
২০৩০ সালের মধ্যে সারা বিশ্বের মানুষের জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এসডিজির যে ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল তা মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে। বিশ্ব নেতাদের আন্তরিক রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি ছাড়া এ ক্ষতি পূরণ করা সম্ভব নয় বলে মনে করছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের শুরুতে স্থানীয় সময় সোমবারে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে শুরু হয়েছে দুদিনের এসডিজি সামিট। সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে টেকসই উন্নয়নের অগ্রগতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। এতে অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান; সরকারি প্রতিনিধিদল ও টেকসই উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও অংশীজনেরা।
এসডিজি শীর্ষ সম্মেলনের অংশ হিসেবে এক গোলটেবিল আলোচনায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে বৈশ্বিক অংশীদারত্বে বিশাল ফাঁক রয়েছে। তিনি স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য দোহা কর্মসূচির আওতায় প্রতিশ্রুতি রক্ষার আহ্বান জানান। এসডিজি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সমন্বিত প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য দুর্ভিক্ষ এখন অতীতের বিষয়। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে আমরা আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। বাংলাদেশে ২০২২ সালে চরম দারিদ্র্য কমে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে, যা ২০০৬ সালে ২৫ দশমিক ১ শতাংশ ছিল।’
মোমেন বলেন, ‘অর্থায়ন ইস্যুতে আমাদের বক্তব্য হলো, রেয়াতি ঋণ ও জীবন রক্ষাকারী প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ন্যূনতম শর্ত আরোপ করা। সরকারি খাতের পাশাপাশি বেসরকারি খাত যাতে এসডিজি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে পারে সেজন্য যথেষ্ট প্রণোদনা থাকা।’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে এ বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।
শীর্ষ সম্মেলনে বিশ^ নেতারা এসডিজির বেশিরভাগ লক্ষ্যমাত্রার অগ্রগতি খুব ধীর হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ক্ষুধা ও চরম দারিদ্র্য দূরীকরণ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ২০৩০ সালের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জরুরি পদক্ষেপ না নিলে বিপদে পড়তে হবে বলে সতর্ক করেন। ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পদক্ষেপ ত্বরান্বিত করার রাজনৈতিক ঘোষণাও গ্রহণ করা হয়েছে। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সমবেত রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা ১০ পৃষ্ঠার একটি নথি গ্রহণ করেছেন।
এসডিজি সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘এসডিজি শুধু একটি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের তালিকা নয়। এটি বিশ্বের মানুষের আশা, স্বপ্ন, অধিকার এবং প্রত্যাশার ধারক।’
সাধারণ পরিষদের সভাপতি ডেনিস ফ্রান্সিস বলেন, ‘বিশ্বনেতাদের প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও এখনো ১.২ বিলিয়ন মানুষ দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছে এবং বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় ৮ শতাংশ বা ৬৮০ মিলিয়ন মানুষ চলতি দশকের শেষ নাগাদ ক্ষুধার মুখোমুখি হবে। সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে ১২৪ মিলিয়ন অতিরিক্ত লোককে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনা সম্ভব এবং প্রায় ১১৩ মিলিয়ন মানুষের অপুষ্টি আমরা দূর করতে পারি। একটি রাজনৈতিক ঘোষণা এসডিজির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করায় গেম-চেঞ্জার হতে পারে।’
বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রশংসা : বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে সার্বিক উন্নয়ন এবং সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রিয়াসিস। স্থানীয় সময় সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে তিনি এ প্রশংসা করেন। কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিকে প্রায় ৩০ ধরনের ওষুধ সাধারণ মানুষ বিনামূল্যে পেয়ে থাকে।
প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি : স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ১৯ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সদর দপ্তরে সিআর-১৬-তে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় কাউন্সিল ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সভাপতির ‘টুওয়ার্ডস এ ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল আর্কিটেকচার’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে ভাষণ দেবেন। একই দিন শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সিআর-১১তে বাংলাদেশ, অ্যান্টিগা এবং বারবুডা, ভুটান, চীন, মালয়েশিয়া, চ্যাথাম হাউজ ও সূচনা ফাউন্ডেশনের আয়োজনে চিকিৎসা পরিষেবাভিত্তিক কমিউনিটি ক্লিনিকের একটি সাইড ইভেন্টেও যোগ দেবেন। একই দিনে প্রধানমন্ত্রী শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট, ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী, তিমুরের প্রেসিডেন্ট এবং আন্তর্জাতিক অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির মহাসচিবের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
যোগ দিচ্ছেন জেলেনস্কি : জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের জন্য বিশ্বনেতারা ইতিমধ্যে নিউ ইয়র্কে জড়ো হয়েছেন। এবারের আলোচনাতেও গুরুত্ব পাবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবেন। জেলেনস্কি রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে বিখ্যাত রোস্ট্রামে ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আগামী নভেম্বরে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তফসিল ঘোষণার পর প্রশাসনে রদবদলের সুযোগ নেই সরকারের। তাই এর আগেই নির্বাচনী প্রশাসনে ধাপে ধাপে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। প্রশাসনে চলছে পদোন্নতি ও রদবদল। ইতিমধ্যে নির্বাচনী প্রশাসন সাজাতে জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে বদলি-পদায়ন হয়েছে। অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম সচিব পদে বড় পদোন্নতি হয়েছে। নির্বাচনের আগে অবসরে যাওয়া কয়েকজন সচিবেরও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে প্রশাসন ক্যাডারের ২৪তম ব্যাচের ২৬ জন, ২৫তম ব্যাচের ২০ জন এবং ২৭তম ব্যাচের ১৮ জন ডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিসিএসের ২৪তম ব্যাচের কর্মকর্তারা নিয়োগ পেয়েছিলেন ২০০৫ সালে, ২৫তম ব্যাচ ২০০৬ সালে এবং ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তারা নিয়োগ পেয়েছিলেন ২০০৮ সালে।
জানা যায়, নির্বাচনের সময় ডিসিরা জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকেন। তাদের যে কোনো কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ থেকে শুরু করে বাতিলের ক্ষমতাও থাকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও থাকে রিটার্নিং কর্মকর্তা তথা ডিসির অধীনে। নির্বাচনের সময় সমন্বয়কারীর ভূমিকায়ও থাকেন ডিসিরা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন তাদের দুটি ব্যাচের কর্মকর্তারা নিয়োগ পেয়েছিলেন বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে। আর সে সময় বিসিএস নিয়ে বেশ বিতর্ক ছিল। বিসিএসে ছিল নানা ধরনের তদবির। ২৪ ও ২৫তম ব্যাচ দুটি বিএনপির সময়ে নিয়োগ পেলেও ২৭তম ব্যাচ নিয়োগ পেয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে। কারণ বিএনপির শেষ সময়ে ২৭তম ব্যাচের নিয়োগে বড় ধরনের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থাকায় তা বাতিল হয়। পরে ফের পরীক্ষা নিয়ে ২০০৮ সালে এ ব্যাচের নিয়োগ দেয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তবে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ ছিল ২৪তম ব্যাচের নিয়োগ নিয়ে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে দেশ রূপান্তরকে বলেন, ২৪তম ব্যাচের কয়েকজন কর্মকর্তাকে ডিসির পদ থেকে তুলে আনা হতে পারে। নির্বাচনের সময় যারা ডিসির দায়িত্বে থাকবেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মাধ্যমে তাদের সবার ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে পরিবার ও নিকট আত্মীয়স্বজনদের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার বিষয়গুলো যাচাই করা হয়েছে। কারও বিরুদ্ধে ছাত্রজীবনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে আর ডিসির পদে রাখা হবে না।
এ ছাড়া নির্বাচনে অন্যতম ভূমিকা পালন করবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও)। বর্তমানে ৩৩, ৩৪ ও ৩৫তম ব্যাচের কর্মকর্তারা রয়েছেন ইউএনও পদে, যারা আসন্ন নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন। এখন ৩৫তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে ইউএনওর দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে; এ ব্যাচে প্রশাসন ক্যাডারের ২৯১ জন কর্মকর্তা রয়েছেন।
