ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে নিপীড়নের পর পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাসহ ১৬জনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের সুপারিশ করে মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) জমা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার ফেনীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দাখিল করে মামলাকারী তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (বিপিআই)।
চার্জশিটে ১৬ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি (মৃত্যুদণ্ড) নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে পিবিআই।
ঘটনার এক মাস ২১ দিনের মাথায় মামলাটির চার্জশিট দেওয়া হল।
ধানমন্ডিতে পিবিআই সদর দপ্তরে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার জানান, এই ১৬ জনকে দায়ী করে ৭২২ পৃষ্ঠার চার্জশিট চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ১৬জনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে। সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ না নিলেও হত্যার মূল দায় অধ্যক্ষ সিরাজের।
এছাড়া নুসরাত হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১২ আসামি দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এর মধ্যে মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাও রয়েছেন।
বাকি আসামিরা হলেন- সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিন (৫৫), সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাকসুদ আলম (৫০), নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন (১৯), হাফেজ আবদুল কাদের (২৫), আফছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মণি (১৯), উম্মে সুলতানা পপি (১৯), আবদুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন মামুন (২২), মোহাম্মদ শমীম (২০) ও মহিউদ্দিন শাকিল (২০)।
উল্লেখ্য, ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। বোরকা পরিহিত কয়েকজন কৌশলে তাকে ছাদে ডেকে নিয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। অস্বীকৃতি জানালে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা, পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।
গত ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ রাফি।