
চুমকি চলেছে একা পথে
তোমার দুহাত ছুঁয়ে শপথ নিলাম
বন্দী পাখির মতো
আজকে না হয় ভালোবাসো আর কোনোদিন নয়
যদি বউ সাজো গো
এ আকাশকে সাক্ষী রেখে
চুরি করেছো আমার মনটা
চুপি চুপি বলো কেউ জেনে যাবে
তোমরা যারা আজ আমাদের ভাবছো মানুষ কিনা
তোমার নামে শপথ নিলাম
চঞ্চল দু নয়নে
বাপের চোখের মণি নয়
ধীরে ধীরে চল ঘোড়া
যে সাগর দেখে তৃপ্ত দুচোখ
মাগো মা ওগো মা
ছবি যেনো শুধু ছবি নয়
তিনি আসবেন। দেশ রূপান্তর অফিসে, মধ্যদুপুরে। কিন্তু আসছেন না। ফোন করা হচ্ছে, মুহুর্মুহু। এদিকে ইনহাউজ প্রস্তুতি শেষ। জম্পেশ আড্ডা হবে, ডিজিটাল স্টুডিওতে। কিন্তু তিনিই তো নেই! সবার মুখ শুকনো। কিছুক্ষণ পর ফোন বেজে উঠল। একে একে সবার। তিনি জানালেন, আসছেন। সবার মুখে প্রশান্তির ছায়া। অবশেষে হন্তদন্ত হয়ে এলেন। বললেন, ঘুমাইয়া পড়ছিলাম! তোমাদের ফোনের জ্বালায় টিকতে পারলাম না। প্রায় দৌড়াইয়া আইসা পড়ছি! হাহাহা, চলো চলো। কোথায় যাব?
এই কণ্ঠশিল্পীর বাড়তি পরিচয়ের দরকার নেই। জন্ম নিয়েছেন, ১৯৪৬ সালের ১ আগস্ট। জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায়। কিন্তু শৈশব কাটে পুরান ঢাকায়। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার বড় এই শিল্পী, ১৯৬৭ সালে কলেজ অব মিউজিক থেকে ডিগ্রি নেন। একই সঙ্গে জগন্নাথ কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস করেন। সেই বছরই বাংলাদেশ বেতার এবং টেলিভিশনে শুরু করেন গান গাওয়া। ১৯৬৯ সালে ‘আগন্তুক’ চলচিত্রের মাধ্যমে ঢাকাই চলচ্চিত্রে শুরু করেন প্লেব্যাক। বাবুল চৌধুরী পরিচালিত এই চলচ্চিত্রে গান গেয়েই নজর কাড়েন দেশের বিখ্যাত সংগীত পরিচালকদের। এ পর্যন্ত প্রায় ৪০০ ছবিতে প্লেব্যাক করেছেন। তার গাওয়া অসংখ্য জনপ্রিয় গান এখনো মানুষের মুখে মুখে।
স্টুডিওতে ঢুকলেন, খুরশীদ আলম। সঙ্গে ৬ জন আড্ডাবাজ। সহকারী সম্পাদক তাপস রায়হান, সিনিয়র সহ-সম্পাদক মোহসীনা লাইজু, বিনোদন সম্পাদক মাসিদ রণ, সহ-সম্পাদক এনাম-উজ-জামান বিপুল, অনলাইন বিভাগের সহ-সম্পাদক নাজমুস সাকিব রহমান এবং দেশ রূপান্তর ডিজিটাল বিভাগের প্রযোজক লিটু হাসান। খুরশীদ আলমকে টেবিলের মাঝখানে রেখে, চারপাশে ৬ সাংবাদিক। শুরু হলো এলোমেলো কথা বলা। সঞ্চালনা মাসিদ রণ, গ্রন্থনা তাপস রায়হান
খুরশীদ আলম বললেন আগে একটু জল খাইয়া লই। গলাটা ভিজলে, কথা বলতে সুবিধা হবে। তিনি পানি চাইলেন। দৌড়ে গেলেন অফিস সহকারী। কিন্তু পানি আসে না। খুরশীদ আলম বললেন কই, আমার জল কই? এমন সময় এলেন, দেশ রূপান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা মামুন। কুশল বিনিময় শেষে বললেন আড্ডা শেষ হলে খুরশীদ আলমকে তার রুমে নিয়ে যেতে। এই বলে বিদায় নিলেন। কাউকে কোনো প্রশ্নের সুযোগ না দিয়েই, খুরশীদ আলম শুরু করলেন কথা
সুরকার ও সংগীত পরিচালক প্রণব ঘোষের কাছে আমি অসম্ভব কৃতজ্ঞ। তিনি বিনা ভিসায় ঐ পাড়ে নিয়া গেছিলো। গেলাম হেমন্ত বাবুর বাসায়। তিনি ১৩টা গান গাইলেন। আমি যখন তাকে কদমবুসি করতে গেছি, তখন বললাম এতোগুলি গান কীভাবে গাইলেন? বললেন একজন শিল্পী যদি ২০টি গান মুখস্থ না গাইতে পারে, সে কীভাবে দাবি করে, আমি শিল্পী? আসলে, অনেকের কাছেই শিখছি।
তাপস রায়হান : এটা কত সালে?
খুরশীদ আলম : এটা হইলো, ৭৯ সালের কথা। তখন কিন্তু প্রণব ঘোষের বৃহস্পতি তুঙ্গে। তার রমরমা অবস্থা। আমাদের উদ্দেশে বললেন, এইবার বলেন। প্রশ্ন করেন, আমি বলবো। কোয়েশ্চেন অ্যান্ড অ্যান্সার। হাহাহা। তিনি টেবিলে আঙুল নাচাচ্ছেন। মনে হলো, গান গাইবেন। এমন সময় দেওয়া হলো হারমোনিয়াম। নাড়াচাড়া করলেন। দেখলেন, ওটা বাজে না। কোনো স্বর নেই। শুধু ফুসফাস শব্দ। হেসে বললেন এইডা কি শো!
লিটু হাসান : না-না। গত পরশু রাতেও তো বাজলো! বুঝতেছি না, কী হইলো?
খুরশীদ আলম : কই, অহন তো বাজে না! লিটু হাসানের উদ্দেশে বললেন এই ব্যাটা, সাউন্ড কই? এরপর লক্ষ করলেন, হারমোনিয়াম লক। বললেন ও, আইচ্ছা? বুঝতে পারছি। এরপর বাজাতে থাকলেন। বললেন না, ভালো হইছে। হারমোনিয়াম যে আছে, এইডাই অনেক ভালো।
(টেবিলের কাচে হাত রেখে, আঙুল নাচাচ্ছেন। টুকুর টুকুর টুক ছন্দে। বললেন, পরে গান হবে। এখন কথা বলি।)
লিটু হাসান বললেন একটা গান শুনি? আজকে না হয় ভালোবাসো/ আর কোনোদিন নয়- এই গানটা গাইবেন?
খুরশীদ আলম হাসতে হাসতে বললেন ঐডা তো লাফাঙ্গা গান। তিনি আবার পানি চাইলেন।
মোহসীনা লাইজু বললেন তাহলে পানি খেয়েই নেন? এরপর আড্ডা শুরু হোক?
