যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রাশিয়া
শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান বাইডেনের
রূপান্তর ডেস্ক | ২০ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০
ইউক্রেনে যে কোনো মুহূর্তে হামলা করতে পারে রাশিয়া। এমন হামলা যে হতে পারে তা নিয়ে অনেকদিন ধরেই জল্পনা-কল্পনা চলছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপসহ একাধিক পক্ষ ইতিমধ্যেই এই সংকটে প্রবেশ করেছে। কিছুদিন আগেই রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ইউক্রেনে কোনো প্রকার হামলা করতে চায় না রাশিয়া। কিন্তু উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী যতই যুদ্ধ না করার কথা বলুন না কেন, তার দেশের সামরিক বাহিনীর প্রস্তুতি বলছে ভিন্ন কথা। ইউক্রেন সীমান্তের কাছে বাহিনী গোছানোর কাজ প্রায় পুরোটাই সম্পন্ন করেছে রাশিয়া। কিয়েভের বিরুদ্ধে হামলার জন্য এ বাহিনী ব্যবহার করতে পারে দেশটি। ইউক্রেনের এক গোয়েন্দা পর্যালোচনায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। গতকাল বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সিএনএন। এমন সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে সিএনএন ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিলেও, অন্য দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও একই কথা বলছে।
সিএনএন বলছে, এ ঘটনা মস্কো যে কোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে তার আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ গোয়েন্দা পর্যালোচনার উদ্ধৃতি দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, এই অঞ্চলে বর্তমানে লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন রেখেছে মস্কো। এর মধ্যে সেনাসদস্যের সংখ্যা এক লাখ ছয় হাজারেরও বেশি। নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের মিলিয়ে এ সংখ্যা এক লাখ ২৭ হাজারেরও বেশি। ওই গোয়েন্দা পর্যালোচনায় বিদ্যমান পরিস্থিতিকে ‘কঠিন’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ইউক্রেন বিশ্বাস করে রাশিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটোকে বিভক্ত ও দুর্বল করার চেষ্টা করছে।
ইউক্রেন বলছে, সীমান্তে রাশিয়ার আরএফ এএফ (রাশিয়ান ফেডারেশনস আর্মড ফোর্সেস) এর পদাতিক বাহিনীর এক লাখ ৬ হাজার সদস্য রয়েছে। তাদের সঙ্গে নৌ ও বিমান বাহিনীও রয়েছে। রুশ বাহিনী ছাড়াও মস্কোর মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের ভয়ে আছে ইউক্রেন। কারণ ইতিমধ্যেই মস্কো ইউক্রেন সীমান্তের পশ্চিমে মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিট ‘ইস্কান্দার’ মোতায়েন করেছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়ার গৃহীত পদক্ষেপের লক্ষ্য হচ্ছে, ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা সীমিত করে ফেলা। ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমের তিন দফায় বৈঠক হওয়ার পরেও সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যান গত মঙ্গলবার জানান, রাশিয়া যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে কূটনীতি কোনো কাজে নাও আসতে পারে। শেরম্যানের এমন মন্তব্যের পর গোটা অঞ্চলে অস্থিরতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কয়েকদিন আগেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার হম্বিতম্বি দিলেও, গতকাল তিনি রাশিয়াকে ইউক্রেন সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খোঁজার আহ্বান জানিয়েছেন। তার এই আহ্বানে সাড়া দেয়নি রুশ কর্র্তৃপক্ষ।
ইউক্রেনের সরকার একদিকে যেমন রাশিয়ার সেনা সমাবেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন, তেমনি তাদের সীমানায় থাকায় ৩৫ হাজার রুশপন্থি মিলিশিয়া নিয়েও চিন্তিত। গত কয়েক বছর ধরেই এই রুশপন্থি মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে ইউক্রেন বাহিনী। কিন্তু তেমন কোনো সুবিধা করতে পারেনি। উল্টো মধ্য ও পশ্চিম সীমান্তের বেশকিছু এলাকা ওই মিলিশিয়ারা দখল করে নিয়েছে। ইউক্রেনের গোয়েন্দাদের শঙ্কা, বেলারুশ সীমান্ত দিয়ে রাশিয়া ইউক্রেনকে যেকোনো মুহূর্তে হামলা করতে পারে।
