিহ্ন বা পরিবারকে হত্যা করাÑ এই রাজনীতি তো বিএনপি করে। খালেদা জিয়া করে। এটা তো মানুষের কাছে স্পষ্ট। ২১ আগস্ট তো আমাদের চোখের সামনে। বারবারই তো তারা আঘাত হেনেছে। বাংলাদেশ আসার পর থেকেই তো আমার ওপর বারবার হামলা। বেঁচে গেছি আমি বারবার। জানি না কেন? এটা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন জানেন। তারা হত্যার ষড়যন্ত্র করেছে। চক্রান্ত করেছে। যে রাজনৈতিক দলের উত্থান হয়েছে, হত্যা-ক্যু ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে। তাদের মিথ্যাচার মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন। তাদের হাতে তো রক্ত।’
সম্প্রতি একটি মামলায় সাংবাদিক শফিক রহমান ও মাহমুদুর রহমানের সাজার প্রসঙ্গ টেনে সরকারপ্রধান বলেন, ‘২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে তারা এত অর্থ-সম্পদ বানায় যে এফবিআইয়ের অফিসারকে হায়ার করে জয়ের (সজীব ওয়াজেদ জয়) বিরুদ্ধে। জয়কে কিডন্যাপ করে হত্যার চেষ্টা করে। আমরা তো জানতেও পারিনি কোনো দিন। জানতে পেরেছি কীভাবে? ওই এফবিআইয়ের অফিসারের বিরুদ্ধে আমেরিকায় মামলা হয় দুর্নীতির জন্য। আর ওই মামলা করতে গিয়ে ওই কোর্টে বেরিয়ে আসে সে বিএনপির এজেন্টদের থেকে টাকা খেয়েছে, জয়কে কিডন্যাপের চেষ্টা করেছে। সেই মামলার রায়ে বেরিয়ে আসে শফিক রেহমান আর মাহমুদুর রহমানের নাম।
জনজীবনে নানাবিধ ব্যয়ের চাপ কীভাবে কমানো যায় তা নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন। এর মধ্যেই গ্যাসের মিটারের ভাড়া দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দিয়েছে তিতাস গ্যাস। গ্রাহকের পকেট কেটে মুনাফা আরও বাড়াতে চাইছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তিতাস গ্যাস অনিয়মের চূড়ান্তে উঠেছে। তারা তুঘলকি কর্মকান্ডের স্মারক।
তিতাসের পক্ষ থেকে গ্রাহকদের ৬ লাখ ৫০ হাজার প্রিপেইড মিটার দেওয়ার জন্য ২ হাজার ২৮৩ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। ‘স্মার্ট মিটারিং এনার্জি এফিসিয়েন্সি ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট’ নামের প্রকল্পে প্রতি মাসে গ্রাহকের জন্য মিটার ভাড়া ধরা হয়েছে ২০০ টাকা। অথচ তিতাসেরই আরেক প্রকল্পে মিটার ভাড়া ধরা হয়েছে ১০০ টাকা। নতুন ভাড়ায় আপত্তি তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন।
যদি ১০০ টাকা ভাড়া ধরা হয়, তাহলে এ প্রকল্পে সাড়ে ছয় লাখ মিটারে প্রতি মাসে ভাড়া আসবে ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ২০০ টাকা হলে ভাড়া আসবে ১৩ কোটি টাকা। বছরে ভাড়া আদায় হবে ১৫৬ কোটি টাকা। পুরোটাই যাবে গ্রাহকের পকেট থেকে।
মিটার ভাড়া দ্বিগুণ করার যুক্তি কী জানতে চাইলে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. হারুনুর রশীদ মোল্লাহ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘মিটারের দাম ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। ১০ বছরের লাইফ। তাহলে কত ভাড়া ধরব? শুধু মিটারের চুক্তিমূল্যই হিসাব করা হয় না, এটার সার্ভারের চার্জ আছে, অন্য চার্জও আছে।’
প্রকল্পের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, জালালাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনের একটি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর। এ প্রকল্পের প্রি-পেইড মিটারের চুক্তিমূল্য ছিল ১৫ হাজার ৮৭৩ টাকা। তিতাসের প্রস্তাবিত প্রকল্পে মিটারের চুক্তিমূল্য ১০ শতাংশ বেশি ধরা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শামসুল আলম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দেশে তুঘলকি কান্ড চলছে। এর আগে রাষ্ট্রপতি মিটারের ভাড়া বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছিলেন। এখন আবার পরিকল্পনা কমিশনের কাছে আবদার করা হয়েছে। রামরাজত্বেও এসব ঘটেনি।’
তিনি বলেন, ‘তিতাসের আর আয়ের দরকার নেই। তার আয় বেশি হয়ে গেছে। মন্ত্রণালয়, সচিবসহ সবাই তাদের মদদ দেয়। কারও কাছে তাদের কোনো জবাবদিহি নেই। আইন থাকুক আর না থাকুক, ভাড়া বাড়িয়ে তার আরও বেশি আয় করতে হবে। মন্ত্রণালয়ও হাত-পা গুটিয়ে রেখেছে।’
পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প শক্তি বিভাগের উপপ্রধান বলেছেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পের ১০ শতাংশ অতিরিক্ত চুক্তিমূল্য বাদ দিতে হবে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র বলছে, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি মোট ২ হাজার ২৮৩ কোটি টাকার। এর মধ্যে সরকার দেবে ৩২৩ কোটি, বৈদেশিক ঋণ ১ হাজার ৯৪৫ কোটি ও নিজস্ব অর্থায়ন ১৫ কোটি টাকা। এটি বাস্তবায়িত হবে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে থেকে ২০২৮ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে। গত ২ আগস্ট প্রকল্পটির ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভা (পিইসি) হয়েছে।
পিইসি সভায়, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (টিজিটিডিসিএল) ব্যবস্থাপক প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেন, ‘বিদ্যমান সিস্টেমে আবাসিক গ্রাহক পর্যায়ে বিভিন্নভাবে প্রাকৃতিক গ্যাসের অপচয় হচ্ছে। কিছু অসৎ গ্রাহক অননুমোদিত সরঞ্জামের মাধ্যমে অতিরিক্ত গ্যাস ব্যবহারের সঙ্গেও জড়িত। এটি গ্যাসের অপচয় ও সিস্টেম লসের গুরুত্বপূর্ণ কারণ। প্রিপেইড গ্যাস মিটার ব্যবহার করে দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আবাসিক খাতে গ্যাসের অপচয় রোধ করে সিস্টেম লস কমানো সম্ভব হবে।’
সভায় জানতে চাওয়া হয়, তিতাস অধিভুক্ত এলাকায় সিস্টেম লস কত শতাংশ। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে কী পরিমাণ সিস্টেম লস কমানো যাবে। এমন প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি তিতাস।
তিতাসের উপমহাব্যবস্থাপক জানান, সিস্টেম লস-সংক্রান্ত কোনো জরিপ করা হয়নি। হালনাগাদ তথ্যও তিতাসের হাতে নেই। তবে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রতি গ্রাহকে মাসে ২৬ ঘনমিটার গ্যাস সাশ্রয় হবে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পে গ্রাহক পর্যায়ে মাসিক মিটার ভাড়া ধরা হয়েছে ২০০ টাকা। পিইসি সভায় সিদ্ধান্ত হয়, চলমান অন্য প্রকল্পে ১০০ টাকা ভাড়া ধরা হয়েছিল, এ প্রকল্পেও তা-ই করতে হবে।
তিতাস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিতাসের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ২৬ লাখ ৬৩ হাজার। পর্যায়ক্রমে সব গ্রাহককেই মিটারিংয়ের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। বর্তমানে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ও জাপানের জাইকার অর্থায়নে দুটি প্রকল্পে মিটারিং কাজ চলমান আছে। এডিবির অর্থায়নে ইতিমধ্যে ৮ হাজার ৬০০টি ও জাইকার অর্থায়নে বসানো হয়েছে ৩ লাখ ২০ হাজার মিটার। জাইকার অর্থায়নে চলমান প্রকল্পের আওতায় আরও ১ লাখ প্রিপেইড মিটার স্থাপনের লক্ষ্যে প্রকল্পটির সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে। জাইকার অর্থায়নে আরও ১১ লাখ মিটার স্থাপন প্রক্রিয়াধীন।
কর্মকর্তারা আরও জানান, নতুন প্রস্তাবিত প্রকল্পটিতে মিটার স্থাপনের মাধ্যমে আবাসিক এলাকার ৮১ দশমিক ৭৯ শতাংশ গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারিংয়ের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
২০২২ সালের জুলাই মাসে প্রিপেইড মিটারের ভাড়া ৬০ থেকে ৪০ টাকা বাড়িয়ে এক লাফে ১০০ টাকা করেছিল তিতাস। বাসাবাড়িতে গ্যাসের প্রিপেইড মিটার স্থাপন শুরু হয় ২০১৭ সালে। ২০১১ সালে পরীক্ষামূলকভাবে তা শুরু হয়েছিল। শুরুতে সরকারের গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোর বেশ আগ্রহ ছিল মিটার স্থাপনে; আস্তে আস্তে মিটার স্থাপনে দীর্ঘসূত্রতা শুরু হয়। এখন আবেদন করেও মিটার পায় না গ্রাহক।
প্রিপেইড মিটারে গ্যাসের অপচয় রোধ, গ্রাহকের খরচ কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন সুবিধার কথা প্রায় প্রতিষ্ঠিত। এ কারণেই জাইকার সহায়তায় প্রিপেইড মিটার বসানো শুরু করে তিতাস গ্যাস।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদের স্থায়ী বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬০তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এ এইচ এম আলী হাসান। বহিষ্কৃতরা হলেন পরিসংখ্যান বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, চারুকলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের হালিমা আক্তার ঊর্মি, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মিম, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম ও মুয়াবিয়া জাহান। ২৩ আগস্ট এ সিদ্ধান্তটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ভুক্তভোগী ফুলপরী খাতুন দেশ রূপান্তরকে বলেন, প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এতে আমি সঠিক বিচার পেয়েছি। তারা আমার সঙ্গে যে নির্যাতন করেছে তার উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই। এই বিচার দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতন ও ভিডিও ধারণের অভিযোগ ওঠে পাঁচ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। তারা হলেন পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, চারুকলা বিভাগের হালিমা আক্তার ঊর্মি, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মিম, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম ও মুয়াবিয়া জাহান। তাদের মধ্যে সানজিদা চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও অন্যরা কর্মী ছিলেন।
এ ঘটনার সংবাদ প্রকাশ হলে দেশ জুড়ে আলোচিত হয়ে ওঠে। ওই সময় ফুলপরী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, হলের প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।
ঘটনা তুলে ধরে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী গাজী মো. মহসিন। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রিট গ্রহণ করে এ বিষয়ে ওই আইনজীবীর কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চান।
এ ঘটনায় রিট হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের পাশাপাশি কিছু নির্দেশনা দেয় হাইকোর্ট। মোট তিনটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। যার দুটি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও একটি কমিটি গঠিত হয় হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী।
তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য হাইকোর্ট ১ মার্চ নির্দেশনা দেয়। সেই নির্দেশনা মেনে পাঁচ শিক্ষার্থীকে ১৫ জুলাই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটি ও হাইকোর্টের গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস কোড অব কন্ডাক্ট-১৯৮৭ এর পার্ট-২ ধারা-৮ মোতাবেক ১২ মাসের জন্য তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি। এ শাস্তি চলাকালীন তারা ক্লাস-পরীক্ষাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
বিষয়টি পুনরায় আদালতের দৃষ্টিতে আনেন রিটকারী আইনজীবী গাজী মো. মহসিন। তিনি আদালতকে জানান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটি প্রাসঙ্গিক পদ্ধতি লঙ্ঘন করে পাঁচ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে।
আদালতকে আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটি নয়, বরং কোনো অপরাধের জন্য কোনো শিক্ষার্থীকে শাস্তি দিতে পারেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। ফলে এই শাস্তির বৈধতা যদি আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হয় তবে তা বাতিল হয়ে যাবে। এরপর হাইকোর্ট নির্যাতনের দায়ে পাঁচ শিক্ষার্থীকে কোন পদ্ধতিতে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে তা জানতে চায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি সিন্ডিকেট সভায় তাদের আজীবন বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ডিমের বাজারে প্রায় দুই সপ্তাহের অস্থিরতা শেষে কমতে শুরু করেছে দাম। কিন্তু এই সময়ে ডিম সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। ডিমের দাম বাড়ার যৌক্তিক কোনো উত্তর ব্যবসায়ীরা দিতে না পারলেও তাদের টার্গেট অনুযায়ী তা বেড়েছে। পরে সরকারের আমদানির হুমকি ও বিভিন্ন সংস্থার বাজার তদারকিতে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে ডিমের দাম কিছুটা কমাতে বাধ্য হয়েছে ডিম সিন্ডিকেট।
