পাবলিক পরীক্ষায় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্র মূল্যায়নে তিন মাসের মধ্যে বিধি প্রণয়ন করতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
শিক্ষা সচিব, সমাজ কল্যাণ সচিব, দেশের সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত একটি রিট আবেদনের প্রেড়্গিতে জারি করা রুলের ওপর চ‚ড়ান্ত শুনানি নিয়ে দেওয়া রায়ে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দিয়েছে। গত ২২ আগস্ট এ রায় হয়। সোমবার এই রায়টি প্রকাশিত হয়।
রায়ে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য প্রতিটি শিক্ষা বোর্ডের নীতিমালা রয়েছে। কিন্তু সেই নীতিমালায় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্র কীভাবে মূল্যায়ন করা হবে সেটি উল্লেখ নেই। তাই শিক্ষার্থী কোন ধরনের প্রতিবন্ধী তা বিবেচনা করে সেভাবেই উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা উচিত।
রায়ে আরও বলা হয়, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের হলে অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় দেওয়া হয়। কিন্তু পরীক্ষার পর পরীক্ষক যাতে সতর্কতার সঙ্গে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করেন সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। এ নিয়ে নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন এ কারণে যে, তারা (প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী) সমাজের অন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতো নয়।
আদালতে রিট আবেদনকারী মোস্তাফিজুর রহমানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জুলহাস উদ্দিন আহমাদ।
তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমানের প্রতিবন্ধী ছেলে ২০১৬ সালে মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। কিন্তু পরীক্ষার ফলাফলে ওই শিক্ষার্থীকে দুই বিষয়ে অকৃতকার্য দেখানো হয়। এরপর খাতা পুনর্মূল্যায়নে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে আবেদন করা হলেও কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ২০১৭ সালে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন মোস্তাফিজুর রহমান।
রিটর ওপর শুনানি নিয়ে রুল জারির পর বোর্ড কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষার্থীকে কৃতকার্য ঘোষণা করে। এরপর চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় দুই বিষয়ে আবারও অকৃতকার্য দেখানো হয় এই শিক্ষার্থীকে।
এরপর খাতা পুনর্মূল্যায়ন চেয়ে হাইকোর্টে সম্পূরক আবেদন করেন মোস্তাফিজুর রহমান। আবেদনের ওপর শুনানি শেষে রুল জারি ও রুলের চ‚ড়ান্ত শুনানির পর এ রায় আসে।