যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াই সিপিটিপিপি কার্যকর
রূপান্তর ডেস্ক | ১ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতিমালা ঢেলে সাজাতে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াই ১১ দেশের করা বাণিজ্য চুক্তি কার্যকর হতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে সিএনএন। নতুন এই কমপ্রিহেনসিভ অ্যান্ড প্রোগ্রেসিভ অ্যাগ্রিমেন্ট ফর ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টারশিপে (সিপিটিপিপি) শুল্কমুক্ত সুবিধা রাখা হয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য প্রবেশের রাস্তা আরো সংকীর্ণ হচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুর এই চুক্তির উদ্যোক্তা দেশ। এ ছাড়া আছে ব্রুনাই, চিলি, মালয়েশিয়া, পেরু ও ভিয়েতনাম। চলতি বছরের মার্চে এই চুক্তি হয়েছিল।
নতুন এই চুক্তির আওতায় জাপান ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে নতুন এক চুক্তি করতে যাচ্ছে। এই চুক্তির আওতায় শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রাধান্য পাবে এবং আগামী ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকে ওই চুক্তি কার্যকর হবে। যুক্তরাষ্ট্রের গম অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ভিন্স পিটারসন জাপানের সঙ্গে মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই চুক্তির ফলে আমাদের প্রতিযোগী দেশ অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডা সুবিধা পাবে এবং আমাদের চাষিরা তা তাকিয়ে দেখবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে যে ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিটিপি) চুক্তির কথা বলা হয়েছিল, বর্তমান চুক্তি ঠিক তার বিপরীত। নতুন এই চুক্তিতে সম্মত দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের জন্য দরজা উন্মুক্ত রেখেছে। তবে তারা চুক্তির নীতিমালায় সম্মত হলেই কেবল এটা সম্ভব হবে। সিপিটিপিপির মধ্যে এবার মেধা সম্পদের নিরাপত্তা এবং ডিজিটাল বাণিজ্যের বিষয়টি প্রাধান্য পায়। এ ছাড়া এমন কিছু বিষয় জায়গা পায় যা ট্রাম্পের নর্থ আমেরিকা ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্টের বিষয়বস্তু ছিল। চুক্তিতে দ্বিপক্ষীয় এবং ত্রিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির জায়গা রাখা হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে আমেরিকার ক্ষুদ্র এবং মাঝারি কোম্পানিগুলো সম্ভবত হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের টাইসন ফুড এবং ওয়েলচ জুস কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক প্রতিনিধি দপ্তরের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে। কারণ তাদের পণ্য এখনই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অসুবিধাজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে।
কানাডার অ্যাগ্রি ফুড ট্রেড অ্যালায়েন্সের প্রেসিডেন্ট ব্রায়ান ইনস বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বর্তমানে বাণিজ্যের বিষয়টি স্পর্শকাতর। এখন আমরা অনেক অপ্রক্রিয়াজাত এবং কাঁচা বীজ জাপানে পাঠাতে পারব। কিন্তু ক্যানোলা তেলের ওপর ভ্যাট থাকায় জাপানে এই তেল রপ্তানি করা যাচ্ছে না। এটা সত্যিই আনন্দের যে শেষমেশ চুক্তিটি কার্যকর হচ্ছে।’
সিপিটিপিপির ফলে চুক্তিবদ্ধ দেশগুলোর মধ্যে ১৪৯ মিলিয়ন ডলারের শুল্ক সুরক্ষা হবে বলে জানান নিউজিল্যান্ডের বাণিজ্যমন্ত্রী ডেভিড পার্কার। বিনিয়োগকারী ব্যাংক এইচএসবিসি জানিয়েছে, চুক্তির আওতাধীন ছয়টি দেশ গতকাল রবিবার থেকেই ৯০ শতাংশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতে শুরু করেছে। বাকি পাঁচটি দেশ যথাক্রমে এই সুবিধা পাবে।
