বদলাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক
বাইডেনের পররাষ্ট্রনীতি
রূপান্তর ডেস্ক | ২৬ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। গঠন করতে শুরু করেছেন তার মন্ত্রিসভা। ইতিমধ্যে মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন সদস্যের নামও ঘোষণা করেছেন। মন্ত্রিসভার সভ্যদের নাম ঘোষণা ও তার পরপরই বাইডেনের বক্তব্য স্পষ্ট করেছে যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে নীতিতে চলেছেন সে পথে হাঁটবেন না তিনি। তার পররাষ্ট্রনীতিও হবে ট্রাম্পের চাইতে ভিন্ন। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক হিসাব-নিকাশই পাল্টে যাবে।
গত মঙ্গলবার বাইডেন জানিয়ে দিয়েছেন, ট্রাম্পের নীতির সঙ্গে তার নীতির কোনো মিল থাকবে না। বাইডেনের বক্তব্য, বিশ্বের দরবারে যুক্তরাষ্ট্র আবার আগের অবস্থানে ফিরবে। ট্রাম্পের নীতি ছিল ‘আমেরিকা ফার্স্ট’। অর্থাৎ আগে যুক্তরাষ্ট্রের কথা ভাবো, তারপর বিশ্বের। কিন্তু দেশটির দীর্ঘ ইতিহাস তেমন নয়। যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রপ্রধানরা বরাবরই বিশ্বের নেতা হয়ে উঠেছেন। বাইডেনও তাদের মতোই হতে চান।
বিবিসি জানাচ্ছে, মন্ত্রিসভায় জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিকে। ওবামার আমলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে ওবামা আমলের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে মনোনীত পেয়েছেন জ্যাক সুলিভান। তারা দুজনই ২০১৫ সালে জন কেরির নেতৃত্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে ইরানের সঙ্গে ছয় জাতির পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরের আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।
মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে আগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা তিন নেতাকে নিজের মন্ত্রিসভায় রেখে বাইডেন আসলে দেখালেন তিনি ওই অঞ্চলটিকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেমন ইসরায়েলকে কেন্দ্র করে ওই অঞ্চলে নতুন একটি রাজনৈতিক বলয় তৈরি করতে চেয়েছেন, বাইডেন তেমন কিছু করবেন কি-না তা নিশ্চিত না হলেও ফিলিস্তিন তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হবে। ইসরায়েলের প্রভাবশালী পত্রিকা হারেৎস এক প্রতিবেদনে বলেছে, গত চার বছর ধরে ফিলিস্তিন কর্র্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আব্বাসকে ব্যাপক চাপে রেখেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। এখন সেই চাপে পরিবর্তন আসতে পারে।
জো বাইডেন মন্ত্রিসভার ছয় সদস্যের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে বলেন, আমি এমন একটি টিম নিয়ে কাজ করতে চাই যারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমেরিকার ভাবমর্যাদা পুনরুদ্ধার করতে আমাকে সাহায্য করবেন যাতে আমি বিশ্বের সামনে থাকা বৃহৎ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে পারি।
এদিকে গত সোমবারই জার্মানিতে বৈঠকে বসেছিলেন যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। বাইডেনের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের ইরান নীতি কী হবে এবং কীভাবে পরমাণু ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব হবে, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা। কারণ বোঝাই যাচ্ছে ক্ষমতায় এসে এই বিষয়গুলো নিয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেবেন বাইডেন।
তবে মঙ্গলবার এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন জানিয়েছেন, আপাতত তার প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্য করোনা সংকট থেকে দেশকে উদ্ধার করা। সে জন্য প্রথমেই টাস্ক ফোর্স তৈরি করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে জিএসএ সম্মতি দেওয়ার পর মঙ্গলবার থেকেই নিরাপত্তা সংক্রান্ত গোপন তথ্য তার কাছে আসতে শুরু করেছে। আর্থিক বিষয়েও রিপোর্ট পেতে তিনি শুরু করেছেন।
