বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তুমি সাড়া জাগানো প্রিয় নাম
হৃদ স্পন্দন শিহরিত শুনে তোমার ভাষণ-সংগ্রাম।
তুমি অগ্নি পুরুষ, বজ্র তোমার কণ্ঠস্বর
তোমার ডাকে ছোটে অগণিত বীর সেনাদল নিরন্তর।
শুধু বাংলায় নয় সারা বিশ্বে তোমার পরিচয়
তুমি বরং বঙ্গবন্ধু নও, তুমি বিশ্ববন্ধু, তুমি উভয়।
দলমত-নির্বিশেষে তোমার নেতৃত্বে মুখরিত সবাই, তুমি অকুতোভয়।
তুমি পৃথিবীতে খোদার এক বিশেষ দান।
তুমি উল্কাপিণ্ড নও, তুমি ধূমকেতু সমান।
বিকিরিত সূর্যের বিচ্ছুরণের ন্যায় তোমার অবদান
তুমি মহাশূন্যে ভাসমান, সাগর, নদীতে চলমান।
তুমি স্থলে বহু কোটি বাঙালির প্রাণের স্পন্দন
তুমি সারা বিশ্বে শত কোটি মানুষের আলোড়ন।
তুমি বাংলার রেনেসাঁ, তুমি বাংলার টর্চ বেয়ারার
তুমি সক্রেটিস, তুমি প্লেটো, তুমি অ্যারিস্টটল বাংলার
তোমারও আছে তাঁদের মতো নিজস্ব দর্শন, যা অনুসরণ করার।
তুমি মার্শাল টিটু, মাও সেতুং কিংবা বাবরের মতো মহান
তুমি হিমালয় অদ্রি, আল্পস, কিলিমানঞ্জারো, বাংলার বিজয় সমান।
তুমি আমাজান কিংবা সাহারা মরুভূমির মতো প্রসারিত প্রাঙ্গণ
তুমি টোবা আগ্নেয়গিরির মতো টগবগিয়ে উদ্গিরণ
তুমি নীল নদ, মহাদেশ ও মহাসাগরের উদার মন।
তোমার কৃতি হাটে-ঘাটে, মাঠে, রাস্তায়, নদী, শহর-বন্দরে
গুনগান তোমার আলোচিত হয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।
তুমি টর্পেডো, তোমার আর্টিলারিতে নিয়াজী ধ্বংস
স্বাধীন দেশের স্বীকৃতি দিয়েছে বহুজাতি ও সংঘ
সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ এক আশ্চর্য অহিংস রাষ্ট্র ।
অবাক হই, বিস্ময়ে তাকিয়ে রই, ভাবনায় পরে মন
ধানমন্ডির ৩২ রোডের মুজিব বাড়িতে করলে গমন।
একটি ছবির দিকে তাকাই ক্ষণিক অপলক নয়নে নীরবে দাঁড়িয়ে।
ভিজিটরের লোচনও নিবন্ধিত হয় সেই লিজেন্ড ফ্রেমটিতে।
তিনি সুপুরুষ, সুন্দর অবয়ব কী তাঁর মোহিনী শক্তি,
জীবনভর সংগ্রাম, জেল, জুলুম আর কারাগারে বন্দী ।
মুজিবের লেখা ‘কারাগারের রোজনামচা’, ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’,
এ দেশের মানুষ আর সংবিধান তাঁরই কর্মের চির সাক্ষী।
কন্যা লিখিত ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ শেখ হাসিনাতেও জানি।
মুজিব কখনো ভাবেনি নিয়ে আপনারে, তিনি ভেবেছেন জনগণ
কামাল বলেছে বড় বোন হাসিনারে, বারবার করে সম্বোধন
হাচু আপা, হাচু আপা, তোর আব্বাকে
আমি একটু ডাকি আব্বু বলে ।
কোলে তুলে, মুজিব বলে কামালেরে ,আমি তোমারও আব্বা যে।
ওতো দেখে না প্রতিদিন বাবাকে বাসায় নিয়মিত থাকতে।
তোমার নীতি ‘বন্ধুত্ব সবার সাথে, বৈরিতা নয়’
তোমার শক্তি বাংলার আপামর জনগণ সব সময়।
আন্দোলনের ঝনঝাট পদে পদে শত কাঁটা
৩৮-এ যাত্রা, ৪৮-৫২ টানা চলা, জিন্নাহর খেয়ালিপনা, আরও বহু ঘটনা,