তবে এখনো মূল পাইকারি বাজারে (মিলগেটে) প্রতিটি ডিমের দাম বিক্রি হচ্ছে ১১ টাকা ৫০ পয়সা। ফলে পরিবহন খরচ, ড্যামেজ, আড়তদার, পাইকারি ও খুচরা লাভ শেষে সরকার নির্ধারিত দামে বাজারে ডিম বিক্রি সম্ভব হচ্ছে না, অর্থাৎ এখনো বাজারে সরকার নির্ধারিত ১২ টাকা রেটে প্রতিটি ডিম বিক্রি হচ্ছে না। এতে নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের প্রোটিনের মূল উৎস ডিম অধরাই থেকে যাচ্ছে। প্রতিটি পরিবারই আগের চেয়ে ডিম কেনা অর্ধেক বা এক-তৃতীয়াংশ কমিয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য মতে, দেশে প্রতিদিন সব ধরনের ডিমের মোট চাহিদা ৪ দশমিক ৭০ কোটি থেকে ৪ দশমিক ৮০ কোটি। আগে উৎপাদন ছিল ৪ দশমিক ৪০ থেকে ৪ দশমিক ৪৫ কোটি। তবে কিছুদিন আগে এই উৎপাদন কমে গিয়ে দাঁড়ায় ৩ দশমিক ৯০ থেকে ৪ দশমিক ১০ কোটির মধ্যে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বলছে, প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ টাকা ৫০ পয়সা। ফলে সব ধরনের হাত ঘুরলেও কোনোভাবেই খুচরা পর্যায়ে একটি ডিমের দাম ১২ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। অথচ প্রায় ১৪ দিন খুচরা পর্যায়ে প্রতিটি ডিম বিক্রি হয়েছে ১৫ টাকা। আর পাইকারিতে সে দাম ছিল ১২ দশমিক ৪০ থেকে ১২ দশমিক ৫০ টাকা; অর্থাৎ প্রতিটি ডিম থেকে সিন্ডিকেট অতিরিক্ত বাণিজ্য করেছে ২ টাকা। সেই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে বাণিজ্য হয়েছে ৮ কোটি টাকা। আর ১৪ দিনে সিন্ডিকেটের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১১২ কোটি টাকা।
আর ডিমের বড় ধরনের দাম বাড়ানোর আগে আস্তে আস্তে দাম বাড়ানো হয়েছে। আবার ১৪ দিন শেষে আস্তে আস্তে কমানো হচ্ছে। ফলে সেখানেও আরও ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে। ফলে এই আগস্ট মাসে ডিম সিন্ডিকেট অতিরিক্ত বাণিজ্য করেছে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মুহাম্মদ মহসিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ডিমের দাম বাড়ার মূল সমস্যা ঘাটতি। আমাদের ৩৯ ভাগ খামার বন্ধ। নানা কারণে চালু থাকা খামারেও উৎপাদন কমে গেছে। অথচ কথায় কথায় ভারতের সঙ্গে তুলনা করা হয়। তারা আমাদের চেয়ে ৫০ বছর এগিয়ে। তাদের সরকার পোলট্রি খাতে বড় ধরনের সাবসিডি দেয়। এ ছাড়া তাদের ডিমের সাইজ আমাদের চেয়ে ছোট। ফলে তারা কিছুটা কম দামে ডিম বিক্রি করতে পারে।’
খন্দকার মুহাম্মদ মহসিন আরও বলেন, ‘আমাদের বেশির ভাগ পোলট্রি পণ্য আমদানি করতে হয়। প্রথমে করোনায় সব থমকে যায়। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ডলারের দাম ৩০ টাকা বেড়ে যায়। এতে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের বড় ধরনের খরচ বেড়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি বৈরী আবহাওয়া, বিশেষ করে প্রচ- গরম, এরপর আবার বৃষ্টি এতে অনেক মুরগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আবার আড়তদাররাও কিছুটা অতিরিক্ত মুনাফা করে। সব মিলিয়ে ডিমের দাম বেড়ে যায়। তবে এখন আবার উৎপাদন বাড়ায় ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। তবে এর চেয়ে দাম কমাতে হলে সরকারকে সাবসিডি দিতে হবে; বিশেষ করে আমদানি করা পোলট্রির সব পণ্য কম দামে খামারিদের দিতে হবে।’
সূত্র জানায়, গত বছরের আগস্টেও একইভাবে ডিমের বাজারে কারসাজি করে দাম বাড়ানো হয়। তখন ভোক্তা অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানোর প্রমাণ পায়। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলাও হয়। কিন্তু সেই মামলার আর অগ্রগতি হয়নি। ফলে এ বছর আগস্টেও আগের চেয়ে দ্বিগুণ উৎসাহে ডিমের দাম বাড়াল সিন্ডিকেট। ভোক্তা অধিদপ্তর ছাড়াও গত বছর আগস্টে কাজী ফার্মস, প্যারাগন, সিপি, ডায়মন্ড এগ, পিপলস ফিডসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করে প্রতিযোগিতা কমিশন।
জানা যায়, বাংলাদেশে এখন পোলট্রি খামারি আছেন ৬০ হাজার। তাদের মধ্যে ২০ হাজার খামারি ডিম উৎপাদন করেন। আর ৪০ হাজার খামারি মুরগি উৎপাদন করেন। ডিম উৎপাদনকারী বেশিরভাগ খামারিকে কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের আওতায় নিয়ে গেছে কয়েকটি করপোরেট প্রতিষ্ঠান। তাদের আগাম টাকা দিয়ে ডিম ও মুরগির দাম বেঁধে দেওয়া হয়। সারা বছর সেই একই দামে ডিম ও মুরগি কেনে কয়েকটি করপোরেট প্রতিষ্ঠান। তাই করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো সহজেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তাদের আবার নিজস্ব ফার্মও আছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রতিদিন সকালে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর লোকজন নির্দিষ্ট এজেন্টদের মাধ্যমে সকাল ১০টার মধ্যে মোবাইল ফোনে এসএমসএস, ফেসবুক পেজের মাধ্যমে সারা দেশে ডিমের দাম জানিয়ে দেয়। আর সেই দামেই ডিম বিক্রি হয়। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। এর সঙ্গে উৎপাদন বা চাহিদার তেমন সম্পর্ক থাকে না।
অথচ ডিমের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সম্প্রতি সরকারের ডাকা একাধিক বৈঠকে বড় বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, পাইকারি বাজারের বড় ব্যবসায়ী বা ক্ষুদ্র খামারির কেউই দায় নিতে চাননি। দাম বৃদ্ধির জন্য একে অপরের ওপর দায় চাপিয়েছেন। কেউ কেউ উচ্চহারে খাবারের দাম বৃদ্ধির কথা বলেছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, মুরগির খাবারের দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। সেটা হিসাব করেই এখন ডিম উৎপাদন খরচ সাড়ে ১০ টাকা নির্ধারণ করেছে মন্ত্রণালয়। ফলে খাবারের দাম বৃদ্ধির দোহাই দিয়ে ডিমের দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই। যদি খাবারের দাম না বাড়ত তাহলে ডিম উৎপাদন খরচ সাত থেকে আট টাকার মধ্যেই থাকত। দেশে একটা ডিমের খুচরা দাম ১৪ থেকে ১৫ টাকা হলেও পাশর্^বর্তী দেশ ভারতের বিভিন্ন শহরে একটি ডিমের খুচরা দাম বাংলাদেশি টাকায় আট টাকার মধ্যেই বিক্রি হচ্ছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এখনো মিলগেটে ১১ দশমিক ৩০ টাকা করে প্রতিটি ডিম বিক্রি হচ্ছে। এতে নির্ধারিত ১২ টাকা দামে ভোক্তার হাতে ডিম পৌঁছাচ্ছে না। ডিমের দাম কমাতে হলে মিলগেটে দাম কমাতে হবে। আমরা এ ব্যাপারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট জমা দিয়েছি। মুরগির খাবারের দাম কেমন হওয়া উচিত, সেটাও নির্ধারণের জন্য আমরা বলেছি। এ ছাড়া রসিদ ছাড়া যেন ডিম ক্রয়-বিক্রয় না হয়, সেটা আমরা মনিটরিং করছি। যা সামনে আরও জোরদার হবে।’
সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দুদিনের সফরে ঢাকায় আসছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। চলমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের নানামুখী চাপকে ঘিরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে ল্যাভরভের এ সফর গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। এ সফরে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন বলে কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে।
ঢাকা ও রুশ কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, আগামী সেপ্টেম্বরে নয়াদিল্লিতে হতে যাওয়া জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেবেন ল্যাভরভ। তার আগে ৭ ও ৮ সেপ্টেম্বর দুদিন ঢাকা সফরে থাকবেন তিনি।
কূটনীতিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মধ্যে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ সফর ভূরাজনৈতিকভাবে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ সফর হবে অনেক বেশি রাজনৈতিক। এদিকে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে বাংলাদেশ বিষয়ে অনেক বেশি সতর্ক যুক্তরাষ্ট্র। তারা কোনোভাবেই চায় না বাংলাদেশ চীন-রাশিয়া বলয়ে ঝুঁকে পড়ুক। আবার যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত চাপে বাংলাদেশও অনেকটাই কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তাই এ সফর নতুন বার্তা যোগ করবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুর পর থেকেই রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে এবং যুদ্ধ ইস্যুতে নিজেদের পক্ষে মত তুলে ধরতে অনেক দেশে সফর করেছেন। একইভাবে বাংলাদেশ সফরেও আগ্রহ দেখিয়েছে মস্কো। ঢাকায় রাশিয়ান দূতাবাস থেকে বাংলাদেশে সরকারের সঙ্গে নিয়মিত আলোপ-আলোচনা চালিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর আগেও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরের আগ্রহের কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত কিছু জানানো হয়নি। এবারও মস্কো আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। যদিও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ সফর সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি।
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে সদস্য রাষ্ট্র রাশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছেন সের্গেই ল্যাভরভ। মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় ওই সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন সশরীরে যোগ দিতে পারছেন না। সম্মেলনে আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ব্রিকস সম্মেলনে বাংলাদেশের সরকারপ্রধানের সঙ্গে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেখা-সাক্ষাৎ হবে, তবে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ এ বিষয়ে দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কটা ঐতিহাসিক। রাশিয়া বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কাজেই রাশিয়ার একজন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর খুবই ইতিবাচক। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিটাই এমন সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। এখানে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসেন। বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বাংলাদেশ সফর করেন। তাই এটা আমার কাছে স্বাভাবিক মনে হয়। এটার মধ্যে অন্য কোনো চাপ আমি দেখছি না। রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের একটা সম্পর্ক আছে। বিশেষ করে, রূপপুরের ব্যাপারটা বিশাল। এখানে রাশিয়ার বিনিয়োগ আছে।’
তার নাম শেখ মোহাম্মদ আসলাম। একসময় সুইডেন ছিলেন বলে পরিচিত হয়ে ওঠেন স্ইুডেন আসলাম নামে। তেজগাঁও এলাকার এই শীর্ষ সন্ত্রাসী একসময় ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড বা অপরাধ জগৎ কাঁপাতেন। ২৭ বছর ধরে আছেন কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে। হত্যাসহ ১৭ মামলার একটি ছাড়া বাকিগুলোতে জামিন পেয়েছেন তিনি। কিন্তু বহু দিনের পুরনো প্রতিপক্ষের হাতে প্রাণ হারানোর শঙ্কায় জামিনের জন্য আবেদন করছেন না তিনি।
মোহাম্মদপুর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলালও জামিনের আবেদন করছেন না। প্রায় ২০ বছর ধরে কারাগারে থাকা হেলালের বিরুদ্ধে আছে অন্তত এক ডজন মামলা। বেশিরভাগ মামলায় জামিন হয়ে গেছে। এই দুজনের মতোই কারা হাজতে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছেন না। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে কেউ সাক্ষ্যও দিতে আসেন না আদালতে। তারা বছরের পর বছর ধরে কারাগারে থাকলেও সমস্যা হচ্ছে না। অনেকেই অসুস্থ না হয়েও বছরের পর বছর হাসপাতালে আরামে
থাকছেন। বাইরে থাকা তাদের সহযোগীদের সঙ্গেও যোগাযোগ থাকছে। এই সহযোগীরাই তাদের হয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করছেন।
পুলিশের তালিকায় ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম আছে যাদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। অবশ্য এই তালিকায় সুইডেন আসলাম নেই। তালিকা করা হয় ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর। এদের মধ্যে ১৩ জন বিদেশে আত্মগোপন করে আছেন। কারাগারে আছেন ৬ জন, মারা গেছেন ৩ জন। একজনের কোনো হদিস নেই।