খুরশীদ আলম আঙুল নাচিয়ে বলছেন কই, ওয়াটার থেরাপি নাই তো! হাহাহাহা। এমন সময় পানি এলো। অফিস সহকারীকে বললেন কইত্থিকা জল আনছো? এইটা কি সাঁতারপুল থিকা আনছো, বাবা? হাহাহা। ঢক ঢক করে পানি খেলেন।
মাসিদ রণ অফিস সহকারীর উদ্দেশে বললেন আপনারে তো অনেকক্ষণ আগে বলা হয়েছে! চা, বিস্কিট আনেন?
খুরশীদ আলম : (তিনি হারমোনিয়ামে প্যাঁ পুঁ করছেন, আর কথা বলছেন)। ঘটনা হইছে কী আমি আর রথীন্দ্রনাথ রায় গেছি বেনাপোল বর্ডারের নো ম্যানস ল্যান্ডে। সেই দিন ছিলো ২১ ফেব্রুয়ারি। সেইখানে...! (তিনি থামলেন। বললেন না, থাক। কমু না। হারমোনিয়ামের ওপর হাত রেখে কথা বলছেন আর হাত নাচাচ্ছেন।)
বললেন আমি থাকতাম, পুরান ঢাকার কাজী আলাউদ্দিন রোডে। তখন এক হোল্ডিং নম্বরে ৭-৮টা বাড়ি থাকত। পাশেই ছিল, হাজি সাহেবের বিরিয়ানির দোকান। তখন আমরাই, ছোটবেলায় তার দোকানের সামনে মুরগির কত ছবি আঁকছি। দাম লিখা দিছি দ। এর মানে, ফুল প্লেট বারো আনা। আবার দুইটা টান (।।)-এর মানে হইলো হাফ প্লেট, আট আনা। এখন খাইতাছি ৩০০ টাকা, নো টেস্ট। ওখানেই বেড়ে ওঠা। ঐখান থিকাই আমি নবাবপুর হাইস্কুলে ভর্তি হইলাম। পরে জানলাম, এই স্কুল থেকে খারাপ-ভালো সব ধরনের ছাত্র বের হইছে।
বললেন তখন হইতো কী, ঐ এলাকার স্কুলগুলোতে একটা সিস্টেম ছিল। সেখানে নবাবপুর সরকারি হাইস্কুল, সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল, কামরুনন্নেছা গার্লস হাইস্কুল, নারী শিক্ষা মন্দির এ ধরনের ভালো ভালো স্কুল ছিল।
স্কুলগুলার মধ্যে একটা কালচারাল প্রতিযোগিতা হইতো। যে বিষয়ে যে ছাত্র ভালো, তাকে পিক করা হইতো। সেটা আবৃত্তি, নজরুল গীতি, পল্লীগীতি বা ভাওয়াইয়া যে আসলে যে বিষয় ভালো পারে, তাকে বাছাই করা হতো। পাশে ছিল, এডুকেশন ব্রডকাস্টিং করপোরেশন। সেখানেই প্রথম আমি গান শিখি রবীন্দ্রসংগীত। ৫ জনের কাছে রবীন্দ্রসংগীত শিখতাম। এদের মধ্যে, ব্রিগেডিয়ার শাহজাহান হাফিজ আর সানজিদা আপা জীবিত আছেন। এরপর ১৯৬৬ সালে খন্দকার ফারুক ভাইয়ের কাছে, ৭টা আধুনিক গান তুলে নিলাম। এরপর অডিশন দিলাম রেডিওতে। পাশও করলাম। অডিশনে ছিলেন আহাদ ভাই, সমর দাস আর ফেরদৌসী আপা। তখন সমর দাস বললেন গলাটা ভালো, কিন্তু তুই তো একজনরে কপি করস! আমি বললাম সবাই তো করে। তিনি হাসলেন। বললেন আমার বাসায় আয়। পরে গেলাম। তিনি শিখালেন, কীভাবে নিজেরে আলাদাভাবে তৈরি করা যায়। ৬ মাস পরে, তিনি বললেন এইবার যা। যার সঙ্গেই গাইবি, দেখবি তোর কণ্ঠ আলাদা। আমার জীবনে এই হইলো সমর দাসের কীর্তি।
৬৪ সালে এসএসসি পাস করার পর, আমি ইন্টারমিডিয়েট পড়তে চলে গেলাম কলেজ অব মিউজিকে। এরপর ছায়ানটে গেলাম। সেইখানে উচ্চাঙ্গ সংগীত শিখার সময়, আজাদ রহমানের সঙ্গে আমার চাচার দেখা হয়। চাচা ছিলেন ডা. আবু হেনা সাঈদুর রহমান। ডাক নাম- মাস্তানা। এভাবেই শুরু...।
তাপস রায়হান : আপনি কাকে কপি করেন?
খুরশীদ আলম : সেইটা বলা যাইবো না। হাহাহা...
(এমন সময় এলো, অফিস সহকারী। খুরশীদ আলম বললেন দুধ চা নাই? চিনি দিছেন তো? মোহসিনা লাইজু বললেন না না, এটা কফি। বাহ্, দেশটা কিন্তু খাইয়াই মরলো। দেন, আমিও খাই! তিনি বিস্কিট খাচ্ছেন আর কথা বলছেন। রণ বললেন আবার কফি নিয়ে আসেন, দুধ দিয়ে।)
বললেন আমি তখন ‘সি’ গ্রেডের শিল্পী। কমার্শিয়ালে গান করতে পারি না। কিন্তু আজাদ রহমান সব ব্যবস্থা করলেন। রেডিওর তৎকালীন আঞ্চলিক পরিচালক ছিলেন সৈয়দ জিল্লুর রহমান সাহেব। তার ছেলে হচ্ছে মোস্তফা কামাল সৈয়দ। তিনি বিটিভির জিএম ছিলেন। তখন আজাদ রহমানের সহযোগিতায় প্রথম গান গাইলাম রেডিওতে। ১৯৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্তান রেডিওতে প্রচারিত আমার প্রথম গান ছিল, সিরাজুল ইসলামের লেখা ও আজাদ রহমানের সুরে তোমার দুহাত ছুঁয়ে শপথ নিলাম/ থাকবো তোমারই আমি কথা দিলাম। এই গানটি পুরো পাকিস্তানে, ডিস্ক বিক্রিতে সপ্তম স্ট্যান্ড করে। এরপর আজাদ রহমান ‘আগন্তুক’ ছবির জন্য আমাকে গান করতে বললেন। ‘বন্দী পাখির মতো’ গানটি করলাম, আজাদ রহমানের সুরে। তখন কিন্তু আমার খাওয়া-দাওয়া, সবকিছুই তার বাসায়।
তাপস রায়হান : ‘তোমার দুহাত ছুঁয়ে শপথ নিলাম’ গানের সুর মনে আছে?
খুরশীদ আলম : থাকবো না ক্যান? (তিনি গান গাইতে থাকলেন। চোখ বন্ধ করে, সবাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনছে।)
এনাম-উজ-জামান বিপুল : আপনি যখন রেডিওতে এই গান গাইলেন, তখন সম্মানী পেয়েছিলেন?
