করোনার চেয়ে ক্ষুধা ভয়ংকর!
রূপান্তর ডেস্ক | ২৬ মার্চ, ২০২০ ০০:০০
ভারতের ব্যস্ত রাস্তাগুলো সুনসান ফাঁকা। মাঝেমধ্যে পণ্য সরবরাহের গাড়ির গ্লাভস ও মাস্ক পরিহিত কর্মীদের দেখা যায়। চারপাশের সব উন্নয়নের চলমানতা স্থিরদৃশ্য হয়ে গেছে। টানা ২১ দিন ধরে ভারতে লকডাউন চলবে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪৯২ জন সংক্রমিত ও ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। চীনের অবস্থা আরও খারাপ হলেও দেশটি গোটা দেশে লকডাউন জারি করেনি। কিন্তু বিশে^র দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনসংখ্যার দেশ ভারতের লকডাউন দেওয়া নিয়ে দেশটির মধ্যে ও বাইরে সমালোচনা চলছে।
লকডাউনের পর দৈনিক মজুরির ওপর নির্ভরশীল লোকজন কীভাবে সামনের দিনগুলোর মোকাবিলা করবে তার খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেছেন বিবিসির সাংবাদিক বিকাশ পান্ডে। তার অনুসন্ধান মতে, ভারতের রাজধানী দিল্লির নয়ডা অঞ্চলের লেবার চক নিয়মিত নির্মাণশ্রমিকে ভর্তি থাকে। ভবন নির্মাতারা এ জায়গায় এসে শ্রমিক ভাড়া করে নিয়ে যান। কিন্তু লকডাউনের কারণ ওই এলাকা এখন ফাঁকা। গোটা এলাকায় শুধু পাখির কিচিরমিচির। এমন দৃশ্য ওই এলাকায় কল্পনাতীত। উত্তর প্রদেশের বানডা জেলা থেকে কাজের সন্ধানে আসা রমেশ কুমার জানান, তাদের ভাড়া নেওয়ার জন্য এখানে কেউ না-ও আসতে পারেন, এটা জানেন তিনি। কিন্তু তারপরও কোনো কাজ পাওয়া যায় কি না দেখতে এসেছেন। তার ভাষ্যে, ‘প্রতিদিন আমি ৬০০ রুপি উপার্জন করি। ঘরে খাওয়ার পাঁচজন মানুষ। কয়েক দিনের মধ্যেই ঘরে যে খাবার আছে তা শেষ হয়ে যাবে। করোনাভাইরাসের ভয় আমারও আছে, কিন্তু সন্তানরা না খেয়ে আছে। এটা আমি সহ্য করতে পারব না।’
এ দৃশ্য শুধু রমেশের একার নয়। ভারতজুড়ে কোটি কোটি দিনমজুরের এ অবস্থা। লকডাউনের সময় তাদের উপার্জনের কোনো সম্ভাবনা নেই। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই অনেকের খাবার শেষ হয়ে যাবে। নিকট আগামীর অনিশ্চয়তা নিয়ে দিন কাটাচ্ছে দিনমজুররা। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্যানুসারে, ভারতের শ্রমিকদের অন্তত ৯০ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত। তাদের অনেকেই নিরাপত্তারক্ষী, ক্লিনার, রিকশাচালক, হকার, পরিচ্ছন্নতা ও গৃহকর্মী। এ শ্রমিকদের অধিকাংশেরই নেই পেনশন সুবিধা। অসুস্থতাজনিত, সবেতন ছুটি বা কোনো ধরনের বীমা নেই তাদের।
শেয়ার করুন
রূপান্তর ডেস্ক | ২৬ মার্চ, ২০২০ ০০:০০

ভারতের ব্যস্ত রাস্তাগুলো সুনসান ফাঁকা। মাঝেমধ্যে পণ্য সরবরাহের গাড়ির গ্লাভস ও মাস্ক পরিহিত কর্মীদের দেখা যায়। চারপাশের সব উন্নয়নের চলমানতা স্থিরদৃশ্য হয়ে গেছে। টানা ২১ দিন ধরে ভারতে লকডাউন চলবে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪৯২ জন সংক্রমিত ও ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। চীনের অবস্থা আরও খারাপ হলেও দেশটি গোটা দেশে লকডাউন জারি করেনি। কিন্তু বিশে^র দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনসংখ্যার দেশ ভারতের লকডাউন দেওয়া নিয়ে দেশটির মধ্যে ও বাইরে সমালোচনা চলছে।
লকডাউনের পর দৈনিক মজুরির ওপর নির্ভরশীল লোকজন কীভাবে সামনের দিনগুলোর মোকাবিলা করবে তার খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেছেন বিবিসির সাংবাদিক বিকাশ পান্ডে। তার অনুসন্ধান মতে, ভারতের রাজধানী দিল্লির নয়ডা অঞ্চলের লেবার চক নিয়মিত নির্মাণশ্রমিকে ভর্তি থাকে। ভবন নির্মাতারা এ জায়গায় এসে শ্রমিক ভাড়া করে নিয়ে যান। কিন্তু লকডাউনের কারণ ওই এলাকা এখন ফাঁকা। গোটা এলাকায় শুধু পাখির কিচিরমিচির। এমন দৃশ্য ওই এলাকায় কল্পনাতীত। উত্তর প্রদেশের বানডা জেলা থেকে কাজের সন্ধানে আসা রমেশ কুমার জানান, তাদের ভাড়া নেওয়ার জন্য এখানে কেউ না-ও আসতে পারেন, এটা জানেন তিনি। কিন্তু তারপরও কোনো কাজ পাওয়া যায় কি না দেখতে এসেছেন। তার ভাষ্যে, ‘প্রতিদিন আমি ৬০০ রুপি উপার্জন করি। ঘরে খাওয়ার পাঁচজন মানুষ। কয়েক দিনের মধ্যেই ঘরে যে খাবার আছে তা শেষ হয়ে যাবে। করোনাভাইরাসের ভয় আমারও আছে, কিন্তু সন্তানরা না খেয়ে আছে। এটা আমি সহ্য করতে পারব না।’
এ দৃশ্য শুধু রমেশের একার নয়। ভারতজুড়ে কোটি কোটি দিনমজুরের এ অবস্থা। লকডাউনের সময় তাদের উপার্জনের কোনো সম্ভাবনা নেই। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই অনেকের খাবার শেষ হয়ে যাবে। নিকট আগামীর অনিশ্চয়তা নিয়ে দিন কাটাচ্ছে দিনমজুররা। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্যানুসারে, ভারতের শ্রমিকদের অন্তত ৯০ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত। তাদের অনেকেই নিরাপত্তারক্ষী, ক্লিনার, রিকশাচালক, হকার, পরিচ্ছন্নতা ও গৃহকর্মী। এ শ্রমিকদের অধিকাংশেরই নেই পেনশন সুবিধা। অসুস্থতাজনিত, সবেতন ছুটি বা কোনো ধরনের বীমা নেই তাদের।