এই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আটজনকে ১ লাখ টাকা এবং ১৫ জনকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর মধ্যে পিচ্চি হান্নান র্যাবের ক্রসফায়ার, গণপিটুনিতে আলাউদ্দিন ও কামাল পাশা ওরফে পাশা কারাগারে মারা গেছেন। কালা জাহাঙ্গীর বেঁচে আছেন নাকি আত্মগোপনে, কেউ বলতে পারছেন না। পিচ্চি হেলাল, টিটন, ফ্রিডম সোহেল ও কিলার আব্বাস কারাগারে আছেন। খোরশেদ আলম ওরফে রাশু কিছুদিন আগে ছাড়া পেলেও কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আবার আটক করেছে। মশিউর রহমান কচি, সুব্রত বাইন, আমিন রসুল সাগর. ইমাম হোসেন, প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, মোল্লা মাসুদ, শামীম আহমেদ, হারিস আহমেদ, তানভিরুল ইসলাম জয়, জাব্বার মুন্না, জাফর আহমেদ, কামরুল হাসান হান্নান ওরফে ছোট হান্নান দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তাদের ধরতে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করা আছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে আসার চেষ্টা করছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তাদের ব্যবহার করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি আন্ডারওয়ার্ল্ডে একে অপরকে ঘায়েল করার চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে গাড়ি থামিয়ে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ভাগ্যক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও গুলিবিদ্ধ এক পথচারী সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে আছেন। এ ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন জড়িত বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আন্ডারওয়ার্ল্ড উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও। দেশের বাইরে থাকা সন্ত্রাসীরা নিজেদের সহযোগীদের মাধ্যমে নতুন করে আধিপত্য বিস্তারের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এমনকি কারাগারে থাকা সন্ত্রাসীরাও সহযোগীদের নানা বিষয়ে বার্তা দিচ্ছে। এর মধ্যে কেউ কেউ রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত হতে চাইছে। যে কারণে সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে পুলিশ সদর দপ্তর সব কটি ইউনিট, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার এসপিদের বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সদর দপ্তরে আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীদের বিষয়ে নতুন করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কারাগার কর্তৃপক্ষকেও হাজতি ও বন্দি সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, যেসব সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক আছে, তাদের একটি তালিকা করেছে একটি সংস্থা। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও তারা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছে না। তারা কারাগারকেই নিরাপদ মনে করছে।
কারা সূত্র জানায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম একটি মামলায় জামিন না নেওয়ায় কারাগারে আছেন। বাকি সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। ২৭ বছরের কারাজীবনে তার দুইবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। বেশিরভাগ সময় কেটে যাচ্ছে হাসপাতালে থেকেই। হুইলচেয়ারে করে চলাফেরা করেন সব সময়। মোবাইল ফোনে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ করেন সহযোগীদের সঙ্গে। তার স্ত্রী আয়েশা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।
সুইডেন আসলামের বিষয়ে তার এক আত্মীয় দেশ রূপান্তরকে বলেন, এলাকায় তার যখন একক আধিপত্য ছিল, তখন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল। তারাই এখন তার বিরুদ্ধে। সুইডেন আসলাম বের হয়ে এলে প্রতিপক্ষরাই তাকে মেরে ফেলবে, এমন শঙ্কা আছে। এসব দিক বিবেচনা করেই তিনি বের হতে চাইছেন না। কারাগারেই তিনি ভালো আছেন।
জানা গেছে, সুইডেন আসলামের বিরুদ্ধে মামলাগুলোতে কোনো সাক্ষীও পাওয়া যায় না। ১৯৮৬ সালে তিনি অপরাধ জগতে যুক্ত হন। ওই বছর পূর্ব রাজাবাজারে স্কুলের সামনে কিশোর শাকিলকে গুলি করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তারপর থেকে তার বিরুদ্ধে একের পর এক হত্যাকা-সহ নানা অপরাধের তথ্য বের হয়ে আসে। এরই মধ্যে নিজেকে রক্ষা করতে সুইডেন চলে যান। বছর পাঁচেক ওই দেশে থেকে আবার ফিরে আসেন দেশে। তারপর সুইডেন শব্দটি নামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। ১৯৯৭ সালের ২৩ মার্চ গালিব খুন হন। এ ঘটনায় আসলামসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ১৯৯৮ সালের ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২৪ সাক্ষীর মধ্যে পুলিশ চারজনকে আদালতে হাজির করতে পেরেছে। বাকিরা আর আসেননি এবং এই মামলায় তিনি জামিনও নেননি।
দীর্ঘদিন কারাগারে থাকলেও আসলাম মোবাইল ফোনে সহযোগীদের সঙ্গে কথা বলতে পারছেন। স্ত্রী আয়েশা আকতার নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। বলা চলে রাজার হালেই আছেন তিনি।
মিরপুর ও কাফরুল এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার আব্বাস ২২ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। তার বিরুদ্ধে থাকা ১১টি মামলার জামিন হয়েছে। একটি মামলার জামিন হতে বাকি আছে। তা ছাড়া কমিশনার নিউটন হত্যা মামলায় ফাঁসির আদেশ হলেও উচ্চ আদালতে খালাস পেয়েছেন তিনি। আরেকটি মামলার শুনানি চলছে উচ্চ আদালতে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিলার আব্বাসের এক সহযোগী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ভাইয়ের সঙ্গে মাঝেমধ্যে কাশিমপুর কারাগারে গিয়ে দেখা করে আসি। দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি কারাগার থেকে বের হতে চাচ্ছেন না। জামিন চাইলে তিনি জামিন পেয়ে যাবেন। কিন্তু ভাই তা করবেন না। কারণ প্রতিপক্ষ সক্রিয় আছে। তার প্রাণ শঙ্কা আছে। আমরা ইচ্ছা করলে যেকোনো সময় জামিন নিয়ে ভাইকে বের করে আনতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরেক সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালেরও প্রায় সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। শুধু একটা মামলার জামিন বাকি আছে। তিনি যখন কারাগারে, তখন বিএনপি তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেছিল। অথচ হেলাল বিএনপির রাজনীতি করেন। জেলে বসেই মোহাম্মদপুর, আদাবর ও ধানম-ি, মিরপুর এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছেন। মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড দখল ও চাঁদাবাজি চালাচ্ছেন। তার সঙ্গে মিরপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদতের ভালো যোগাযোগ। মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথা বলেন তারা। তার আরেক সহযোগী হাবিবুর রহমান তাজ ১৩ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। মামলার সাক্ষীদের হাজির করতে পারছে না রাষ্ট্রপক্ষ। ইচ্ছে করে জামিনও নিচ্ছেন না তাজ। গ্রেপ্তারের আগে দীর্ঘদিন ভারত পালিয়ে ছিলেন। ২০০৮ সালে ভারতে গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক মাস পর তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রাজধানীর কাফরুলে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি ইসমাইল হোসেনকে হত্যা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তা ছাড়া কলেজছাত্র কামরুল ইসলাম ওরফে মোমিন হত্যার সঙ্গেও জড়িত তাজ। মতিঝিল থানার সাবেক ওসি এ কে এম রফিকুল ইসলামের আশ্রয়-প্রশয়ে থাকতেন তিনি। কয়েক বছর আগে ওসি রফিক মারা যান।’
মতিঝিলে একটি গোয়েন্দা সংস্থার দুই কর্মকর্তাকে হত্যা করে আলোচনায় আসে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী ঈদুল। প্রায় ১৫ বছর ধরে কাশিমপুর কারাগারে আটক আছেন তিনি। একবার পঙ্গু হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে আটক করে ফেলে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা থাকলেও দুটি মামলা বাদে সব কটিতে জামিন পেয়েছেন। বাকি মামলাগুলোতে ইচ্ছা করে জামিন নিচ্ছেন না বলে তার এক স্বজন জানিয়েছেন।
সেভেন স্টার গ্রুপের একসময়ের সদস্য ফ্রিডম সোহেল ধানম-ি ৩২ নম্বরে গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজার আসামি। সাজা কমিয়ে কারাগারেই থাকার চেষ্টা করছেন সোহেল। তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা আছে। ৯টি মামলায় জামিন পেয়েছেন। একটি মামলায় সাজা হয়েছে। আরেকটি মামলায় জামিন নিচ্ছেন না।
তার সহযোগী পুরস্কারঘোষিত সন্ত্রাসী রাশু কিছুদিন আগে কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আটক করে। তার এক স্বজন দেশ রূপান্তরকে জানান, মাস দুয়েক আগে সর্বশেষ মামলায় জামিন হয় রাশুর। তার কোনো ইচ্ছা ছিল না কারাগার থেকে বের হওয়ার। আর এ কারণে ইচ্ছা করেই একটি সংস্থাকে কারাগার থেকে বের হওয়ার তথ্য দিয়ে আবার গ্রেপ্তার হন। কারণ তিনি বের হলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে মেরে ফেলবে এমন আশঙ্কা ছিল। আরেক সন্ত্রাসী লম্বু সেলিম একটি মামলা বাদে সব মামলায় জামিনে আছেন। ভারতের কলকাতা থেকে তাকে পুশব্যাক করা হয়েছিল। প্রায় আট বছর ধরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। বেশিরভাগ সময় হাসপাতালে থাকেন। নিরাপত্তাহীনতার কারণে জেল থেকে বের হচ্ছেন না তিনি।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, সন্ত্রাসীদের কর্মকা- রোধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নানা কৌশলে কাজ করছে। তারা সরগরম হলেও কাজ হবে না। যারা দেশের বাইরে আছে, তাদের চিহ্নিত করে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ধরার চেষ্টা চলছে। যারা দেশে আছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনতে পুলিশ-র্যাব কাজ করছে। তবে আন্ডারওয়ার্ল্ডের কেউ বিশ্ঙ্খৃলা তৈরি করতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘কোনো সন্ত্রাসী জামিন না নিলে এটা আমাদের করার কিছু নেই। তবে তাদের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয়, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।’
পুলিশ সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি, চোরাকারবারিসহ ভিন্ন ধরনের অপরাধীরা দুবাই, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আত্মগোপন করে আছেন। তাদের সহযোগীরা বাংলাদেশে অবস্থান করে অপরাধমূলক কর্মকা- চালিয়ে আসছেন। তাদের নির্দেশে হত্যাকান্ডের মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছেন তারা। মতিঝিলে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যাকান্ডের পেছনে বিদেশ কানেকশন।
২০০৩ সালে মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে ডিবি পুলিশের দুই সদস্যকে হত্যার পর পালিয়ে যাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান দুবাইয়ে আত্মগোপন করে আছেন। টিপু হত্যাকান্ডের পর তিনি আলোচনায় এসেছিলেন। দুবাইয়ে থাকলেও ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে সবচেয়ে বেশি প্রভাব তার। জিসানের সহযোগী জাফর আহমেদ মানিক ওরফে ফ্রিডম মানিক ভারতে পালিয়ে আছেন। কিন্তু দেশে তার দখলবাজি, টেন্ডারবাণিজ্য ও চাঁদাবাজিতে নিয়ন্ত্রণ এখনো আছে। মোল্লা মাসুদ ও সুব্রত বাইন ভারতে থেকে সক্রিয় আছেন। তানভীর ইসলাম জয়ও সক্রিয় আছেন। কলকাতা, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ঘুরে তার অবস্থান এখন থাইল্যান্ডে। সেখানে বসেই তিনি কলকাঠি নাড়ছেন।
আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি ঘোষণা করেছে চলতি বছর মে মাসে। গত শুক্রবার ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করার কথা জানিয়েছে দেশটি। নির্বাচনে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে এ নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করার ঘোষণার তিন দিন পার হলেও কারও নাম প্রকাশ হয়নি। তবে বিভিন্ন মহলে নানা দপ্তরের কর্তাব্যক্তিদের নামে আলোচনা এখন সর্বত্র।
কারা যুক্তরাষ্ট্রের এ ভিসা নিষেধাজ্ঞায় পড়েছেন বা পড়তে যাচ্ছেন তা নিয়ে রাজনৈতিক, কূটনীতিক, শিক্ষাবিদ ও ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্বকারী একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছে দেশ রূপান্তর। তাদের কাছ থেকে জানা গেছে, যেহেতু নির্বাচনে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি ঘোষণা করেছে, তাতে এর লক্ষ্য নির্বাচনী ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারাই। তারাই ভিসানীতির আওতায় পড়বেন, এটাই স্পষ্ট।
তারা আরও বলেন, ভিসানীতি প্রয়োগের কথা জানালেও যুক্তরাষ্ট্র কারও নাম প্রকাশ করেনি। তবুও বলা যেতে পারে, কাদের ওপর ভিসানীতি প্রয়োগ করবে পশ্চিমা এ প্রভাবশালী দেশটি।
এ ব্যক্তিরা আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চয়ই একটা তালিকার বেশিরভাগ নামই চূড়ান্ত করে ফেলেছে। অল্পসংখ্যক বাকি থাকতে পারে। নির্বাচন ঘনিয়ে এলে সেগুলোরও চূড়ান্ত করা হবে। যেখানে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় জড়িত প্রতিষ্ঠান, দপ্তর, অধিদপ্তরের কর্তাব্যক্তিরা থাকতে পারেন।
বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করে ধারণা পাওয়া গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির উদ্দেশ্যই যেহেতু দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে, ফলে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনীর কর্মকর্তা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা যারা নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকবেন তারাই ভিসানীতির আওতায় আসবেন। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারাও থাকতে পারেন। থাকতে পারেন উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রাজনৈতিক নেতা, তারা যেকোনো দলের হতে পারেন। অল্পসংখ্যক ব্যবসায়ীও থাকতে পারেন।
