নির্বাচনী প্রচারে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের হামলা ও পুলিশি হয়রানি বন্ধে নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রতিকার না পেয়ে ক্ষুব্ধ সরকারবিরোধী প্রধান রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান কামাল হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
গত বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডে লেখা এক চিঠিতে কামালসহ ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে গতকাল সোমবার রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ চাওয়া হয়। আলোচনার বিষয়বস্তু চিঠিতে বলা না থাকলেও বিএনপি নেতারা জানান, নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মামলা ও হয়রানির বিষয়ে রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে প্রতিকার চাইবেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন দেশ রূপান্তরকে বলেন, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ১৭ ডিসেম্বর সাক্ষাৎ চেয়ে কামাল হোসেনের আবেদনের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে দু-এক দিনের মধ্যে বিএনপিকে জানানো হবে।
তবে কামালের হয়ে বিএনপির পাঠানো ওই চিঠির ভাষা নিয়ে রাষ্ট্রপতির কার্যালয় যে অসন্তুষ্ট হয়েছে, তা প্রকাশ পেল বঙ্গভবনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার কথায়। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের অভিপ্রায় ব্যক্ত করার কোনো বিষয় নেই, চিঠিতে সরাসরি সাক্ষাতের অনুরোধ থাকাই ভালো ছিল। তা ছাড়া ১০ সদস্যের নাম উল্লেখ্য করা যেত। রাষ্ট্রপতি চিঠি পেয়েছেন এবং তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন আজ-কালের মধ্যে।’
ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী এ বিষয়ে দেশ রূপান্তরকে বলেন, ১০ সদস্যের মধ্যে বিএনপির অন্তত ছয়জন থাকবেন, এমনটাই তিনি জানেন। আলোচনার বিষয় সম্পর্কে তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রচারে বিরোধী দলকে বাধা দেওয়া, নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মামলা ও হয়রানি নিয়ে ইসির নির্বিকার আচরণ তুলে ধরবেন ড. কামাল। সুষ্ঠু নির্বাচনে ইসিকে নিরপেক্ষ থাকতে রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চাইবে ঐক্য ফ্রন্ট।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ইসি আমাদের নেতাকর্মীদের মাঠেই নামতে দিচ্ছে না। কারণ তারা জানে, জনগণ ভোট দিতে পারলে ধানের শীষের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না। রাষ্ট্রপতি দেশের অভিভাবক, তার হস্তক্ষেপ চাইব। আমাদের নেতাকর্মীদের যেন মাঠে থাকতে দেয়।’
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারার সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন, কিন্তু কোনো সাড়া পাননি।
আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হয়ে বিএনপির বিচারপতি আবদুস সাত্তারের বিরুদ্ধে ভোটের লড়াইয়ে নামা কামাল হোসেন এবার বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে নিজের পুরোনো দল আওয়ামী লীগের বিপক্ষে নির্বাচন করছেন। নির্বাচনের প্রচারে সমান সুযোগ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করে আসছেন গণফোরাম সভাপতি কামাল।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের সঙ্গে ধানের শীষ নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের নেতারাও নির্বাচন করায় তা নিয়ে কামালের সমালোচনায় মুখর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা।