মাস্কের ধরন নিয়ে সংশয়
এন৯৫ নাকি কেএফ৯৪
রূপান্তর ডেস্ক | ২১ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০
করোনাভাইরাসের অতিসংক্রামক ধরন ওমিক্রনের দাপটে বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে অনেক। বিশ্বের বহু দেশে প্রতিদিনই আক্রান্ত রোগী বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। আর তাই ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে প্রয়োজন ভালো মাস্ক ব্যবহার করা। তবে ঠিক কোন মাস্ক ভালো? আর কোন মাস্কই বা দেয় সর্বোচ্চ সুরক্ষা? সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এই প্রশ্নের উত্তর উঠে এসেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ভাইরাসের বিরুদ্ধে একমাত্র সুরক্ষা দিতে পারে এন৯৫ মাস্ক। তবে করোনা ঠেকাতে ভালো ভূমিকা রয়েছে অন্য মাস্কেরও।
করোনার বিরুদ্ধে কেন এন৯৫ মাস্ক বেশি সুরক্ষিত? কী বলছেন গবেষকরা? তারা জানিয়েছেন, কোনো ব্যক্তি যখন ভিড়ের মধ্যে চলাফেরা করেন, অনেক বেশি মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করছেন তখন তার দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা দরকার। আর তাই সেই ধরনের মাস্ক পরে থাকতে হবে যেটি বেশি সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। একই সঙ্গে মাস্কটিকে মুখে পুরোপুরি সেট হতে হবে। এসব শর্ত বিবেচনায় সংক্রমণ থেকে সুরক্ষার জন্য এন৯৫ মাস্কের থেকে ভালো কিছু হতে পারে না বলেই দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার একদল গবেষক।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) সম্প্রতি স্বাস্থ্যকর্মীদের কোন ধরনের মাস্ক পরা উচিত সেই বিষয়ে একটা নতুন গাইডলাইন প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, সংক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য সঠিক মাস্ক বেছে নেওয়া খুবই প্রয়োজনীয়। সিডিসির মুখপাত্র ক্রিস্টেন নর্ডলন্ড এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমাদের মূল বার্তাটি হলো সেরা মাস্ক বেছে নিন, সংক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করুন। আগে সিডিসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য এন৯৫ মাস্ক সংরক্ষণ করা বিশেষভাবে প্রয়োজন। কারণ, এই ধরনের মাস্কের সরবরাহ সেভাবে হচ্ছে না।
এখন সিডিসি জানাচ্ছে, সাধারণ কাপড়ের মাস্কের তুলনায় প্রায় ৯৫ শতাংশ বেশি সংক্রমণ ঠেকাতে পারে এন৯৫ মাস্ক। কারণ, এটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যা নাক-মুখকে অনেক ভালোভাবে সুরক্ষা দেয়। করোনা প্রতিরোধে সবচেয়ে উপযোগী এন৯৫ মাস্ক। একজন কভিড আক্রান্ত ব্যক্তি যদি মাস্ক না পরে থাকেন তাহলে এন৯৫ মাস্ক পরা অন্য ব্যক্তি আড়াই ঘণ্টা সুরক্ষিত থাকবেন। যদি রোগী এবং সাধারণ মানুষ উভয়েই মাস্ক পরে থাকেন তবে সুস্থ ব্যক্তির দেহে সংক্রমণ ছড়াতে সময় লাগে প্রায় ২৫ ঘণ্টা।
এন৯৫ মাস্ক অন্যান্য দেশে কেএন৯৫ এবং কেএফ৯৪ নামেও পরিচিত। এই ধরনের মাস্ক প্রায়ই পলিপ্রোপিলিনের একাধিক স্তর দিয়ে তৈরি হয়। এসব মাস্কে সাধারণত সিনথেটিক ফাইবার থাকে। এই মাস্কগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে, নাকের নিচের অংশ থেকে পুরো মুখকে ঢেকে রাখে। এন৯৫ মাস্ক বাতাসের অন্তত ৯৫ শতাংশ কণা পদার্থকে ফিল্টার করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যা ৩ মাইক্রনের চেয়ে বড় কিছুকে অতিক্রম করতে বাধা দেয়। কেএন৯৫ ও কেএফ৯৪ যথাক্রমে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার এবং এন৯৫ মাস্কের মতো একই সুরক্ষা প্রদান করে। কেএফ মানে ‘কোরিয়ান ফিল্টার’ এবং এটি বাতাসের ৯৪ শতাংশ পরিস্রাবণ করে।
জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের পরিবেশগত স্বাস্থ্য এবং প্রকৌশল বিভাগের বিজ্ঞানী এরিক টোনার বলেছেন, ‘সেরা মাস্কগুলো হলো এন৯৫-র কিছু সংস্করণ। এন৯৫, কেএন৯৫ এবং কেএফ৯৪ একই এবং একইভাবে কাজ করে।’ এছাড়া সিডিসির ওয়েবসাইটে অনুমোদিত এন৯৫ মাস্ক প্রস্তুতকারকদের একটি সম্পূর্ণ তালিকা রয়েছে।
