প্রেমে বাধা দেওয়ার ক্ষোভ থেকে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে পিটিয়ে হত্যা করে শিক্ষার্থী আশরাফুল আহসান জিতু। গতকাল বুধবার ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে সে। বিচারক রাজীব হাসান জবানবন্দি নথিভুক্ত শেষে জিতুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের একজন আইনজীবী দেশ রূপান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত ২৫ জুন দুপুরে সাভারের আশুলিয়ার চিত্রশাইলে হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র জিতু ক্রিকেট খেলার স্টাম্প দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় শিক্ষক উৎপল কুমারের ওপর। প্রথমে জিতু শিক্ষকের মাথায় আঘাত করে এবং পরে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। এ ছাড়া স্টাম্পের সুচাল অংশ দিয়ে পেটের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে।
গুরুতর আহত অবস্থায় উৎপলকে প্রথমে আশুলিয়া নারী ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হয়। আঘাত গুরুতর হওয়ায় পরে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ঘটনার পরপরই জিতু পালিয়ে যায়। পরে গত বুধবার গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন র্যাব সদস্যরা।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জিতু বলেছে, তার প্রেমিকা কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। অনেক দিন থেকে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক। দুজন একসঙ্গে কলেজে ঘোরাঘুরি করত। হত্যাকাণ্ডের তিন দিন আগে জিতু তার প্রেমিকাকে সঙ্গে নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে কেক খাচ্ছিল। তখন সেখানে আসেন শিক্ষক উৎপল কুমার। তিনি জিতু ও তার প্রেমিকাকে বকাবকি করেন। তখন জিতুও শিক্ষক উৎপলকে গালিগালাজ করে।
জিতু আরও বলে, এ ঘটনার পর শিক্ষক উৎপল তাদের অভিভাবকের কাছে অভিযোগ দেন। এর জের ধরে তার প্রেমিকা কলেজে আসা বন্ধ করে দেয়। পরে জিতু পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী, বাড়ি থেকে একটি ক্রিকেট খেলার স্টাম্প নিয়ে ঘটনার দিন কলেজে আসে। শ্রেণিকক্ষের পেছনে সেটি লুকিয়ে রাখে। কলেজমাঠে ছাত্রীদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলাকালে শিক্ষক উৎপল কুমারকে মাঠের এক কোণে একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে স্টাম্প দিয়ে অতর্কিত তাকে আঘাত করে জিতু।