রাজধানীর পর বন্দর নগরী চট্টগ্রাম এখন কোভিড-১৯ মহামারির তৃতীয় ঢেউয়ের হট স্পট হয়ে উঠেছে। গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা দ্বিগুণ আকার ধারণ করেছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা শনাক্ত ও সংক্রমণের হার বৃদ্ধির পেছনে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রণকে দায়ী মনে করছেন।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম থেকে সংগৃহীত ২ হাজার ২৯৬টি নমুনার মধ্যে ২০৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৯ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। এগুলোর মধ্যে ১৮৭টি নমুনা শহর থেকে এবং ২০টি নমুনা বিভিন্ন উপজেলা থেকে সংগ্রহ করা হয়।
সোমবার চট্টগ্রাম থেকে সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা করে ২ হাজার ৩৪টি নমুনার মধ্যে ১১৯টি পজিটিভ শনাক্ত হয় এবং শনাক্তের হার ছিল ৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে চট্টগ্রামে মাত্র ৩৫ জন রোগীর করোনা শনাক্ত হয় এবং শনাক্তের হার ছিল ২ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে শুরু করেছে। হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (সিএমসিএইচ) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, গত সপ্তাহেও এখানে করোনা ওয়ার্ডে দৈনিক রোগী ভর্তির সংখ্যা ছিল ১০ থেকে ১২ জন। সোমবার সেখানে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ জনে।
তিনি বলেন, রোগী বাড়লেও ভালো খবর হলো, মৃত্যুহার ছিল খুব কম; গত সাত দিনে ৭৩১ জন করোন রোগীর মধ্যে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিসেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবরেটরির প্রধান ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাকিল আহমেদ মনে করেন সাম্প্রতিক সময়ে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার জন্য ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট দায়ি।
তিনি বলেন, বেশ কিছু সংখ্যক প্রবাসী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের নমুনা পরীক্ষা করে আমি পজিটিভ পেয়েছি। যেহেতু মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে সামাজিক কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে, ফলে সংক্রমণের হার বাড়ছে।
ওমিক্রন অত্যন্ত সংক্রামক উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য কোন ভ্যারিয়েন্ট সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে সেটা জানার জন্য জিনোম সিকোয়েন্সিং করা প্রয়োজন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে হাসপাতালগুলো যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।