সাংবিধানিক রক্ষাকবচ ‘বিশেষ মর্যাদা’ বাতিলের পাশাপাশি ভারত শাসিত কাশ্মীরকে দ্বিখণ্ডিত করে কেন্দ্রীয় শাসনের অধীনে আনার বিল দেশটির লোকসভায় পাস হয়েছে।
মঙ্গলবার লোকসভায় এই সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল বিলটি ৩৬৭-৬৭ ব্যবধানে কণ্ঠভোটে পাস হয়। ভোটদানে বিরত থাকেন একজন।
বিরোধী দলগুলোর সাংসদরা তীব্র বিরোধিতা করলেও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী ভারতীয় জনতা পার্টি-বিজেপি সহজেই বিলটি পাস করে নেয়।
এর আগে বিরোধী দলগুলোর প্রতিনিধিদের ওয়াকআউটের সুযোগে সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বিলটি পাস করিয়ে নেয় বিজেপি।
সোমবার প্রেসিডেন্সিয়াল ডিক্রির মাধ্যমে আকস্মিক কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা তুলে নেয় বিজেপি সরকার। একই সঙ্গে রাজ্যের মর্যাদা বাতিল করে একে কেন্দ্রীয় শাসনের অধীনে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে জঙ্গি হামলার গুজব ছড়িয়ে কাশ্মীরে নতুন করে ৩৫ হাজার ভারতীয় সেনা মোতায়েন করা হয়। গৃহবন্দি করা হয় দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রীসহ সেখানকার শীর্ষ নেতাদের। জারি করা হয় কারফিউ। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা।
সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদের কারণে জম্মু ও কাশ্মীর অন্য যেকোনো ভারতীয় রাজ্যের চেয়ে বেশি স্বায়ত্তশাসন ভোগ করতো। এই ধারাটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এর ভিত্তিতেই কাশ্মীর রাজ্য ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
এ অনুচ্ছেদ জম্মু ও কাশ্মীরকে নিজেদের সংবিধান ও একটি আলাদা পতাকার স্বাধীনতা দেয়। এছাড়া পররাষ্ট্র সম্পর্কিত বিষয়াদি, প্রতিরক্ষা এবং যোগাযোগ বাদে অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে স্বাধীনতার নিশ্চয়তাও দেয়।
মূলত সেখানকার জনসংখ্যার আনুপাতিক স্থিতি বজায় রাখতে বহিরাগত বসতিস্থাপন বন্ধে এসব সুরক্ষা দেওয়া হয়।
কেবল স্থায়ী বাসিন্দারাই ওই রাজ্যে সম্পত্তির মালিকানা, সরকারি চাকরি বা স্থানীয় নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অধিকার পান।
রাজ্যের বাসিন্দা কোনো নারী রাজ্যের বাইরের কাউকে বিয়ে করলে সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হন। তার উত্তরাধিকারীদেরও সম্পত্তির ওপরে অধিকার থাকে না।
বিজেপি সরকারের এই সিদ্ধান্তের পর এই অধিকার হারাবে কাশ্মীরের জনগণ। মূলত হিন্দু জনগণকে অঞ্চলটিতে বসবাসের সুযোগ করে দিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে কাশ্মীর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষকদের অভিমত।