খুরশীদ আলম : হ, পাইছিলাম। খুবই নগণ্য, জঘন্য। দুইটা গানে ২০ টাকা। আমি তো ছিলাম, ‘সি’ গ্রেডের শিল্পী। আর ‘এ’ গ্রেডের শিল্পী, ফেরদৌসি রহমানরা পেতেন প্রতি গানে মনে হয়, ১৭৫ টাকা।
তাপস রায়হান : তখন চালের কেজি কত ছিল?
খুরশীদ আলম : ঠিক মনে নাই। সম্ভবত আট আনা। তখন আমি ইন্টারমিডিয়েট পড়ি। এটা ৬৯ সালের কথা।
নাজমুস সাকিব রহমান : এই টাকা দিয়ে কী করেছিলেন?
খুরশীদ আলম : হাহাহা। মনে নাই তো! আমি একটু অন্য কথা বলি। আমারে যেমন দেখতাছেন, আমি কিন্তু এইরকম না। স্বভাবে কিন্তু ত্যাড়া। জীবনে অনেক অপ্রাপ্তি আছে। অনেক ক্ষোভ আছে। মানুষের সাধারণ চাহিদা পূরণ না হলে, এইরকম হয়। আমারও হইছে। যে স্কুলে পড়তাম, সেখান থেকে আর্মি চিফ, নেভাল চিফ আছে। আমারও শখ ছিল বড় কিছু হওয়ার। বন্ধুরা অনেক ওপরের পোস্টে গেছে। কিন্তু আমি পারি নাই। হইতে পারি নাই বইলা, ঐ মেজাজটা রইয়া গেছে। এইটাও বিশ্বাস করি, আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই। এনিওয়ে, এসব বইলা লাভ নাই।
মাসিদ রণ : আপনি তো গান গাওয়ার পাশাপাশি চাকরিও করতেন?
খুরশীদ আলম : আসলে একটা সময় আসলো, যখন দেখলাম গান গাইয়া সংসার চালানো কঠিন। আমার তো লেট ম্যারেজ। ৮৬ সালে বিয়া করছি। আমার ২ মেয়ে। চাকরি তো করতেই হবে।
প্রসঙ্গ পাল্টে বললেন, ফিল্মে আমার সেকেন্ড গান হলো ‘পিচ ঢালা পথ’ ছবির। এই ছবির সংগীত পরিচালক ছিলেন রবীন ঘোষ। সেই ছবির গানটি খালি গলাতেই গাইলেন। বললেন রেকর্ডিং হইছিলো এফডিসিতে। গানটি হচ্ছে এই আমি পাগল/ পাগল পাগল দুনিয়ায়/ মানুষ চেনা দায়। এরপর তো একের পর এক সংগীত পরিচালক আমাকে ডাকতে থাকলেন। সমর দাস, সুবল দাস, সত্য সাহা, খন্দকার নুরুল আলমসহ অনেকেই। আর আজাদ রহমান তো আছেই।
এরপর সত্য সাহার ছবিতে গান করলাম। ‘মানুষের মন’ ছবিতে। গাজী মাযহারুল আনোয়ারের লেখা গানটি হলো ছবি যেনো শুধু ছবি নয়/ আজ কেনো তাই মনে হয়/ এ যেনো ওগো দুটি প্রাণের/ কথা বিনিময়। এরপর আর পেছন তাকাতে হয় নাই।
মোহসিনা লাইজু : এরপর তো প্লেব্যাকে আপনার ব্যস্ততা বেড়ে গেল। কতগুলো গান গাইলেন?
খুরশীদ আলম : আমি ৪৭৫টি ছবিতে প্লেব্যাক করছি, ২০১৫ সাল পর্যন্ত।
তাপস রায়হান : গানের সংখ্যা কেমন হবে?
খুরশীদ আলম : হাহাহা, জানি না। ঐ হিসাব নাই।
তাপস রায়হান : কয়েক হাজার তো হবে, নাকি?
খুরশীদ আলম : তা হবে। সাবিনা ১০০০০ গান গাইছে। আমি অত না গাইলেও, কমতো গাই নাই!
মোহসিনা লাইজু : সাবিনা ইয়াসমিনের সঙ্গেই তো আপনার প্লেব্যাক বেশি, নাকি?
খুরশীদ আলম : হ্যাঁ। সাবিনা হচ্ছে, সুপার টেলেন্টেড শিল্পী। একবার হইলো কী বিদেশে আমরা গেছি। সবাই সবার গান নিয়ে গেছে। মেকআপ রুমে চায়না একটা মেয়ে, গুনগুন করে গান গাইছিলো। ওদের দেশের গান। সাবিনা মেকআপ নিচ্ছিলো। বললো, এটা কী গান? মেয়েটি বললো, ফোক গান এটা আমাদের দেশের জনপ্রিয় একটি গান। সাবিনা বললো এইটা লিখে দাও। সেখানে থাকা ইন্টারপ্রেটার সব বললো। ওটা তখনই বাংলায় লিখে, সাবিনা স্টেজে পারফর্ম করলো! এইটা সবাই পারে? সাবিনা ইয়াসমিন মারাত্মক মেধাবী শিল্পী।
মাসিদ রণ : সে সময় প্লেব্যাকে সুপারস্টার কণ্ঠশিল্পী কে কে ছিলেন?
খুরশীদ আলম : সে সময় সুপারডুপার শিল্পী ছিলেন মাহমুদুন্নবী, খন্দকার ফারুক, বশীর আহমেদ, আব্দুল জব্বার, সৈয়দ আব্দুল হাদী, আনোয়ার উদ্দীন খান। এরা সবাই আমার সিনিয়র। সমসাময়িক ছিলেন প্রবাল চৌধুরী। এরপর আসলো সুবীর নন্দী, এন্ড্রু কিশোর। সে সময় মেধা ও যোগ্যতার একটা প্রতিযোগিতা ছিলো। কারও সঙ্গে কারও দ্বন্দ্ব ছিলো না।
তাপস রায়হান : আপনাদের সময় সুরকার, গীতিকার এবং কণ্ঠশিল্পীর মধ্যে একটা শক্ত বন্ধন ছিল, এখন তা নেই। হঠাৎ করে কী এমন হলো?
খুরশীদ আলম : এইটা হঠাৎ করে হয় নাই। আসলে যার যে জায়গায় থাকা উচিত, সে সেই জায়গায় নাই। যে খেলার ছেলে, সে আসতেছে গানে। আর যে সত্যিকারের শিল্পী, সে নেই। অভিমান হোক, ক্ষোভ হোক বা যে কারণেই হোক অনেকেই বিদেশ চলে গেছে। আমার এখন বয়স ৭৭। আমি বিশ্বাস করি, মেধাবীকেই প্রথম জায়গা দেওয়া উচিত। আর কিছু বললাম না, বুইঝা লন।
মাসিদ রণ : বর্তমানে গান যেভাবে রেকর্ডিং হচ্ছে, এর সঙ্গে আপনাদের সময়ের তো কোনো মিল নেই?
খুরশীদ আলম : এখন তো প্রিন্সিপাল, ভাইস প্রিন্সিপালের ঠিক নাই। কোনো শিক্ষকতা নাই। আমরা যখন গান করতাম তখন যে কতোবার উচ্চারণ ঠিক করতে হইছে, তার হিসাব নাই।
মোহসিনা লাইজু : আপনার কাছে, বিটিভির গল্পটা শুনতে চাই?
