লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ)
প্রাণচাঞ্চল্য আ.লীগে, হতাশ ঐক্যফ্রন্ট
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি | ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
প্রতিদিনই আমার নেতাকর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। কোথাও ব্যানার পোস্টার লাগাতে দিচ্ছে না
লক্ষ্মীপুরের ৪টি সংসদীয় আসনের মধ্যে লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনে স্বাধীনতার পর থেকে কোনো নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচিত হতে পারেননি। এবার এ আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হয়েছেন এলডিপি নেতা শাহাদাত হোসেন সেলিম। তবে হামলা-মামলার কারণে ঐক্যফ্রন্ট নেতাকর্মীরা বেশ কোণঠাসা বলে অভিযোগ করছেন তারা।
২০১৪ সালে এ আসনে মহাজোট থেকে তরীকত ফেডারেশনের মহাসচিব এম এ আউয়াল নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হন।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন খাঁন। আর এলডিপি নেতা শাহাদাত হোসেন সেলিম ধানের শীষ প্রতীক পান।
২০১৪ সালের নির্বাচনে কেন্দ্র পোড়ানো ও নাশকতার অভিযোগে মামলা হয় প্রায় অর্ধশত। এসব মামলায় আসামি করা হয় বিএনপি ও জামায়াতের প্রায় অর্ধলক্ষ নেতাকর্মীকে। এখনো ঘরছাড়া দলের অনেক নেতাকর্মী।
যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা ইমাম হোসেন বলেন, ‘নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা হচ্ছে, মারধর করা হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হুমকি দিচ্ছে। আমার বাড়িতেও দুই বার হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। প্রার্থীকে তো রাস্তায় বের হতে হবে।’
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম বলেন, ‘পরিস্থিতি তো আপনারা দেখছেন। প্রশাসনের সঙ্গে তো আর যুদ্ধ করা যায় না। সেনাবাহিনী মাঠে থাকলে হয়তো পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে।’
উপজেলা জামায়াতের সভাপতি মাওলানা বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘প্রার্থীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তবে তিনি কীভাবে এগুবেন বা নির্বাচনে কীভাবে কাজ করবেন তার কিছুই আমরা জানি না।’
উপজেলা বিএনপির সভাপতি নাজিম উদ্দিনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘প্রতিদিনই আমার নেতাকর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। কোথাও ব্যানার পোস্টার লাগাতে দিচ্ছে না। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ১ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে ধানের শীষের বিজয় সুনিশ্চিত।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মনির হোসেন চৌধুরী বলেন, পৌরসভার মেয়রসহ ১০টি ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যানরা আওয়ামী লীগের। আগামী নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে আমাদের জয়লাভ সময়ের ব্যাপার।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ড. আনোয়ার হোসেন খাঁন বলেন, ‘আমরা হিংসা, মামলা-হামলার রাজনীতি করি না। নৌকার বিজয়ে আমি দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আমি নির্বাচিত হলে রামগঞ্জকে আধুনিক উপজেলায় পরিণত করতে সচেষ্ট থাকব।’
পুলিশ সুপার আ স ম মাহতাব উদ্দিন বলেন, রামগঞ্জসহ লক্ষ্মীপুরের চারটি আসনে নির্বাচনী পরিবেশ অনেক ভালো। দু-একটি ছোটখাটো ঘটনা ছাড়া রামগঞ্জেও শান্তিপূর্ণ প্রচার চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। সুষ্ঠু ভোটগ্রহণে পুলিশ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল বলেন, আচরণবিধি মেনে প্রার্থীরা যেন তাদের প্রচার চালান সে লক্ষ্যে এরমধ্যে জেলার ৪টি আসনে ৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন। অপ্রীতিকর কোনো ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে আইনগত ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
শেয়ার করুন
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি | ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

প্রতিদিনই আমার নেতাকর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। কোথাও ব্যানার পোস্টার লাগাতে দিচ্ছে না
লক্ষ্মীপুরের ৪টি সংসদীয় আসনের মধ্যে লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনে স্বাধীনতার পর থেকে কোনো নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচিত হতে পারেননি। এবার এ আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হয়েছেন এলডিপি নেতা শাহাদাত হোসেন সেলিম। তবে হামলা-মামলার কারণে ঐক্যফ্রন্ট নেতাকর্মীরা বেশ কোণঠাসা বলে অভিযোগ করছেন তারা।
২০১৪ সালে এ আসনে মহাজোট থেকে তরীকত ফেডারেশনের মহাসচিব এম এ আউয়াল নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হন।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন খাঁন। আর এলডিপি নেতা শাহাদাত হোসেন সেলিম ধানের শীষ প্রতীক পান।
২০১৪ সালের নির্বাচনে কেন্দ্র পোড়ানো ও নাশকতার অভিযোগে মামলা হয় প্রায় অর্ধশত। এসব মামলায় আসামি করা হয় বিএনপি ও জামায়াতের প্রায় অর্ধলক্ষ নেতাকর্মীকে। এখনো ঘরছাড়া দলের অনেক নেতাকর্মী।
যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা ইমাম হোসেন বলেন, ‘নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা হচ্ছে, মারধর করা হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হুমকি দিচ্ছে। আমার বাড়িতেও দুই বার হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। প্রার্থীকে তো রাস্তায় বের হতে হবে।’
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম বলেন, ‘পরিস্থিতি তো আপনারা দেখছেন। প্রশাসনের সঙ্গে তো আর যুদ্ধ করা যায় না। সেনাবাহিনী মাঠে থাকলে হয়তো পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে।’
উপজেলা জামায়াতের সভাপতি মাওলানা বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘প্রার্থীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তবে তিনি কীভাবে এগুবেন বা নির্বাচনে কীভাবে কাজ করবেন তার কিছুই আমরা জানি না।’
উপজেলা বিএনপির সভাপতি নাজিম উদ্দিনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘প্রতিদিনই আমার নেতাকর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। কোথাও ব্যানার পোস্টার লাগাতে দিচ্ছে না। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ১ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে ধানের শীষের বিজয় সুনিশ্চিত।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মনির হোসেন চৌধুরী বলেন, পৌরসভার মেয়রসহ ১০টি ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যানরা আওয়ামী লীগের। আগামী নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে আমাদের জয়লাভ সময়ের ব্যাপার।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ড. আনোয়ার হোসেন খাঁন বলেন, ‘আমরা হিংসা, মামলা-হামলার রাজনীতি করি না। নৌকার বিজয়ে আমি দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আমি নির্বাচিত হলে রামগঞ্জকে আধুনিক উপজেলায় পরিণত করতে সচেষ্ট থাকব।’
পুলিশ সুপার আ স ম মাহতাব উদ্দিন বলেন, রামগঞ্জসহ লক্ষ্মীপুরের চারটি আসনে নির্বাচনী পরিবেশ অনেক ভালো। দু-একটি ছোটখাটো ঘটনা ছাড়া রামগঞ্জেও শান্তিপূর্ণ প্রচার চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। সুষ্ঠু ভোটগ্রহণে পুলিশ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল বলেন, আচরণবিধি মেনে প্রার্থীরা যেন তাদের প্রচার চালান সে লক্ষ্যে এরমধ্যে জেলার ৪টি আসনে ৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন। অপ্রীতিকর কোনো ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে আইনগত ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।