জানতে চাইলে সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির দেশ রূপান্তরকে বলেন,‘ভিসানীতির বিষয়টি আমেরিকা প্রশাসন পরিষ্কার করে ঘোষণা না করলেও বুঝিয়ে দিয়েছে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারেন, এমন যে কেউ এ ভিসানীতির আওতায় পড়তে পারেন। যেমন রাজনীতিবিদ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নির্বাহী প্রশাসন, জুডিশিয়ারি অর্থাৎ যারাই নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট থাকবেন, অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যাহত করবেন তারাই এর আওতায় আসবেন।’ তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের এর আওতায় পড়ার সুযোগ নেই। তবে হ্যাঁ, নির্বাচন ব্যাহত করার ছোট্ট সুযোগ তাদের হাতেও থাকে, তারা যদি জড়িত হন, ভিসানীতির আওতায় পড়বেন।’
সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ভিসানীতির চেয়েও আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে নেগোশিয়েশন জরুরি। কে ভিসানীতির আওতায় পড়ল, কে পড়ল না এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঐক্য।’ তিনি বলেন, ‘ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়ায় কারা রয়েছেন সেটা আমেরিকা প্রশাসন ঘোষণা না করলেও বোঝা খুব জটিল কিছু নয়।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার বলেন, ‘আমেরিকা যেহেতু ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচনে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে তাদের ভিসানীতি, ফলে পরিষ্কার হয়ে গেছে কারা পড়তে পারেন এর আওতায়। যারা নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, নিশ্চয়ই তারাই এর আওতায়।’
বিভিন্ন পর্যায়ের ও পেশার নিয়োজিত একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজনৈতিক নেতারা ভিসানীতিকে তেমন আমলে না নিলেও বিভিন্ন বাহিনীর কর্মকর্তা ও সিভিল প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ভেতরে আমেরিকার ভিসানীতি ভীষণ ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে। খোঁজ নিয়ে এর নানা কারণ জানা গেছে। এর মধ্যে বিদেশে টাকা পাচার, ব্যবসাবাণিজ্য, পরিবারের সদস্যদের বিদেশে থাকা এসব কারণে বেশি ভীতিতে ফেলেছে তাদের। আবার একটা অংশ বিদেশে কিছু না থাকলেও ভিসানীতির আওতায় পড়লে ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হওয়ার ভয় পাচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করায় যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে পারেন এমন দুুশ্চিন্তা যেমন কারও কারও মনে ভর করেছে, তেমনি ভিসানীতিতে পড়ার সুযোগ নেই তারাও দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। কারণ এই শ্রেণির লোকজন মনে করছেন, কখনো যদি যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চান, তখন যদি ভিসা না হয়।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছেন এমন নামের তালিকাও চারদিকে ঘুরপাক খাচ্ছে। আরও অগ্রসর হয়ে কোনো কোনো মহল লম্বা তালিকা হাতে নিয়ে ঘুরছে। তবে এসব নামের তালিকার উৎস বা সূত্র নিশ্চিত নয় বলে কেউ কেউ বিষয়টি গুজব মনে করছেন। সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষের বাইরে প্রায় সবাই ভিসানীতি আতঙ্কে ভুগছেন।
একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ভিসানীতিকে জয়-পরাজয় হিসেবে প্রচার করে এলেও ভেতরে ভীতি সবারই রয়েছে। কারণ পশ্চিমা দেশে তাদের অনেকেই ইতিমধ্যে সেকেন্ড হোম গড়ে তুলেছেন। ফলে রাজনীতির বাইরেও ব্যক্তিজীবনের প্রয়োজনে ভিসানীতি তাদের ওপর যদি প্রভাব ফেলে, সে আশঙ্কা তো আছেই।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সব বিষয়ে আমি কথা বলি না। আমি একটাই কথা বলব, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। আওয়ামী লীগ সে কাজই করছে।’
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘ভিসানীতি আমেরিকার অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এর সঙ্গে গণতন্ত্র ও নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই।’ তিনি বলেন, গণতন্ত্রের বিষয়ে বলতে হলে আরও অনেক বিষয় রয়েছে। এ ভিসানীতি কারা লক্ষ্যবস্তু জানতে চাইলে ইনু বলেন, ‘এটি নিয়ে মাথাব্যথা নেই আমাদের। তারাই বলতে পারবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কারও পরামর্শে সরকার কোনো প্রতিষ্ঠান অদলবদল করবে না, পরিবর্তনও আনবে না।’
ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের উদ্যোগে আজ রাজধানীর উত্তরা ও যাত্রাবাড়ীতে দুটি শান্তি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটায় সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে যাত্রাবাড়ী মোড়সংলগ্ন শহীদ ফারুক সড়কে শান্তি সমাবেশ শুরু হবে।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল এমপির সভাপতিত্বে সমাবেশে কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
বিকেল ৩টায় উত্তরা আজমপুর আমির কমপ্লেক্সের সামনে শুরু হবে আরেকটি শান্তি সমাবেশ। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের এ সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখবেন।
এতে সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। সঞ্চালনা করবেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।
থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলীয় সোংখলা প্রদেশে গতকাল রবিবার বৌদ্ধ ভিক্ষু ছদ্মবেশে সাত বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। তাঁরা অভিবাসন সংক্রান্ত অভিযান এড়াতে বৌদ্ধভিক্ষুর ছদ্মবেশ ধরেছিলেন।
থাইল্যান্ডের গণমাধ্যম দ্য থাইগার সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বেনামি তথ্যের ভিত্তিতে থাইল্যান্ডের সোংখলা ইমিগ্রেশন ও হাট ইয়াই ট্যুরিস্ট পুলিশ অভিবাসন সক্রান্ত একটি যৌথ অভিযান চালায়, যেখানে এই সাত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
থাই কর্তৃপক্ষ জানায়, গ্রেপ্তারকৃত সাত ব্যক্তির সবাই পুরুষ। তাঁরা অবৈধ উপায়ে মালয়েশিয়া যেতে চেয়েছিলেন। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে মিশে যেতে ও গ্রেপ্তার এড়াতে তারা মাথা কামানোসহ বৌদ্ধভিক্ষুর পোশাক পরিধান করেছিলেন।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের মধ্যে রূপদা নামের ৪৬ বছর বয়সী একজন এই দলের নেতৃত্ব দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
দ্য পাটায়া নিউজের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, অনুসন্ধানে কর্তৃপক্ষ জানতে পেরেছে, দলটি বাংলাদেশ থেকে ভ্রমণ শুরু করে মিয়ানমারের তাক প্রদেশের মায়ে সোট জেলার একটি অচিহ্নিত পথ দিয়ে থাইল্যান্ডে প্রবেশ করেছিল। তাদের চূড়ান্ত গন্তব্য ছিল মালয়েশিয়া।
খবরে বলা হয়, সাত ব্যক্তির সঙ্গে সাধারণ পোশাক ছিল। তা ছাড়া তাঁরা যে বৌদ্ধভিক্ষু, তার সপক্ষে কোনো প্রমাণ তাঁদের কাছে ছিল না। এই বিষয় উদ্ঘাটনের পর তাঁদের প্রকৃত পরিচয় নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়।
পরে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্তে পৌঁছায় যে তাঁরা তাঁদের দাবি অনুযায়ী, বৌদ্ধভিক্ষু নয়। গ্রেপ্তার সাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে থাইল্যান্ডে অবৈধ প্রবেশের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মৌলভীবাজার জেলার তাঁত ডিজাইনার রাধাবতী দেবী কলাগাছের তন্তু থেকে মণিপুরি ডিজাইনের শাড়ি তৈরি করেছেন। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দেওয়া হয়েছে তিনটি শাড়ি। যদিও ভারতের আগ্রা, মধ্যপ্রদেশসহ বিভিন্ন জায়গায় এই ধরনের শাড়ি তৈরি হচ্ছে কিন্তু আমাদের দেশে এই প্রথম তৈরি হলো, কলাগাছের সুতার শাড়ি। বান্দরবান জেলা প্রশাসক (ডিসি) ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি কলাগাছের তন্তু থেকে শাড়ি বানিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন রাধাবতী দেবীকে।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
তার নাম শেখ মোহাম্মদ আসলাম। একসময় সুইডেন ছিলেন বলে পরিচিত হয়ে ওঠেন স্ইুডেন আসলাম নামে। তেজগাঁও এলাকার এই শীর্ষ সন্ত্রাসী একসময় ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড বা অপরাধ জগৎ কাঁপাতেন। ২৭ বছর ধরে আছেন কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে। হত্যাসহ ১৭ মামলার একটি ছাড়া বাকিগুলোতে জামিন পেয়েছেন তিনি। কিন্তু বহু দিনের পুরনো প্রতিপক্ষের হাতে প্রাণ হারানোর শঙ্কায় জামিনের জন্য আবেদন করছেন না তিনি।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি ঘোষণা করেছে চলতি বছর মে মাসে। গত শুক্রবার ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করার কথা জানিয়েছে দেশটি। নির্বাচনে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে এ নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করার ঘোষণার তিন দিন পার হলেও কারও নাম প্রকাশ হয়নি। তবে বিভিন্ন মহলে নানা দপ্তরের কর্তাব্যক্তিদের নামে আলোচনা এখন সর্বত্র।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
সরকারি দল, বিরোধী দল ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর আগামীতে গণমাধ্যমও ভিসানীতিতে যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। গতকাল রবিবার চ্যানেল ২৪ কার্যালয়ে এক সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন। এর আগে গত শুক্রবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া যারা বাধাগ্রস্ত করবে তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানায়।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর আলটিমেটাম দিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়া এত অসুস্থ যে, এখন তার চিকিৎসকরা বলছেন, বাংলাদেশে তার চিকিৎসা সম্ভব নয়। বিদেশে পাঠাতে না পারলে তাকে বাঁচানো দুস্কর হয়ে যাবে। আমি চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা বলেছেন, আপনাদের যদি কিছু করার থাকে তাহলে করেন।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
বিএনপি নেতারা বরাবরের মতো তাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে রাজনীতি করার অপচেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘এই বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করতে গিয়ে আইনবিরোধী কথাবার্তা বলছেন বিএনপি নেতারা। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা না রেখে গায়ের জোরে ফ্যাসিস্ট কায়দায় দাবি আদায়ের জন্য তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে অকার্যকর করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।’
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
ইউরিয়া, ডিএপি, টিএসপি ও এমওপি প্রভৃতি প্রধান প্রধান রাসায়নিক সারে ভর্তুকি দেয় সরকার। এ পর্যন্ত সারের ভর্তুকিতে বকেয়া পড়েছে প্রায় সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা। দুটি সরকারি প্রতিষ্ঠান ও একাধিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সরকারের কাছে বকেয়ার এ অর্থ পায়। বকেয়ার অর্থছাড়ে ধীরগতি অর্থ বিভাগের। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) পাওনা ৭ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) পাওনা ৯ হাজার ১৭২ কোটি টাকা এবং বেসরকারি খাতের পাওনা ৫ হাজার ৫১৬ কোটি টাকা।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে রাজধানীসহ সারা দেশে দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা। তারা বলছেন, রাস্তাঘাট, বাসা-বাড়ি, মসজিদ, মার্কেটসহ যেখানে পাচ্ছে, সেখান থেকেই নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের পরিমাণ বাড়ছে। গত জুলাই মাসে এক দফার আন্দোলন শুরুর পর থেকে নেতাকর্মীরা নিজ বাসা-বাড়িতে থাকতে পারছেন না। পাশাপাশি জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর জামিনের মেয়াদ বাড়াতে আদালতে গেলে জামিন বাতিল করে তাদের কারাগারে পাঠানো হচ্ছে।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল না পাঠানোর বিষয়টি জানিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেওয়া চিঠির জবাব দিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। চিঠিতে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ছোট পরিসরে হলেও ইইউ পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জ পর্যন্ত আন্তঃনগর ট্রেনে প্রতি কেজি মালামাল পরিবহনে এখন খরচ হবে মাত্র ১ টাকা ৪৬ পয়সা। একইভাবে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ২ টাকা ৩৬ পয়সা, সিলেট পর্যন্ত ২ টাকা ২২ পয়সা, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট পর্যন্ত যথাক্রমে ৩ টাকা ১২ পয়সা ও ২ টাকা ৯৪ পয়সা ব্যয় হবে প্রতি কেজি পণ্য পরিবহনে।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, মিরপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা খুবই দুঃখজনক। ডিএনসিসির নেতৃত্বে একবার ওই এলাকার অবৈধ বিদ্যুৎ লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল; জানতে পেরেছি একটি মাদ্রাসা অবৈধভাবে এই বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছিল। যারা অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত্যুর ঘটনার দায় তাদের।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