শেয়ার করুন
এন৯৫ নাকি কেএফ৯৪
রূপান্তর ডেস্ক | ২১ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০

করোনাভাইরাসের অতিসংক্রামক ধরন ওমিক্রনের দাপটে বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে অনেক। বিশ্বের বহু দেশে প্রতিদিনই আক্রান্ত রোগী বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। আর তাই ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে প্রয়োজন ভালো মাস্ক ব্যবহার করা। তবে ঠিক কোন মাস্ক ভালো? আর কোন মাস্কই বা দেয় সর্বোচ্চ সুরক্ষা? সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এই প্রশ্নের উত্তর উঠে এসেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ভাইরাসের বিরুদ্ধে একমাত্র সুরক্ষা দিতে পারে এন৯৫ মাস্ক। তবে করোনা ঠেকাতে ভালো ভূমিকা রয়েছে অন্য মাস্কেরও।
করোনার বিরুদ্ধে কেন এন৯৫ মাস্ক বেশি সুরক্ষিত? কী বলছেন গবেষকরা? তারা জানিয়েছেন, কোনো ব্যক্তি যখন ভিড়ের মধ্যে চলাফেরা করেন, অনেক বেশি মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করছেন তখন তার দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা দরকার। আর তাই সেই ধরনের মাস্ক পরে থাকতে হবে যেটি বেশি সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। একই সঙ্গে মাস্কটিকে মুখে পুরোপুরি সেট হতে হবে। এসব শর্ত বিবেচনায় সংক্রমণ থেকে সুরক্ষার জন্য এন৯৫ মাস্কের থেকে ভালো কিছু হতে পারে না বলেই দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার একদল গবেষক।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) সম্প্রতি স্বাস্থ্যকর্মীদের কোন ধরনের মাস্ক পরা উচিত সেই বিষয়ে একটা নতুন গাইডলাইন প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, সংক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য সঠিক মাস্ক বেছে নেওয়া খুবই প্রয়োজনীয়। সিডিসির মুখপাত্র ক্রিস্টেন নর্ডলন্ড এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমাদের মূল বার্তাটি হলো সেরা মাস্ক বেছে নিন, সংক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করুন। আগে সিডিসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য এন৯৫ মাস্ক সংরক্ষণ করা বিশেষভাবে প্রয়োজন। কারণ, এই ধরনের মাস্কের সরবরাহ সেভাবে হচ্ছে না।
এখন সিডিসি জানাচ্ছে, সাধারণ কাপড়ের মাস্কের তুলনায় প্রায় ৯৫ শতাংশ বেশি সংক্রমণ ঠেকাতে পারে এন৯৫ মাস্ক। কারণ, এটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যা নাক-মুখকে অনেক ভালোভাবে সুরক্ষা দেয়। করোনা প্রতিরোধে সবচেয়ে উপযোগী এন৯৫ মাস্ক। একজন কভিড আক্রান্ত ব্যক্তি যদি মাস্ক না পরে থাকেন তাহলে এন৯৫ মাস্ক পরা অন্য ব্যক্তি আড়াই ঘণ্টা সুরক্ষিত থাকবেন। যদি রোগী এবং সাধারণ মানুষ উভয়েই মাস্ক পরে থাকেন তবে সুস্থ ব্যক্তির দেহে সংক্রমণ ছড়াতে সময় লাগে প্রায় ২৫ ঘণ্টা।
এন৯৫ মাস্ক অন্যান্য দেশে কেএন৯৫ এবং কেএফ৯৪ নামেও পরিচিত। এই ধরনের মাস্ক প্রায়ই পলিপ্রোপিলিনের একাধিক স্তর দিয়ে তৈরি হয়। এসব মাস্কে সাধারণত সিনথেটিক ফাইবার থাকে। এই মাস্কগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে, নাকের নিচের অংশ থেকে পুরো মুখকে ঢেকে রাখে। এন৯৫ মাস্ক বাতাসের অন্তত ৯৫ শতাংশ কণা পদার্থকে ফিল্টার করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যা ৩ মাইক্রনের চেয়ে বড় কিছুকে অতিক্রম করতে বাধা দেয়। কেএন৯৫ ও কেএফ৯৪ যথাক্রমে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার এবং এন৯৫ মাস্কের মতো একই সুরক্ষা প্রদান করে। কেএফ মানে ‘কোরিয়ান ফিল্টার’ এবং এটি বাতাসের ৯৪ শতাংশ পরিস্রাবণ করে।
জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের পরিবেশগত স্বাস্থ্য এবং প্রকৌশল বিভাগের বিজ্ঞানী এরিক টোনার বলেছেন, ‘সেরা মাস্কগুলো হলো এন৯৫-র কিছু সংস্করণ। এন৯৫, কেএন৯৫ এবং কেএফ৯৪ একই এবং একইভাবে কাজ করে।’ এছাড়া সিডিসির ওয়েবসাইটে অনুমোদিত এন৯৫ মাস্ক প্রস্তুতকারকদের একটি সম্পূর্ণ তালিকা রয়েছে।