সৌদি মন্ত্রিসভায় ব্যাপক রদবদল
রূপান্তর ডেস্ক | ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
আন্তর্জাতিক চাপ এবং সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের সমালোচনার জেরে মন্ত্রিসভায় ব্যাপক রদবদল করেছে সৌদি আরব। সৌদি আরবের বাদশাহ সালমানের নির্দেশে এই রদবদলের ঘটনা ঘটেছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবায়েরসহ বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে অপসারণ করা হয়েছে।
নতুন এই রদবদলে দেশটির ন্যাশনাল গার্ড, তথ্য এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্পেস এজেন্সির প্রধানের পদে পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু অর্থনৈতিক অবনমন সত্ত্বেও জ্বালানি এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ে কোনো পরিবর্তন আসেনি। এমনকি খাশোগি হত্যাকাণ্ডের জন্য যিনি সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হয়েছে সেই যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকেও সরানো হয়নি। গত ২ অক্টোবরে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে জামাল খাশোগি হত্যার ঘটনায় তুরস্ক সরাসরি যুবরাজকে দায়ী করেছে।
সৌদি রাজতন্ত্রের প্রকাশিত ডিক্রিতে জানা যায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আদেল আল জুবায়েরের জায়গায় সাবেক অর্থমন্ত্রী ইব্রাহিম আল আসাফকে বসানো হয়েছে। গত বছর দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
বিশ্লেষকরা বলছেন, খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সৌদি আরবের ক্ষুণœ ভাবমূর্তি অক্ষত রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেননি আদেল আল জুবায়ের। এ কারণেই তাকে মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারণ করা হয়েছে। যদিও সৌদি রাজপরিবারের পক্ষ থেকে তার অপসারণ প্রশ্নে কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।
ন্যাশনাল গার্ডের প্রধান করা হয়েছে প্রিন্স আবদুল্লাহ বিন বান্দারকে। এছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া মুসায়েদ আল আইবানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মন্ত্রিসভা এবং প্রশাসনের বিভিন্ন স্থানে এই রদবদল করে মূলত যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকেই বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন বাদশাহ সালমান। সৌদিপন্থি থিংকট্যাংক দ্য অ্যারাবিয়া ফাউন্ডেশনের প্রধান আলী শাহিবি এক টুইটে এই রদবদলকে ‘ক্ষমতা দৃঢ়করণ’ বলে অভিহিত করেছেন।
প্রশাসন যন্ত্রে পরিবর্তনের অংশ হিসেবে রোটানা ব্রডকাস্টারের নির্বাহী তুর্কি আল শাবানাকে নতুন তথ্যমন্ত্রী করা হয়েছে। আর তথ্যমন্ত্রী আওয়াদ আল আওয়াদকে রয়্যাল কোর্টের উপদেষ্টা করা হয়েছে। যুবরাজের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত তুর্কি আল শেখকে রাজতন্ত্রের স্পোর্টস কমিশনের প্রধানের পদ থেকে অপসারণ করে বিনোদন কর্র্তৃপক্ষের প্রধান বানানো হয়েছে। আহমেদ আল খাতিবকে করা হয়েছে পর্যটন কর্র্তৃপক্ষ প্রধান। সৌদি বাদশাহ স্পেস এজেন্সির প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন তার সন্তান প্রিন্স সুলতান বিন সালমানকে।
এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে সৌদি রাজতন্ত্র খাশোগি হত্যাকাণ্ডে যে ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে তা ফিরিয়ে আনতে চাইছে। বলা হচ্ছে, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের পর দেশটি সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। গালফ রিসার্চ সেন্টারের সিনিয়র ফেলো মোহাম্মদ আল ইয়াহিয়া বলেন, ‘আপনি কোনো উন্নয়ন সম্ভাবনা থেকে খাশোগি হত্যাকাণ্ডকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবেন না। সৌদি আরবে প্রতি চার বছরে ক্ষমতার রদবদল করা হয়। এ সময় কিছু তরুণ প্রিন্সদের নিয়োগ দেওয়া হয়।’ সূত্র: এএফপি