ভারত ও কানাডার বিরোধের সূচনা খালিস্তান ইস্যুতে যা জাস্ট্রিন ট্রুডোর জি-২০ সম্মেলনে অংশ নিতে এবারের সফরের সময় ফের প্রকাশ্যে এসেছে। ভারতে খালিস্তানপন্থিদের প্রভাব অবশিষ্ট না থাকলেও কানাডা ও আরও কিছু পশ্চিমা দেশে শিখদের খালিস্তান আন্দোলন বেশ শক্তিশালী। ভারতের অভিযোগ উগ্রপন্থি খালিস্তানিরা কানাডায় বসে ভারতে নাশকতার পরিকল্পনা করছে এবং বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
দেশে মুদ্রাস্ফীতিতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস চলছে। অথচ বিশ্বের অধিকাংশ দেশে মূল্যস্ফীতি বর্তমানে ইউক্রেন যুদ্ধ-পূর্ববর্তী পর্যায়ে ফিরে এসেছে। এমন কি শ্রীলঙ্কার মতো ভুঁইফোড় মুদ্রাস্ফীতির দেশেও বিগত আগস্ট মাসে এর সূচক ৪ শতাংশে নেমে আসে। আর আমাদের দেশে খোদ সরকারি প্রতিষ্ঠান বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী ওই মাসে দেশের সার্বিক মুদ্রাস্ফীতি (৯.৯২ শতাংশ) প্রায় দুই অঙ্কের ঘর স্পর্শ করে ফেলেছে, খাদ্যপণ্যের সূচক ইতিমধ্যেই ১২ শতাংশের ঘর অতিক্রম করেছে।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। প্রথম দিকে ইউক্রেন হামলা প্রতিরোধে সক্রিয় থাকলেও চলতি বছরের জুন মাস থেকে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে। এ পরিস্থিতিতে নিজের সামরিক শক্তি বাড়াতে রাশিয়াও নানা পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন দাবি করেছে, এরই মধ্যে রাশিয়াতে স্কুলে পড়–য়া শিশুদের দেওয়া হচ্ছে অস্ত্র সম্পর্কে ধারণা।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সম্প্রতি খালিস্তান আন্দোলনের নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে ভারতের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছেন তা দুই দেশের মধ্যে দূরত্ব বাড়িয়েই চলেছে। কূটনৈতিক উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে দুই দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যেও। গত সপ্তাহে অটোয়া ও নয়াদিল্লি পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কারও করেছে। বাড়তি পদক্ষেপ হিসেবে ভারত তার দেশের নাগরিকদের কানাডা ভ্রমণের বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে বড় দরপতন হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। গতকাল প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইতে ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা কোম্পানি ছাড়া লেনদেন হওয়া অন্যান্য শেয়ারগুলোর মধ্যে ৯২ শতাংশের দরপতন হয়েছে। বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি কার্যকরের কারণে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ অবস্থানে ফিরে যাওয়ায় ক্রেতাসংকট তৈরি হয়েছে। ফলে বেশিরভাগ শেয়ারের দরপতনে মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। একই সঙ্গে কমে গেছে লেনদেনের পরিমাণও।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
দেশের সংকটকালীন বহু সূচক উল্টোমুখী হলেও কৃষিঋণ বিতরণ বাড়ছে। এর বিপরীতে আদায়ের হারও সন্তোষজনক। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে পাঁচ হাজার ৩০৮ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে পাঁচ হাজার ২৫১ কোটি টাকা।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
জনপ্রিয় নির্মাতা মিজানুর রহমান আরিয়ান পরিচালিত ওয়েব ফিল্ম ‘পুনর্মিলনে’ সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে চরকিতে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কাজটি নিয়ে বেশ প্রশংসা শোনা যাচ্ছে। এ নিয়ে আরিয়ানের সঙ্গে কথা বলেছেন মাসিদ রণ
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
নামটা ‘দুর্দান্ত’ হলেও বিপিএল ২০২৪’র খেলোয়াড় ড্রাফট শেষে নবাগত ঢাকা ফ্র্যাঞ্চাইজিকে মোটেও দুর্দান্ত বলা যাচ্ছে না। দেশি অথবা বিদেশি, কোনো বিভাগেই দুর্দান্ত কোনো ক্রিকেটারকে তারা দলে নেয়নি। ‘ভিক্টোরিয়ানস’ শব্দটির বাংলা হচ্ছে বিজয়ী, বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ড্রাফটের টেবিলে বসার আগেই একঝাঁক বিদেশি তারকাকে সই করিয়ে দলের শক্তি বাড়িয়েছিল।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
৮০ মিনিট পর্যন্ত ২-০ গোলে এগিয়ে সেলতা ভিগো। মৌসুমের প্রথম হারটা নিশ্চিত মনে হচ্ছিল। তাও ঘরের মাঠে। কিন্তু ৮ মিনিটের টর্নেডো চালাল বার্সা ৮১-৮৯ মিনিট। লেভানডফস্কির জোড়ার পর কানসেলোর গোলে জয় তুলে নিল ৩-২ ব্যবধানে। জাভি এর বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে, ‘এটা নৃশংস প্রত্যাবর্তন। আমরা বিশ্বাস, সাহস নিয়ে খেলেছি। দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও তারা হাল ছেড়ে দেয়নি।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) চলতি মেয়াদ আর দেড় বছর। ইতিমধ্যে অন্তত ২ পুলিশ কর্মকর্তা (ওসি) ও এক জেলা প্রশাসক (ডিসি) দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটারদের কাছে নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়েছেন। ইসি এসব কর্মকর্তার শাস্তির সুপারিশ করেছে এবং প্রাপ্য দ- নিশ্চিত করতে বলেছে।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
সৌরজগতের সবচেয়ে ভয়ংকর গ্রহাণু হিসেবে পরিচিত বেন্নু। প্রতি ছয় বছরে একবার করে এটি ঢুকে পড়ে পৃথিবীর কক্ষপথে। কখনো কখনো পৃথিবীর বিপজ্জনক দূরত্বেও চলে আসে। গবেষকদের আশঙ্কা, আগামী ২০০ বছরের মধ্যে সেটি আছড়ে পড়তে পারে পৃথিবীতে। তাই এই গ্রহাণু ঘিরে বিজ্ঞানীদের আগ্রহও ছিল তুমুল। গ্রহাণুটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে তাই ২০১৬ সালে সেখানে পাঠানো হয়েছিল নাসার মহাকাশযান ওসিরিস রেক্সকে।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে আসাদুর রহমান কিরণের বিরুদ্ধে অনুমোদন ছাড়াই সহস্রাধিক প্রকল্প গ্রহণ, পদোন্নতি এবং কেনাকাটায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ২১ মাস দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের নিয়ে মাসিক না করে এসব অনুমোদন দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে। আর এসব অনিয়মের তদন্ত দাবি করেছেন সিটি করপোরেশনের একাধিক কাউন্সিলর।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মন্নুজান হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারজানা শশী ফেসবুকে লাইভে এসে ভিসি-প্রোভিসিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘আপনারা যদি আমাদের পাশে না থাকেন তাহলে আপনাদের আওয়ামী পরিষদের শিক্ষক হিসেবে তো নিয়োগ দেওয়াটাই শেখ হাসিনার ভুল সিদ্ধান্ত।’
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
ব্যাংকগুলো ঘোষিত দামের চেয়ে বেশি দামে ডলার কেনাবেচার অভিযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাই ব্যাংকারদের ঘোষিত দর ধরে ডলার বিক্রি করতে একসঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার। নির্বাচনের আগে ডলার বাজার বা বিদেশি মুদ্রার নীতি বিষয়ে কোনো পরিবর্তন আসবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ ব্যাংকে গতকাল রবিবার ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এমন নির্দেশনা দেন গভর্নর।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল রবিবার দুপুরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চবি শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) শেষ নবী। তারপর আর কোনো নবী আসবেন না। সুতরাং পরবর্তী উম্মতরা কীভাবে সত্যের দিশা পাবে এবং তার ওপর টিকে থাকতে পারবে সে প্রশ্নটি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নবী কারিম (সা.) বিদায় হজের ভাষণে উম্মতকে এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি তোমাদের কাছে দুটি জিনিস রেখে গেলাম। কোরআন ও সুন্নাহ। যতক্ষণ তোমরা এই দুটি বিষয় ধরে রাখবে ততক্ষণ পথভ্রষ্ট হবে না।’ -মুয়াত্তায়ে মালিক : ১৬২৮
বিস্তারিত পড়ুন এখানে
উত্তরাধিকার সূত্রে বা পারিবারিক পরিচয়ে রাজনীতির চর্চা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এ উপমহাদেশে। বাবার সূত্রে কিংবা দাদার সূত্রে রাজনীতিতে এসে অনেকে পূর্বসূরিকে ছাড়িয়ে গেছেন। আদর্শের যোগ্য উত্তরাধিকার হিসেবে নিজেদের মেধা ও দক্ষতা দিয়ে মানুষের হৃদয় জয় করেছেন। রাজনীতিতে হয়েছেন বটবৃক্ষ। আবার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা না থাকলেও উত্তরাধিকার সূত্রে পদ-পদবি পেয়ে যাওয়ার উদাহরণও আছে। যারা এভাবে রাজনীতিতে এসেছেন, তারা কার্যত বনসাই হয়ে আছেন।
দেশের সবচেয়ে পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগ, স্বাধীনতার পর প্রতিষ্ঠিত বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ প্রায় সব দলেই উত্তরাধিকারের চর্চা রয়েছে। পারিবারিক সূত্রে এমপি হওয়ার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বর্তমান একাদশ সংসদে এ সংখ্যা ৯৮। স্বাভাবিকভাবেই আগ্রহ জাগায় যে, আগামী দ্বাদশ সংসদে এ সংখ্যা কত হবে? যদিও বর্তমান সংসদের ৩৪টি উপনির্বাচনে উত্তরাধিকার সূত্রে এমপি হয়েছেন কমই।
রাজনীতিতে উত্তরাধিকারের চর্চা যে খারাপ সেটা মোটেও বলা যাবে না। বরং উত্তরাধিকারের কারণে দেশের জন্য, জনগণের জন্য অবদান রাখা ঐতিহ্যবাহী দল আরও শক্তিশালী হওয়ার উজ্জ্বল উদাহরণও আছে। যেমন ভারতের রাজনীতিতে ইন্দিরা গান্ধী। বাবা নেহরু গান্ধীর উত্তরসূরি হলেও নিজের মেধা ও দক্ষতা দিয়ে কংগ্রেসের রাজনীতিকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়েছেন। তেমনি স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রক্ত ও আদর্শের যোগ্য উত্তরাধিকার হিসেবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের মেধার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। টানা তিনবারসহ চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে পঁচাত্তর-পরবর্তী আওয়ামী লীগের পুনরুত্থান ঘটেছে। আরও শক্তিশালী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরেছে।
বিএনপির ক্ষেত্রেও বলা যায়, দলটির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর দলটির হাল ধরেন তার স্ত্রী খালেদা জিয়া। তাদের ছেলে তারেক রহমান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
সংসদের ৩০০ আসনে উত্তরসূরি হিসেবে বা পারিবারিক পরিচয়ে মনোনয়ন পাওয়ার পাশাপাশি সংরক্ষিত ৫০ আসনেও এই চর্চা আছে। বরং হিসাব করলে বেশিই দেখা যায়।
সব মিলিয়ে একাদশ সংসদেই উত্তরসূরি বা পারিবারিক পরিচয়ে এমপি রয়েছেন শতাধিক। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৫৭টি আসন নিয়ে সরকার গঠন করে। পারিবারিক সূত্রে রাজনীতিতে আসা সরকারি দলের এমপির সংখ্যা ৮৬। এর মধ্যে প্রায় ৭০ জনই মাঠের রাজনীতি করে আসেননি। বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ২৯ জনের মধ্যে এই সংখ্যা ৭। এ ছাড়া সংসদে প্রতিনিধিত্ব করা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের স্ত্রী লুৎফুন নেসা খান সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু নিজে ও তার স্ত্রী বেগম আফরোজা হকও এমপি।
একাদশ সংসদে বিএনপির সাতটি আসন ছিল। এর মধ্যে একটি সংরক্ষিত নারী আসন। তাদের মধ্যে রুমিন ফারহানা সংরক্ষিত আসনে এমপি হন। তার বাবা অলি আহাদ আওয়ামী লীগের প্রথম প্রচার সম্পাদক।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, অনেক ক্ষেত্রে দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বা সংশ্লিষ্ট এলাকায় দলের প্রভাব ধরে রাখতে নেতার পরিবারের সদস্যদের রাজনীতিতে আনা হয়। আবার অনেক সময় যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে না ওঠায় এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
তবে উত্তরাধিকার চর্চার প্রভাব নিয়ে সতর্ক করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, এমন চর্চার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই রাজনীতির ভারসাম্য নষ্ট হয়। সংসদে দেখা যায়, অনেকে বক্তব্য দিতে পারেন না। সংসদের কার্যপ্রণালি বিধিও বোঝেন না। আবার জনসমাবেশে অরাজনৈতিক আচরণ করেন, যা সরকার বা দলকে বেকায়দায় ফেলে দেয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘উত্তরাধিকারের রাজনীতি গণতন্ত্র ও আধুনিক রাজনীতির বিরোধী। দলের জন্য ও রাজনীতির জন্য ক্ষতিকর।’ তিনি বলেন, ‘গত ১৫-২০ বছরে এ ধারার রাজনীতির চর্চা বেশি হচ্ছে বলেই দুর্বল হয়েছে রাজনীতি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার বলেন, ‘রাজনৈতিক ত্যাগ-তিতিক্ষা বা যোগ্যতা থাকলে এটা গ্রহণ করা যায়। উত্তরাধিকার সূত্রে সংসদে এত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা অবশ্যই দুশ্চিন্তার। আমি মনে করি, এ সংখ্যা নিয়ে প্রত্যেক দলেরই চিন্তার ব্যাপার আছে। কারণ দাদা, বাবার যোগ্যতায় এসব পদ পেয়ে থাকলে গণতন্ত্র কতটা মজবুত করবে, সেটাও ভাবতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রজাতন্ত্রে উত্তরাধিকারের সুযোগ নেই। আবার এটাকে ধর্মগ্রন্থের বাণী মনে করলেও চলবে না। কারও যদি যোগ্যতা থেকে থাকে, তাহলে বাবা-দাদা থাকলে আসতে পারবেন না সেটাও তো হতে পারে না।’