খুরশীদ আলম : এর আগে আপনাকে যেতে হবে। ডিআইটি বিল্ডিংয়ে, সেই পাকিস্তান আমলে টেলিভিশনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জামিলুর রেজা চৌধুরী, কলিম শরাফী, কাইয়ুম চৌধুরী, মোস্তফা মনোয়ার, ড. মো. ইউনূস, ড. মিজানুর রহমান শেলীর মতোন মানুষ। মেধা যখন একটা শিল্পে থাকে, তার বিকাশ তো হবেই। তখন তারা শুধু দিতেন, আর এখন নেওয়া হয়। পুরোপুরি রিভার্স। তখন কিন্তু আলাদা আলাদা রুম ছিলো না। একটা অনুষ্ঠান প্রচারিত হওয়ার পর, সবাই মতামত দিতেন। পরামর্শ দিতেন। রামপুরায় আসার পর, যেই শুরু হলো আলাদা রুম তখন আর মেধার কোনো মূল্য থাকলো না। শিল্পীদের মূল সমস্যা হচ্ছে তাদের কোনো সংগঠন নাই।
মোহসিনা লাইজু : বর্তমানে সিনেমা নিয়ে কিছু বলবেন?
খুরশীদ আলম : এখন সবকিছু আমি একা করতে চাই।
নাজমুস সাকিব রহমান : আপনি তো অনেকের লিপে গান গেয়েছেন। কিন্তু রাজ্জাক কেন আলাদা হয়ে যায়?
খুরশীদ আলম : সেটা আপনারাই বলেন? হাহাহা
লিটু হাসান : আপনি যখন গাইলেন ‘চুমকি চলেছে একা পথে’ তখন তো আপনি সুপারহিট। রাস্তায় কেউ কিছু বলত?
খুরশীদ আলম : অনেক সমস্যা হইতো। তবে এনজয় করতাম।
তাপস রায়হান : আপনার অপ্রাপ্তি নিয়ে কিছু বলবেন? নাকি সন্তুষ্ট?
খুরশীদ আলম : সন্তুষ্টি তো নিজের কাছে। জীবনে অনেক অপ্রাপ্তি আছে। তবু আমি সন্তুষ্ট। শুধু একটা চিন্তা হয়, আমার বাড়িঘর নাই। আর কিছু না। তবু ভালো আছি, অনেক ভালো।
আড্ডা শেষ হতে চলল। এরপর তিনি বললেন একটা জিনিস মনে রাখা দরকার, লক্ষ্মী আর সরস্বতী একসঙ্গে থাকে না। আমার শুধু আল্লাহর কাছে চাওয়া, যতদিন বেঁচে আছি তাল, লয়, সুরে যেন গান করতে পারি। মানুষের ভালোবাসা হারাতে চাই না।
এরপর স্টুডিও থেকে বের হলেন। বললেন তোমাদের সম্পাদকের রুমে চলো। সেখানে আরেক পশলা আড্ডা হলো। এরপর অনেকের সঙ্গে সেলফি। তখন সন্ধ্যা ৬টা। যাওয়ার বেলায় বললেন আবার দেখা হবে। যদি বেঁচে থাকি। যাই...!
উশকোখুশকো চুলে, সাধারণ পোশাকে একসময়ের সাড়া জাগানো কণ্ঠশিল্পী খুরশীদ আলম মুচকি হেসে বিদায় নিলেন। একটু পর, হাঁটতে হাঁটতে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালেন। আবার নীরবে হাসলেন। বিদায় জানালেন হাত নাড়িয়ে। ততক্ষণে লিফট এসে গেছে। সব আড্ডাবাজ তার সঙ্গে। ঘড়িতে শব্দ হলো ঢং ঢং ঢং । লক্ষ করলাম, রাত তখন ঠিক ৮টা।
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে জেলেখা বেগম নামে এক বৃদ্ধাকে মৃত দেখিয়ে তার বয়স্ক ভাতার কার্ড বাতিল করা হয়েছে। বিগত ৫ মাস যাবৎ তিনি বয়স্ক ভাতা বঞ্চিত রয়েছেন বলে জানা গেছে। অপরদিকে তার নাম পরিবর্তন করে আমিনা নামে অন্যজনকে বয়স্ক ভাতার কার্ড বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মেম্বার বাদশার বিরুদ্ধে।
রানীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের সাতঘরিয়া গ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলেখা বেগম নন্দুয়ার ইউনিয়নের সাতঘরিয়া গ্রামের আ. রহিমের স্ত্রী। পূর্বের চেয়ারম্যান ওই বৃদ্ধার নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেন।
ভুক্তভোগী বলেন, আমি ভাতার কার্ড পাওয়ার পর থেকে প্রতি তিন মাস অন্তর ১৫০০ টাকা করে পেয়েছিলাম। কিন্তু গত তারিখে আমার টাকার কোনো মেসেজ না আসায় আমি উপজেলা সমাজসেবা অফিসে গিয়ে জানতে পারি আমাকে মৃত দেখিয়ে আমিনা নামে ভাতার কার্ড করে দিয়েছেন মেম্বার বাদশাহ।
ইউনিয়ন পরিষদে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মৃত্যুর নিবন্ধন বইয়ের ২০২১ সালের রেজিস্ট্রারে বৃদ্ধার মৃত্যু নিবন্ধিত নেই। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এমন একটি সনদ দেওয়ায় তার ভাতাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তিনি এ বিষয়ে আরও বলেন, আমি জীবিত থাকার পরও মেম্বার বাদশাহ আমাকে মৃত দেখিয়ে আরেকজনের নামে কিভাবে টাকা খেয়ে ভাতার টাকা পরিবর্তন করে দেয়! আমি জীবিত থাকার পরও মেম্বার আমাকে মৃত দেখাল। আমি গরিব মানুষ। আমার কোনো ছেলেমেয়ে নাই। এই টাকা দিয়ে ওষুধ খেয়ে বেঁচে আছি। আমি এর বিচার চাই।
মেম্বার বাদশাহ বলেন, প্রথমবারের মতো এমন ভুল করেছি। সামনের দিকে সর্তকতার সাথে কাজ করব।
নন্দুয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বারী বলেন, জীবিত মানুষ মৃত দেখিয়ে ভাতার কার্ড পরিবর্তনের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে মেম্বার যদি করে থাকেন তাহলে খুবই খারাপ করেছেন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়নপত্রের ভিত্তিতে জানতে পারি, জেলেখা বেগম ৭ ডিসেম্বর ২০২১ এ মৃত্যু বরণ করেন। তাই ভাতাটি বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু ওয়েবসাইটে মৃত্যু সনদ যাচাই ছাড়া সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর কাউকে মৃত দেখাতে পারবে না- সাংবাদিকের এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের এভাবেই হয়। আমরা এভাবেই করে থাকি, প্রত্যায়নপত্র দেখে প্রতিস্থাপন করে থাকি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সমাজসেবা অফিসে প্রেরিত প্রত্যায়নটির কোনো তথ্য ইউনিয়ন পরিষদের ফাইলে সংরক্ষণ করা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির বলেন, এটি সংশোধনের কার্যক্রম চলমান। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, এটি একটি গুরুতর অভিযোগ। আমরা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেব।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত করা, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠাসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে আজ রোববার ঢাকা ছাড়া সব মহানগরে পদযাত্রা কর্মসূচি করবে বিএনপি। আজকের পদযাত্রা কর্মসূচির মাধ্যমে সপ্তাহব্যাপী সরকারবিরোধী কর্মসূচির প্রথম ধাপ শেষ হচ্ছে দলটির।
এর আগে, গত ২৩ মে দেশের ১১টি মহানগরে ‘পদযাত্রা’ করে বিএনপি। ঢাকার বাইরে মহানগরগুলোতে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের ১০ দফাসহ দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, হয়রানি, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ ও অন্যান্য জনগুরুত্বপূর্ণ দাবিতে এই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে দলটি।
সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কারসহ ১৪ দফা দাবিতে আজ রোববার (২৮ মে) পদযাত্রা করবে ৬ দলীয় জোট (দল ও সংগঠন) গণতন্ত্র মঞ্চ। এদিন বেলা ১১টায় রাজধানীর মালিবাগ থেকে এই পদযাত্রা শুরু হবে, যা শেষ হবে বাড্ডায়।
গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রোববার ১১টায় রাজধানীর মালিবাগ রেলগেট থেকে বাড্ডা পর্যন্ত গণতন্ত্র মঞ্চের ঢাকা উত্তরের পদযাত্রা শুরু হবে। অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কারসহ ১৪ দফা দাবিতে এ পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। মালিবাগ রেলগেটে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে পদযাত্রা শেষ হবে।
পদযাত্রায় অংশ নেবেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারীসহ গণতন্ত্র মঞ্চের কেন্দ্রীয় নেতারা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ব শান্তির পক্ষে সোচ্চার ছিলেন এবং মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।
বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা বলেন।
ড. মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উৎসব আমাদের বিদেশস্থ সকল মিশনে উদযাপন করছি। জুলিও কুরি পদক ছিল জাতির পিতার কর্মের স্বীকৃতি এবং বাংলাদেশের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মান।
তিনি বলেন, বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে কারাবরণ করেন বঙ্গবন্ধু। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বৈষম্য, সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালির ওপর নির্যাতন ও নিপীড়ন বঙ্গবন্ধু মেনে নিতে পারেননি। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বাংলার নিপীড়িত, শোষিত, বঞ্চিত মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে স্বাধীনতার ডাক দেন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলার মানুষ দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর “সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো প্রতি বৈরীতা নয়”- এই বৈদেশিক নীতি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আজ আমাদের মধ্যে নেই, কিন্তু তার শান্তির বার্তা নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতিসংঘে এক নম্বর শান্তিরক্ষী দেশের মর্যাদা পেয়েছে। দেশে দেশে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ চালু করেছে।
‘বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনে আমাদের অঙ্গীকার হবে বিশ্বে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যে কাজ করে যাওয়া। তাহলেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন অর্জিত হবে’।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বিশ্ব শান্তি পরিষদ ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদকে ভূষিত করে।
অপারেশন ছাড়াই সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায় আব্দুল মোতালেব হোসেন (৩৫) নামের এক মানসিক রোগীর পেট থেকে ১৫টি কলম বের করেছেন চিকিৎসক।
এ কাজ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সিরাজগঞ্জের শহীদ এম.মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুই চিকিৎসক। তাদের এই সাফল্যে রীতিমত হৈচৈ পড়ে গেছে নেট দুনিয়ায়।
এ বিষয়ে আব্দুল মোতালেবের মা লাইলী খাতুন বলেন, তার ছেলে মোতালেব খুব ভাল ছাত্র ছিল। ২টি লেটার মার্ক নিয়ে এসএসসি পাস করে কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। এরপর খারাপ সঙ্গদোষে সে আস্তে আস্তে মাদকাসক্ত হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। এরপর থেকে পথে ঘাটে ঘুরে বেড়ানোর সময় কুড়িয়ে পাওয়া কলমগুলি খাদ্য মনে করে খেয়ে ফেলে। বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। গত এক বছর ধরে তার শরীরে জ্বর ও পেটে ব্যথা শুরু হয়। অনেক চিকিৎসার পরও তা ভালো হচ্ছিল না। অবশেষে গত ১৬ মে তাকে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এনে ভর্তি করি। এখানে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তার অসুখের কারণ ধরা পড়ে। পরে চিকিৎসকরা তার পেটের ভিতর থেকে বিনা অপারেশনে কলমগুলো বের করে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. আমিনুল ইসলাম খান বলেন, মোতালেব হোসেন প্রথমে পেটে ব্যথা নিয়ে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়। মেডিসিন ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা এক্সরে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম করেও পেটে কি সমস্যা সেটা শনাক্ত করতে পারছিলেন না। ফলে রোগীটিকে আমার কাছে রেফার্ড করেন। এন্ডোস্কপির মাধ্যমে পরীক্ষা করে তার পেটের ভেতর ১৫টি কলম দেখে প্রথমে চমকে যাই। এটা কীভাবে সম্ভব। পরে এন্ডোস্কপির মাধ্যমেই অপারেশন ছাড়াই আমরা কলমগুলো বের করার সিদ্ধান্ত নেই। তিনি আরও বলেন, কাজটি আমাদের জন্য দারুণ চ্যালেঞ্জিং ছিল। কলমগুলো একে একে পাকস্থলীতে সেট হয়ে গিয়েছিল। কলমগুলো বের করতে আমাদের প্রথমে মাথায় চিন্তা ছিল যেন, কলমগুলোর কারণে কোনোভাবেই শ্বাসনালিতে গিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ না হয়ে যায়। এছাড়াও রক্তক্ষরণের একটা চিন্তাও মাথায় ছিল। অতঃপর প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আমরা কলমগুলো বের করে নিয়ে আসতে সক্ষম হই।
শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, এন্ডোস্কপি করা ব্যক্তি মানসিক অসুস্থ হওয়ায় তার কলম খাওয়ার অভ্যাস ছিল। এভাবে খেতে খেতে সে অনেক কলম খেয়ে ফেলে। কলমগুলো তার পেটের মধ্যে জমা হয়েছিল। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে তার পেটের ভিতর ১৫টি কলম থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হই। এবং অপারেশন ছাড়াই এন্ডোস্কপির মাধ্যমে তার পেটের ভেতর থেকে একে একে ১৫টি আস্ত কলম বের করে আনি। বর্তমানে রোগীটি সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকদের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং সুস্থ আছেন।
তিনি আরও বলেন, এন্ডোস্কপির মাধ্যমে মানুষের পেট থেকে কলম বের করার মতো ঘটনা বাংলাদেশে এটাই প্রথম। তাও আবার একটি-দু‘টি নয় ১৫টি কলম। এর আগে ঢাকা মেডিকেলে এক ব্যক্তির পেট থেকে এন্ডোসকপির মাধ্যমে একটি মোবাইল বের করেছেন চিকিৎসকরা।