শেয়ার করুন
রূপান্তর ডেস্ক | ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

আন্তর্জাতিক চাপ এবং সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের সমালোচনার জেরে মন্ত্রিসভায় ব্যাপক রদবদল করেছে সৌদি আরব। সৌদি আরবের বাদশাহ সালমানের নির্দেশে এই রদবদলের ঘটনা ঘটেছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবায়েরসহ বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে অপসারণ করা হয়েছে।
নতুন এই রদবদলে দেশটির ন্যাশনাল গার্ড, তথ্য এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্পেস এজেন্সির প্রধানের পদে পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু অর্থনৈতিক অবনমন সত্ত্বেও জ্বালানি এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ে কোনো পরিবর্তন আসেনি। এমনকি খাশোগি হত্যাকাণ্ডের জন্য যিনি সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হয়েছে সেই যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকেও সরানো হয়নি। গত ২ অক্টোবরে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে জামাল খাশোগি হত্যার ঘটনায় তুরস্ক সরাসরি যুবরাজকে দায়ী করেছে।
সৌদি রাজতন্ত্রের প্রকাশিত ডিক্রিতে জানা যায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আদেল আল জুবায়েরের জায়গায় সাবেক অর্থমন্ত্রী ইব্রাহিম আল আসাফকে বসানো হয়েছে। গত বছর দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
বিশ্লেষকরা বলছেন, খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সৌদি আরবের ক্ষুণœ ভাবমূর্তি অক্ষত রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেননি আদেল আল জুবায়ের। এ কারণেই তাকে মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারণ করা হয়েছে। যদিও সৌদি রাজপরিবারের পক্ষ থেকে তার অপসারণ প্রশ্নে কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।
ন্যাশনাল গার্ডের প্রধান করা হয়েছে প্রিন্স আবদুল্লাহ বিন বান্দারকে। এছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া মুসায়েদ আল আইবানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মন্ত্রিসভা এবং প্রশাসনের বিভিন্ন স্থানে এই রদবদল করে মূলত যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকেই বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন বাদশাহ সালমান। সৌদিপন্থি থিংকট্যাংক দ্য অ্যারাবিয়া ফাউন্ডেশনের প্রধান আলী শাহিবি এক টুইটে এই রদবদলকে ‘ক্ষমতা দৃঢ়করণ’ বলে অভিহিত করেছেন।
প্রশাসন যন্ত্রে পরিবর্তনের অংশ হিসেবে রোটানা ব্রডকাস্টারের নির্বাহী তুর্কি আল শাবানাকে নতুন তথ্যমন্ত্রী করা হয়েছে। আর তথ্যমন্ত্রী আওয়াদ আল আওয়াদকে রয়্যাল কোর্টের উপদেষ্টা করা হয়েছে। যুবরাজের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত তুর্কি আল শেখকে রাজতন্ত্রের স্পোর্টস কমিশনের প্রধানের পদ থেকে অপসারণ করে বিনোদন কর্র্তৃপক্ষের প্রধান বানানো হয়েছে। আহমেদ আল খাতিবকে করা হয়েছে পর্যটন কর্র্তৃপক্ষ প্রধান। সৌদি বাদশাহ স্পেস এজেন্সির প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন তার সন্তান প্রিন্স সুলতান বিন সালমানকে।
এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে সৌদি রাজতন্ত্র খাশোগি হত্যাকাণ্ডে যে ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে তা ফিরিয়ে আনতে চাইছে। বলা হচ্ছে, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের পর দেশটি সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। গালফ রিসার্চ সেন্টারের সিনিয়র ফেলো মোহাম্মদ আল ইয়াহিয়া বলেন, ‘আপনি কোনো উন্নয়ন সম্ভাবনা থেকে খাশোগি হত্যাকাণ্ডকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবেন না। সৌদি আরবে প্রতি চার বছরে ক্ষমতার রদবদল করা হয়। এ সময় কিছু তরুণ প্রিন্সদের নিয়োগ দেওয়া হয়।’ সূত্র: এএফপি