জানতে চাইলে সরকারি কর্ম কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও সরকারের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ইকরাম আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পিএসসির নিয়োগ পরীক্ষা হয় যোগ্যতা, মেধা ও দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে। সেখানে ছাত্রজীবনে কে কোন পার্টি করেছিলেন, কোন দল ক্ষমতায় আছে তা বিবেচনা করা হয় না। বিসিএস কর্মকর্তাদের যে ফাউন্ডেশন ট্রেনিং হয়, তাতে তাকে একজন অফিসার হিসেবেই গড়ে তোলা হয়। এরপর এসিআর, সুপিরিয়রের মতামত, সুনাম, দক্ষতা, যোগ্যতার ভিত্তিতেই একজন কর্মকর্তাকে উচ্চতর পদে দেওয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। তবে সরকার যে দল পরিচালনা করে তাদের কিছু নীতিমালা ও উদ্দেশ্য থাকে। কর্মকর্তাদের দায়িত্ব সরকারের নেওয়া বৈধ ও জনকল্যাণে গৃহীত পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা। তিনি প্রলুব্ধ হবেন না, নিরপেক্ষ থেকে তার দায়িত্ব পালন করবেন। যদি কোনো নির্বাচনী দায়িত্বও দেওয়া হয়, সেটাও নিরপেক্ষভাবে তিনি পালন করবেন।’
গত মে মাসে অতিরিক্ত সচিব পদে ১১৪ জনের পদোন্নতি হয়। জুলাই মাসে পাঁচ বিভাগে নতুন বিভাগীয় কমিশনার দেওয়া হয়েছে। গত জুলাই মাসেই বদলি ও নতুন মিলিয়ে ৩০টি জেলায় ডিসি পদে পরিবর্তন আনা হয়েছে। উপসচিব পদমর্যাদার এই ডিসি পদে এবারও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর আটজন পিএসকে পদায়ন দেওয়া হয়েছে।
গত ৪ সেপ্টেম্বর যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ২২১ কর্মকর্তা। এ পদোন্নতিতে মূল বিবেচনায় এসেছে ২২তম ব্যাচ। বর্তমানে যুগ্ম সচিবের স্থায়ী পদ ৫০২টি। এর বিপরীতে পদোন্নতি পাওয়ার পর যুগ্ম সচিবের সংখ্যা হলো ৯৪৬ জন। এর আগে সর্বশেষ গত বছর ২ নভেম্বর ১৭৫ জন কর্মকর্তাকে যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল। আর গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২৭০ জন সিনিয়র সহকারী সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।
জানা যায়, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই অন্তত ১০ জন সচিবের স্বাভাবিক অবসরে যাওয়ার কথা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন আগামী ১৩ অক্টোবর অবসরে যেতে পারেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান ১৪ সেপ্টেম্বর, সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব কেএম আবদুস সালামের ২৬ সেপ্টেম্বর অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। তবে আবদুস সালামের চাকরি এক বছর বাড়ানো হয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ৯ অক্টোবর, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু বকর ছিদ্দীক ৩০ অক্টোবর, ইআরডি সচিব শরিফা খান ২৪ নভেম্বর, শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এহসানে এলাহী ২৫ নভেম্বর এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি বিভাগের সিনিয়র সচিব কামাল হোসেন ২৯ নভেম্বর অবসরে যাবেন। ৩১ ডিসেম্বর অবসরে যাচ্ছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মোছাম্মৎ নাসিমা বেগম এবং ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মো. ফয়জুল ইসলাম। এ ১০ জনের মধ্যে কয়েকজন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে পারেন।
গত কয়েক বছরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং মুখ্য সচিব পদে যারা ছিলেন, তাদের অনেকেই স্বাভাবিক অবসরের মেয়াদ শেষে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছিলেন। সর্বশেষ সাবেক চার মন্ত্রিপরিষদ সচিবের মধ্যে একমাত্র কবির বিন আনোয়ার ছাড়া বাকি তিনজনই স্বাভাবিক মেয়াদ শেষে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছিলেন। তারা হলেন মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা, মোহাম্মদ শফিউল আলম ও খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তাই স্বাভাবিকভাবেই বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনেরও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।
সারা দেশে প্রায় ৮৫০টি এলপিজি (তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস) অটোগ্যাস স্টেশন রয়েছে, যেখান থেকে গাড়িতে গ্যাস ভরা হয়। এগুলোর মধ্যে নিবন্ধন ছাড়াই প্রকাশ্যে অন্তত ৮২৩টি স্টেশনে চরম ঝুঁকিপূর্ণভাবে অটোগ্যাস বিক্রি করা হচ্ছে। বাকি ২৭টির মধ্যে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) থেকে মাত্র ২১টি নিবন্ধন নিয়েছে। এ ছাড়া ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনের সুপারিশ করা হয়েছে। নির্ধারিত ফিস জমা দিলে এদের নিবন্ধন দেওয়া হবে। আরও ১৩টি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন চেয়ে কমিশনে আবেদন করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিবন্ধন ছাড়া অটোগ্যাস স্টেশনে মৃত্যুঝুঁকিসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দ্রুত এসব স্টেশন নিবন্ধনের আওতায় আনা দরকার। জীবনমরণের এ বিষয় নিয়ে হেলাফেলার কোনো সুযোগ নেই। অন্যদিকে এ খাতের ব্যবসায়ীদের দাবি, নিয়ম মেনেই তারা ব্যবসা করতে চান। কিন্তু নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় নানারকম জটিলতা, দীর্ঘসূত্রতা আর উৎকোচের কারণে ইচ্ছে থাকলেও অনেকেই নিবন্ধন নিতে পারছেন না।
বর্তমানে যানবাহনে এলপিজির ব্যবহার বাড়তে থাকায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেকটা ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠছে এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুরনো পেট্রোলপাম্পের ভেতরে একসঙ্গেই এলপিজি স্টেশন তৈরি করা হচ্ছে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বাসাবাড়ি কিংবা বিভিন্ন ভবনের দেয়াল ঘেঁষে কিংবা নিরাপদ দূরত্ব বজায় না রেখেই নির্মিত হয়েছে অসংখ্য স্টেশন। অনেক ক্ষেত্রেই ঝুঁকিপূর্ণভাবে সিলিন্ডারে এলপিজি ভরা এবং তা পরিবহন করা হচ্ছে। ফলে যেকোনো সময় বিস্ফোরণ ঘটে মৃত্যুঝুঁকি এবং মূল্যবান সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
বিস্ময় প্রকাশ করে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ^বিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সবার চোখের সামনে নিবন্ধন ছাড়া এলপিজি স্টেশন কীভাবে চলে সেটা আমার বোধগম্য নয়। এতগুলো স্টেশন নিবন্ধনবিহীনভাবে গাড়িতে এলপিজি বিক্রি করছে অথচ কেউ দেখছে না। এটা তো সাংঘাতিক ব্যাপার।’ ‘নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই বেশ কিছু শর্ত পূরণের পরই এ ধরনের স্টেশনগুলোর নিবন্ধন দেওয়া হয়। এখানে ছাড় দেওয়া কিংবা হেলাফেলা করার কোনো সুযোগ নেই। কারণ এখানে জীবনমরণের প্রশ্ন রয়েছে। এটা তো একটা বোমার মতো। নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যেতে পারে। লাইসেন্স ছাড়া বন্দুক ব্যবহারের চেয়েও ভয়াবহ বিষয় এটি। ফলে বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার’ যোগ করেন তিনি।
জানতে চাইলে বিইআরসির চেয়ারম্যান মো. নুরুল আমিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী জ্বালানি হিসেবে যানবাহনে এলপিজির (অটোগ্যাস) ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি এলপিজি স্টেশন স্থাপনের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অটোগ্যাস স্টেশন স্থাপন ও পরিচালনার জন্য বিইআরসি থেকে লাইসেন্স নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নিবন্ধন ছাড়া ব্যবসা করলে সেটা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ।
তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু ব্যবসায়ী বেআইনিভাবে এলপিজি স্টেশন ও এলপিজি সরবরাহ করছে। দ্রুত লাইসেন্স গ্রহণের জন্য সম্প্রতি বাংলাদেশ এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশন অ্যান্ড কনভার্সন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনকে চিঠি দিয়েছি। একই সঙ্গে এ বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য স্টেশনগুলোতে এলপিজি সরবরাহকারী অপারেটরদেরও চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সবাই নিবন্ধনের আওতায় আসবেন। এরপরও যদি কেউ নিবন্ধন ছাড়া ব্যবসা করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে কমিশন আইনগত ব্যবস্থা নেবে।’
দেশ জুড়ে ঠিক কতগুলো এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশন আছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশ এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশন অ্যান্ড কনভার্সন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য এবং সদস্য হতে আবেদন করা স্টেশন মিলে বর্তমানে চালু আছে ৭৬৮টি। এর বাইরেও প্রায় ১০০ স্টেশন চালু রয়েছে। তবে সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ সিরাজুল মাওলা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সারা দেশে প্রায় ৯০০ এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশন চালু রয়েছে।
তিনি দাবি করেন, ‘নিবন্ধন নিয়েই সবাই ব্যবসা করতে চান। কিন্তু এ নিবন্ধন নিতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। সময় বেশি লাগে। অনেক রকমের বাড়তি খরচও হয়। তাছাড়া বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের শর্ত পূরণ করাও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনেক কঠিন ব্যাপার।’
সিরাজুল মাওলা বলেন, ঝামেলা থেকে রেহাই পেতে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে একটা প্রতিষ্ঠান থেকেই সব প্রক্রিয়া শেষে নিবন্ধন নিতে চান ব্যবসায়ীরা। এজন্য বিভিন্ন সময়ে কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে আবেদনও করা হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।