এ বিষয়ে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে এমন সাফল্য এটাই প্রথম। আমরা অত্যাধুনিক ভিডিও এন্ডোস্কপি মেশিনের মাধ্যমে এবং আমাদের দক্ষ ডাক্তার দ্বারা অপারেশন ছাড়াই শুধু এন্ডোস্কপির মাধ্যমে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষের পেট থেকে ১৫টি কলম বের করে আনতে সক্ষম হয়েছি। শুধু এটাই নয়, আমরা বিনা অপারেশনে পেটের পাথর, কিডনিতে পাথর থেকে শুরু করে অনেক কিছুই অপারেশন ছাড়াই সেগুলো অপসারণের কাজ করে যাচ্ছি।
বিরতি কাটিয়ে আবারও আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরছে আর্জেন্টিনা। গত মার্চে ঘরের মাঠে সবশেষ আকাশী-নীলদের দেখা গিয়েছিল তিন মাস পর আগামী জুনে তারা আসছে এশিয়া সফরে। সফরকালে ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচও খেলবেন লিওনেল মেসিরা।
আগামী ১৫ জুন বেইজিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামবে আর্জেন্টিনা। চারদিন পর ১৯ জুন জাকার্তায় ইন্দোনেশিয়ার মুখোমুখি হবেন তারা। সেই ম্যাচ দুটিকে সামনে রেখে আজ দল ঘোষণা করেছেন দেশটির কোচ লিওনেল স্কালোনি। লিওনেল মেসিকে অধিনায়ক করে ২৭ সদস্যের দল ঘোষণা করা হয়েছে।
বিশ্বকাপজয়ী খেলোয়াড়দের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন কিছু নাম। এই দলে এই দলে চমক হিসেবে রয়েছে আলেজান্দ্রো গার্নাচো। যিনি বিশ্বকাপের পর আর্জেন্টিনার প্রথম প্রীতি ম্যাচের দলে ছিলেন। তবে চোটের কারণে অভিষেকের সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায়।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে আলো ছড়িয়েছেন গার্নাচো। গত বছরের জুলাইয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মূল দলে জায়গা হয় তার। এখন পর্যন্ত ক্লাবটির হয়ে ৩৫ ম্যাচ খেলেছেন এই লেফট উইঙ্গার। এখন পর্যন্ত নিজে করেছেন ছয়টি গোল, করিয়েছেন আরও ছয়টি। এমন পারফরম্যান্স নজর এড়ায়নি স্কালোনির। তাই জাতীয় দলে জায়গা পেতে বেগ পেতে হয়নি।
দলের তৃতীয় গোলকিপার হিসেবে জায়গা পেয়েছেন ওয়াল্টার বেতিনেজ। এছাড়া বেশ কয়েক বছর পর দলে ফিরেছেন লিওনার্দো বলের্দি। ফরাসি ক্লাব মার্সেইয়ের হয়ে চলতি মৌসুমে তিনি দুর্দান্ত খেলছেন। তবে স্কোয়াডের মাঝ মাঠের ফুটবলারদের নিয়ে কোনো চমক নেই।
তবে এই স্কোয়াডে নেই লাউতারো মার্তিনেজের নাম। গোড়ালির চোটের কারণে এই দুই প্রীতি ম্যাচে তাকে পাচ্ছে না আর্জেন্টিনা। তবে তার জায়গায় মাঠ মাতাতে দেখা যাবে জিওভানি সিমিওনেকে।
আর্জেন্টিনার ২৭ সদস্যের দল
গোলরক্ষক:
এমিলিয়ানো মার্টিনেজ (অ্যাস্টন ভিলা), জেরনিমো রুলি (আয়াক্স), ওয়াল্টার বেনিটেজ (পিএসভি)।
ডিফেন্ডার:
নাহুয়েল মোলিনা (অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ), গঞ্জালো মন্তিয়েল (সেভিয়া), জার্মান পেজেল্লা (রিয়েল বেটিস), ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো (টটেনহ্যাম হটস্পার), লিওনার্দো বলের্দি (অলিম্পিক মার্সেই), নিকোলাস ওতামেন্ডি (বেনফিকা), ফ্যাকুন্ডো মদিনা (আরসি লেন্স), নিকোলাস তাগলিয়াফিকো (লিয়ন), মার্কোস অ্যাকুনা (সেভিলা)।
মিডফিল্ডার:
লিয়ান্দ্রো পেরেদেস (জুভেন্তাস), এনজো ফার্নান্দেজ (চেলসি), গুইডো রদ্রিগেজ (রিয়েল বেটিস), রদ্রিগো ডি পল (অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ), এজেকিয়েল পালাসিওস (বেয়ার লেভারকুসেন), অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার (ব্রাইটন), থিয়াগো আলমাদা (আটলান্টা ইউনাইটেড), জিওভানি লো সেলসো (ভিলারিয়াল)।
ফরোয়ার্ড:
লুকাস ওকাম্পোস (সেভিয়া), অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া (জুভেন্তাস), লিওনেল মেসি (পিএসজি), জুলিয়ান আলভারেজ (ম্যানচেস্টার সিটি), জিওভানি সিমিওনে (নাপোলি), আলেজান্দ্রো গার্নাচো (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), নিকোলাস গঞ্জালেজ (ফিওরেন্টিনা)।
নতুন পে-স্কেল কিংবা মহার্ঘ ভাতা নয়, সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়বে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্ট অনুযায়ী। তাদের বেতন প্রতি বছর যতটা বাড়ার কথা এবার তার চেয়ে বেশি বাড়বে। আর তা চলতি বছরের মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে বাড়ানো হবে। অর্থাৎ আগামী অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়মিত ইনক্রিমেন্ট ৫ শতাংশের বাইরে বাড়ানো হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে পলিসি রিচার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর দেশ রূপান্তরকে বলেন, গত প্রায় এক বছর ধরে দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষ কষ্টে আছেন। সরকারি কর্মকর্তাদের বেশিরভাগের একমাত্র আয় বেতন-ভাতা। বৈশি^ক মন্দার কারণে সরকারও খানিকটা সংকটে আছে। এ পরিস্থিতিতে পে-স্কেল দেওয়ার মতো বড় ধরনের ব্যয় বাড়ানো সরকারের পক্ষে কঠিন হবে। ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হলে সরকারের ওপর চাপ বেশি হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে সরকারি কর্মরতদের খানিকটা স্বস্তি দিতে কোন খাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় এমন প্রস্তাব চাওয়া হয়। একই সঙ্গে বাজেটবিষয়ক বিভিন্ন বৈঠকে সরকারি নীতিনির্ধারকরাও এ বিষয়ে আলোচনা করেন। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যাচাই-বাছাই করে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার প্রস্তাব করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উপস্থাপন করে। চলতি মাসে গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী এ বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী ওই বৈঠকে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে কত বাড়তি ব্যয় হবে তা হিসাব করে পরের বৈঠকে উপস্থাপন করতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বড় ধরনের ব্যয় না বাড়িয়ে একটা উপায় বের করতেও বলেন। শেষ পর্যন্ত ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা চলতি মাসে প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে নিজেই জানিয়েছেন।