শেয়ার করুন
রূপান্তর ডেস্ক | ১ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতিমালা ঢেলে সাজাতে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াই ১১ দেশের করা বাণিজ্য চুক্তি কার্যকর হতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে সিএনএন। নতুন এই কমপ্রিহেনসিভ অ্যান্ড প্রোগ্রেসিভ অ্যাগ্রিমেন্ট ফর ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টারশিপে (সিপিটিপিপি) শুল্কমুক্ত সুবিধা রাখা হয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য প্রবেশের রাস্তা আরো সংকীর্ণ হচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুর এই চুক্তির উদ্যোক্তা দেশ। এ ছাড়া আছে ব্রুনাই, চিলি, মালয়েশিয়া, পেরু ও ভিয়েতনাম। চলতি বছরের মার্চে এই চুক্তি হয়েছিল।
নতুন এই চুক্তির আওতায় জাপান ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে নতুন এক চুক্তি করতে যাচ্ছে। এই চুক্তির আওতায় শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রাধান্য পাবে এবং আগামী ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকে ওই চুক্তি কার্যকর হবে। যুক্তরাষ্ট্রের গম অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ভিন্স পিটারসন জাপানের সঙ্গে মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই চুক্তির ফলে আমাদের প্রতিযোগী দেশ অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডা সুবিধা পাবে এবং আমাদের চাষিরা তা তাকিয়ে দেখবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে যে ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিটিপি) চুক্তির কথা বলা হয়েছিল, বর্তমান চুক্তি ঠিক তার বিপরীত। নতুন এই চুক্তিতে সম্মত দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের জন্য দরজা উন্মুক্ত রেখেছে। তবে তারা চুক্তির নীতিমালায় সম্মত হলেই কেবল এটা সম্ভব হবে। সিপিটিপিপির মধ্যে এবার মেধা সম্পদের নিরাপত্তা এবং ডিজিটাল বাণিজ্যের বিষয়টি প্রাধান্য পায়। এ ছাড়া এমন কিছু বিষয় জায়গা পায় যা ট্রাম্পের নর্থ আমেরিকা ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্টের বিষয়বস্তু ছিল। চুক্তিতে দ্বিপক্ষীয় এবং ত্রিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির জায়গা রাখা হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে আমেরিকার ক্ষুদ্র এবং মাঝারি কোম্পানিগুলো সম্ভবত হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের টাইসন ফুড এবং ওয়েলচ জুস কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক প্রতিনিধি দপ্তরের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে। কারণ তাদের পণ্য এখনই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অসুবিধাজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে।
কানাডার অ্যাগ্রি ফুড ট্রেড অ্যালায়েন্সের প্রেসিডেন্ট ব্রায়ান ইনস বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বর্তমানে বাণিজ্যের বিষয়টি স্পর্শকাতর। এখন আমরা অনেক অপ্রক্রিয়াজাত এবং কাঁচা বীজ জাপানে পাঠাতে পারব। কিন্তু ক্যানোলা তেলের ওপর ভ্যাট থাকায় জাপানে এই তেল রপ্তানি করা যাচ্ছে না। এটা সত্যিই আনন্দের যে শেষমেশ চুক্তিটি কার্যকর হচ্ছে।’
সিপিটিপিপির ফলে চুক্তিবদ্ধ দেশগুলোর মধ্যে ১৪৯ মিলিয়ন ডলারের শুল্ক সুরক্ষা হবে বলে জানান নিউজিল্যান্ডের বাণিজ্যমন্ত্রী ডেভিড পার্কার। বিনিয়োগকারী ব্যাংক এইচএসবিসি জানিয়েছে, চুক্তির আওতাধীন ছয়টি দেশ গতকাল রবিবার থেকেই ৯০ শতাংশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতে শুরু করেছে। বাকি পাঁচটি দেশ যথাক্রমে এই সুবিধা পাবে।