এলপিজি স্টেশনের জন্য বিইআরসি থেকে নিবন্ধনের জন্য প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্রের পাশাপাশি জেলা প্রশাসকের অনাপত্তিপত্র, সড়ক ও জনপথ বিভাগের অনাপত্তি/ইজারা চুক্তি, বিস্ফোরক পরিদপ্তর ও ফায়ারের ছাড়পত্র/লাইসেন্স এবং পরিবেশগত ছাড়পত্রের প্রয়োজন হয়।
এ খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, আলাদা আলাদা এসব দপ্তরে ঘোরাঘুরি করতে অনেক সময় চলে যায়। অনেক প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন অজুহাতে হয়রানি যেমন করে আবার মোটা অঙ্কের ঘুষও দিতে হয় অসাধু কর্মকর্তাদের। এসব কারণে বেশিরভাগই নিবন্ধন নিতে অনাগ্রহ দেখান।
এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশন অ্যান্ড কনভার্সন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে গত ২৮ মে বিইআরসিকে এ সংক্রান্ত একটি আবেদন করা হয়। এতে বলা হয়, পরিবেশের ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনা করে সরকার এলপিজি ব্যবহারে উৎসাহ দিচ্ছে। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রায় ২২ রকমের তথ্য ও কাগজপত্রসহ সব ধরনের শর্ত পূরণের পরও বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে আবেদন বাতিল করে দেয়। এ অবস্থায় নিবন্ধনের জন্য ব্যবসায়ীরা বিইআরসিতে আবেদন করবেন। বিইআরসি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় শর্তপূরণের মাধ্যমে নিবন্ধনে সহায়তা করলে তারা উদ্বুদ্ধ হবেন।
এ বিষয়ে বিইআরসির একজন কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, তারাও ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে কমিশন থেকেই এলপিজি স্টেশনের নিবন্ধন দিতে চান। কিন্তু অন্যান্য যেসব প্রতিষ্ঠান এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত তাদের বেশিরভাগই রাজি নয়। কারণ কেউই নিজেদের কর্তৃত্ব ছাড়তে চায় না। আবার এখানে অবৈধ লেনদেনেরও একটা বিষয় রয়েছে। সরাসরি কমিশনের মাধ্যমে নিবন্ধন দেওয়া হলে অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকেরই বাড়তি আয় বন্ধ হয়ে যাবে।
বিষয়টি জানতে গত শনিবার টেলিফোনে বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক সুলতানা ইয়াসমীনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে পাল্টা প্রশ্ন করেন নিবন্ধনবিহীন অটোগ্যাস স্টেশন কি আছে?
আছে জানানো হলে সুলতানা ইয়াসমীন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আইন অনুযায়ী নিবন্ধন ছাড়া অটোগ্যাস স্টেশন চালু করার কোনো সুযোগ নেই। এরপরও কেউ করলে সেটা আইনত দন্ডনীয়।’
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নিবন্ধন পেতে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের যেসব শর্ত রয়েছে, তা শিথিল করার বিষয়টি নীতিনির্ধারক পর্যায়ের এখতিয়ার। তারা শর্ত পরিবর্তন করলে আমরাও সেটা পালন করব। তবে এর আগে শর্ত শিথিল করার কোনো সুযোগ নেই।’
ঢাকা জেলা বিএনপির উদ্যোগে কেরানীগঞ্জে সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘আজ দেশে চোর-ডাকাতদের বিচার নেই, চোর-ডাকাতদের খবর নেই, বিচার হয় শুধু বিএনপি নেতাকর্মীদের। বিএনপির নেতাকর্মীদের বিচার কেন হবে? দেশকে ভালোবাসে তারা, এটাই কি তাদের অপরাধ? আইয়ুব খান জুলুম করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি, আপনিও পারবেন না। এই সরকারের পদত্যাগ অপসারণ সময়ের ব্যাপার মাত্র। আমরা সারা দেশে কঠোর আন্দোলন করব, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করব। আপনারা তৈরি হন।’
সরকারের পদত্যাগে এক দফা দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন-সংগ্রামের অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিভাগের কেরানীগঞ্জ উপজেলা ও গাজীপুরে সমাবেশ করেছে বিএনপি। এছাড়া সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর শরিক গণতন্ত্র মঞ্চ রাজধানীতে সমাবেশ করেছে। প্রশাসন ও বিচার বিভাগের উদ্দেশ্যে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘সরকারকে ক্ষমতায় রাখার তোমরা কেডা? ক্ষমতায় কে যাবে না যাবে তা ঠিক করবে জনগণ।’
এর আগে গত সোমবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উপস্থিতিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। কর্মসূচি চলবে আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ঢাকা ও ঢাকার উপকণ্ঠের জেলাগুলোতে কৃষক, মহিলা সমাবেশসহ ১০টি সমাবেশ। পেশাজীবী ও শ্রমজীবীদের নিয়ে দুটি কনভেনশন ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও রয়েছে ৫টি বিভাগে রোডমার্চ এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনায় সারা দেশে জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন ওয়ার্ড পর্যায়ে দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার কেরানীগঞ্জে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে ও গাজীপুরের টঙ্গীতে দুটি সমাবেশ হয়।
আমাদের কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, কেরানীগঞ্জের জিনজিরায় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘হাসিনা সরকারের একটাই কথা আমি ক্ষমতায় থাকতে চাই। ক্ষমতার বড়ই মজা। আপনি ভাবছেন পুলিশ প্রশাসন দিয়ে গ্রেপ্তার করাবেন, আর কোর্টে বিচার করে নেতাকর্মীদের শাস্তি দেবেন, এভাবে হয় না।’
এর আগে বেলা আড়াইটায় জিনজিরা বিএনপি পার্টি অফিসের সামনে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই বিএনপি নেতাকর্মীরা খ- খ- মিছিল নিয়ে জিনজিরা পার্টি অফিসের আশপাশে জড় হতে শুরু করে।
সমাবেশ উপলক্ষে সকাল ৯টার দিকে জিনজিরায় সমাবেশের জন্য মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়। মঞ্চের আশপাশে সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা খ- খ- জটলা তৈরি করে। সকাল থেকেই ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে উপস্থিত হয়। সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি ছিল। তবে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ শেষ হয়।
ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশরাফের সভাপতিত্বে সমাবেশ সঞ্চালনা করেছেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায়। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আব্দুস সালাম, আমান পুত্র ইরফান ইবনে অমি, মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস, নাজিম মাস্টার প্রমুখ।
জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিন গয়েশ্বর চন্দ্র রায় : গাজীপুর মহানগর বিএনপির উদ্যোগে টঙ্গী কলেজ গেট চেয়ারম্যান বাড়ি রোডে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ^র চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়ে জনগণকে শান্তিতে থাকতে দিন, তাহলে জনগণও আপনাদের শান্তিতে থাকতে দেবে।’ তিনি বলেন, ‘একাত্তরে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছি, আর এখন গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করছি। জনগণের টাকায় জনগণের বুকে আর একটি গুলিও চালাবেন না, চালালে যে চালাবে তাকে বের করার ক্ষমতা এদেশের জনগণের আছে। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে, পুলিশ এসপি আমাদের কিছু লাগবে না। আগামী কোনো কর্মসূচির জন্য আর পুলিশের অনুমতি নেব না। জনগণের রাস্তায় জনগণ বসে থাকবে। কেউ উঠাতে পারবে না।’
গণতন্ত্র মঞ্চের সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও মিছিল : এক দফা দাবি আদায়ে গণতন্ত্র মঞ্চ রাজধানীর মতিঝিলে শাপলা চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। পরে সেখান থেকে গণতন্ত্র মঞ্চের মিছিল শুরু হয়ে হাটখোলা সড়ক হয়ে সালাউদ্দীন হাসপাতাল মোড়, টিকাটুলি গিয়ে শেষ হয়।
সভা-সমাবেশ ও দোয়া মাহফিল মিলিয়ে আগামী ৪ অক্টোবর পর্যন্ত সাত দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। গতকাল মঙ্গলবার এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এর আগের দিন সোমবার সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত ১২ দিনের কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি।
আওয়ামী লীগের এই কর্মসূচি বিভিন্ন মহল পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে দেখলেও ক্ষমতাসীনরা একে পাল্টাপাল্টি বলতে নারাজ। আওয়ামী লীগের দাবি, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ এটি।
দলীয় কর্মসূচি নির্ধারণে গতকাল আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠক করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কর্মসূচির বিষয়ে জানান তিনি।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ২৮ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। ২৯ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে হবে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা। পাশাপাশি এদিন দেশব্যাপী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে নানা কর্মসূচি পালন করবে দলটি।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ২৩ সেপ্টেম্বর বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সমাবেশ। ২৫ সেপ্টেম্বর উত্তরায় হবে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সমাবেশ এবং যাত্রাবাড়ীতে সমাবেশ করবে দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা।
