বাইডেনকে আদালতের চ্যালেঞ্জ
অভিবাসী বহিষ্কারাদেশ ইস্যু
রূপান্তর ডেস্ক | ২৮ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০
প্রেসিডেন্ট পদে ক্ষমতায় বসেই জো বাইডেনের প্রথম কাজ হয় সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশগুলো উল্টে দেওয়া। আদেশগুলো উল্টাতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্টকেও নির্বাহী আদেশ দিতে হয়। ফলে বাইডেন প্রথম দিনেই ১৭টি নির্বাহী আদেশ জারি করেন যার প্রত্যেকটিই ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। এ আদেশগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি অনুমোদনহীন অভিবাসীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অনুমোদনহীন অভিবাসীদের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছিলেন। এমনকি ড্রিমার নামে যারা পরিচিত তাদের নাগরিকত্ব প্রশ্নেও কঠোর ছিলেন ট্রাম্প। বাইডেন তার নির্বাহী আদেশে অনুমোদনহীন অভিবাসীদের বহিষ্কারের কার্যক্রম ১০০ দিন পর্যন্ত স্থগিত রাখতে বলেন। কিন্তু প্রেসিডেন্টের এই স্থগিতাদেশ আটকে দিয়েছে দেশটির এক ফেডারেল আদালত। আদালতের এমন সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে আইন বিভাগের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। বিশ্লেষকরা আগেই সতর্ক করে বলেছিলেন, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত উল্টাতে বাইডেন নির্বাহী আদেশ দিলেও বিচার বিভাগীর ব্যবস্থার কারণে সব আদেশ পূরণ নাও হতে পারে। এমনকি মেক্সিকো-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ বন্ধে দেওয়া বাইডেনের নির্দেশটিও আদালতে ছাড় পাবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অনুমোদনহীন অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা প্রশ্নে আদালতের এ আদেশের ফলে পুরো দেশে আগামী ১৪ দিন পর্যন্ত বাইডেনের আদেশ স্থগিত থাকবে।
বিচারপতি টিপটন বলেন, অভিবাসী বহিষ্কার কার্যক্রম ১০০ দিন স্থগিত রাখার পক্ষে বাইডেন প্রশাসন কোনো শক্তিশালী, যৌক্তিক ন্যায্যতা প্রমাণ করতে পারেনি। উভয়পক্ষই এ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বিবরণ জমা দেওয়ার পর আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে বাইডেন প্রশাসন আপিল করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে কবে নাগাদ এ আপিল করা হবে তা নিশ্চিত নয়। আদালতে বিষয়টি দীর্ঘসূত্রতা পেলে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বন্দিশিবিরে থাকা অনুমোদনহীন অভিবাসীদের ভোগান্তি বাড়তে থাকবে। এখনো অনেক অভিবাসী শিশু তাদের পিতা-মাতাকে ছাড়া আলাদা বন্দিশিবিরে আছে। আর এ বিষয়টি নিয়েও যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন চাপের মধ্যে আছে।
জো বাইডেন তার নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি অভিবাসী বহিষ্কার কার্যক্রম ১০০ দিন পর্যন্ত বন্ধ রাখবেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে তিনি তার কথা রাখেন। ট্রাম্পের অভিবাসী নীতির সঙ্গে বাইডেন প্রশাসনের এ নীতি পুরোপরি সাংঘর্ষিক। টিপটনের এ আদেশ বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রথম কোনো আইনি চ্যালেঞ্জ। যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নিয়ে বাইডেনের আরও পরিকল্পনা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে আছে অভিবাসন আইনজীবীদের পরামর্শ অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ ১ কোটি ১০ লাখ অভিবাসীকে বৈধতা দেওয়া। কিন্তু কোন সময়সীমার মধ্যে থাকা অভিবাসীদের এ বৈধতা দেওয়া হবে তা এখনো স্পষ্ট করেনি বাইডেন প্রশাসন।
বাইডেন গত বুধবার দায়িত্ব গ্রহণের পর যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ একটি মেমো জারি করে যেখানে কিছু নির্দিষ্ট অভিবাসীদের বহিষ্কার স্থগিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। মহামারীর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে এ বিভাগের কার্যক্রমের চ্যালেঞ্জ আরও ভালোভাবে মোকাবিলা করতে এ আদেশ দেওয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয়। গত শুক্রবার থেকে এ আদেশ কার্যকর হয় এবং নভেম্বরের আগে অনুমতি ছাড়া যারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে তাদের প্রায় সবাই এ স্থগিতাদেশের আওতায় পড়েছে।
