আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে অনেকের হাঁপানি বা অ্যাজমাসহ শ্বাসকষ্টের সমস্যা বেড়ে যায়। শিশুসহ যে কোনো বয়সের নারী-পুরুষ এতে আক্রান্ত হতে পারে। অ্যাজমায় মৃত্যুর সংখ্যা কম। কিন্তু সুচিকিৎসার অভাবে অ্যাজমা রোগীরা বেশ কষ্ট পায়। শ্বাসনালির প্রদাহজনিত দীর্ঘস্থায়ী রোগ হলো অ্যাজমা।
কারণ
শ্বাসনালিতে বিভিন্ন কোষ প্রধানত ইওসিনোফিল ও অন্যান্য উপাদান জমা হয়ে শ্বাসনালির ছিদ্রপথ সরু হয়ে যায়। রোগী শ্বাসকষ্টসহ শুকনো কাশি, বুকে কাশি জমে যাওয়া, শ্বাস নেওয়ার সময় বুকে শোঁ শোঁ আওয়াজ হওয়া ইত্যাদি সমস্যায় ভুগতে থাকে। শীতকালে শুষ্ক ঠান্ডা আবহাওয়ায় বাতাসে উড়ে বেড়ানো ধূলিকণার আধিক্যে অ্যাজমার সমস্যা বেড়ে যায়। এছাড়াও বংশগত কারণে বা ঘরে থাকা ক্ষুদ্র কীট, ধুলাবালি, গাছ, ফুলের পরাগরেণু, পশুপাখির পালক, কীটপতঙ্গ ইত্যাদি থেকেও সংক্রমণ হয়ে থাকে।
লক্ষণসমূহ
শ্বাসকষ্ট
কাশি (রাতে ঘুমানোর সময় কাশি বেড়ে যায়)
কফ থাকতে পারে
শারীরিক কর্মকাণ্ড যেমন হাঁটলে বা সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করলে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
করণীয়
অ্যাজমার রোগী নিজে যত্নবান হলে এ রোগ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। খাবার ও পথ্য বিষয়ে সচেতন হতে হবে। কিছু পরামর্শ মেনে চলা উচিত। যেমন-
অ্যাজমার ওষুধ বা ইনহেলার সবসময় হাতের কাছে রাখতে হবে।
ভিটামিন-এ জাতীয় খাবার, কলিজা, গাজরসহ শাকসবজি ও মধু খেতে হবে।
নিয়মিত চেকআপ করানো জরুরি।
রোজ সকালে হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি করা উচিত।
ধূমপান ও ধুলোবালি এড়িয়ে চলতে হবে। বাইরে বের হলে সঙ্গে মাস্ক রাখুন।
বালিশ, লেপ, তোশক নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। ধুলো জমলে শ্বাসকষ্ট বাড়বে।
ধুলো জমে যায় বলে ঘরে কার্পেট ব্যবহার না করাই উত্তম।
ঠাণ্ডা খাবার আইসক্রিম ইত্যাদি না খাওয়া।
চিকিৎসা
প্রাথমিক পর্যায়ে শুধু ইনহেলার জাতীয় ব্রঙ্কোডাইলেটর ব্যবহার করে ও কিছু নিয়ম মেনে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় অ্যাজমা। রোগের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রঙ্কোডাইলেটর এর পাশাপাশি স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা প্রয়োজন হতে পারে। তবে বারবার ওষুধের মাত্রা বাড়ানোর চেয়ে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখলেই অনেকটা সুস্থ থাকা সম্ভব। যত্নবান হওয়াই এ রোগে সুস্থ থাকার মূলমন্ত্র।