২৭ সেপ্টেম্বর টঙ্গীতে গাজীপুর মহানগর ও কাফরুলে ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগ সমাবেশ করবে। ৩০ সেপ্টেম্বর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে কৃষক সমাবেশ করবে কৃষক লীগ। সর্বশেষ ৪ অক্টোবর চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে সমাবেশের মাধ্যমে সাত দিনের কর্মসূচি শেষ হবে।
আওয়ামী লীগের কর্মসূচি বিএনপির ১২ দিনের পাল্টা কর্মসূচি কি না জানতে চাইলে মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘আমরা কোনো পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিচ্ছি না। আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করছি। আমাদের প্রতিটি কর্মসূচি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকেন্দ্র্রিক। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে সাধারণ জনগণের সঙ্গে মাঠপর্যায়ের কর্মীদের সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি করা, জনসমর্থন ও আস্থা বৃদ্ধি করাই মূল লক্ষ্য। সে জন্য কর্মসূচি দিচ্ছি। ছাড়া এ মাসেই তো আমাদের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনের কর্মসূচি রয়েছে। সেটাও কি পাল্টাপাল্টি?’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত এক হয়ে নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে এবং কর্মসূচি দিচ্ছে। আগামী নির্বাচনে তাদের জয়লাভের কোনো সম্ভাবনা নেই বলেই তারা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। কারণ জনগণ তাদের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করেছে। তারা যেন দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে।’ এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সজাগ থাকবে বলে জানান তিনি।
দলীয় সরকারে অধীনে নির্বাচন প্রতিহত করা হবে বিএনপির এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে নাকি বাধাগ্রস্ত করবে, সেটা তাদের ব্যাপার। তবে আমরা বলতে চাই, দেশের জনগণ শান্তি, উন্নয়ন ও অগ্রগতি চায়। তারা দেশে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা দেখতে চায়। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা নষ্ট করার অশুভ তৎপরতা অতীতেও জনগণ নস্যাৎ করেছে, ভবিষ্যতেও করবে।’
হানিফ বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি, বিএনপিসহ সব দলকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য। আমরা আশা করছি, বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেবে। কিন্তু কোনো দলের নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে। তা নিতে পারে। কিন্তু নির্বাচনে অংশ না নিয়ে যদি বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তাহলে সেটা জনগণ ও সরকার কঠোর হস্তে দমন করবে।’
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশেও দ্রব্যমূল্য কিছুটা বেড়েছে। এতে হয়তো কিছু মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে কাজ করা হচ্ছে।’
তৃণমূল বিএনপির সম্মেলন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক দল, জনগণের দল। দেশের প্রতিটি জনগণের রাজনীতি করার অধিকার রয়েছে, সুযোগ আছে। গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে বলেই যেকোনো রাজনৈতিক দল তাদের কর্মসূচি পালন করতে পারছে। এখানে কোনো রাজনৈতিক দল তাদের কর্মসূচি পালন করলে আমাদের বলার কিছুই নেই।’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এসএম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, ফরিদুন্নাহার লাইলী, আমিনুল ইসলাম আমিন, বিপ্লব বড়ুয়া, সেলিম মাহমুদ, আবদুস সবুর, আবদুল আউয়াল শামীম, সায়েম খান প্রমুখ।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের দপ্তর সম্পাদককে অব্যাহতি
দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড ও নৈতিক স্খলনের অভিযোগ ওঠায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে কেন দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না এমন জবাব ১৫ দিনের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে।
রিয়াজ উদ্দিন শেরেবাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের (নারী শিক্ষা মন্দির) পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন। ১৫ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকার এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তিনি এ পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তার স্থলে অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (শিক্ষা ও আইসিটি) সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন দেয় শিক্ষা বোর্ড।
গতকাল আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত যৌথসভা শেষে নগরের দায়িত্ব থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়।
রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আগামী ১৫ দিনের মধ্যে লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আমি আমার অবস্থান ব্যাখ্যা করে জবাব দেব।’
বর্তমান সংবিধানের আলোকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তৃণমূল বিএনপি। প্রথম কাউন্সিলে দলটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর দেশ রূপান্তরকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘সংবিধান মেনে নির্বাচনে যাব আমরা। আমাদের বিশ্বাস আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা, প্রশাসনসহ অন্যরা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন (ইসি) তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করলে জনগণের প্রত্যাশিত সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব।’
রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন রয়েছে সরকারের সমর্থনে দলটি নিবন্ধন পেয়েছে এবং সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে এমন প্রশ্নের জবাবে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘তৃণমূল বিএনপি একটি স্বাধীন রাজনৈতিক দল। এই দলের চিন্তাভাবনা নিজেদের। এটি “কিংস পার্টি” নয়, এটি জনগণের পার্টি। কিংস পার্টি গঠিত হয়েছিল এক-এগারোর সময়।’
৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়া প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সংসদ নির্বাচনে আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দেব। তৃণমূল বিএনপির সঙ্গে কেবল যাত্রা শুরু করলাম। অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। যারা যোগাযোগ করছেন, তারা নিজ নিজ এলাকায় কতটা জনপ্রিয় তা যাচাই-বাছাই করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। আশা করছি নির্বাচনের আগেই আমরা আমাদের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে পারব।’
শমসের মবিন চৌধুরী বিএনপির সহসভাপতি ছিলেন। ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি থেকে তিনি পদত্যাগ করেন। আর তৈমূর আলম খন্দকার বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ছিলেন। ২০২২ সালের জানুয়ারি তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি। দলটির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত নাজমুল হুদা জনগণের পক্ষে রাজনীতি করেছেন। তিনি নিজেই নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফর্মুলা দিয়েছিলেন। এ কারণে বিএনপি তাকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দিয়েছিল। আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত হলেই কেবল নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে ভাবব। কাউন্সিল হয়েছে মাত্র, এখনো দলের নেতারা আমরা একসঙ্গে বসে আলোচনা করতে পারিনি। আগে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে। তারপর আলোচনা-পর্যালোচনা করে নির্বাচনের বিষয়ে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেব। তবে একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই, জনগণ বিগত দুটি নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়নি। জনগণের ভোট প্রদানের সুযোগের বিষয়টি আমাদের মাথায় রয়েছে। জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার বিরুদ্ধে আমরা যাব না।’ তিনি বলেন, ‘নাজমুল হুদার মানবাধিকার সংগঠন রয়েছে, যার উপজেলা পর্যায়ে কমিটি রয়েছে। তারাই মূলত আমাদের দলের শক্তি। তা ছাড়া নির্বাচন সামনে রেখে জোটে যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে ভাবব। আমরা যেখানে সুবিধা পাব, সেখানে যাব।’
এর আগে গত রবিবার তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার গণমাধ্যমকে জানান, তিনি তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন। তার সঙ্গে শমসের মবিন চৌধুরীও যোগ দেবেন। এরপর ওই দিনই জানানো হয় মঙ্গলবার দলের প্রথম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। কাউন্সিলে দলের সভাপতি হচ্ছেন শমসের মবিন চৌধুরী ও মহাসচিব হচ্ছেন তৈমূর আলম খন্দকার।
গতকাল বেলা ১১টায় রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে তৃণমূল বিএনপির কাউন্সিল শুরু হয়। কাউন্সিলে শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমূর আলম খন্দকারকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীরা।