৭১-এ বাঁচা-মরার সংগ্রাম অবশেষে বিজয়, ৭২-এ প্রাপ্তির পূর্ণতা।
ছেষট্টির ছয় দফা বাংলার ম্যাগনাকাটা
তোমার ৭ই মার্চের কাব্যিক ভাষণ অগ্নিঝরা।
তুমি মহানায়ক, তুমি মহাকবি, তুমি মহানেতা।
শোষিতের অধিকার আদায়ে ভাষণ দিল যাঁরা
মার্টিন লুথার কিং, গান্ধীজি আরও লিংকন, ম্যান্ডেলা।
মুজিব তোমার অলিখিত ভাষণ ইতিহাস সেরা।
তুমি দিয়েছো বাংলাদেশের স্বাধীনতা
আমাদের আছে লাল-সবুজের পতাকা।
তুমি তো আমাদের অবিসংবাদী নেতা।
৫৪ ও ৭০-এর নির্বাচনে জন সমর্থনে হয়েও বিজয়ী
তবু জয়ের মালা গলায় পরতে তারা দেয়নি ।
নরপিশাচ, নরখাদক আলোচনার নামে করে কালক্ষেপণ
অপারেশন সার্চলাইটে’ নারকীয় লীলা তাণ্ডবে মারে জনগণ
চালায় জেনোসাইড, হত্যাযজ্ঞ, করে শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণ।
মাস্টার, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারসহ ধ্বংস করে বহু জানমাল
৩০ লাখ শহীদের বাতি নিভে ঝরে পড়ে অকাল।
আমি বাঙালি, বাংলা আমার ভাষা
বাংলাদেশ আমার মাটি যা সোনা ভরা গোলা।
আমি এ স্বাধীন সার্বভৌম ভূখণ্ডের বাসিন্দা
আমি গর্বিত, আমার আছে নিজস্ব জাতীয়তা।
সোহরাওয়ার্দী, ভাসানী, শেরেবাংলা, বাংলার বড় নেতা
আমাদের আছে এমন তেজি-ত্যাগী জাতীয় চার নেতা
আরও অনেকের অবদানে এই রূপান্তরিত রূপসী বাংলা।
মুজিব যিনি, তিনিই এই স্বাধীন জাতির পিতা
তাঁর গৌরবে বাংলাদেশ বিশ্বে মেলেছে পাখা।
মুজিব তোমার জন্ম ধন্য, ধন্য করেছ দেশমাতা
যে দেশের অর্থনীতি তোমারই কয় কথা
এ দেশে পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে যথা
তোমার জীবন গাঁথা।
আমি শঙ্কিত, আমি হত বিহ্বল, আমি স্থির হই
আমি অবাক, তবে নির্বাক কিছুক্ষণ তাকিয়ে রই।
তাকাই নিথর দেহ সেই ছবিটির দিকে
ভাবতে ভাবতে কেমন যেন অবাক লাগে।
যাঁর অবদানে লাল-সবুজের বাংলাদেশ
তাঁরই গায়ে বুলেট, পরিবার হলো শেষ।
ঘাতকের কখনো কি কাঁপেনি হাত
আমার বুলেট বিদ্ধ তাঁর গায়, করি আঘাত?
ক্ষমতার কুহকে অন্ধ হলো যারা
ভাবেনি কখনো চিরকাল রয় না তা।
ওদের হৃদয় এত পাষাণ হয় কীভাবে
রেহাই দেয়নি নিষ্পাপ শিশুকে।
রাসেল বলেছে যাব মার কাছে
ঘুরে ঘুরে দেখিয়ে খুন করে তাঁকে।
বঙ্গবন্ধু বন্দী মেওয়ালী কারাগারে
জীবন নিতে পারত ইয়াহিয়া-ভুট্টো মিলে
ছেড়েছে টোপ হজম হবে না বলে।
স্বজাতি এত নির্মম-নির্দয় হতে পারে
স্বাধীনতার সূর্য যাঁর হাতে তাঁকে খুন করে।
নশ্বর জীবনের ইতি টেনেছে ঘাতক নিষ্ঠুর ক্রূর
কিন্তু তোমার কর্ম অমর,অক্ষয় ও চিরভাস্বর ।
তুমি তো রয়েছ স্বর্গের করিডরে পেয়েছ সুন্দর রিসেপশন।
তোমার অবদানে বাংলাদেশ ইসলামি ফাউন্ডেশন ।
তুমি চেয়েছিলে গড়তে যে সোনার দেশ,
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সে পথেই বাংলাদেশ।