ভারতে লকডাউন
হেঁটে বাড়ি ফেরার আগেই মৃত্যু
রূপান্তর ডেস্ক | ৩০ মার্চ, ২০২০ ০০:০০
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধ করতে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত সারা দেশে ২১ দিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছে। এই লকডাউনের মধ্যে বিত্তবান ও মধ্যবিত্তরা নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে মজুদ করলেও নিম্নবিত্তরা তা করতে পারেনি। ফলে অনেককেই সামনের দিনগুলোতে না খেয়ে থাকতে হতে পারে এমন আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই রণবীর সিং নামে ৩৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তি রাজধানী দিল্লি থেকে হেঁটে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। কারণ লকডাউনের কারণে গাড়ি বন্ধ।
রণবীর সিং ৩০০ কিলোমিটার হেঁটে আর বাড়ি যেতে পারেননি। পথেই তার মৃত্যু হয়। দিল্লিতে ডেলিভারি এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন মধ্যপ্রদেশের রণবীর। তার মতো লাখো শ্রমিক মোদির ডাকা লকডাউনের কারণে বেকার হয়ে পড়েছেন। দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করা এসব লোক টাকার অভাবে খাবারও কিনতে পারছেন না, হারিয়েছেন আশ্রয়; ফলে গ্রামে নিজ বাড়িতে ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তারা। দিল্লি থেকে বাড়ির পথে রওনা হওয়া এমন কয়েক হাজার লোকের একজন ছিলেন রণবীর। সব গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কয়েক শ কিলোমিটার দূরে বাড়ির পথে হেঁটেই রওনা হয়েছিলেন তিনি। রণবীবের বাড়ি মধ্যপ্রদেশের মোরেনা জেলায়। দিল্লি থেকে তার গ্রামের বাড়ির দূরত্ব প্রায় ৩২৬ কিলোমিটার। দিল্লি থেকে মহাসড়ক ধরে উত্তর প্রদেশের আগ্রা পর্যন্ত প্রায় ২৩৭ কিলোমিটার যাওয়ার পর কাহিল হয়ে পড়েন তিনি। স্থানীয় এক দোকানদার তাকে চা ও বিস্কুট খেতে দেন। কিন্তু এর মধ্যেই হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয় তার। এ সময় নিজ গ্রাম থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে ছিলেন তিনি।
উত্তর প্রদেশের আশপাশের রাজ্যগুলো থেকে রাজধানীতে কাজের জন্য আসা হাজার হাজার লোক গত শনিবার রাতে বাড়ি ফেরার জন্য জড়ো হয়েছিল দিল্লির আনন্দ বিহার বাস টার্মিনালে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউনের কারণে বাস, ট্রেনসহ সব ধরনের পরিবহন বন্ধ থাকায় তপ্ত রোদের মধ্যে শত শত কিলোমিটার হেঁটে বাড়ির পথে রওনা হন তাদের অনেকেই। তাদের অনেকের সঙ্গে স্ত্রী, সন্তানরাও ছিলেন। উত্তর প্রদেশ ও দিল্লি সরকার বাসের ব্যবস্থা করে তাদের নিজ নিজ গন্তব্যে পাঠানো শুরু করে। তারা এক হাজার বাসের ব্যবস্থা করেছে বলে জানিয়েছে উত্তর প্রদেশ সরকার, আর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ২০০ বাসের ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু সবকিছুর পরেও অনেক মানুষ সরকারের ঠিক করে দেওয়া পরিবহনে বাড়ি যেতে পারেননি বিভিন্ন কারণে।
শেয়ার করুন
রূপান্তর ডেস্ক | ৩০ মার্চ, ২০২০ ০০:০০

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধ করতে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত সারা দেশে ২১ দিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছে। এই লকডাউনের মধ্যে বিত্তবান ও মধ্যবিত্তরা নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে মজুদ করলেও নিম্নবিত্তরা তা করতে পারেনি। ফলে অনেককেই সামনের দিনগুলোতে না খেয়ে থাকতে হতে পারে এমন আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই রণবীর সিং নামে ৩৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তি রাজধানী দিল্লি থেকে হেঁটে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। কারণ লকডাউনের কারণে গাড়ি বন্ধ।
রণবীর সিং ৩০০ কিলোমিটার হেঁটে আর বাড়ি যেতে পারেননি। পথেই তার মৃত্যু হয়। দিল্লিতে ডেলিভারি এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন মধ্যপ্রদেশের রণবীর। তার মতো লাখো শ্রমিক মোদির ডাকা লকডাউনের কারণে বেকার হয়ে পড়েছেন। দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করা এসব লোক টাকার অভাবে খাবারও কিনতে পারছেন না, হারিয়েছেন আশ্রয়; ফলে গ্রামে নিজ বাড়িতে ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তারা। দিল্লি থেকে বাড়ির পথে রওনা হওয়া এমন কয়েক হাজার লোকের একজন ছিলেন রণবীর। সব গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কয়েক শ কিলোমিটার দূরে বাড়ির পথে হেঁটেই রওনা হয়েছিলেন তিনি। রণবীবের বাড়ি মধ্যপ্রদেশের মোরেনা জেলায়। দিল্লি থেকে তার গ্রামের বাড়ির দূরত্ব প্রায় ৩২৬ কিলোমিটার। দিল্লি থেকে মহাসড়ক ধরে উত্তর প্রদেশের আগ্রা পর্যন্ত প্রায় ২৩৭ কিলোমিটার যাওয়ার পর কাহিল হয়ে পড়েন তিনি। স্থানীয় এক দোকানদার তাকে চা ও বিস্কুট খেতে দেন। কিন্তু এর মধ্যেই হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয় তার। এ সময় নিজ গ্রাম থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে ছিলেন তিনি।
উত্তর প্রদেশের আশপাশের রাজ্যগুলো থেকে রাজধানীতে কাজের জন্য আসা হাজার হাজার লোক গত শনিবার রাতে বাড়ি ফেরার জন্য জড়ো হয়েছিল দিল্লির আনন্দ বিহার বাস টার্মিনালে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউনের কারণে বাস, ট্রেনসহ সব ধরনের পরিবহন বন্ধ থাকায় তপ্ত রোদের মধ্যে শত শত কিলোমিটার হেঁটে বাড়ির পথে রওনা হন তাদের অনেকেই। তাদের অনেকের সঙ্গে স্ত্রী, সন্তানরাও ছিলেন। উত্তর প্রদেশ ও দিল্লি সরকার বাসের ব্যবস্থা করে তাদের নিজ নিজ গন্তব্যে পাঠানো শুরু করে। তারা এক হাজার বাসের ব্যবস্থা করেছে বলে জানিয়েছে উত্তর প্রদেশ সরকার, আর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ২০০ বাসের ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু সবকিছুর পরেও অনেক মানুষ সরকারের ঠিক করে দেওয়া পরিবহনে বাড়ি যেতে পারেননি বিভিন্ন কারণে।