স্বাগত বক্তব্যে দলটির এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান অন্তরা সেলিম হুদা বলেন, ‘বিএনপি সরকারের সময় মন্ত্রী থাকা সত্ত্বেও কেয়ারটেকার সরকারের রূপরেখা দিয়েছিলেন এবং মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করেছিলেন নাজমুল হুদা। তার এই রূপরেখাকে যদি সম্মানিত করা হতো, তবে আজকের দিনে এসে স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী সাংবিধানিকভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতো। সব সরকারেরই ক্ষমতা ছাড়তে কষ্ট হয়। ক্ষমতায় থেকে একজন মিনিস্টার হয়েও জনগণের কাছে এমন ফর্মুলা দিয়ে দেশপ্রেম ও বড় মনের পরিচয় দিয়েছিলেন নাজমুল হুদা। আমরা তা আজ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। কেয়ারটেকার সরকারের জন্য বিএনপি কত আন্দোলন করছে। অথচ সেই সময় বিএনপিই ক্ষমতায় ছিল।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা অবগত আছেন তৃণমূল বিএনপি গত ১৬ ফেরুয়ারি নিবন্ধন পায়। এর তিন দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি আমার বাবা তৃণমূল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ইন্তেকাল করেন। এর কিছুদিন পর আমি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করি। এমন পরিস্থিতিতে দলের দায়িত্ব নেওয়া আমার জন্য কষ্টকর ছিল। দলের একজন কর্মী হিসেবে আমি গর্ববোধ করি। আমার বাবা ছিলেন জননেতা, জনগণের কাছের মানুষ, অত্যন্ত কর্মীবান্ধব। তিনি বারবার সংসদ নির্বাচনে দাঁড়িয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।’
২৭ সদস্যের কমিটি ঘোষণা : কাউন্সিল ও কর্মী সমাবেশের দ্বিতীয় পর্বে আংশিক কমিটি ঘোষণা দেন কাউন্সিলের সঞ্চালক ও দলের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মো. আক্কাস আলী খান। ২৭ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক জাতীয় নির্বাহী কমিটি নির্বাচন করা হয়। সঞ্চালক আক্কাস হন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব। দলটির ভাইস চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছেন কে এ জাহাঙ্গীর মজুমদার, মেজর (অব.) ডা. হাবিবুর রহমান, মোখলেসুর রহমান ফরহাদী, দীপক কুমার পালিত, মেনোয়াল সরকার ও ছালাম মাহমুদ।
যুগ্ম মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম, অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান, ফয়েজ চৌধুরী, তালুকদার জহিরুল হক, রোখসানা আমিন সুরমা। কোষাধ্যক্ষ (ভাইস চেয়ারম্যান পদমর্যাদা) নির্বাচিত হয়েছেন শামীম আহসান।
সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন শাহজাহান সিরাজ (বরিশাল), আকবর খান (চট্টগ্রাম)। এ ছাড়া সহসাংগঠনিক সম্পাদক কামাল মোড়ল, দপ্তর সম্পাদক হিসেবে একে সাইদুর রহমান ও মো. রাজু মিয়া, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক কাজী ইব্রাহীম খলিল সবুজ, যুববিষয়ক সম্পাদক শাহাবউদ্দিন ইকবাল, আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আশানুর রহমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক স্থপতি নাজমুস সাকিব, প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক সাগর ঘোষ এবং স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন নির্বাচিত হয়েছেন।
আগামী চেস গিল্ড স্কুল দাবায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আইয়ান রহমান ও মনন রেজা নীড়। একক ইভেন্টের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী ক্যাটাগরিতে আইয়ান ও ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে নীড়। ৭ রাউন্ডের খেলায় আইয়ান ও নীড় দুজনই পেয়েছে সাড়ে ছয় পয়েন্ট করে।
বিটজ দলগত বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এলিগেন্ট চেস একাডেমি। এই দলে খেলেছে জারিফ হক আফনান, তাসরিক সায়হান, সিয়াম চৌধুরী ও নীলাভা চৌধুরী। আজ শনিবার দাবা ফেডারেশন কার্যালয়ে শেষ হয়েছে এই প্রতিযোগিতা।
আগামী চেস গিল্ডের আয়োজনে গত ২৮ সেপ্টেম্বর শুরু হয় ‘আমরা ৯২’ আগামী চেস গিল্ড স্কুল রেটিং টুর্নামেন্ট। সুইস লিগ পদ্ধতিতে হয়েছে খেলা। একক ও দলগত দুই বিভাগে অংশ নেয় ১৪৫ জন দাবাড়ু। টুর্নামেন্টে বিজয়ীরা ট্রফি, মেডেল ও সার্টিফিকেটের পাশাপাশি পেয়েছে ৭০ হাজার টাকা।
টুর্নামেন্ট শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন গ্র্যান্ডমাস্টার রিফাত বিন সাত্তার, আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম।
টানা ৬ ম্যাচ জিতে লা লিগার শীর্ষে উঠে এসেছিল জিরোনা। আগের রাতে সেভিয়াকে হারানো বার্সেলোনা সেই জিরোনাকে পেছনে ফেলে। আর রিয়াল মাদ্রিদ এবার উড়তে থাকা জিরোনাকে হারিয়ে লা লিগার কর্তৃত্ব পুনরুদ্ধার করেছে।
শনিবার মন্তিলিভি স্টেডিয়ামে জিরোনাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে কার্লো আনচেলত্তির দল। রিয়ালের হয়ে গোল তিনটি করেছেন জোসেলু, অঁরেলিয়ে চুয়ামেনি ও জুড বেলিংহাম।
আট ম্যাচের সাতটিতে জিতে রিয়ালের পয়েন্ট এখন ২১। সমান ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে বার্সেলোনা। আর টানা ছয় জয়ের পর রিয়ালের কাছে হেরে যাওয়া জিরোনা ১৯ পয়েন্ট নিয়ে আছে তিনে।
সপ্তাহ খানেক আগেই আতলেতিকো মাদ্রিদে গিয়ে ৩-১ গোলে হেরেছিল রিয়াল। এবার জিরোনায় গিয়ে
প্রথমার্ধেই ২ গোলে এগিয়ে যায় আনচেলোত্তির শিষ্যরা। এর মধ্যে ১৭ মিনিটে বেলিংহামের ক্রস থেকে বল জালে পাঠান জোসেলু। আর ২২ মিনিটে টনি ক্রুসের কর্নার থেকে হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন চুয়ামেনি।
রিয়াল ব্যবধান ৩-০ করে ৭১ মিনিটে। জোসেলুর শট জিরোনা গোলরক্ষক প্রতিহত করলেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। নাগালে বল পেয়ে দারুণভাবে বল জালে পাঠান বেলিংহাম। এটি রিয়ালের হয়ে ৭ ম্যাচে তার অষ্টম গোল।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নিতে চায় তার পরিবার। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এদিকে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছেন জার্মান বিএনপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর বিএনপি নেতারা।
তারা বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জার্মানিতে নেওয়ার কথা ছিল উন্নত চিকিৎসার জন্য। কিন্তু সে সময় শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়। এবার চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে আনার কথা শুনছি। জার্মানিতে খালেদা জিয়ার যে চিকিৎসা দরকার তার আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা জার্মানিতে রয়েছে। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি যদি চেয়ারপারসনকে জার্মানিতে আনা হয় তাহলে আমরা তার জন্য কিছু করার সুযোগ পাব। জার্মানিতে তার ভালো চিকিৎসা হবে।’
এর অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল জার্মান দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) জান রল্ফ জানোস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন। জবাবে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জানোস্কি বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া যে ধরনের সমস্যায় ভুগছেন তার সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে সম্ভব জার্মানি তার অন্যতম। বাংলাদেশ সরকার অনুমতি দিলে জার্মানিতে তার সুচিকিৎসা হতে পারে।’
গত ৯ আগস্ট খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত দেড় মাসের বেশি সময় ধরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় খালেদা জিয়া ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে অনেক দিন ধরে তার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়ে আসছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, লিভার সিরোসিসের কারণে খালেদা জিয়ার হৃদ্যন্ত্র ও কিডনির জটিলতা বেড়েছে। তিনি হাসপাতালে কখনো কিছুটা ভালো থাকছেন, পরক্ষণেই তার স্বাস্থ্যের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। ফলে তাকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘লিভার সমস্যার কারণে ম্যাডামের শ্বাস কষ্ট হয়। ইতোমধ্যে তাকে দুইবার করোনারী কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়েছিল। লিভার প্রতিস্থাপন করতে পারলে শ্বাসকষ্টটা হতো না।’
এদিকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতির লক্ষণ না থাকায় তার পরিবার ও বিএনপির পক্ষ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি এখন সামনে এসেছে।
খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়া হতে পারে এমন খবরে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও খোঁজখবর নিচ্ছেন জার্মান বিএনপি নেতারা।
জার্মান বিএনপির সভাপতি আকুল মিয়া বৃহস্পতিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘জার্মানিতে ম্যাডামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আনা হতে পারে বলে জানতে পেরেছি। আমরা খুবই খুশি। কারণ জার্মানিতে আসলে আমরা তার চিকিৎসার বিষয়ে আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করতে পারব। চেয়ারপারসনের যে চিকিৎসা দরকার তা সকল ব্যবস্থা জার্মানিতে রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ম্যাডামের মুক্তি, তার উন্নত চিকিৎসা ও গণতন্ত্র ফেরাতে দেশে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে জার্মানিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছি। আগামী ৯ অক্টোবর আমাদের কর্মসূচি রয়েছে। জার্মান বিএনপির উদ্যোগে রোডমার্চ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করব জার্মান পার্লামেন্টের সামনে। ’
আকুল মিয়া বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যখন বিদেশে নেওয়ার আলোচনা চলছিল তখনও জার্মানিতে নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়েছিল। সে সময় তারেক রহমানের সেবা করতে না পারলেও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সেবা করতে পারব বলে আশা করছি। তার চিকিৎসা জার্মানিতে করতে পারলে আমরা ধন্য হবো।’
