বিরোধীদের দমনে ‘মহামারী’ অস্ত্র
রূপান্তর ডেস্ক | ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০
বিরোধী বা ভিন্নমতাবলম্বীদের দমনে যেসব দেশ মহামারী পরিস্থিতিকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে তাদের তীব্র সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ। গতকাল সোমবার জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার বার্ষিক অধিবেশনে বক্তারা ওই সমালোচনা করেছেন বলে জানিয়েছে এএফপি। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। তিনি অভিযোগ করে বলেন, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রাষ্ট্র তাদের রাজনৈতিক বিরোধীপক্ষকে শায়েস্তা করার জন্য কভিড-১৯-এর বিধিনিষেধকে ব্যবহার করছে।
গুতেরেস আরও বলেন, ‘মহামারীকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে কিছু দেশের কর্র্তৃপক্ষ ভারী অস্ত্রে সজ্জিত সেনা মোতায়েন করেছে। জরুরি অবস্থার মধ্যে রাজনৈতিক ভিন্ন মতাদর্শিকদের দমনের লক্ষ্যেই এই সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে। মানুষের স্বাভাবিক স্বাধীনতা হরণ হচ্ছে, সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধ ছাড়াও বেসরকারি সংস্থাগুলোর কাজ সীমিত করে দেওয়া হচ্ছে ওই দেশগুলোতে।’ জাতিসংঘ মহাসচিব অবশ্য তার বক্তব্যে নির্দিষ্ট কোনো দেশের নাম উল্লেখ করেননি।
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার এবারের বার্ষিক অধিবেশনটি অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অধিবেশনের সময়ে আগেই ধারণ করা একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করা হয়। সেখানে গুতেরেসকে বলতে শোনা যায়, ‘নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে মহামারী সম্পর্কিত বিধিনিষেধকে কাজে লাগানো হচ্ছে। সরকারের সমালোচনা করতে পারে এমন বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে।’ একই সময়ে তিনি আরও বলেন, ‘মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, আইনজীবী, রাজনৈতিক কর্মী এবং চিকিৎসাসেবার সঙ্গে জড়িতদেরও কারাগারে নিক্ষেপ করা হচ্ছে। এ ছাড়া তাদের ওপর সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে। মহামারী মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার কথা যারা বলবেন, তাদের চুপ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’
জাতিসংঘের অধিকারবিষয়ক সংস্থার প্রধান মাইকেল ব্যাচেলেটকেও একই কথা বলতে শোনা যায়। তিনি বলেন, ‘জনগণের স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে অপ্রয়োজনীয় ও অত্যধিক ক্ষমতা ব্যবহার করে। মনে হয় আমরা সবাই জানি যে, জোর করে মহামারী দূর করা যাবে না। সমালোচককে জেলে পাঠিয়েও মহামারী নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।’ করোনা মহামারীতে বিশ্বে ইতিমধ্যেই ২৫ লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন। বেশ কয়েকটি করোনা টিকা বাজারে বের হলেও এই মহামারী থেকে বিশ্ব কবে মুক্তি পাবে, এমন কোনো ইঙ্গিত এখনো দিতে পারছেন না বিজ্ঞানী ও সংশ্লিষ্টরা। অর্থনীতি, মানুষের স্বাধীনতা, সামাজিক সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা বাড়িয়ে দিচ্ছে মহামারী। অদূর ভবিষ্যতে করোনাভাইরাস না থাকলেও এর প্রভাব থেকে বের হতে পৃথিবীর অনেকটা সময় লেগে যাবে।
শেয়ার করুন
রূপান্তর ডেস্ক | ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০

বিরোধী বা ভিন্নমতাবলম্বীদের দমনে যেসব দেশ মহামারী পরিস্থিতিকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে তাদের তীব্র সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ। গতকাল সোমবার জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার বার্ষিক অধিবেশনে বক্তারা ওই সমালোচনা করেছেন বলে জানিয়েছে এএফপি। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। তিনি অভিযোগ করে বলেন, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রাষ্ট্র তাদের রাজনৈতিক বিরোধীপক্ষকে শায়েস্তা করার জন্য কভিড-১৯-এর বিধিনিষেধকে ব্যবহার করছে।
গুতেরেস আরও বলেন, ‘মহামারীকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে কিছু দেশের কর্র্তৃপক্ষ ভারী অস্ত্রে সজ্জিত সেনা মোতায়েন করেছে। জরুরি অবস্থার মধ্যে রাজনৈতিক ভিন্ন মতাদর্শিকদের দমনের লক্ষ্যেই এই সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে। মানুষের স্বাভাবিক স্বাধীনতা হরণ হচ্ছে, সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধ ছাড়াও বেসরকারি সংস্থাগুলোর কাজ সীমিত করে দেওয়া হচ্ছে ওই দেশগুলোতে।’ জাতিসংঘ মহাসচিব অবশ্য তার বক্তব্যে নির্দিষ্ট কোনো দেশের নাম উল্লেখ করেননি।
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার এবারের বার্ষিক অধিবেশনটি অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অধিবেশনের সময়ে আগেই ধারণ করা একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করা হয়। সেখানে গুতেরেসকে বলতে শোনা যায়, ‘নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে মহামারী সম্পর্কিত বিধিনিষেধকে কাজে লাগানো হচ্ছে। সরকারের সমালোচনা করতে পারে এমন বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে।’ একই সময়ে তিনি আরও বলেন, ‘মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, আইনজীবী, রাজনৈতিক কর্মী এবং চিকিৎসাসেবার সঙ্গে জড়িতদেরও কারাগারে নিক্ষেপ করা হচ্ছে। এ ছাড়া তাদের ওপর সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে। মহামারী মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার কথা যারা বলবেন, তাদের চুপ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’
জাতিসংঘের অধিকারবিষয়ক সংস্থার প্রধান মাইকেল ব্যাচেলেটকেও একই কথা বলতে শোনা যায়। তিনি বলেন, ‘জনগণের স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে অপ্রয়োজনীয় ও অত্যধিক ক্ষমতা ব্যবহার করে। মনে হয় আমরা সবাই জানি যে, জোর করে মহামারী দূর করা যাবে না। সমালোচককে জেলে পাঠিয়েও মহামারী নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।’ করোনা মহামারীতে বিশ্বে ইতিমধ্যেই ২৫ লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন। বেশ কয়েকটি করোনা টিকা বাজারে বের হলেও এই মহামারী থেকে বিশ্ব কবে মুক্তি পাবে, এমন কোনো ইঙ্গিত এখনো দিতে পারছেন না বিজ্ঞানী ও সংশ্লিষ্টরা। অর্থনীতি, মানুষের স্বাধীনতা, সামাজিক সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা বাড়িয়ে দিচ্ছে মহামারী। অদূর ভবিষ্যতে করোনাভাইরাস না থাকলেও এর প্রভাব থেকে বের হতে পৃথিবীর অনেকটা সময় লেগে যাবে।