বর্তমানে সরকারি কর্মচারীরা ২০১৫ সালের বেতন কমিশন অনুযায়ী বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এ বেতন কমিশন প্রণীত হয়েছিল। এ কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, আর নতুন বেতন কমিশন গঠন করা হবে না। প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট বা বেতন বাড়ানো হবে। এ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী তা হয়ে আসছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি হিসাব অনুযায়ী, দেশে সরকারি কর্মচারী ১৪ লাখ। বিভিন্ন করপোরেশন এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নিয়ে হিসাব করলে প্রায় ২২ লাখ।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের বাজেটে নিয়মিত ইনক্রিমেন্টের বাইরে আরও কতটা বাড়ানো যায় তা হিসাব করে নির্ধারণ করা হবে। এ কাজ করতে বাজেট প্রস্তাব পেশ করার পর আলাদা কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটি মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে যাচাই-বাছাই শেষে ইনক্রিমেন্টের হার সুপারিশ করবে। এ ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে বিদ্যমান ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের সঙ্গে প্রতি মাসে বেতন বাড়ানো হবে, নাকি গড় মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে ইনক্রিমেন্টের হার বাড়ানো হবে, তা খতিয়ে দেখা হবে। ২০তম গ্রেড থেকে প্রথম গ্রেড পর্যন্ত সবার জন্য একই হারে বেতন বাড়নো হবে কি না, তা আরও খতিয়ে দেখা হবে। চূড়ান্ত হিসাব অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষে প্রকাশ করা হবে। যে তারিখেই প্রকাশ করা হোক না কেন, আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকরী ধরা হবে।
এখানে মহার্ঘ ভাতা ১০ শতাংশ দেওয়া হলে এ হিসাবে ৪ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। ১৫ শতাংশ দেওয়া হলে ৬ হাজার কোটি এবং ২০ শতাংশ দেওয়া হলে ৮ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। অর্থাৎ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে আগামী অর্থবছরে সরকারের ব্যয় বাড়বে। আর এতে সরকার ব্যয় কমিয়েও সরকারি কর্মকর্তাদের সন্তুষ্টিতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো পথে হেঁটেছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতা বাবদ রাখা হয়েছে ছিল ৭৪ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। খরচ না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ১ হাজার ৯৩ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা বাজেট হওয়ার কথা আছে। এ বাজেট সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতার জন্য বরাদ্দ ৭৭ হাজার কোটি টাকা রাখা হতে পারে। সরকারি কর্মকর্তাদের অনেক পদ এখনো খালি আছে। এতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো হলেও সরকারের ব্যয়ে বড় ধরনের চাপ বাড়বে না।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোট শেষ হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
দায়িত্বশীল সূত্র থেকে এখন পর্যন্ত ৪৫০টি কেন্দ্রের প্রাথমিক ফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে নৌকা প্রতীকে আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ১ লাখ ৮৫ হাজার ৩৭৯ ভোট এবং টেবিলঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন পেয়েছেন ২ লাখ ৫ হাজার ৪১৩ ভোট।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
গাজীপুর সিটিতে মেয়র পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে আওয়ামী লীগের আজমত উল্লা খান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের মধ্যে। দুজনই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। অপরদিকে ভোটের পরিবেশ ভালো বলে জানান আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহনূর ইসলাম রনি।
কোটা পদ্ধতি তুলে দেওয়ার পরও বিসিএস পরীক্ষায় নারীদের চাকরি পাওয়ার হার প্রায় একই রয়েছে। ১০ শতাংশ কোটা থাকা অবস্থায় তারা যে পরিমাণ চাকরি পাচ্ছিলেন, কোটা তুলে দেওয়ার পরও প্রায় একই হারে চাকরি পাচ্ছেন। সাধারণ ক্যাডার বা কারিগরি ক্যাডারে পিছিয়ে পড়লেও শিক্ষার মতো পেশাগত ক্যাডারগুলোতে এগিয়ে গিয়ে বিসিএসে মোট চাকরি পাওয়ার হারে প্রায় একই অবস্থান ধরে রেখেছেন নারীরা।
অথচ কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় বলা হয়েছিল, কোটা তুলে দিলে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। প্রশাসনে নারীর অংশগ্রহণের গ্রাফ নিম্নমুখী হবে। আসলে তা হয়নি। কোটা তুলে দেওয়ার পরও তারা প্রায় সমানতালে এগিয়ে চলছেন।
৪০তম বিসিএস দিয়ে চাকরিতে ঢুকে বর্তমানে ঢাকা বিভাগে কর্মরত একজন নারী কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, যে বয়সে ছেলেরা চাকরির জন্য প্রতিযোগিতা করে সেই বয়সে অধিকাংশ নারীকেই বিবাহিত জীবনে প্রবেশ করতে হয়। সংসার করে, সন্তান লালনপালন করে নারীরা ভালো প্রস্তুতি নিতে পারে না। ফলে অনেক মেধাবী নারী প্রতিযোগিতায় উতরে যেতে পারেন না। অনেক নারী পারিবারিক কারণে বিয়ের পর চাকরির আবেদনই করেন না। বিয়ের পর পরীক্ষায় অংশ নিতে বাধা আসে। এসব কাটিয়ে উঠে চাকরিতে প্রবেশ করা কঠিন। আর বিসিএসের চাকরি মানেই বদলিযোগ্য। সংসার-সন্তান রেখে বদলিকৃত পদে যোগ দেওয়া কঠিন বিষয়। সবকিছু মিলিয়ে নারীদের জন্য এ চাকরি সহজ নয়। একজন পুরুষ বেকার নারী বিয়ে করে, কিন্তু একজন নারী বেকার পুরুষ বিয়ে করে না। এ বিষয়টাও ছেলেদের প্রস্তুত হতে সাহায্য করে। এ বাস্তবতা থেকেও পুরুষ প্রতিযোগী বেশি হয়। অন্যদিকে যোগ্য হলেও অনেক নারী প্রতিযোগিতাই করে না।
একজন নারী ইউএনও বলেন, পরীক্ষার হলে বা মৌখিক পরীক্ষার সময় অনেক নারীকে দুগ্ধপোষ্য সন্তানকে সঙ্গে আনতে হয়। এগুলোও অনেক সময় নারীকে চাকরির ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করে। ঘরে ঘরে বাধা পায় নারীর অগ্রযাত্রার নানা চেষ্টা। নগর-জীবনে নারীর অস্তিত্ব অনেকটা স্বচ্ছন্দের। কিন্তু নগরসভ্যতার বাইরে বিশাল বিস্তৃত গ্রামীণ জনজীবনে পুরুষতন্ত্রের নানা ধরনের অনাকাক্সিক্ষত বেষ্টনী এখনো নারীকে ধরাশায়ী করে রাখে। হাজার হাজার বছর ধরে পৃথিবীর পথ হাঁটছে নারী-পুরুষ। তবু তাদের মধ্যে ভারসাম্য নেই।
