সন্তান হওয়া কিংবা না-হওয়াসংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে মানুষ চিকিৎসকের কাছেই যায় সমাধানের জন্য। আধুনিককালে মানুষ ফার্টিলিটি চিকিৎসকদের কাছে যান সন্তান জন্মদানসংক্রান্ত জটিলতা দূর করতে। নেদারল্যান্ডসের ডা. ইয়ান কারবাত ছিলেন তেমনই একজন ফার্টিলিটি চিকিৎসক।
এই চিকিৎসক তার পেশাগত জীবনে চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তিদের অনুমতি ছাড়াই নিজেই ৪৯ জন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তবে ডা. ইয়ান কারবাত মারা গেছেন দুই বছর আগে। বর্তমানে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে ক্রমশ এসব তথ্য সামনে আসছে।
নেদারল্যান্ডসের রটারড্যাম এলাকায় ক্লিনিক ছিল ইয়ান কারবাতের। ক্লিনিকটির কাজ ছিল পুরুষদের কাছ থেকে তাদের শুক্রাণু সংগ্রহ করা। এসব ক্ষেত্রে শুক্রাণুদাতাদের নাম গোপন রাখা হতো। অনেক সময় চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তিরা সঙ্গে করে শুক্রাণু দানকারীকেও নিয়ে আসতে।
ক্লিনিকে সংরক্ষিত ওই শুক্রাণু দিয়ে ল্যাবে ভ্রƒণ তৈরির পর চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তিদের সন্তান জন্ম দেওয়া হয়। কিন্তু ডা. ইয়ান কারবাত এ ক্ষেত্রে নিজেই নিজের শুক্রাণু ব্যবহার করতেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। শুধু তা-ই নয়, এ ক্ষেত্রে তিনি চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তিদের কোনো অনুমতিই নিতেন না।
কারবাতের কাছে চিকিৎসা নেওয়া বাবা ও মায়েরা ওই চিকিৎসকের সঙ্গে তাদের সন্তানদের চেহারার মিল খুঁজে পেলে ২০১৭ সালে আদালতে মামলা করে বসেন। ওই সন্তানদের অধিকাংশেরই জন্ম আশির দশকে। কিন্তু আদালতে মামলা করার পর জানা যায় ৮৯ বছর বয়সে ওই ডাক্তার মারা গেছেন।
কারবাতের ক্লিনিক থেকে বিভিন্ন নথি উদ্ধার ও ডিএনএ পরীক্ষা করে আদালত ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে পারে। যদিও মামলার কার্যক্রম শেষ না হওয়ার কারণে এত দিন ব্যাপারে তথ্য প্রকাশে আদালতের নিষেধাজ্ঞা ছিল। অবশ্য এখন আর কোনো বাধা নেই।
কারবাদের ধোঁকার শিকার এক ব্যক্তি বলেন, ‘১১ বছর ধরে খোঁজার পর এখন আমি আমার জীবনে ফিরে যেতে পারব। একটি অনিশ্চিত অধ্যায়ের সমাপ্তি হলো। প্রশ্নের জবাব পেয়ে শেষমেশ আমি খুশি।’
২০০৯ সালে কারবাতের ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আদালত ক্লিনিক থেকে প্রাপ্ত নথি থেকে সন্দেহ করছে বাস্ততে কারবাতের শুক্রাণু থেকে জন্ম নেওয়া সন্তানের সংখ্যা আরও বেশি।