আওয়ামী লীগের যারা : এমপি ও মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন পঞ্চগড় থেকে নির্বাচিত। তার বড় ভাই সিরাজুল ইসলাম ১৯৭০, ’৭৩, ’৭৯ ও ’৮৬ সালের এমপি। দিনাজপুর থেকে নির্বাচিত খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর বাবা প্রয়াত আবদুর রউফ চৌধুরী। তিনি ১৯৯৬ সালের এমপি ও দলের নেতা ছিলেন। ছিলেন প্রতিমন্ত্রী। খালিদ মাহমুদ চৌধুরীও বর্তমানে প্রতিমন্ত্রী। তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে উঠে আসা। এ ছাড়া তিনবার দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
দিনাজপুরের আরেকটি আসন থেকে নির্বাচিত ইকবালুর রহিমের বাবা প্রয়াত আবদুর রহিম। তিনি সত্তরের এমপি ছিলেন। তবে ইকবালুর রহিম ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। দিনাজপুরের আরেকটি আসনের এমপি শিবলী সাদিক। তার বাবা মোস্তাফিজুর রহমান ফিজুও এমপি ছিলেন।
রংপুর-২ আসনের আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরীর চাচা আনিসুল হক চৌধুরী এমপি ছিলেন। গাইবান্ধা-২ আসনের মাহাবুব আরা গিনি পারিবারিক বিবেচনায় এমপি হয়েছেন। বগুড়া-১ আসনের সাহাদারা মান্নান প্রয়াত এমপি আবদুল মান্নানের স্ত্রী। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল ১৯৭৩ সালের এমপি প্রয়াত মইন উদ্দীন আহমদের ছেলে। নওগাঁ-৫ আসনের নিজাম উদ্দিন জলিলের (জন) বাবা প্রয়াত আবদুল জলিল ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও মন্ত্রী। সিরাজগঞ্জ-১ আসনের তানভীর শাকিল জয় প্রয়াত মন্ত্রী ও নেতা মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে। তার দাদা জাতীয় চার নেতার অন্যতম মনসুর আলী। সিরাজগঞ্জ-২ আসনের ডা. হাবিবে মিল্লাত সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের মেয়ের জামাই। সিরাজগঞ্জ-৪ আসনের তানভীর ইমাম প্রয়াত নেতা এইচ টি ইমামের ছেলে। সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের মেরিনা জাহান দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য প্রয়াত মযহারুল ইসলামের মেয়ে। তার ভাই চয়ন ইসলামও এমপি ছিলেন। পাবনা-২ আসনের আহমেদ ফিরোজ কবির প্রয়াত আহমেদ তফিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি ১৯৭৩ ও ’৯৬ সালের এমপি ছিলেন। মেহেরপুর-১ আসনের ফরহাদ হোসেনের বাবা প্রয়াত মোহাম্মদ সহিউদ্দিন ছিলেন ১৯৭০, ’৭৩ ও ’৮৬ সালের এমপি। কুষ্টিয়া-৪ আসনের এমপি সেলিম আলতাফ জর্জের দাদা গোলাম কিবরিয়া ছিলেন এমপি। ঝিনাইদহ-২ আসনের তাহজীব আলম সিদ্দিকীর বাবা প্রয়াত নুরে আলম সিদ্দিকী ছিলেন দলের নেতা। ঝিনাইদহ-৩ আসনের এমপি শফিকুল আজম খান। তার বাবা প্রয়াত শামসুল হুদা জাতীয় পার্টির এমপি ছিলেন। যশোর-৫ আসনের স্বপন ভট্টাচার্যের ভাই পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য দলের নেতা। অবশ্য রাজনীতিতে স্বপনেরও অবদান রয়েছে। রংপুর-৬ আসন থেকে নির্বাচিত স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর বাবা প্রয়াত রফিকুল্লাহ চৌধুরী ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। মাগুরা-১ আসনের এমপি সাইফুজ্জামান শিখর। তার বাবা মোহাম্মদ আছাদুজ্জামান তিনবারের এমপি ছিলেন। আওয়ামী লীগের নেতা শেখ হেলালের ছেলে শেখ ফারহান নাসের তন্ময় বাগেরহাট-২ আসনের এমপি। বাগেরহাট-৩ আসনের হাবিবুন নাহার খুলনার মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের স্ত্রী। খুলনা-২ আসনের শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল শেখ নাসেরের ছেলে। খুলনা-৩ আসনের মন্নুজান সুফিয়ানের স্বামী আবু সুফিয়ান এ আসনের এমপি ছিলেন। তিনি নিজেও অবশ্য রাজনীতি করেছেন। ভোলা-২ আসনের আলী আজম মুকুল দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদের ভাতিজা। ভোলা-৪ আসনের আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের বাবা প্রয়াত এমএম নজরুল ইসলাম ১৯৭৯ ও ’৯১ সালের এমপি। টাঙ্গাইল-৬ আসনের আহসানুল ইসলাম সাবেক এমপি হাজি মকবুল আহমেদের ছেলে। টাঙ্গাইলের আরেক আসনের এমপি খান আহমেদ শুভ দলের জেলা সভাপতি ফজলুর রহমান ফারুকের ছেলে। ফারুক ১৯৭৩ সালে এমপি ছিলেন। ময়মনসিংহ-১ আসনের জুয়েল আরেং সাবেক প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিনের ছেলে। ময়মনসিংহ-২ আসনের শরীফ আহমেদের বাবা শামসুল হক চারবারের এমপি। ময়মনসিংহ-১০ আসনের ফাহমী গোলন্দাজ বাবেলের বাবা প্রয়াত এমপি আলতাফ হোসেন গোলন্দাজ। নেত্রকোনার এমপি সাজ্জাদ হাসানের বাবা প্রয়াত আখলাকুল হোসাইন আহমেদ পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ছিলেন। কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সৈয়দা জাকিয়া নূর চার জাতীয় নেতার অন্যতম সৈয়দ নজরুল ইসলামের মেয়ে ও দলের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বোন। কিশোরগঞ্জের আরেক এমপি রেজওয়ান আহম্মেদ তৌফিক সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ছেলে। অন্য এমপি নাজমুল হাসান পাপনের বাবা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুুর রহমান। তার মা মহিলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা আইভি রহমান। মানিকগঞ্জের নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের বাবা প্রয়াত সায়েদুর রহমান এমপি ছিলেন। ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে নির্বাচিত নসরুল হামিদের বাবা হামিদুর রহমান দলের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। মা হাসনা হামিদও রাজনীতি করতেন। গাজীপুরের জাহিদ আহসান রাসেল প্রয়াত নেতা আহসান উল্লাহ মাস্টারের ছেলে। সিমিন হোসেন রিমি প্রয়াত জাতীয় নেতা তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে। মেহের আফরোজ চুমকির বাবা প্রয়াত ময়েজউদ্দিন ১৯৭০ ও ’৭৩ সালের এমপি। কাজী কেরামত আলীর বাবা কাজী হেদায়েত হোসেন গণপরিষদ সদস্য ছিলেন। মুজিবুর রহমান চৌধুরীর (নিক্সন) বাবা ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী বঙ্গবন্ধু পরিবারের আত্মীয়। তার আরেক ছেলে নূর-ই-আলম চৌধুরীও এমপি। ফরিদপুর-৩ আসনের ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন আত্মীয় পরিচয়ে এমপি হন। ফরিদপুরের আরেকটি আসনের এমপি শাহদাব আকবরের মা প্রয়াত এমপি দলের নেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। নাহিম রাজ্জাকের বাবা প্রয়াত নেতা ও এমপি আবদুর রাজ্জাক। জয়া সেনগুপ্তা প্রয়াত এমপি সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী। এ কে আবদুল মোমেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ভাই। গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজের (মিলাদ গাজী) বাবা প্রয়াত এমপি দেওয়ান ফরিদ গাজী। মাহবুব আলীর বাবা আছাদ আলী প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ছিলেন। আনিসুল হকের বাবা প্রয়াত সিরাজুল হক ১৯৭০ সালের এমপি ও সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা। রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের বাবা এএফএম ফখরুল ইসলাম মুন্সী ছিলেন জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের এমপি। দীপু মনির বাবা প্রয়াত এমএ ওয়াদুদ ছিলেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। আয়েশা ফেরদাউসের স্বামী প্রয়াত এমপি মোহাম্মদ আলী। মাহফুজুর রহমানের বাবা মুস্তাফিজুর রহমান ১৯৯১ ও ’৯৬ সালের এমপি ছিলেন। এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর বাবা প্রয়াত ফজলুল কবির চৌধুরী পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন। মহিবুল হাসান চৌধুরীর বাবা চট্টগ্রামের প্রয়াত মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বাবা প্রয়াত এমপি আখতারুজ্জামান চৌধুরী। সাইমুম সরওয়ার কমলের বাবা প্রয়াত ওসমান সরওয়ার চৌধুরী ছিলেন ১৯৭৩ সালের এমপি। শাহিনা আক্তার চৌধুরীর স্বামী সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদি। শিরীন আহমেদের স্বামী প্রয়াত বজলুর রহমান আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। নাহিদ ইজাহার খানের বাবা খন্দকার নাজমুল হুদা পঁচাত্তরের ৭ নভেম্বর নিহত সেনা কর্মকর্তা। খাদিজাতুল আনোয়ারের বাবা প্রয়াত এমপি রফিকুল আনোয়ার। ওয়াসিকা আয়শা খানের বাবা প্রয়াত আতাউর রহমান খান কায়সার দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ছিলেন। কানিজ ফাতেমা আহমেদের স্বামী মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী আওয়ামী লীগ নেতা। আঞ্জুম সুলতানা সীমার বাবা কুমিল্লার প্রয়াত নেতা আফজল খান। উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগমের (শিউলী আজাদ) স্বামী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা ইকবাল আজাদ। রুমানা আলীর বাবা প্রয়াত এমপি রহমত আলী। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের এমপি বদরুদ্দোজা মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম। তার মামা খালেদ মোশাররফ। পারিবারিক পরিচয়ে এমপি হলেও সংগ্রাম এমপি হওয়ার আগে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। সুলতানা নাদিরার স্বামী প্রয়াত নেতা গোলাম সবুর টুলু। হাবিবা রহমান খান শেফালীর বাবা প্রয়াত ফজলুর রহমান খান তিনবারের এমপি ছিলেন। জাকিয়া পারভীন খানমের বাবা সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর রহমান খান চুন্নু মিয়া। তার স্বামী আওয়ামী আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন। অপরাজিতা হকের বাবা প্রয়াত খন্দকার আসাদুজ্জামান ছিলেন তিনবারের এমপি। তামান্না নুসরাত বুবলীর স্বামী প্রয়াত লোকমান হোসেন ছিলেন নরসিংদীর মেয়র। জাকিয়া তাবাসসুমের বাবা প্রয়াত আজিজুর রহমান দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। ফরিদা খানম নারী মুক্তিযোদ্ধা। তার স্বামী নোয়াখালী জেলা মুজিব বাহিনী প্রধান মাহমুদুর রহমান বেলায়েত। রাজবাড়ীর সালমা চৌধুরীর বাবা প্রয়াত আবদুল ওয়াজেদ চৌধুরী ছিলেন এমপি। সৈয়দা রাশিদা বেগমের স্বামী কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত সৈয়দ নিজাম উদ্দিন লাইট। ফেরদৌসী ইসলাম জেসীর বাবা প্রয়াত ভাষাসৈনিক ও সংসদ সদস্য আ আ ম মেসবাহুল হক বাচ্চু। পারভীন হক সিকদারের বাবা প্রয়াত ব্যবসায়ী জয়নুল হক সিকদার। জামালপুরের আবুল কালাম আজাদ শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ভায়রা। এ ছাড়া শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শেখ হেলাল উদ্দীন, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ ও শামীম ওসমানের পারিবারিক পরিচয় থাকলেও তারা এখন প্রত্যেকে রাজনীতিতে স্বনামে প্রতিষ্ঠিত।
জাতীয় পার্টি : বিরোধী দলনেতা রওশন এরশাদ প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী। তাদের ছেলে সাদ এরশাদও এমপি। আহসান আদেলুর রহমান প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এরশাদ ও দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের ভাগ্নে। জিএম কাদেরের স্ত্রী শেরিফা কাদেরও এমপি। নীলফামারী-৪ আসনে আদেলুর রহমান আদেল, তার বাবা ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টি থেকে এমপি ছিলেন। নাসরীন জাহান রত্না দলের কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদারের স্ত্রী। আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমানের ভাই নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এমপি সেলিম ওসমান।
অন্যান্য : ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের স্ত্রী লুৎফুন নেসা খান সংরক্ষিত নারীর আসনে এমপি। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু নিজে ও তার স্ত্রী বেগম আফরোজা হকও এমপি। মাহী বি চৌধুরীর বাবা সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী, সেলিনা ইসলামের স্বামী পদচ্যুত এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল।
সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ৫টি রোডমার্চসহ টানা ১৫ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত কর্মসূচি পালন করবে দলটি। তবে মাঝে তিন দিন ২০, ২৪ ও ২৮ সেপ্টেম্বর কোনো কর্মসূচি নেই। বিএনপির নতুন ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সমাবেশ, রোডমার্চ ও দোয়া মাহফিল।
গতকাল সোমবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আমরা আন্দোলন শুরু করেছি। আমাদের অনেক রাজনৈতিক জোট ও দল যুগপৎ আন্দোলন সফল করার লক্ষ্যে আমরা কতগুলো কর্মসূচি হাতে নিয়েছি।
কর্মসূচি ঘোষণার সময় অসুস্থতার কারণে মহাসচিবের অনুরোধে সেটি পড়ে শোনান স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