কোটা না থাকার পরও নারীরা তাদের অবস্থান কীভাবে ধরে রাখলেন জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ শাইখ ইমতিয়াজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নারী শিক্ষায় বাংলাদেশের অর্জন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। প্রাথমিকের পর মাধ্যমিকেও মেয়েরা অনেক এগিয়েছে। উচ্চশিক্ষায়ও মেয়েদের অংশগ্রহণের হার বেড়েছে। সবকিছু মিলে বিসিএসে এর প্রতিফল ঘটেছে। যে পরিমাণ মেয়ে উচ্চশিক্ষা নিচ্ছে, সেই তুলনায় চাকরিতে প্রবেশের হার বেশি। উচ্চশিক্ষায় যায় হয়তো ৮০ ভাগ ছেলে। আর মেয়েদের মধ্যে উচ্চশিক্ষায় যাওয়ার হার ৩০ বা ৩৫ শতাংশ। তাদের মধ্যে ২৬ বা ২৭ শতাংশ মেয়ে বিসিএস দিয়ে চাকরি পাচ্ছে। এদিক দিয়ে চিন্তা করলে মেয়েরা অনেক ভালো করছে।’
এক প্রশ্নের জবাব ড. ইমতিয়াজ বলেন, ‘মেয়েদের কাছে শিক্ষা এখনো অপরচুনিটি (সুযোগ) আর ছেলেদের কাছে অধিকার। মেয়েরা যখন এ সুযোগটা পায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা কাজে লাগাতে চায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘পরিবারের ছেলেসন্তানের জন্য যে বিনিয়োগ, মেয়েসন্তানের জন্য এখনো তার চেয়ে অনেক কম। এখনো মনে করা হয় মেয়ে তো অন্যের ঘরে চলে যাবে। অথচ মজার বিষয় হচ্ছে, পরিবারের দায়িত্ব উচ্চশিক্ষিত ছেলের তুলনায় উচ্চশিক্ষিত মেয়ে অনেক বেশি বহন করে। এসব প্রতিবন্ধকতা হাজার বছরে তৈরি হয়েছে। এগুলো দূর হতে আরও সময় লাগবে।’
অন্যান্য কোটার মতো প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে নারীদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা ছিল। নারীরা যোগ্যতা অনুযায়ী মেধা কোটায়ও নিয়োগ পেতেন। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতে মেধাভিত্তিক জেলা কোটার পাশাপাশি ১৫ শতাংশ নারী কোটা রয়েছে এখনো। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাভিত্তিক জেলা কোটার পাশাপাশি ৬০ শতাংশ নারী কোটা সংরক্ষিত রেখে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এভাবে নারীরা সরকারি চাকরিতে পুরুষ প্রার্থীর সঙ্গে মেধা কোটায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নিয়োগ লাভের পাশাপাশি সংরক্ষিত কোটায়ও নিয়োগ লাভের সুবিধা পেয়ে থাকেন।
শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে ছাত্রীর হার বাড়ছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে এক দশকের বেশি সময় ধরে ছাত্রের চেয়ে ছাত্রীর হার বেশি। কলেজ পর্যায়ে ছাত্র ও ছাত্রীর হার প্রায় সমান। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর হার ৩৬ শতাংশের বেশি।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে সরকার। ৪০তম সাধারণ বিসিএস হচ্ছে কোটামুক্ত প্রথম বিসিএস। ধাপে ধাপে বাছাই করে গত বছর ৩০ মার্চ এই বিসিএসের চূড়ান্ত সুপারিশ করে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। প্রায় ১৩ মাস পর গত মাসে সেই সুপারিশের বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে পিএসসি। সেখানে বলা হয়েছে, ৪০তম বিসিএসে মোট ২৬ দশমিক ০৩ শতাংশ নারী চূড়ান্তভাবে সুপারিশ পেয়েছেন। যা কোটাযুক্ত ৩৮তম বিসিএসে ২৬ দশমিক ৯১ ও ৩৭তমে ২৪ দশমিক ৬০ শতাংশ ছিল। গত ১ নভেম্বর এ বিসিএসের কর্মকর্তারা চাকরিতে যোগ দিয়েছেন।
পিএসসির একজন সাবেক চেয়ারম্যান বলেছেন, কোটামুক্ত একটি সাধারণ বিসিএসে ২৬ দশমিক ০৩ শতাংশ নারী চূড়ান্তভাবে সুপারিশ পেয়েছেন এটা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় নারীদের শক্ত সক্ষমতা প্রকাশ করে। কারণ এর আগে কোটাযুক্ত ৩৮তম বিসিএসের তুলনায় মাত্র দশমিক ৮৮ শতাংশ কম। অর্থাৎ কোটা তুলে দেওয়ার পরও নারীরা ১ শতাংশও পিছিয়ে পড়েননি। আরেকটি বিষয় লক্ষণীয় যে, প্রত্যেক বিসিএসে নারীদের আবেদনের হার অর্থাৎ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের হার পুরুষের তুলনায় কম অর্থাৎ গড় হার কম। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতেও নারী প্রার্থীদের পুরুষের তুলনায় অনেক কম চোখে পড়ে। এমনকি কোনো কোনো কক্ষে নারী প্রার্থী থাকেই না। একই সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ধাপগুলো অতিক্রম করার ক্ষেত্রে নারীদের অনুত্তীর্ণ হওয়ার পরিমাণ বেশি থাকে। ৪০তম বিসিএসে যোগ্য আবেদনকারী নারী ছিলেন ৩৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ। তাদের মধ্যে ১৯ দশমিক ১৯ শতাংশ নারী প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হন। অথচ পুরুষদের ক্ষেত্রে ভিন্ন চিত্র। যোগ্য আবেদনকারী পুরুষ ছিলেন ৬১ দশমিক ৬২ শতাংশ। প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ পুরুষের হার ৮০ দশমিক ৮১ শতাংশ।
৪০তম বিসিএসের সাধারণ ক্যাডারে ২১ দশমিক ০৮ শতাংশ নারী সুপারিশ পেয়েছেন। এই হার ৩৮ ও ৩৭তম বিসিএসে ছিল যথাক্রমে ২৪ দশমিক ১৪ ও ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ।
৪০তম বিসিএসের কারিগরি ক্যাডারে ২৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ নারী সুপারিশ পেয়েছেন। এই হার ৩৮ ও ৩৭তম বিসিএসে ছিল যথাক্রমে ২৯ দশমিক ৫৩ ও ২৫ দশমিক ২ শতাংশ।
সাধারণ এবং কারিগরি ক্যাডারে নারীরা পিছিয়ে পড়লেও শিক্ষার মতো পেশাগত ক্যাডারে এগিয়েছেন। ৪০তম বিসিএসে ২৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ নারী সুপারিশ পেয়েছেন। যা ৩৮তমে ২৬ দশমিক ৩০ এবং ৩৭তমে ২৫ দশমিক ২ শতাংশ ছিল।
পুরোপুরি মেধার ভিত্তিতে নেওয়া ৪০তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারেও নারীরা পিছিয়েছেন। জেলা কোটাও না থাকায় নাটোর, ভোলা, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি থেকে প্রশাসন ক্যাডারে কেউ সুপারিশ পাননি।
গত বছর প্রকাশিত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সরকারি চাকরিজীবীদের তথ্যসংক্রান্ত ‘স্ট্যাটিসটিকস অব সিভিল অফিসার্স অ্যান্ড স্টাফস’ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, সিভিল প্রশাসনের ১৪ লাখ সরকারি কর্মচারীর মধ্যে ২৬ শতাংশ নারী। সরকারি দপ্তরের মধ্যে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে কাজ করেন সবচেয়ে কমসংখ্যক নারী। মন্ত্রণালয়ের মোট জনবলের ১৯, অধিদপ্তরের ৩১, বিভাগীয় কমিশনার ও ডেপুটি কমিশনারের কার্যালয়ের ১২ এবং আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ১২ শতাংশ কর্মী নারী।