কে এই ইয়েভহেন মুরাইয়েভ?
রূপান্তর ডেস্ক | ২৬ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০
যুক্তরাজ্য বলছে ইউক্রেনের ক্ষমতায় একজন রুশপন্থি নেতাকে বসাতে চায় ক্রেমলিন। সামরিক আগ্রাসনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইউক্রেনের সাবেক রাজনীতিবিদদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন রাশিয়ার গোয়েন্দারা। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, কিয়েভে একটি নতুন সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ইউক্রেনের রাজনীতিবিদ ইয়েভহেন মুরাইয়েভকে বিবেচনা করছে রাশিয়া। যদিও যুক্তরাজ্যের এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়া। মুরাইয়েভ নিজেও এই দাবি নাকচ করেছেন বলে জানিয়েছে একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
মুরাইয়েভের জন্ম ১৯৭৬ সালে। তিনি রাশিয়ার সীমান্তের কাছের পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভে জন্ম নেন। ইউক্রেনে পশ্চিমাপন্থি নেতৃত্বের বিরোধিতাকারী রাজনীতিবিদদের মধ্যে অন্যতম মুরাইয়েভ। ২০১৪ সালের গণবিক্ষোভের পর এই পশ্চিমাপন্থি নেতারাই ইউক্রেনের ক্ষমতা গ্রহণ করেন। মুরাইয়েভ ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচের মিত্র হিসেবে খারকিভে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ইয়ানুকোভিচ ২০১৪ সালের ময়দান স্কয়ার অভ্যুত্থানের পর রাশিয়ায় পালিয়ে যান।
২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ইউক্রেনের একজন আইনপ্রণেতা ছিলেন মুরাইয়েভ। তিনি মস্কো-সমর্থিত ইয়ানুকোভিচের পার্টি অব রিজিয়নসের সদস্য ছিলেন। পরে একাধিক দল নিয়ে গঠিত অপজিশন ব্লকের হয়ে রাজনীতি শুরু করেন মুরাইয়েভ। কিন্তু ২০১৬ সালের জুনে তিনি এই ব্লক থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেন। একপর্যায়ে একই ঘরানার লোকজন নিয়ে তিনি নিজেই ‘ফর লাইফ’ নামের পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৮ সালে মুরাইয়েভ ‘নাশি’ নামের আরেকটি পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। মুরাইয়েভ ২০১৯ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে নিবন্ধন করেছিলেন। কিন্তু ভোটের আগে তিনি তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন।
মুরাইয়েভ অতীতে এমন রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রচার করেছেন, যার সঙ্গে ইউক্রেন সম্পর্কে রাশিয়ার দৃষ্টিভঙ্গির মিল পাওয়া যায়। তিনি ময়দান স্কয়ারের গণবিক্ষোভকে পশ্চিমা-সমর্থিত ‘ক্যু’ মনে করেন। গত বছর মুরাইয়েভ ইউক্রেনের পূর্ব ডনবাস অঞ্চলের যুদ্ধকে সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যকার একটি অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব হিসেবে বর্ণনা করেন। তার এই দৃষ্টিভঙ্গি ইউক্রেন ও পশ্চিমাদের বিপরীত। ইউক্রেন ও পশ্চিমাদের মতে, এটি ছিল ইউক্রেন ও রাশিয়া-সমর্থিত প্রক্সিদের মধ্যকার সংঘাত। ২০২১ সালে মুরাইয়েভ বলেছিলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পশ্চিমা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। মুরাইয়েভ রাশিয়ার মতোই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে ইউক্রেন শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে রাশিয়া-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দখলকৃত অঞ্চল পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করতে পারে। তবে কিয়েভ এ ধরনের কোনো পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করে।
শেয়ার করুন
রূপান্তর ডেস্ক | ২৬ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০

যুক্তরাজ্য বলছে ইউক্রেনের ক্ষমতায় একজন রুশপন্থি নেতাকে বসাতে চায় ক্রেমলিন। সামরিক আগ্রাসনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইউক্রেনের সাবেক রাজনীতিবিদদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন রাশিয়ার গোয়েন্দারা। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, কিয়েভে একটি নতুন সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ইউক্রেনের রাজনীতিবিদ ইয়েভহেন মুরাইয়েভকে বিবেচনা করছে রাশিয়া। যদিও যুক্তরাজ্যের এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়া। মুরাইয়েভ নিজেও এই দাবি নাকচ করেছেন বলে জানিয়েছে একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
মুরাইয়েভের জন্ম ১৯৭৬ সালে। তিনি রাশিয়ার সীমান্তের কাছের পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভে জন্ম নেন। ইউক্রেনে পশ্চিমাপন্থি নেতৃত্বের বিরোধিতাকারী রাজনীতিবিদদের মধ্যে অন্যতম মুরাইয়েভ। ২০১৪ সালের গণবিক্ষোভের পর এই পশ্চিমাপন্থি নেতারাই ইউক্রেনের ক্ষমতা গ্রহণ করেন। মুরাইয়েভ ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচের মিত্র হিসেবে খারকিভে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ইয়ানুকোভিচ ২০১৪ সালের ময়দান স্কয়ার অভ্যুত্থানের পর রাশিয়ায় পালিয়ে যান।
২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ইউক্রেনের একজন আইনপ্রণেতা ছিলেন মুরাইয়েভ। তিনি মস্কো-সমর্থিত ইয়ানুকোভিচের পার্টি অব রিজিয়নসের সদস্য ছিলেন। পরে একাধিক দল নিয়ে গঠিত অপজিশন ব্লকের হয়ে রাজনীতি শুরু করেন মুরাইয়েভ। কিন্তু ২০১৬ সালের জুনে তিনি এই ব্লক থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেন। একপর্যায়ে একই ঘরানার লোকজন নিয়ে তিনি নিজেই ‘ফর লাইফ’ নামের পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৮ সালে মুরাইয়েভ ‘নাশি’ নামের আরেকটি পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। মুরাইয়েভ ২০১৯ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে নিবন্ধন করেছিলেন। কিন্তু ভোটের আগে তিনি তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন।
মুরাইয়েভ অতীতে এমন রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রচার করেছেন, যার সঙ্গে ইউক্রেন সম্পর্কে রাশিয়ার দৃষ্টিভঙ্গির মিল পাওয়া যায়। তিনি ময়দান স্কয়ারের গণবিক্ষোভকে পশ্চিমা-সমর্থিত ‘ক্যু’ মনে করেন। গত বছর মুরাইয়েভ ইউক্রেনের পূর্ব ডনবাস অঞ্চলের যুদ্ধকে সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যকার একটি অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব হিসেবে বর্ণনা করেন। তার এই দৃষ্টিভঙ্গি ইউক্রেন ও পশ্চিমাদের বিপরীত। ইউক্রেন ও পশ্চিমাদের মতে, এটি ছিল ইউক্রেন ও রাশিয়া-সমর্থিত প্রক্সিদের মধ্যকার সংঘাত। ২০২১ সালে মুরাইয়েভ বলেছিলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পশ্চিমা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। মুরাইয়েভ রাশিয়ার মতোই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে ইউক্রেন শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে রাশিয়া-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দখলকৃত অঞ্চল পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করতে পারে। তবে কিয়েভ এ ধরনের কোনো পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করে।