পাঁচটি রোডমার্চ : ২১ সেপ্টেম্বর ভৈরব থেকে সিলেট (সিলেট বিভাগ), ২৩ সেপ্টেম্বর বরিশাল থেকে পটুয়াখালী (বরিশাল বিভাগ), ২৬ সেপ্টেম্বর খুলনা বিভাগ, ১ অক্টোবর ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ (ময়মনসিংহ বিভাগ) এবং ৩ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম (কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম বিভাগ) রোডমার্চ অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকায় হবে সমাবেশ : ১৯ সেপ্টেম্বর জিঞ্জিরা/কেরানীগঞ্জ, গাজীপুরের টঙ্গী; ২২ সেপ্টেম্বর যাত্রাবাড়ী, উত্তরা; ২৫ সেপ্টেম্বর নয়াবাজার, আমিনবাজার; ২৭ সেপ্টেম্বর গাবতলী এবং নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায়। ঢাকায় ২৯ সেপ্টেম্বর মহিলা সমাবেশ, ৩০ সেপ্টেম্বর শ্রমজীবী সমাবেশ এবং ২ অক্টোবর কৃষক সমাবেশ হবে। এসব কর্মসূচিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
তবে ২০, ২৪ ও ২৮ সেপ্টেম্বর বিএনপির কোনো কর্মসূচি না থাকলেও যুগপৎ আন্দোলনের অংশীজনদের কর্মসূচি রয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘আমাদের যুগপৎ আন্দোলনে যে জোট ও দলগুলো আছে, তারা নিজেরা নিজেদের অবস্থান থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করবে। তারা হয়তো সবগুলো করবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকাকেন্দ্রিক সমাবেশ-পদযাত্রার কর্মসূচি গণতন্ত্র মঞ্চের : এদিকে গতকাল দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের দারুস সালাম ভবনে ভাসানী অনুসারী পরিষদের কেন্দ্রীয় দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি ঘোষণা করে গণতন্ত্র মঞ্চ। নতুন এই কর্মসূচি হচ্ছে ১৯ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে সমাবেশ ও পদযাত্রা; ২৩ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকার কারওয়ান বাজারে পেট্রোবাংলার সামনে সমাবেশ ও পদযাত্রা; ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টায় খিলগাঁও তালতলা মার্কেটের সামনে সমাবেশ ও পদযাত্রা এবং ২৭ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ ও পদযাত্রা।
সংবাদ সম্মেলনে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম জোটের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচির বাইরে জোটের নিজস্ব কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। তারা বলছে, গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে সেমিনার ও আলোচনা সভাও হবে। সেসবের তারিখ-স্থানসহ বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম।
গণফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টির কর্মসূচি: ১৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা জেলা জিঞ্জিরা/কেরানীগঞ্জ এবং গাজীপুর জেলার টঙ্গীতে, ২১ সেপ্টেম্বর ভৈরব-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-হবিগঞ্জ-মৌলভীবাজার-সিলেট রোডমার্চ, ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় পেশাজীবী সমাবেশ, ২৩ সেপ্টেম্বর যাত্রাবাড়ী ও উত্তরায় সমাবেশ, ২৩ সেপ্টেম্বর বরিশাল-ঝালকাঠি-পিরোজপুর-পটুয়াখালী রোডমার্চ, ২৫ সেপ্টেম্বর নয়াবাজার ও ঢাকা জেলার আমিনবাজারে সমাবেশ, ২৬ সেপ্টেম্বর খুলনা বিভাগ রোডমার্চ, ২৭ সেপ্টেম্বর গাবতলী ও নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লায় জনসমাবেশ, ঢাকায় ২৯ সেপ্টেম্বর মহিলা সমাবেশ ও ৩০ সেপ্টেম্বর কৃষক-শ্রমিক সমাবেশ, ১ অক্টোবর ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ রোডমার্চ, ৩ অক্টোবর কুমিল্লা-ফেনী-মিরসরাই-চট্টগ্রাম রোডমার্চের কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির নেতারা। এ ছাড়া আইনজীবীদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে এবং আন্দোলনরত সব দল সমর্থন জানাবে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায় দলটি।
পুলিশের পদোন্নতির তালিকায় থাকা পদ কাটছাঁট করায় অসন্তোষ কমছে না। এ নিয়ে পুলিশ কর্তারা একাধিক বৈঠক করছেন। প্রধানমন্ত্রী দেশে এলে পদোন্নতি নিয়ে তার সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। পুলিশের অসন্তোষ ঠেকাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশেষ উদ্যোগও নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার বিকেলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে পদোন্নতির পদ আরও বাড়াতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে। চিঠি পেয়ে জনপ্রশাসনও কাজ শুরু করে দিয়েছে বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা দেশ রূপান্তরকে বলেছেন, পদোন্নতির সংখ্যাটি প্রধানমন্ত্রী ঠিক করে দিয়েছিলেন। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কাটছাঁট করে পুলিশকে বিব্রত করেছে। অন্য ক্যাডাররা একের পর এক পদোন্নতি পেলেও পুলিশ পিছিয়ে আছে। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিনিয়র সচিব আশ্বাস দিয়েছেন, বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা হবে।
এদিকে ক্যাডারদের পাশাপাশি নন-ক্যাডারদেরও পদোন্নতির বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। ইতিমধ্যে সাব-ইন্সপেক্টর ও ইন্সপেক্টরদের পদোন্নতির উদ্যোগ নিতে পুলিশ সদর দপ্তর বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে। পদোন্নতির তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তিন দিন আগে পদোন্নতি পেতে বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। ওই সময় রাজধানীর ৫০ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইন্সপেক্টর থেকে এএসপি পদে পদোন্নতির বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ও আইজিপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পুলিশের ক্যাডার ও নন-ক্যাডারদের পদোন্নতির বিষয়ে আমরা কাজ করছি। যাদের পদোন্নতি পাওয়ার যোগ্যতা আছে তারা অবশ্যই পদোন্নতি পাবেন। বিসিএস পুলিশ কর্মকর্তাদের পদোন্নতির পদ বাড়াতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশা করি শিগগির বিষয়টি সুরাহা হবে। নন-ক্যাডারদের কর্তারাও কিছুদিন আগে আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। তাদের বিষয়টিও সমাধান হবে বলে আশা করছি।’ তিনি বলেন, বর্তমান সরকার পুলিশের জন্য যা করেছে, অতীতের কোনো সরকারই তা করেনি। পুলিশের কারণে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, পুুলিশের পদোন্নতির তালিকা কাটছাঁটের বিষয়ে গত মঙ্গলবার আইজিপিসহ পুলিশ কর্মকর্তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রের সিনিয়র সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ওইদিন বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পুলিশের পদোন্নতির বিষয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নুর-এ- মাহবুবা জয়া।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ পুলিশ রাষ্ট্রের আইনশৃক্সক্ষলা রক্ষাবাহিনী প্রধানতম বাহিনী, যা রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত। নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, পেশাদায়িত্ব ও শৃঙ্খলা রক্ষায় তদারকি ও ব্যবস্থাপনা এ বাহিনীর নেতৃত্বের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। পুলিশ বাহিনীকে নেতৃত্ব প্রদানে পুলিশ সুপার থেকে তদূর্ধ্ব পদে পর্যাপ্তসংখ্যক পদ এবং দক্ষ জনবল থাকা বাঞ্ছনীয়। পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে উপপুলিশ মহাপরিদর্শক (গ্রেড-৩) ও অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (গ্রেড-২) তুলনামূলক কম। বর্তমান সাংগঠনিক কাঠামোর আলোকে (বিদ্যমান পদে অতিরিক্ত) অতিরিক্ত উপপুলিশ মহাপরিদর্শক হতে উপপুলিশ মহাপরিদর্শক এবং উপপুলিশ মহাপরিদর্শক হতে অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক পদোন্নতি দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হবে। প্রয়োজনীয়সংখ্যক কর্মকর্তাকে পদোন্নতি প্রদানের জন্য পদ সংখ্যা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। বিদ্যমান পদের অতিরিক্ত সুপারনিউমারারি পদ রাজস্ব খাতে অস্থায়ীভাবে সৃজনের প্রস্তাবে পদের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা গতকাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত আইজিপি) থেকে পুলিশ সুপার (এসপি) পর্যন্ত ৭২০ কর্মকর্তার পদোন্নতি পেতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল পুলিশ সদর দপ্তর। তালিকাটি সংশোধন করতে ফেরত পাঠায় মন্ত্রণালয়। পরে পুলিশ সদর দপ্তর ৫২৯টি পদ চূড়ান্ত করে আরেকটি তালিকা পাঠায়। সুপারনিউমারারি পদে পদোন্নতি দিতে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, গত ১ আগস্ট এ প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু মন্ত্রণালয় তালিকা কাটছাঁট করেছে। অতিরিক্ত আইজিপি পদে দুজন, ডিআইজি পদে ৫০ জন, অতিরিক্ত ডিআইজি পদে ১৪০ ও পুলিশ সুপার পদে ১৫০ জনকে পদোন্নতি দিতে ১৪ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায় জনপ্রশাসন। পুলিশের তালিকায় ছিল অতিরিক্ত আইজিপি (গ্রেড-১) ১৫, অতিরিক্ত আইজিপি (গ্রেড-২) ৩৪, ডিআইজি ১৪০, অতিরিক্ত ডিআইজি ১৫০ ও এসপি ১৯০ পদে পদোন্নতি দিতে। এ তালিকা কাটছাঁট হওয়ায় পুলিশে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এ অসন্তোষ এখনো অব্যাহত আছে। অসন্তোষ ঠেকাতে আবার জনপ্রশাসনকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
পুলিশ সদর দপ্তরে ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে জানান, পুলিশে সংখ্যাতিরিক্ত (সুপারনিউমারারি) পদোন্নতিতে অতিরিক্ত আইজিপি, ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি ও এসপি পদে পদোন্নতির নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। ৫২৯টি সুপারনিউমারারি পদ সৃষ্টি করতে গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন। পদোন্নতির বিষয়ে সিগন্যাল আসার পর ২০ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে এ-সংক্রান্ত একটি সভা হয়েছিল। সভায় অতিরিক্ত সচিবসহ (পুলিশ ও এনটিএমসি) পুলিশের মহাপরিদর্শক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, পুলিশে বর্তমানে একজন অতিরিক্ত আইজিপির পদ খালি রয়েছে। সুপারনিউমারারি পদে অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে ১৫ ও ১৭তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। ১৮, ২০, ২১, ২২ ও ২৪তম ব্যাচের প্রায় সবাই ডিআইজি ও অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি পাওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছেন নীতিনির্ধারকরা। পাশাপাশি ২৭, ২৮ ও ২৯তম ব্যাচের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারদের এসপি হিসেবে পদোন্নতির বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, নন-ক্যাডাররা পদোন্নতি পাবেন। সাব-ইন্সপেক্টর থেকে ইন্সপেক্টর ও ইন্সপেক্টর থেকে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক হবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। সুপারনিউমারারি পদে বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মতোই নন-ক্যাডারদের পদোন্নতি দেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা হবে। ইন্সপেক্টর থেকে এএসপি পদে পদোন্নতি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। কারা পাবেন তার তালিকা তৈরি হতে পারে।
বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো ছিল পুলিশ পরিদর্শকদের (ইন্সপেক্টর) ১০ বছর পূর্তিতে ষষ্ঠ গ্রেড দেওয়া। ১০ বছর পূর্তিতে ব্যাজ থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রেড পরিবর্তন করা। ১০ বছরের মধ্যে পদোন্নতি না হলে সুপারনিউমারারি পদে পদোন্নতি দেওয়া। সাব-ইন্সপেক্টরদের (এসআই) ক্ষেত্রেও একই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে এসআই/সার্জেন্ট পদটি দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও তাদের র্যাংক ব্যাজের নীল বা লাল ফিতা তুলে নেওয়া। কনস্টেবলদের বিভাগীয় পরীক্ষায় একবার পাস করলে সেখান থেকে প্রমোশন লিস্ট করে ক্রমান্বয়ে পদোন্নতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে মন্ত্রীর কাছে।’
রুবেলা বা জার্মান মিজেলস একটি সংক্রামক রোগ। এটি রুবেলাভাইরাস থেকে হয়ে থাকে। একে জার্মান হাম বা তিন দিনের হামও বলা হয়। এটি অত্যন্ত ছোঁয়াচে একটি রোগ। করোনা ভাইরাসের মতই আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশি থেকেই এই রোগ ছড়ায়। গর্ভাবস্থায় এই রোগ গর্ভস্থ শিশুর নানা জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
রুবেলা সাধারণত ভাইরাসের মাধ্যমে সৃষ্টি হয় এবং আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির ড্রপলেটসের মাধ্যমে বাতাসে ছড়ায় এবং পরবর্তীতে শ্বাসপ্রশ্বাসের মধ্যে দিয়ে আরেকজনকে আক্রান্ত করে। এ ছাড়া গর্ভবতী মা থেকে গর্ভস্থ সন্তানের রুবেলাভাইরাস হতে পারে।
তবে একবার এই রোগটি হয়ে গেলে সাধারণত স্থায়ীভাবে আর এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