গত ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার খালেদা জিয়ার ছোট ভাই সাঈদ ইস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনি মতামত জানতে চেয়ে আবেদনের কপি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে করা আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। খালেদা জিয়ার ভাইয়ের আবেদনটি অল্প সময়ের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।’
গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত অভিযোগে দেশের কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়টি নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পাল্টা বক্তব্য দিতেও শুরু করেছে। এতে বিরোধীপক্ষেরই ঝুঁকি দেখছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই সবপক্ষই চাপে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ অবস্থান নিয়ে রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অন্যকে ঘায়েল করার চেষ্টা হলেও মূলত নির্বাচনী রাজনীতিতে এক ধরনের পরিবর্তন আসবে। একপক্ষ নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিলেও সেই পথ থেকে তাদেরও সরতে হবে। আবার সরকারপক্ষ যেনতেন নির্বাচন করে ক্ষমতায় বসে যাবে সেই সুযোগও থাকছে না। যে যাই বলুক নির্বাচনী রাজনীতিতে সামনের দিনগুলোতে এ পরিবর্তন আসতেই হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সবপক্ষের জন্য। তাদের অবস্থানে বিএনপি উৎফুল্ল হয়ে যাবে, আর আওয়ামী লীগ ধরাশায়ী হয়ে যাবে ব্যাপারটা এমন নয়। বরং এতে এক ধরনের সমাধানের পথ খুলে যেতে পারে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ না দিলেও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হবে এমন আভাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু গত বছর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে আসছে। তাদের একাধিক প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করে সরকার ও বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে সমর্থনের কথা জানিয়ে গত ২৪ মে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। যার প্রয়োগের কথা জানানো হলো গত শুক্রবার।
এর আগে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তা ও র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভিসানীতি প্রয়োগের প্রক্রিয়া শুরুর মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অনড় অবস্থানের বিষয়টি আবার জানাল। দেশটির এ অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দেখছে দুভাবে। একটি হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখা। দ্বিতীয়টি হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করা বিএনপিকে নির্বাচনে আনা। এর বাইরে অন্য কোনো বিরূপ প্রভাব দেখছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকার এত দিন যেটা চেয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র সেটাই আশা করছে।
তবে বিএনপি ভিসানীতির জন্য সরকারকে দায়ী করেছে এবং সেটা তাদের নেতাকর্মীদের এক দফা আন্দোলনে আরও উজ্জীবিত করবে, এমন দাবি করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কারণে আগামী নির্বাচন যেনতেনভাবে হয়ে যাবে সেটি ভাবার কোনো সুযোগ নেই। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রস্তুতি সবাইকে নিতে হবে। এর বাইরে কোনো রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী, বাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তা যেই হোক শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রভাবিত করা বা একপেশে করার চিন্তা বা পদক্ষেপ গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে চাইলে, পড়তে হবে ভিসানীতির আওতায়। যুক্তরাষ্ট্রের অনড় অবস্থান এখন পর্যন্ত সেটাই ইঙ্গিত করে।’
সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করে এক দফা দিয়ে আন্দোলনে আছে বিএনপি। অন্যদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগ বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন করার জন্য এক দফা ঘোষণা করেছে। তারাও শান্তি-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকারও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। সেটা নিশ্চিত করতে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ এটাও বলে আসছে, তাদের সরকারের চাওয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া একই।
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দুভাবে দেখলেও দলটির বিভিন্ন পর্যায়ে নানা রকম কানাঘুষা রয়েছে। ভেতরে-ভেতরে ‘ভেঙে পড়লেও’ ওপরে শক্ত মনোভাব ধরে রাখার চেষ্টা করছেন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কথা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা বেশ বিরক্তি প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সরকার ও আওয়ামী লীগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নতুন কিছু নয়। দুপক্ষের অবস্থান একই বলেও দাবি করেন ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নির্বাচনে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে আমেরিকার যে অবস্থান তাতে বিএনপিরই ক্ষতি, কারণ তারা ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন হতে দেবে না।’ তিনি বলেন, সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা ও আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় সরকার। সেখানে সব দল নির্বাচনে আসুক সেই আহ্বানও জানানো হয়েছে।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত এবং সহযোগিতা করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই ব্যক্তিদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা রয়েছেন। শান্তিপূর্ণ উপায়ে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা জোরালোভাবে দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র তো বিএনপির দাবি সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের যে অবস্থান সেখানে তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে এসব বলা হয়নি। ফলে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করায় আওয়ামী লীগ বা সরকার কেন বেকায়দায় পড়বে? আমরা মনে করি, বিএনপিই তো বেকায়দায় রয়েছে। কারণ, তাদের দাবি অসাংবিধানিক। আর অসাংবিধানিক উপায় অবলম্বন করছে। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের এই অনড় অবস্থান বিএনপির বিরুদ্ধে গেছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খানের দাবি, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে শঙ্কিত বিএনপি। তারা তো বিএনপির একটা দাবির কথাও বলে নাই।’ সরকার বা আওয়ামী লীগ ভীত ও শঙ্কিত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের উচিত বিএনপির প্রতিক্রিয়া জানা।’
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘আমরা যেমন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই, আমেরিকারও একই রকম চাওয়া।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্র যে এমন কিছু করবে এটা প্রত্যাশিতই ছিল। এটা সিম্পল ব্যাপার আমাদের জন্য।’
ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় বিরোধী দল আছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যে বক্তব্য এসেছে সে সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিবৃতিতে কোন বিরোধী দলের কথা বলা হয়েছে তা স্পষ্ট করা হয়নি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে আজকে দেশে গণতন্ত্রের যে সংকট তার জন্য সরকার এককভাবে দায়ী। তা ছাড়া এর আগে বাইডেন প্রশাসন তাদের দেশে যে গণতন্ত্রের সম্মেলন করেছে তাতে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি।’
ভিসানীতি প্রয়োগের জন্য সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ বিগত দুটি বিতর্কিত সংসদ নির্বাচন করার পর আবারও আগামী নির্বাচন একতরফা করতে যে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সে কারণে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। এর দায় সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগকে নিতে হবে। আজকে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ আগের ঘোষণার ধারাবাহিকতা। প্রথমদিকে নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে, সাধারণ মানুষের ভেতর যে বড় ধাক্কা মনে হয়েছিল, ঘোষণা আসার পর সেটা মনে হয়নি। তবে কোনো একটা সমীকরণ থেকেই যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এর প্রভাব কত দূর যাবে সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনে কী বার্তা যাবে সেটা পরিষ্কার নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা তাদের বৈশি^ক চর্চারই অংশ। মূল কথা হলো, এটা সবার জন্যই চাপ।’
বিশ্বকাপের দল ঘোষণা নিয়ে চলছে নানা নাটকীয়তা। রাতটা পোহালেই বাংলাদেশ দল উড়াল দেবে ভারতের গোয়াহাটিতে। তবে এখনও ঘোষণা করা হয়নি দল। বিসিবি জানিয়েছে, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে চলমান তৃতীয় ওয়ানডের ম্যাচ শেষেই জানানো হবে বিশ্বকাপের দল।
প্রচুর আলোচনা ও জল্পনা–কল্পনার পর আজ বিশ্বকাপে নিজেদের স্কোয়াড ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবির ফেসবুক পেজে আজ দুপুর ১টা ২৮ মিনিটে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। সেখানে দেখা যায় বিসিবির লোগোসংবলিত বক্সে করে গুরুত্বপুর্ণ কিছু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভিডিও–র শেষে প্রশ্ন করা হয়েছে, বলুন তো ভেতরে কি?
