মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতির নেতিবাচক বিবরণ দিয়েছে। বুধবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইকেল পম্পেও এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রায় ৫০ পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদনের সূচনায় সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বিতর্কিত হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া মানবাধিকার পরিস্থিতির নেতিবাচক দিকও তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনের শুরুতেই বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার পরিচালনার নীতি থাকলেও বাস্তবে প্রায় সব ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়কেন্দ্রিক।
একাদশ সংসদ নির্বাচনকে এক পাক্ষিক অভিহিত করে এতে আরো বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বারের মতো পাঁচ বছরের জয় পেয়েছে এমন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যাকে অবাধ ও সুষ্ঠু বলা যায় না, এবং এ নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে নানা অনিয়মের কারণে, যার মধ্যে রয়েছে জালভোট ও বিরোধী পোলিং এজেন্ট এবং ভোটারদের বাধা দান। নির্বাচনের প্রচার চলাকালে হয়রানি, বাধা, উদ্দেশ্যমূলক গ্রেপ্তার এবং সহিংসতার কারণে বিরোধী পক্ষের প্রার্থীদের পক্ষে গণসংযোগ, মিছিল এবং মুক্তভাবে প্রচার অসম্ভব করে হয়ে পড়েছিল।
প্রতিবেদনে নির্বাচন পর্যবেক্ষক আসতে প্রতিবন্ধকতা তৈরির অভিযোগও আনা হয় সরকারের বিরুদ্ধে।
মানবাধিকার পরিস্থিতি উল্লেখ করতে গিয়ে বেআইনি হত্যা, বলপূর্বক গুম, নির্যাতন, সরকার বা তার পক্ষ থেকে জোর করে কারাবরণ, কারাগারে নির্যাতনসহ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের পরিবেশ না থাকা, মতপ্রকাশে বাধা, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার কাজে বাধা প্রদান, শ্রমিক সংগঠন করতে না দেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়।
‘ক্রসফায়ারের’ ঘটনায় গত বছরের ২৬ মে কক্সবাজারে সরকারদলীয় নেতা একরামুল হক একরামের নিহত হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া পুলিশ হেফাজতে ৬ মার্চ রাজধানীর ছাত্রদল নেতা জাকির হোসেন মিলনের মৃত্যুর ঘটনার উল্লেখ করা হয়।
৩ মার্চ ফয়জুর রহমান নামে এক সন্ত্রাসীর হামলায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের আহত হওয়ার ঘটনা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এতে আরো বলা হয়, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৩০ ব্যক্তি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হয়।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সরকার যথাযথ ‘মর্যাদা’ দিতে পারেনি বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। এতে জুলাইয়ে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনা উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় ১২ সাংবাদিকের ওপর হামলার কথা প্রতিবেদনে জানানো হয়।