শেয়ার করুন
বাইডেনের পররাষ্ট্রনীতি
রূপান্তর ডেস্ক | ২৬ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। গঠন করতে শুরু করেছেন তার মন্ত্রিসভা। ইতিমধ্যে মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন সদস্যের নামও ঘোষণা করেছেন। মন্ত্রিসভার সভ্যদের নাম ঘোষণা ও তার পরপরই বাইডেনের বক্তব্য স্পষ্ট করেছে যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে নীতিতে চলেছেন সে পথে হাঁটবেন না তিনি। তার পররাষ্ট্রনীতিও হবে ট্রাম্পের চাইতে ভিন্ন। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক হিসাব-নিকাশই পাল্টে যাবে।
গত মঙ্গলবার বাইডেন জানিয়ে দিয়েছেন, ট্রাম্পের নীতির সঙ্গে তার নীতির কোনো মিল থাকবে না। বাইডেনের বক্তব্য, বিশ্বের দরবারে যুক্তরাষ্ট্র আবার আগের অবস্থানে ফিরবে। ট্রাম্পের নীতি ছিল ‘আমেরিকা ফার্স্ট’। অর্থাৎ আগে যুক্তরাষ্ট্রের কথা ভাবো, তারপর বিশ্বের। কিন্তু দেশটির দীর্ঘ ইতিহাস তেমন নয়। যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রপ্রধানরা বরাবরই বিশ্বের নেতা হয়ে উঠেছেন। বাইডেনও তাদের মতোই হতে চান।
বিবিসি জানাচ্ছে, মন্ত্রিসভায় জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিকে। ওবামার আমলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে ওবামা আমলের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে মনোনীত পেয়েছেন জ্যাক সুলিভান। তারা দুজনই ২০১৫ সালে জন কেরির নেতৃত্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে ইরানের সঙ্গে ছয় জাতির পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরের আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।
মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে আগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা তিন নেতাকে নিজের মন্ত্রিসভায় রেখে বাইডেন আসলে দেখালেন তিনি ওই অঞ্চলটিকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেমন ইসরায়েলকে কেন্দ্র করে ওই অঞ্চলে নতুন একটি রাজনৈতিক বলয় তৈরি করতে চেয়েছেন, বাইডেন তেমন কিছু করবেন কি-না তা নিশ্চিত না হলেও ফিলিস্তিন তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হবে। ইসরায়েলের প্রভাবশালী পত্রিকা হারেৎস এক প্রতিবেদনে বলেছে, গত চার বছর ধরে ফিলিস্তিন কর্র্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আব্বাসকে ব্যাপক চাপে রেখেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। এখন সেই চাপে পরিবর্তন আসতে পারে।
জো বাইডেন মন্ত্রিসভার ছয় সদস্যের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে বলেন, আমি এমন একটি টিম নিয়ে কাজ করতে চাই যারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমেরিকার ভাবমর্যাদা পুনরুদ্ধার করতে আমাকে সাহায্য করবেন যাতে আমি বিশ্বের সামনে থাকা বৃহৎ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে পারি।
এদিকে গত সোমবারই জার্মানিতে বৈঠকে বসেছিলেন যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। বাইডেনের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের ইরান নীতি কী হবে এবং কীভাবে পরমাণু ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব হবে, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা। কারণ বোঝাই যাচ্ছে ক্ষমতায় এসে এই বিষয়গুলো নিয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেবেন বাইডেন।
তবে মঙ্গলবার এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন জানিয়েছেন, আপাতত তার প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্য করোনা সংকট থেকে দেশকে উদ্ধার করা। সে জন্য প্রথমেই টাস্ক ফোর্স তৈরি করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে জিএসএ সম্মতি দেওয়ার পর মঙ্গলবার থেকেই নিরাপত্তা সংক্রান্ত গোপন তথ্য তার কাছে আসতে শুরু করেছে। আর্থিক বিষয়েও রিপোর্ট পেতে তিনি শুরু করেছেন।