জমাট বাঁধছে না আর্কটিকের বরফ!
রূপান্তর ডেস্ক | ২৩ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০
রেকর্ড শুরুর পর থেকে প্রত্যেক বছর অক্টোবরের আগেই আর্কটিক সাগরে বরফের জমাট হয়ে আসছে। কিন্তু এবারই প্রথম সাইবেরিয়া অঞ্চলের মূল আর্কটিক সাগরের বরফ অক্টোবরেও জমাট শুরু হয়নি বলে খবর দিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
জলবায়ু বিজ্ঞানীরা বলছেন, আটলান্টিকের পানির প্রবেশ এবং উত্তর রাশিয়ায় উষ্ণতা দীর্ঘায়িত হওয়ায় ল্যাপটেভ সাগরে বার্ষিক বরফ জমাটে দেরি হচ্ছে। পুরো মেরু অঞ্চলে এর মারাত্মক প্রভাব পড়বে বলে সতর্ক করছেন তারা।
সম্প্রতি আর্কটিক সাগরের উষ্ণতা গড়ে ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে পৌঁছেছে, যা উষ্ণায়নের রেকর্ড ভেঙে দেয় এবং গত শীত থেকে সাগরের বরফ অস্বাভাবিকভাবে গলছে। আটকে থাকা তাপ বায়ুমণ্ডলে বিচ্ছিন্ন হতে দীর্ঘ সময় নেয়। এমনকি বছরের এ সময়ে সূর্য দিগন্তের ওপরে এক ঘণ্টা কিংবা দিনে দুবারের বেশি তাপ দিচ্ছে।
কলোরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষক জাচারি ল্যাবে সাইবেরিয়ান আর্কটিক অঞ্চলে এখনো বরফের জমাট না বাঁধাকে অপ্রত্যাশিত বলছেন। তিনি এটিকে মানুষের কারণে জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবের সঙ্গে তুলনা করেন। দ্য গার্ডিয়ানকে ইমেল বার্তায় জাচারি ল্যাবে বলেন, ‘আর্কটিকের দ্রুত পরিবর্তনে ২০২০ সাল আরেকটি বছর হিসেবে যুক্ত হলো। গ্রিনহাউজ গ্যাসের পদ্ধতিগত হ্রাস ছাড়াই আমাদের প্রথম বরফমুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা জেগেছে।’
সম্প্রতি এক গবেষণায় বলা হয়েছে, শিল্পায়ন ও কৃষি নির্গমনের প্রভাবে এ বছর সাইবেরিয়ায় কমপক্ষে ৬০০ বার উষ্ণায়ন হয়েছে। তবে উষ্ণ বাতাসের তাপমাত্রা বরফ গঠন ধীরের একমাত্র কারণ নয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আটলান্টিক স্রোত আর্কটিকে চাপ তৈরি করছে এবং উষ্ণ গভীর পানি ও শীতল পৃষ্ঠের মধ্যে স্বাভাবিক স্তর ভেঙে দিচ্ছে। ফলে বরফের গঠন কঠিন হয়ে পড়ছে।
ইউএস ন্যাশনাল স্নো অ্যান্ড আইস ডেটা সেন্টারের জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞান গবেষক ওয়াল্ট মাইয়ার বলেন, ‘১৯৭৯ সালে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বরফের গঠন রেকর্ড শুরু হয়। এরপর ২০০৭ থেকে ’২০ সালÑ শেষ ১৪ বছরে গঠন প্রক্রিয়া সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং অব্যাহতভাবে নিম্নমুখী।’ তিনি আরও বলেন, ‘আর্কটিকের পুরনো বরফের বেশিরভাগ নেই। মৌসুমি বরফও সরু হচ্ছে। ১৯৮০ সালের পর থেকে অর্ধেক বরফ সরু হয়ে গেছে। আর্কটিকে প্রথম বরফমুক্ত গ্রীষ্ম না হওয়া পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকবে।’ আর এসব তথ্য ও পদ্ধতি বলছে, ২০৩০ থেকে ’৫০ সালের মধ্যেই বরফমুক্তের ঘটনা ঘটবে!
শেয়ার করুন
রূপান্তর ডেস্ক | ২৩ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০

রেকর্ড শুরুর পর থেকে প্রত্যেক বছর অক্টোবরের আগেই আর্কটিক সাগরে বরফের জমাট হয়ে আসছে। কিন্তু এবারই প্রথম সাইবেরিয়া অঞ্চলের মূল আর্কটিক সাগরের বরফ অক্টোবরেও জমাট শুরু হয়নি বলে খবর দিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
জলবায়ু বিজ্ঞানীরা বলছেন, আটলান্টিকের পানির প্রবেশ এবং উত্তর রাশিয়ায় উষ্ণতা দীর্ঘায়িত হওয়ায় ল্যাপটেভ সাগরে বার্ষিক বরফ জমাটে দেরি হচ্ছে। পুরো মেরু অঞ্চলে এর মারাত্মক প্রভাব পড়বে বলে সতর্ক করছেন তারা।
সম্প্রতি আর্কটিক সাগরের উষ্ণতা গড়ে ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে পৌঁছেছে, যা উষ্ণায়নের রেকর্ড ভেঙে দেয় এবং গত শীত থেকে সাগরের বরফ অস্বাভাবিকভাবে গলছে। আটকে থাকা তাপ বায়ুমণ্ডলে বিচ্ছিন্ন হতে দীর্ঘ সময় নেয়। এমনকি বছরের এ সময়ে সূর্য দিগন্তের ওপরে এক ঘণ্টা কিংবা দিনে দুবারের বেশি তাপ দিচ্ছে।
কলোরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষক জাচারি ল্যাবে সাইবেরিয়ান আর্কটিক অঞ্চলে এখনো বরফের জমাট না বাঁধাকে অপ্রত্যাশিত বলছেন। তিনি এটিকে মানুষের কারণে জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবের সঙ্গে তুলনা করেন। দ্য গার্ডিয়ানকে ইমেল বার্তায় জাচারি ল্যাবে বলেন, ‘আর্কটিকের দ্রুত পরিবর্তনে ২০২০ সাল আরেকটি বছর হিসেবে যুক্ত হলো। গ্রিনহাউজ গ্যাসের পদ্ধতিগত হ্রাস ছাড়াই আমাদের প্রথম বরফমুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা জেগেছে।’
সম্প্রতি এক গবেষণায় বলা হয়েছে, শিল্পায়ন ও কৃষি নির্গমনের প্রভাবে এ বছর সাইবেরিয়ায় কমপক্ষে ৬০০ বার উষ্ণায়ন হয়েছে। তবে উষ্ণ বাতাসের তাপমাত্রা বরফ গঠন ধীরের একমাত্র কারণ নয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আটলান্টিক স্রোত আর্কটিকে চাপ তৈরি করছে এবং উষ্ণ গভীর পানি ও শীতল পৃষ্ঠের মধ্যে স্বাভাবিক স্তর ভেঙে দিচ্ছে। ফলে বরফের গঠন কঠিন হয়ে পড়ছে।
ইউএস ন্যাশনাল স্নো অ্যান্ড আইস ডেটা সেন্টারের জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞান গবেষক ওয়াল্ট মাইয়ার বলেন, ‘১৯৭৯ সালে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বরফের গঠন রেকর্ড শুরু হয়। এরপর ২০০৭ থেকে ’২০ সালÑ শেষ ১৪ বছরে গঠন প্রক্রিয়া সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং অব্যাহতভাবে নিম্নমুখী।’ তিনি আরও বলেন, ‘আর্কটিকের পুরনো বরফের বেশিরভাগ নেই। মৌসুমি বরফও সরু হচ্ছে। ১৯৮০ সালের পর থেকে অর্ধেক বরফ সরু হয়ে গেছে। আর্কটিকে প্রথম বরফমুক্ত গ্রীষ্ম না হওয়া পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকবে।’ আর এসব তথ্য ও পদ্ধতি বলছে, ২০৩০ থেকে ’৫০ সালের মধ্যেই বরফমুক্তের ঘটনা ঘটবে!