বিকেল ৫টা ৪৩ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় সন্ধ্যা পৌণে ৬টায় ঘোষণা করা হবে দল। কিন্তু ৫টা ৪০ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় তৃতীয় ওয়ানডের শেষেই দল ঘোষনা করা হবে।
তার নাম শেখ মোহাম্মদ আসলাম। একসময় সুইডেন ছিলেন বলে পরিচিত হয়ে ওঠেন স্ইুডেন আসলাম নামে। তেজগাঁও এলাকার এই শীর্ষ সন্ত্রাসী একসময় ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড বা অপরাধ জগৎ কাঁপাতেন। ২৭ বছর ধরে আছেন কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে। হত্যাসহ ১৭ মামলার একটি ছাড়া বাকিগুলোতে জামিন পেয়েছেন তিনি। কিন্তু বহু দিনের পুরনো প্রতিপক্ষের হাতে প্রাণ হারানোর শঙ্কায় জামিনের জন্য আবেদন করছেন না তিনি।
মোহাম্মদপুর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলালও জামিনের আবেদন করছেন না। প্রায় ২০ বছর ধরে কারাগারে থাকা হেলালের বিরুদ্ধে আছে অন্তত এক ডজন মামলা। বেশিরভাগ মামলায় জামিন হয়ে গেছে। এই দুজনের মতোই কারা হাজতে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছেন না। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে কেউ সাক্ষ্যও দিতে আসেন না আদালতে। তারা বছরের পর বছর ধরে কারাগারে থাকলেও সমস্যা হচ্ছে না। অনেকেই অসুস্থ না হয়েও বছরের পর বছর হাসপাতালে আরামে
থাকছেন। বাইরে থাকা তাদের সহযোগীদের সঙ্গেও যোগাযোগ থাকছে। এই সহযোগীরাই তাদের হয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করছেন।
পুলিশের তালিকায় ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম আছে যাদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। অবশ্য এই তালিকায় সুইডেন আসলাম নেই। তালিকা করা হয় ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর। এদের মধ্যে ১৩ জন বিদেশে আত্মগোপন করে আছেন। কারাগারে আছেন ৬ জন, মারা গেছেন ৩ জন। একজনের কোনো হদিস নেই।
এই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আটজনকে ১ লাখ টাকা এবং ১৫ জনকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর মধ্যে পিচ্চি হান্নান র্যাবের ক্রসফায়ার, গণপিটুনিতে আলাউদ্দিন ও কামাল পাশা ওরফে পাশা কারাগারে মারা গেছেন। কালা জাহাঙ্গীর বেঁচে আছেন নাকি আত্মগোপনে, কেউ বলতে পারছেন না। পিচ্চি হেলাল, টিটন, ফ্রিডম সোহেল ও কিলার আব্বাস কারাগারে আছেন। খোরশেদ আলম ওরফে রাশু কিছুদিন আগে ছাড়া পেলেও কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আবার আটক করেছে। মশিউর রহমান কচি, সুব্রত বাইন, আমিন রসুল সাগর. ইমাম হোসেন, প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, মোল্লা মাসুদ, শামীম আহমেদ, হারিস আহমেদ, তানভিরুল ইসলাম জয়, জাব্বার মুন্না, জাফর আহমেদ, কামরুল হাসান হান্নান ওরফে ছোট হান্নান দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তাদের ধরতে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করা আছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে আসার চেষ্টা করছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তাদের ব্যবহার করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি আন্ডারওয়ার্ল্ডে একে অপরকে ঘায়েল করার চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে গাড়ি থামিয়ে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ভাগ্যক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও গুলিবিদ্ধ এক পথচারী সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে আছেন। এ ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন জড়িত বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আন্ডারওয়ার্ল্ড উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও। দেশের বাইরে থাকা সন্ত্রাসীরা নিজেদের সহযোগীদের মাধ্যমে নতুন করে আধিপত্য বিস্তারের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এমনকি কারাগারে থাকা সন্ত্রাসীরাও সহযোগীদের নানা বিষয়ে বার্তা দিচ্ছে। এর মধ্যে কেউ কেউ রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত হতে চাইছে। যে কারণে সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে পুলিশ সদর দপ্তর সব কটি ইউনিট, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার এসপিদের বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সদর দপ্তরে আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীদের বিষয়ে নতুন করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কারাগার কর্তৃপক্ষকেও হাজতি ও বন্দি সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, যেসব সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক আছে, তাদের একটি তালিকা করেছে একটি সংস্থা। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও তারা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছে না। তারা কারাগারকেই নিরাপদ মনে করছে।
কারা সূত্র জানায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম একটি মামলায় জামিন না নেওয়ায় কারাগারে আছেন। বাকি সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। ২৭ বছরের কারাজীবনে তার দুইবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। বেশিরভাগ সময় কেটে যাচ্ছে হাসপাতালে থেকেই। হুইলচেয়ারে করে চলাফেরা করেন সব সময়। মোবাইল ফোনে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ করেন সহযোগীদের সঙ্গে। তার স্ত্রী আয়েশা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।
সুইডেন আসলামের বিষয়ে তার এক আত্মীয় দেশ রূপান্তরকে বলেন, এলাকায় তার যখন একক আধিপত্য ছিল, তখন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল। তারাই এখন তার বিরুদ্ধে। সুইডেন আসলাম বের হয়ে এলে প্রতিপক্ষরাই তাকে মেরে ফেলবে, এমন শঙ্কা আছে। এসব দিক বিবেচনা করেই তিনি বের হতে চাইছেন না। কারাগারেই তিনি ভালো আছেন।
জানা গেছে, সুইডেন আসলামের বিরুদ্ধে মামলাগুলোতে কোনো সাক্ষীও পাওয়া যায় না। ১৯৮৬ সালে তিনি অপরাধ জগতে যুক্ত হন। ওই বছর পূর্ব রাজাবাজারে স্কুলের সামনে কিশোর শাকিলকে গুলি করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তারপর থেকে তার বিরুদ্ধে একের পর এক হত্যাকা-সহ নানা অপরাধের তথ্য বের হয়ে আসে। এরই মধ্যে নিজেকে রক্ষা করতে সুইডেন চলে যান। বছর পাঁচেক ওই দেশে থেকে আবার ফিরে আসেন দেশে। তারপর সুইডেন শব্দটি নামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। ১৯৯৭ সালের ২৩ মার্চ গালিব খুন হন। এ ঘটনায় আসলামসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ১৯৯৮ সালের ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২৪ সাক্ষীর মধ্যে পুলিশ চারজনকে আদালতে হাজির করতে পেরেছে। বাকিরা আর আসেননি এবং এই মামলায় তিনি জামিনও নেননি।
দীর্ঘদিন কারাগারে থাকলেও আসলাম মোবাইল ফোনে সহযোগীদের সঙ্গে কথা বলতে পারছেন। স্ত্রী আয়েশা আকতার নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। বলা চলে রাজার হালেই আছেন তিনি।
