গোপন মহামারীর দ্বারে বিশ্ব
সুপারবাগ
রূপান্তর ডেস্ক | ২১ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০
অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণে ২০১৯ সালে সারা বিশ্বে ১২ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই ইস্যুতে আজ পর্যন্ত পরিচালিত সবচেয়ে বড় জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। এতে দেখা গেছে ম্যালেরিয়া বা এইডসে আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর যে পরিমাণ মানুষের মৃত্যু হয় তার চেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে এই প্রতিরোধী ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে দরিদ্র দেশগুলো তবে এটি সবার জন্যই হুমকি। এই সংক্রমণ মোকাবিলায় নতুন ওষুধে বিনিয়োগ এবং বর্তমান ওষুধগুলো আরও বেশি বিবেচনা করে ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছে প্রতিবেদনটি।
গত কয়েক বছর ধরে অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহার ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে এগুলোকে অকার্যকর করে তুলেছে। ফলে মারাত্মক আক্রান্ত রোগীদের বিরুদ্ধে কাজ করছে না এসব অ্যান্টিবায়োটিক। আর এতে অতি সাধারণ রোগে মারা যাচ্ছে মানুষ। অথচ কিছুদিন আগেও এসব রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর ছিল এসব ওষুধ। ব্রিটিশ স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, কভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক যদি দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ব্যবহার করা না হয় তাহলে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণ একটা ‘গোপন মহামারী’ হয়ে উঠতে পারে।
অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাক্টেরিয়া (এএমআর) সংক্রমণে মৃত্যু নিয়ে নতুন প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়েছে ল্যানসেট জার্নালে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক একটি গবেষক দল ২০৪টি দেশের তথ্য বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। তারা হিসাব করে দেখেছেন ২০১৯ সালে ৫০ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যুতে এএমআর একটি ভূমিকা রেখেছে। আর সরাসরি এর কারণে মৃত্যু হয়েছে ১২ লাখের বেশি মানুষের। একই বছর এইডস এ মৃত্যু হয়েছে আট লাখ ৬০ হাজার মানুষের, আর ম্যালেরিয়ায় মারা গেছে ছয় লাখ ৪০ হাজার।
অ্যান্টিবায়োটিকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার বন্ধে জাতিসংঘসহ একাধিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সংস্থা একাধিকবার বিশ্বে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আসছে। কিন্তু কোনো হুঁশিয়ারিতেই এর ব্যবহার নিয়মানুসারে করা সম্ভব হয়নি। বিশেষ করে উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে চিকিৎসকরা প্রায় অধিকাংশ রোগের পথ্য হিসেবেই অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োগ করেন। তবে বিশ্লেষকরা, অ্যান্টিবায়োটিকের এমন ব্যবহারের পেছনে ওষুধ কোম্পানিগুলোকেও দায়ী করেন। অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করতে ওষুধ কোম্পানিগুলোর যে বাড়তি চাপ থাকে, সেই কারণেই অধিকাংশ চিকিৎসককে অ্যান্টিবায়োটিক দিতে দেখা যায় রোগীদের।
শেয়ার করুন
সুপারবাগ
রূপান্তর ডেস্ক | ২১ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০

অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণে ২০১৯ সালে সারা বিশ্বে ১২ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই ইস্যুতে আজ পর্যন্ত পরিচালিত সবচেয়ে বড় জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। এতে দেখা গেছে ম্যালেরিয়া বা এইডসে আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর যে পরিমাণ মানুষের মৃত্যু হয় তার চেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে এই প্রতিরোধী ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে দরিদ্র দেশগুলো তবে এটি সবার জন্যই হুমকি। এই সংক্রমণ মোকাবিলায় নতুন ওষুধে বিনিয়োগ এবং বর্তমান ওষুধগুলো আরও বেশি বিবেচনা করে ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছে প্রতিবেদনটি।
গত কয়েক বছর ধরে অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহার ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে এগুলোকে অকার্যকর করে তুলেছে। ফলে মারাত্মক আক্রান্ত রোগীদের বিরুদ্ধে কাজ করছে না এসব অ্যান্টিবায়োটিক। আর এতে অতি সাধারণ রোগে মারা যাচ্ছে মানুষ। অথচ কিছুদিন আগেও এসব রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর ছিল এসব ওষুধ। ব্রিটিশ স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, কভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক যদি দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ব্যবহার করা না হয় তাহলে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণ একটা ‘গোপন মহামারী’ হয়ে উঠতে পারে।
অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাক্টেরিয়া (এএমআর) সংক্রমণে মৃত্যু নিয়ে নতুন প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়েছে ল্যানসেট জার্নালে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক একটি গবেষক দল ২০৪টি দেশের তথ্য বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। তারা হিসাব করে দেখেছেন ২০১৯ সালে ৫০ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যুতে এএমআর একটি ভূমিকা রেখেছে। আর সরাসরি এর কারণে মৃত্যু হয়েছে ১২ লাখের বেশি মানুষের। একই বছর এইডস এ মৃত্যু হয়েছে আট লাখ ৬০ হাজার মানুষের, আর ম্যালেরিয়ায় মারা গেছে ছয় লাখ ৪০ হাজার।
অ্যান্টিবায়োটিকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার বন্ধে জাতিসংঘসহ একাধিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সংস্থা একাধিকবার বিশ্বে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আসছে। কিন্তু কোনো হুঁশিয়ারিতেই এর ব্যবহার নিয়মানুসারে করা সম্ভব হয়নি। বিশেষ করে উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে চিকিৎসকরা প্রায় অধিকাংশ রোগের পথ্য হিসেবেই অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োগ করেন। তবে বিশ্লেষকরা, অ্যান্টিবায়োটিকের এমন ব্যবহারের পেছনে ওষুধ কোম্পানিগুলোকেও দায়ী করেন। অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করতে ওষুধ কোম্পানিগুলোর যে বাড়তি চাপ থাকে, সেই কারণেই অধিকাংশ চিকিৎসককে অ্যান্টিবায়োটিক দিতে দেখা যায় রোগীদের।