শেয়ার করুন
শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান বাইডেনের
রূপান্তর ডেস্ক | ২০ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০

ইউক্রেনে যে কোনো মুহূর্তে হামলা করতে পারে রাশিয়া। এমন হামলা যে হতে পারে তা নিয়ে অনেকদিন ধরেই জল্পনা-কল্পনা চলছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপসহ একাধিক পক্ষ ইতিমধ্যেই এই সংকটে প্রবেশ করেছে। কিছুদিন আগেই রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ইউক্রেনে কোনো প্রকার হামলা করতে চায় না রাশিয়া। কিন্তু উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী যতই যুদ্ধ না করার কথা বলুন না কেন, তার দেশের সামরিক বাহিনীর প্রস্তুতি বলছে ভিন্ন কথা। ইউক্রেন সীমান্তের কাছে বাহিনী গোছানোর কাজ প্রায় পুরোটাই সম্পন্ন করেছে রাশিয়া। কিয়েভের বিরুদ্ধে হামলার জন্য এ বাহিনী ব্যবহার করতে পারে দেশটি। ইউক্রেনের এক গোয়েন্দা পর্যালোচনায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। গতকাল বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সিএনএন। এমন সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে সিএনএন ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিলেও, অন্য দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও একই কথা বলছে।
সিএনএন বলছে, এ ঘটনা মস্কো যে কোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে তার আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ গোয়েন্দা পর্যালোচনার উদ্ধৃতি দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, এই অঞ্চলে বর্তমানে লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন রেখেছে মস্কো। এর মধ্যে সেনাসদস্যের সংখ্যা এক লাখ ছয় হাজারেরও বেশি। নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের মিলিয়ে এ সংখ্যা এক লাখ ২৭ হাজারেরও বেশি। ওই গোয়েন্দা পর্যালোচনায় বিদ্যমান পরিস্থিতিকে ‘কঠিন’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ইউক্রেন বিশ্বাস করে রাশিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটোকে বিভক্ত ও দুর্বল করার চেষ্টা করছে।
ইউক্রেন বলছে, সীমান্তে রাশিয়ার আরএফ এএফ (রাশিয়ান ফেডারেশনস আর্মড ফোর্সেস) এর পদাতিক বাহিনীর এক লাখ ৬ হাজার সদস্য রয়েছে। তাদের সঙ্গে নৌ ও বিমান বাহিনীও রয়েছে। রুশ বাহিনী ছাড়াও মস্কোর মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের ভয়ে আছে ইউক্রেন। কারণ ইতিমধ্যেই মস্কো ইউক্রেন সীমান্তের পশ্চিমে মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিট ‘ইস্কান্দার’ মোতায়েন করেছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়ার গৃহীত পদক্ষেপের লক্ষ্য হচ্ছে, ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা সীমিত করে ফেলা। ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমের তিন দফায় বৈঠক হওয়ার পরেও সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যান গত মঙ্গলবার জানান, রাশিয়া যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে কূটনীতি কোনো কাজে নাও আসতে পারে। শেরম্যানের এমন মন্তব্যের পর গোটা অঞ্চলে অস্থিরতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কয়েকদিন আগেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার হম্বিতম্বি দিলেও, গতকাল তিনি রাশিয়াকে ইউক্রেন সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খোঁজার আহ্বান জানিয়েছেন। তার এই আহ্বানে সাড়া দেয়নি রুশ কর্র্তৃপক্ষ।
ইউক্রেনের সরকার একদিকে যেমন রাশিয়ার সেনা সমাবেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন, তেমনি তাদের সীমানায় থাকায় ৩৫ হাজার রুশপন্থি মিলিশিয়া নিয়েও চিন্তিত। গত কয়েক বছর ধরেই এই রুশপন্থি মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে ইউক্রেন বাহিনী। কিন্তু তেমন কোনো সুবিধা করতে পারেনি। উল্টো মধ্য ও পশ্চিম সীমান্তের বেশকিছু এলাকা ওই মিলিশিয়ারা দখল করে নিয়েছে। ইউক্রেনের গোয়েন্দাদের শঙ্কা, বেলারুশ সীমান্ত দিয়ে রাশিয়া ইউক্রেনকে যেকোনো মুহূর্তে হামলা করতে পারে।