মিরপুর ও কাফরুল এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার আব্বাস ২২ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। তার বিরুদ্ধে থাকা ১১টি মামলার জামিন হয়েছে। একটি মামলার জামিন হতে বাকি আছে। তা ছাড়া কমিশনার নিউটন হত্যা মামলায় ফাঁসির আদেশ হলেও উচ্চ আদালতে খালাস পেয়েছেন তিনি। আরেকটি মামলার শুনানি চলছে উচ্চ আদালতে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিলার আব্বাসের এক সহযোগী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ভাইয়ের সঙ্গে মাঝেমধ্যে কাশিমপুর কারাগারে গিয়ে দেখা করে আসি। দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি কারাগার থেকে বের হতে চাচ্ছেন না। জামিন চাইলে তিনি জামিন পেয়ে যাবেন। কিন্তু ভাই তা করবেন না। কারণ প্রতিপক্ষ সক্রিয় আছে। তার প্রাণ শঙ্কা আছে। আমরা ইচ্ছা করলে যেকোনো সময় জামিন নিয়ে ভাইকে বের করে আনতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরেক সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালেরও প্রায় সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। শুধু একটা মামলার জামিন বাকি আছে। তিনি যখন কারাগারে, তখন বিএনপি তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেছিল। অথচ হেলাল বিএনপির রাজনীতি করেন। জেলে বসেই মোহাম্মদপুর, আদাবর ও ধানম-ি, মিরপুর এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছেন। মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড দখল ও চাঁদাবাজি চালাচ্ছেন। তার সঙ্গে মিরপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদতের ভালো যোগাযোগ। মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথা বলেন তারা। তার আরেক সহযোগী হাবিবুর রহমান তাজ ১৩ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। মামলার সাক্ষীদের হাজির করতে পারছে না রাষ্ট্রপক্ষ। ইচ্ছে করে জামিনও নিচ্ছেন না তাজ। গ্রেপ্তারের আগে দীর্ঘদিন ভারত পালিয়ে ছিলেন। ২০০৮ সালে ভারতে গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক মাস পর তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রাজধানীর কাফরুলে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি ইসমাইল হোসেনকে হত্যা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তা ছাড়া কলেজছাত্র কামরুল ইসলাম ওরফে মোমিন হত্যার সঙ্গেও জড়িত তাজ। মতিঝিল থানার সাবেক ওসি এ কে এম রফিকুল ইসলামের আশ্রয়-প্রশয়ে থাকতেন তিনি। কয়েক বছর আগে ওসি রফিক মারা যান।’
মতিঝিলে একটি গোয়েন্দা সংস্থার দুই কর্মকর্তাকে হত্যা করে আলোচনায় আসে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী ঈদুল। প্রায় ১৫ বছর ধরে কাশিমপুর কারাগারে আটক আছেন তিনি। একবার পঙ্গু হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে আটক করে ফেলে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা থাকলেও দুটি মামলা বাদে সব কটিতে জামিন পেয়েছেন। বাকি মামলাগুলোতে ইচ্ছা করে জামিন নিচ্ছেন না বলে তার এক স্বজন জানিয়েছেন।
সেভেন স্টার গ্রুপের একসময়ের সদস্য ফ্রিডম সোহেল ধানম-ি ৩২ নম্বরে গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজার আসামি। সাজা কমিয়ে কারাগারেই থাকার চেষ্টা করছেন সোহেল। তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা আছে। ৯টি মামলায় জামিন পেয়েছেন। একটি মামলায় সাজা হয়েছে। আরেকটি মামলায় জামিন নিচ্ছেন না।
তার সহযোগী পুরস্কারঘোষিত সন্ত্রাসী রাশু কিছুদিন আগে কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আটক করে। তার এক স্বজন দেশ রূপান্তরকে জানান, মাস দুয়েক আগে সর্বশেষ মামলায় জামিন হয় রাশুর। তার কোনো ইচ্ছা ছিল না কারাগার থেকে বের হওয়ার। আর এ কারণে ইচ্ছা করেই একটি সংস্থাকে কারাগার থেকে বের হওয়ার তথ্য দিয়ে আবার গ্রেপ্তার হন। কারণ তিনি বের হলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে মেরে ফেলবে এমন আশঙ্কা ছিল। আরেক সন্ত্রাসী লম্বু সেলিম একটি মামলা বাদে সব মামলায় জামিনে আছেন। ভারতের কলকাতা থেকে তাকে পুশব্যাক করা হয়েছিল। প্রায় আট বছর ধরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। বেশিরভাগ সময় হাসপাতালে থাকেন। নিরাপত্তাহীনতার কারণে জেল থেকে বের হচ্ছেন না তিনি।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, সন্ত্রাসীদের কর্মকা- রোধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নানা কৌশলে কাজ করছে। তারা সরগরম হলেও কাজ হবে না। যারা দেশের বাইরে আছে, তাদের চিহ্নিত করে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ধরার চেষ্টা চলছে। যারা দেশে আছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনতে পুলিশ-র্যাব কাজ করছে। তবে আন্ডারওয়ার্ল্ডের কেউ বিশ্ঙ্খৃলা তৈরি করতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘কোনো সন্ত্রাসী জামিন না নিলে এটা আমাদের করার কিছু নেই। তবে তাদের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয়, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।’
পুলিশ সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি, চোরাকারবারিসহ ভিন্ন ধরনের অপরাধীরা দুবাই, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আত্মগোপন করে আছেন। তাদের সহযোগীরা বাংলাদেশে অবস্থান করে অপরাধমূলক কর্মকা- চালিয়ে আসছেন। তাদের নির্দেশে হত্যাকান্ডের মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছেন তারা। মতিঝিলে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যাকান্ডের পেছনে বিদেশ কানেকশন।
২০০৩ সালে মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে ডিবি পুলিশের দুই সদস্যকে হত্যার পর পালিয়ে যাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান দুবাইয়ে আত্মগোপন করে আছেন। টিপু হত্যাকান্ডের পর তিনি আলোচনায় এসেছিলেন। দুবাইয়ে থাকলেও ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে সবচেয়ে বেশি প্রভাব তার। জিসানের সহযোগী জাফর আহমেদ মানিক ওরফে ফ্রিডম মানিক ভারতে পালিয়ে আছেন। কিন্তু দেশে তার দখলবাজি, টেন্ডারবাণিজ্য ও চাঁদাবাজিতে নিয়ন্ত্রণ এখনো আছে। মোল্লা মাসুদ ও সুব্রত বাইন ভারতে থেকে সক্রিয় আছেন। তানভীর ইসলাম জয়ও সক্রিয় আছেন। কলকাতা, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ঘুরে তার অবস্থান এখন থাইল্যান্ডে। সেখানে বসেই তিনি কলকাঠি নাড়ছেন।
লাক্সারিয়াস জীবন পাওয়ার জন্য এখন মানুষ দিনরাত শুধুই কাজ করে চলেছেন। যার মধ্যে অফিস ডেস্কে বসে কাজ করেন এমন মানুষের সংখ্যা একেবারে কম নয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চেয়ারে বসে ল্যাপটপের সামনে তাকিয়ে থাকা রীতিমতো যন্ত্রণাদায়ক।
শুধু তাই নয়, এটা স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। যারা অফিসে ডেস্কে কাজ করেন তাদের মোটা হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।
সারাদিন যারা ডেস্কে বসে কাজ করেন তাদের অন্যতম অভিযোগও এটি। তারা বলে থাকেন, চেয়ারে বসে কাজ করে মোটা হয়ে যাচ্ছি! তবে এই অজুহাতকে একেবারে সত্য বলার সুযোগ নেই। কারণ ডেস্কে বসে কাজ করেও স্লিম ও ফিট থাকা সম্ভব। এজন্য মেনে চলুন পাঁচটি টিপস।
হাঁটুনফিট ও কর্মক্ষম থাকতে নিয়মিত হাঁটুন। দিনের পর দিন দীর্ঘ সময় বসে থাকলে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। সুস্থ থাকতে প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করুন। এমনকি কাজের ফাঁকেও ১০ মিনিটের ব্রেক নিয়ে হেঁটে আসতে পারেন।
সোজা হয়ে বসুনচেয়ারে মেরুদণ্ড সোজা রেখে বসুন। মেরুদণ্ডের ডিস্কগুলোতে অনেক চাপ পড়ে, সেই সঙ্গে চাপ পড়ে মেরুদণ্ডের পাশের মাংসপেশি ও লিগামেন্টের ওপর। কম্পিউটার ব্যবহার করার সময় মনিটরটি চোখের সমান স্তরে রাখুন। মাউস ব্যবহার করার সময় শুধু আপনার কব্জি নয় পুরো হাত ব্যবহার করুন।
চাপ এড়িয়ে চলুনএটা খুব কঠিন কাজ, চাপমুক্ত থাকা। বিশেষ করে যখন চারপাশ থেকে নানা ধরনের চাপ আসতে থাকে। তবে মানসিক স্থিরতা ধরে রাখুন, নিজেকে মোটিভেট করুন। কোনও চাপই বেশি দিন থাকে না, এগুলো নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট না করে নিজের কাজে মনোযোগ বাড়ান। এক্ষেত্রে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে অনলাইনে কিছু যোগা শিখে অভ্যাস করুন।
চোখের যত্নকম্পিউটারে কাজ করার সময় স্ক্রিনে একটানা ১০-১৫ মিনিটের বেশি তাকিয়ে থাকবেন না। নিয়মিত চোখের পাতা ফেলুন। স্ক্রিনে পর্যাপ্ত আলো রাখুন, যেন চোখের ওপর বাড়তি চাপ না পড়ে।
হাড়ের যত্ন বসে থাকার ফলে হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে। ক্যালসিয়ামের ঘাটতিও হতে পারে। এজন্য নজর দিতে হবে প্রতিদিনের খাবারে স্বাভাবিক খাবারের সঙ্গে নিয়মিত ডিম, দুধ, দই ও বাদাম রাখুন।