রুবেলার লক্ষণ বোঝা করা কঠিন, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে। কারণ রোগের লক্ষণ প্রকাশের আগে ভাইরাসটি রোগীর দেহে সাত থেকে ২১ দিন পর্যন্ত সুপ্তাবস্থায় থাকতে পারে।
এই রোগের লক্ষণ এবং উপসর্গ সাধারণত ভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ার দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে দেখা যায় এবং সাধারণত ১ থেকে ৫ দিন স্থায়ী হয়।
হালকা জ্বর ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩৮.৯ C) বা তার কম
মাথাব্যথা
নাকে সর্দি বা বন্ধ নাক।
চোখ লাল হয়ে যাওয়া ও চুলকানি হওয়া।
মাথা ও ঘাড়ের পেছনের গ্রন্থি ফুলে যাওয়া এবং ব্যথা হওয়া, কানের পিছনের লিম্ফ নড পিণ্ডর মতো ফুলে যাওয়া
লাল বা গোলাপি ফুসকুড়ি যা মুখে শুরু হয় এবং দ্রুত ঘাড়, শরীর, বাহু ও পায়ে ছড়িয়ে পড়ে
জয়েন্টগুলোতে ব্যথা, বিশেষ করে তরুণীদের মধ্যে
হাঁচি-কাশি এবং নাক দিয়ে পানি পড়া
শরীর ম্যাজ ম্যাজ করা
ক্ষুধা মন্দা, বমি বমি ভাব, দুর্বলতা
রুবেলাভাইরাসের বিরুদ্ধে কোনো নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ নেই। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া যেতে পারে। এটি সাধারণত চিকিৎসা ছাড়াই ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়।
এমনকি গর্ভবতী নারী আক্রান্ত হলে মা বা শিশুর ও কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে গর্ভবতী নারী রুবেলা আক্রান্ত কারও সংস্পর্শে এলে তাকে ইমিউনোগ্লোবিউলিন দেওয়া যেতে পারে। তাই রুবেলাকে টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা খুব জরুরি।
তবে একবার আক্রান্ত হলে সে সময় যা যা করতে হবে,
১. যেহেতু রোগটি অনেক ছোঁয়াচে তাই আক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে অন্যদের থেকে নিজেকে আলাদা করে ফেলতে হবে।
২. পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে এবং আক্রান্ত হলে কঠোর পরিশ্রমের কাজ না করাই ভালো
৩. সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি প্রচুর পানি ও তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে
৪. ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ যুক্ত ফলমূল খেতে হবে বেশি করে।
৫. প্রতিদিন গোসল করাতে হবে, শরীরে জ্বর থাকলে ভেজা কাপড় একটু পর পর শরীর মুছতে হবে।
৬. কোনও ওষুধ খাওয়ানোর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে
কেউ যদি গর্ভাবস্থায় রুবেলায় আক্রান্ত হন তবে রুবেলা অনাগত শিশুর ক্ষতি করার পাশাপাশি গর্ভপাতের ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায়। এ ছাড়া শিশুর জন্মের পরে তার বিকাশ বাধাগ্রস্ত করতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
হার্টের ত্রুটি
ছানি
বধিরতা
বিলম্বিত শেখা
লিভার এবং প্লীহার ক্ষতি
ডায়াবেটিস
থাইরয়েড সমস্যা
রুবেলার সুনির্দিষ্ট কোনও চিকিৎসা না থাকায় টিকা হলো উত্তম প্রতিষেধক। এই রোগ প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হল হাম-মাম্পস-রুবেলা (এমএমআর) টিকার দুই ডোজ টিকা প্রয়োগ। সব বয়সেই এই টিকা নেয়া যায়।
টিকার প্রথম ডোজটি সাধারণত শিশুর নয় থেকে ১৫ মাসের মধ্যে দেয়া হয় এবং দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয় শিশুর সাড়ে তিন থেকে ছয় বছর বয়সের মধ্যে। এছাড়া প্রাপ্তবয়স্করা এই টিকা নিতে পারেন। সাধারণত প্রথম ডোজ নেয়ার কমপক্ষে এক মাস থেকে তিন মাস পর দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়।
কিশোরীদের ১৫ বছর বয়সে টিটি টিকার সঙ্গে এক ডোজ হাম-রুবেলা টিকা দিতে হয়। এ ছাড়া গর্ভধারণে ইচ্ছুক নারীদের রুবেলা অ্যান্টিবডি টেস্ট করে প্রয়োজন হলে ৩ মাস ব্যবধানে ২ ডোজ টিকা দেওয়া হয় এবং দ্বিতীয় ডোজ টিকা পরবর্তী এক মাসের মধ্যে সন্তান নিতে নিষেধ করা হয়।
১. অসুস্থ ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে। কেউ হাঁচি-কাশি দিলে তার থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করতে হবে।
২. হাত সবসময় সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে পরিস্কার রাখতে হবে।
৩. নাকে, চোখে, মুখে হাত দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
৪. কাশি বা হাঁচি আসলে সে সময় টিস্যু ব্যবহার করতে হবে এবং ব্যবহৃত টিস্যু ডাস্টবিনে ফেলে দিতে হবে।
৫. যাদের শরীরে ফুসকুড়ি বা র্যাশ জাতীয় আছে তাদের সাথে শারীরিক যোগাযোগ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে হবে।
৬. অতিরিক্ত ভীর বা জনসমাগম এলাকা এড়িয়ে চলতে হবে।
গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত অভিযোগে দেশের কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়টি নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পাল্টা বক্তব্য দিতেও শুরু করেছে। এতে বিরোধীপক্ষেরই ঝুঁকি দেখছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই সবপক্ষই চাপে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ অবস্থান নিয়ে রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অন্যকে ঘায়েল করার চেষ্টা হলেও মূলত নির্বাচনী রাজনীতিতে এক ধরনের পরিবর্তন আসবে। একপক্ষ নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিলেও সেই পথ থেকে তাদেরও সরতে হবে। আবার সরকারপক্ষ যেনতেন নির্বাচন করে ক্ষমতায় বসে যাবে সেই সুযোগও থাকছে না। যে যাই বলুক নির্বাচনী রাজনীতিতে সামনের দিনগুলোতে এ পরিবর্তন আসতেই হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সবপক্ষের জন্য। তাদের অবস্থানে বিএনপি উৎফুল্ল হয়ে যাবে, আর আওয়ামী লীগ ধরাশায়ী হয়ে যাবে ব্যাপারটা এমন নয়। বরং এতে এক ধরনের সমাধানের পথ খুলে যেতে পারে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ না দিলেও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হবে এমন আভাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু গত বছর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে আসছে। তাদের একাধিক প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করে সরকার ও বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে সমর্থনের কথা জানিয়ে গত ২৪ মে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। যার প্রয়োগের কথা জানানো হলো গত শুক্রবার।
এর আগে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তা ও র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভিসানীতি প্রয়োগের প্রক্রিয়া শুরুর মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অনড় অবস্থানের বিষয়টি আবার জানাল। দেশটির এ অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দেখছে দুভাবে। একটি হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখা। দ্বিতীয়টি হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করা বিএনপিকে নির্বাচনে আনা। এর বাইরে অন্য কোনো বিরূপ প্রভাব দেখছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকার এত দিন যেটা চেয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র সেটাই আশা করছে।
তবে বিএনপি ভিসানীতির জন্য সরকারকে দায়ী করেছে এবং সেটা তাদের নেতাকর্মীদের এক দফা আন্দোলনে আরও উজ্জীবিত করবে, এমন দাবি করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কারণে আগামী নির্বাচন যেনতেনভাবে হয়ে যাবে সেটি ভাবার কোনো সুযোগ নেই। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রস্তুতি সবাইকে নিতে হবে। এর বাইরে কোনো রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী, বাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তা যেই হোক শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রভাবিত করা বা একপেশে করার চিন্তা বা পদক্ষেপ গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে চাইলে, পড়তে হবে ভিসানীতির আওতায়। যুক্তরাষ্ট্রের অনড় অবস্থান এখন পর্যন্ত সেটাই ইঙ্গিত করে।’
সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করে এক দফা দিয়ে আন্দোলনে আছে বিএনপি। অন্যদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগ বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন করার জন্য এক দফা ঘোষণা করেছে। তারাও শান্তি-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকারও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। সেটা নিশ্চিত করতে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ এটাও বলে আসছে, তাদের সরকারের চাওয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া একই।
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দুভাবে দেখলেও দলটির বিভিন্ন পর্যায়ে নানা রকম কানাঘুষা রয়েছে। ভেতরে-ভেতরে ‘ভেঙে পড়লেও’ ওপরে শক্ত মনোভাব ধরে রাখার চেষ্টা করছেন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কথা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা বেশ বিরক্তি প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সরকার ও আওয়ামী লীগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নতুন কিছু নয়। দুপক্ষের অবস্থান একই বলেও দাবি করেন ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নির্বাচনে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে আমেরিকার যে অবস্থান তাতে বিএনপিরই ক্ষতি, কারণ তারা ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন হতে দেবে না।’ তিনি বলেন, সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা ও আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় সরকার। সেখানে সব দল নির্বাচনে আসুক সেই আহ্বানও জানানো হয়েছে।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত এবং সহযোগিতা করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই ব্যক্তিদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা রয়েছেন। শান্তিপূর্ণ উপায়ে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা জোরালোভাবে দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র তো বিএনপির দাবি সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের যে অবস্থান সেখানে তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে এসব বলা হয়নি। ফলে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করায় আওয়ামী লীগ বা সরকার কেন বেকায়দায় পড়বে? আমরা মনে করি, বিএনপিই তো বেকায়দায় রয়েছে। কারণ, তাদের দাবি অসাংবিধানিক। আর অসাংবিধানিক উপায় অবলম্বন করছে। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের এই অনড় অবস্থান বিএনপির বিরুদ্ধে গেছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খানের দাবি, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে শঙ্কিত বিএনপি। তারা তো বিএনপির একটা দাবির কথাও বলে নাই।’ সরকার বা আওয়ামী লীগ ভীত ও শঙ্কিত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের উচিত বিএনপির প্রতিক্রিয়া জানা।’
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘আমরা যেমন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই, আমেরিকারও একই রকম চাওয়া।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্র যে এমন কিছু করবে এটা প্রত্যাশিতই ছিল। এটা সিম্পল ব্যাপার আমাদের জন্য।’
ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় বিরোধী দল আছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যে বক্তব্য এসেছে সে সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিবৃতিতে কোন বিরোধী দলের কথা বলা হয়েছে তা স্পষ্ট করা হয়নি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে আজকে দেশে গণতন্ত্রের যে সংকট তার জন্য সরকার এককভাবে দায়ী। তা ছাড়া এর আগে বাইডেন প্রশাসন তাদের দেশে যে গণতন্ত্রের সম্মেলন করেছে তাতে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি।’
ভিসানীতি প্রয়োগের জন্য সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ বিগত দুটি বিতর্কিত সংসদ নির্বাচন করার পর আবারও আগামী নির্বাচন একতরফা করতে যে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সে কারণে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। এর দায় সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগকে নিতে হবে। আজকে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ আগের ঘোষণার ধারাবাহিকতা। প্রথমদিকে নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে, সাধারণ মানুষের ভেতর যে বড় ধাক্কা মনে হয়েছিল, ঘোষণা আসার পর সেটা মনে হয়নি। তবে কোনো একটা সমীকরণ থেকেই যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এর প্রভাব কত দূর যাবে সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনে কী বার্তা যাবে সেটা পরিষ্কার নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা তাদের বৈশি^ক চর্চারই অংশ। মূল কথা হলো, এটা সবার জন্যই চাপ।’