শেয়ার করুন
অভিবাসী বহিষ্কারাদেশ ইস্যু
রূপান্তর ডেস্ক | ২৮ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০

প্রেসিডেন্ট পদে ক্ষমতায় বসেই জো বাইডেনের প্রথম কাজ হয় সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশগুলো উল্টে দেওয়া। আদেশগুলো উল্টাতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্টকেও নির্বাহী আদেশ দিতে হয়। ফলে বাইডেন প্রথম দিনেই ১৭টি নির্বাহী আদেশ জারি করেন যার প্রত্যেকটিই ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। এ আদেশগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি অনুমোদনহীন অভিবাসীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অনুমোদনহীন অভিবাসীদের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছিলেন। এমনকি ড্রিমার নামে যারা পরিচিত তাদের নাগরিকত্ব প্রশ্নেও কঠোর ছিলেন ট্রাম্প। বাইডেন তার নির্বাহী আদেশে অনুমোদনহীন অভিবাসীদের বহিষ্কারের কার্যক্রম ১০০ দিন পর্যন্ত স্থগিত রাখতে বলেন। কিন্তু প্রেসিডেন্টের এই স্থগিতাদেশ আটকে দিয়েছে দেশটির এক ফেডারেল আদালত। আদালতের এমন সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে আইন বিভাগের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। বিশ্লেষকরা আগেই সতর্ক করে বলেছিলেন, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত উল্টাতে বাইডেন নির্বাহী আদেশ দিলেও বিচার বিভাগীর ব্যবস্থার কারণে সব আদেশ পূরণ নাও হতে পারে। এমনকি মেক্সিকো-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ বন্ধে দেওয়া বাইডেনের নির্দেশটিও আদালতে ছাড় পাবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অনুমোদনহীন অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা প্রশ্নে আদালতের এ আদেশের ফলে পুরো দেশে আগামী ১৪ দিন পর্যন্ত বাইডেনের আদেশ স্থগিত থাকবে।
বিচারপতি টিপটন বলেন, অভিবাসী বহিষ্কার কার্যক্রম ১০০ দিন স্থগিত রাখার পক্ষে বাইডেন প্রশাসন কোনো শক্তিশালী, যৌক্তিক ন্যায্যতা প্রমাণ করতে পারেনি। উভয়পক্ষই এ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বিবরণ জমা দেওয়ার পর আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে বাইডেন প্রশাসন আপিল করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে কবে নাগাদ এ আপিল করা হবে তা নিশ্চিত নয়। আদালতে বিষয়টি দীর্ঘসূত্রতা পেলে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বন্দিশিবিরে থাকা অনুমোদনহীন অভিবাসীদের ভোগান্তি বাড়তে থাকবে। এখনো অনেক অভিবাসী শিশু তাদের পিতা-মাতাকে ছাড়া আলাদা বন্দিশিবিরে আছে। আর এ বিষয়টি নিয়েও যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন চাপের মধ্যে আছে।
জো বাইডেন তার নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি অভিবাসী বহিষ্কার কার্যক্রম ১০০ দিন পর্যন্ত বন্ধ রাখবেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে তিনি তার কথা রাখেন। ট্রাম্পের অভিবাসী নীতির সঙ্গে বাইডেন প্রশাসনের এ নীতি পুরোপরি সাংঘর্ষিক। টিপটনের এ আদেশ বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রথম কোনো আইনি চ্যালেঞ্জ। যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নিয়ে বাইডেনের আরও পরিকল্পনা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে আছে অভিবাসন আইনজীবীদের পরামর্শ অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ ১ কোটি ১০ লাখ অভিবাসীকে বৈধতা দেওয়া। কিন্তু কোন সময়সীমার মধ্যে থাকা অভিবাসীদের এ বৈধতা দেওয়া হবে তা এখনো স্পষ্ট করেনি বাইডেন প্রশাসন।
বাইডেন গত বুধবার দায়িত্ব গ্রহণের পর যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ একটি মেমো জারি করে যেখানে কিছু নির্দিষ্ট অভিবাসীদের বহিষ্কার স্থগিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। মহামারীর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে এ বিভাগের কার্যক্রমের চ্যালেঞ্জ আরও ভালোভাবে মোকাবিলা করতে এ আদেশ দেওয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয়। গত শুক্রবার থেকে এ আদেশ কার্যকর হয় এবং নভেম্বরের আগে অনুমতি ছাড়া যারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে তাদের প্রায় সবাই এ স্থগিতাদেশের আওতায় পড়েছে।