‘নারী না পুরুষ, আমিই তা ঠিক করব’
রূপান্তর ডেস্ক | ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
ভারতের হিজড়া সম্প্রদায় ও রূপান্তরকামীদের দাবি, তাদের লিঙ্গ পরিচয় নির্ধারণের দায়িত্ব নিজেদের হাতেই থাকা উচিত। সম্প্রতি দেশটির সরকারের পাস করা একটি বিলে তাদের এ অধিকার দেওয়া হয়নি। এ কারণে ওই সম্প্রদায়ের সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন স্থানে ধরনা, সংবাদ সম্মেলন বা প্রচার চালিয়ে বিলটির বিরোধিতা করছেন তারা।
বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে পার্লামেন্টের নি¤œকক্ষ লোকসভায় বিলটি পাস হওয়ার পরই রূপান্তরকামীরা ক্ষোভ জানাচ্ছেন, ওই বিলে তাদের অধিকার রক্ষার বদলে খর্ব করার ব্যবস্থা করেছে সরকার। তারা বলছেন, নিজেদের লিঙ্গ কী, সেটা নিজেরাই ঘোষণা করার অধিকারী, কিন্তু আইনে সেই অধিকার খর্ব করা হয়েছে। এছাড়া বিলে হিজড়াদের ভিক্ষা করে জীবনধারণকে বেআইনি বলে ঘোষণা করা হয়েছে। বিলে রূপান্তরকামীদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, চাকরিÑএসব বিষয়েও স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই।
২০১৪ সালে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত রূপান্তরকামীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যে রায় দিয়েছিল, নতুন বিলটি তার অনেকটাই বিপরীত বলে মনে করছেন রূপান্তরকামীরা। রূপান্তরী নারী ও অ্যাক্টিভিস্ট রঞ্জিতা সিনহা বলেন, ‘আমাদের পরিচয় কীভাবে নির্ধারিত হবে, সেটা এই বিলে যেভাবে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, তা নিয়েই মূল বিরোধ। যেখানে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল, যে কেউ নিজেকে নারী অথবা পুরুষ হিসেবে পরিচয় দেওয়ার অধিকারী, এই বিলে তো উল্টো কথা বলা হলো। একটা স্ক্রিনিং কমিটির কাছে হাজির হয়ে লিঙ্গ নির্ধারণ করতে হবে। এর থেকে পিছিয়ে পড়া মানসিকতার দৃষ্টান্ত বোধহয় আর হয় না।’
এই বিলে লেখা হয়ছে, যেসব রূপান্তরকামী অপারেশন করিয়ে নারী অথবা পুরুষে পরিণত হয়েছেন, তারা ছাড়া অন্য কেউ ট্র্যান্সজেন্ডার পরিচয় পেতে গেলে জেলা স্তরের স্ক্রিনিং কমিটির সামনে হাজির হতে হবে। ওই কমিটিতে ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়াও চিকিৎসক, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও ট্র্যান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের একজন করে প্রতিনিধি থাকবেন।
রূপান্তরকামীদের সংগঠন আনন্দমের সচিব সিন্টু বাগুই বলেন, ‘সেক্স রি-অ্যাসাইনমেন্ট সার্জারির যে কথা বলা হচ্ছে, সেটা তো তৃণমূল স্তরে থাকা আমাদের সম্প্রদায়ের মানুষরা করতেই পারবেন না, এত খরচসাপেক্ষ। তবে তার চেয়েও বড় কথা আমি অপারেশন করাব কি না, অথবা আমি নারী না পুরুষ, সেটা তো আমিই ঠিক করব! অন্য কেউ কীভাবে সেটা নির্ধারণ করবে!’
শেয়ার করুন
রূপান্তর ডেস্ক | ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

ভারতের হিজড়া সম্প্রদায় ও রূপান্তরকামীদের দাবি, তাদের লিঙ্গ পরিচয় নির্ধারণের দায়িত্ব নিজেদের হাতেই থাকা উচিত। সম্প্রতি দেশটির সরকারের পাস করা একটি বিলে তাদের এ অধিকার দেওয়া হয়নি। এ কারণে ওই সম্প্রদায়ের সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন স্থানে ধরনা, সংবাদ সম্মেলন বা প্রচার চালিয়ে বিলটির বিরোধিতা করছেন তারা।
বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে পার্লামেন্টের নি¤œকক্ষ লোকসভায় বিলটি পাস হওয়ার পরই রূপান্তরকামীরা ক্ষোভ জানাচ্ছেন, ওই বিলে তাদের অধিকার রক্ষার বদলে খর্ব করার ব্যবস্থা করেছে সরকার। তারা বলছেন, নিজেদের লিঙ্গ কী, সেটা নিজেরাই ঘোষণা করার অধিকারী, কিন্তু আইনে সেই অধিকার খর্ব করা হয়েছে। এছাড়া বিলে হিজড়াদের ভিক্ষা করে জীবনধারণকে বেআইনি বলে ঘোষণা করা হয়েছে। বিলে রূপান্তরকামীদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, চাকরিÑএসব বিষয়েও স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই।
২০১৪ সালে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত রূপান্তরকামীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যে রায় দিয়েছিল, নতুন বিলটি তার অনেকটাই বিপরীত বলে মনে করছেন রূপান্তরকামীরা। রূপান্তরী নারী ও অ্যাক্টিভিস্ট রঞ্জিতা সিনহা বলেন, ‘আমাদের পরিচয় কীভাবে নির্ধারিত হবে, সেটা এই বিলে যেভাবে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, তা নিয়েই মূল বিরোধ। যেখানে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল, যে কেউ নিজেকে নারী অথবা পুরুষ হিসেবে পরিচয় দেওয়ার অধিকারী, এই বিলে তো উল্টো কথা বলা হলো। একটা স্ক্রিনিং কমিটির কাছে হাজির হয়ে লিঙ্গ নির্ধারণ করতে হবে। এর থেকে পিছিয়ে পড়া মানসিকতার দৃষ্টান্ত বোধহয় আর হয় না।’
এই বিলে লেখা হয়ছে, যেসব রূপান্তরকামী অপারেশন করিয়ে নারী অথবা পুরুষে পরিণত হয়েছেন, তারা ছাড়া অন্য কেউ ট্র্যান্সজেন্ডার পরিচয় পেতে গেলে জেলা স্তরের স্ক্রিনিং কমিটির সামনে হাজির হতে হবে। ওই কমিটিতে ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়াও চিকিৎসক, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও ট্র্যান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের একজন করে প্রতিনিধি থাকবেন।
রূপান্তরকামীদের সংগঠন আনন্দমের সচিব সিন্টু বাগুই বলেন, ‘সেক্স রি-অ্যাসাইনমেন্ট সার্জারির যে কথা বলা হচ্ছে, সেটা তো তৃণমূল স্তরে থাকা আমাদের সম্প্রদায়ের মানুষরা করতেই পারবেন না, এত খরচসাপেক্ষ। তবে তার চেয়েও বড় কথা আমি অপারেশন করাব কি না, অথবা আমি নারী না পুরুষ, সেটা তো আমিই ঠিক করব! অন্য কেউ কীভাবে সেটা নির্ধারণ করবে!’