
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকে ‘মধ্যপ্রাচ্যে পারমাণবিক বিস্তারের ঝুঁকি’ শিরোনামে একটি বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই ইসরায়েলের পারমাণবিক অস্ত্র ধ্বংসের বিষয়ে ভোটাভুটি হয়। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে জেরুজালেম পোস্ট।
নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদে মধ্যপ্রাচ্যে পারমাণবিক বিস্তারের ঝুঁকি নিয়ে আলোচনার জন্য মিসর বার্ষিক প্রস্তাব জমা দেয়। এতে ফিলিস্তিনি কর্র্তৃপক্ষ এবং বাহরাইন, জর্ডান, মরক্কো এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ ১৯টি দেশ দ্বারা সমর্থন দেয়। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রথম কমিটির প্রাথমিক ভোটে ১৫২টি দেশ বলেছে, ইসরায়েলকে অবশ্যই তার সমস্ত পারমাণবিক অস্ত্র ধ্বংস করতে হবে এবং তার পারমাণবিক সাইটগুলোকে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার আওতায় রাখতে হবে। তবে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে পাঁচটি দেশ। দেশগুলো হলো কানাডা, ইসরায়েল, মাইক্রোনেশিয়া, পালাউ এবং যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যসহ আরও ২৪টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল। ধারণা করা হয়, বিশ্বের পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী মাত্র ৯টি দেশের মধ্যে একটি হলো ইসরায়েল। তবে দেশটি কখনোই এ ধরনের অস্ত্র থাকার কথা স্বীকার করেনি।
চরম ডানপন্থি জইর বলসোনারোকে পরাজিত করে আমাজনের দেশ ব্রাজিলের ক্ষমতায় ফিরলেন বামপন্থি নেতা লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের পদে বসবেন লুলা। তার ক্ষমতায় আসাকে পৃথিবীর ফুসফুস হিসেবে পরিচিত আমাজন অরণ্যের জন্য আপাতত সুসংবাদ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ আমাজন রক্ষায় লুলার আগের শাসনামলের আন্তরিকতা প্রমাণিত। এবারও বনের ক্ষত সারিয়ে তোলার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়ে মাঠে নেমেছিলেন তিনি। ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আমাজন রক্ষায় লুলার প্রতিশ্রুতি তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে লুলা বলছেন, ‘বিশ্বে অরণ্য উজাড় করা শীর্ষ দেশ হওয়ার চাইতে আমরা বরং জলবায়ু সংকট নিরসন ও সামাজিক-পরিবেশের উন্নয়নে চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।’
২০০৩ সালে ব্রাজিলে আমাজন জঙ্গল উজাড়ের হার আগের বছরের তুলনায় সর্বোচ্চ ছিল। ওই বছর ২৫ হাজার বর্গকিলোমিটারের বেশি এলাকা উজাড় হয়েছিল। এমন সময়ই প্রথমবারের মতো ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন লুলা। ২০০৪ সালেও পরিবেশ বিপর্যয়ের ধারাবাহিকতা দেখা গিয়েছিল। ব্রাজিলের জাতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (আইএনপিই) গবেষণা অনুযায়ী, ২০০৪ সালে আমাজন জঙ্গলের ২৮ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা ধ্বংস হতে দেখা গিয়েছিল। তবে ২০১২ সাল নাগাদ বন ধ্বংসের এলাকা কমে ৪ হাজার ৬০০ বর্গকিলোমিটারে দাঁড়ায়। পরবর্তী কয়েক বছরেও বন ধ্বংসের পরিমাণ অপেক্ষাকৃত কমতে দেখা গেছে। ২০০৪-২০১২ সালের মধ্যে বেশিরভাগ সময় ক্ষমতায় ছিলেন লুলা।
লুলা তার আগের শাসনামলে পরিবেশ নিয়ে যেমন ভূমিকা দেখিয়েছিলেন, তার ভিত্তিতে পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লুলার বিজয় আমাজনের জন্য নতুন আশা জাগিয়েছে। ব্রাজিলের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইমাজনের গবেষক ব্রেন্দা ব্রিতো বলেন, ‘গত কয়েক বছরে যা কিছু ঘটেছে, তা সত্যিকার অর্থে মর্মান্তিক। আমাদের পরিবর্তন প্রয়োজন। আমাজন বন সংরক্ষণের গুরুত্ব বোঝেন লুলা। কারণ, এর আগে প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় তিনি তা করে দেখিয়েছেন।’
অন্যদিকে সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বলসোনারো ছিলেন যেকোনো মূল্যে কেবল মুনাফা লাভে বিশ্বাসী এক নেতা। এজন্য পৃথিবীর অস্তিত্বের জন্য অতি প্রয়োজনীয় আমাজনকে বিসর্জন করতেও পিছপা হননি তিনি। বিবিসি, গার্ডিয়ানের মতো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে বলসোনারো ক্ষমতায় থাকাকালে মহাবন আমাজন সবচেয়ে বেশি উজাড় হয়েছে। আমাজনে ক্ষত সৃষ্টির জন্য ডানপন্থি নেতার নীতিগুলোকে দায়ী করছে গণমাধ্যমগুলো। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় দফা ভোটের আগে গত ২১ অক্টোবর বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলসোনারোর বনবিধ্বংসী নীতি এবং আমাজনের আদিবাসীদের অস্তিত্ব বিলীনের ভীতি নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে এক আদিবাসী নেতা দাভি কোপেনাওয়ার ভাষ্য ছিল ‘যদি বলসোনারো আবার জিতে যায়, তাহলে আমাদের মেরে ফেলবে।’ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বলসোনারোর নেওয়া কট্টর ডানপন্থি নীতিমালা বিশেষ করে আমাজন বনসংক্রান্ত নীতি ব্রাজিলকে আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। ২০১৯ সালে ক্ষমতায় আসা বলসোনারোর নীতি বনভূমি উজাড় করে বিশেষ করে আগুন লাগিয়ে কৃষিজমি বাড়ানো এবং অপরিণামদর্শী অবৈধ সোনার খনি প্রকল্পগুলোকে উৎসাহিত করেছে। দায়িত্ব নেওয়ার পর বলসোনারো ব্রাজিলের পরিবেশের সুরক্ষাজনিত পদক্ষেপগুলো কমিয়ে ফেলেন, বিজ্ঞান ও পরিবেশগত সংস্থাগুলোতে খরচ কমিয়ে দেন, পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের বরখাস্ত করেন এবং আদিবাসীদের ভূমির অধিকারে পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করা হয়।
তাই নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভার সামনে এখন বলসোনারোর হাতে ক্ষত-বিক্ষত আমাজনকে সারিয়ে তোলার চ্যালেঞ্জ। বিশেষজ্ঞদের আশা, লুলা আন্তরিক থাকলে আগামী দশকে বন উজাড়ের হার ৯০ শতাংশ কমে যাবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে হ্যালোইন উৎসবে মর্মান্তিক ঘটনায় ১৫৪ জনের প্রাণহানিতে চলছে জাতীয় শোক। অথচ এই শোকের মধ্যেই মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৃহত্তম আকাশ মহড়া শুরু করেছে দেশটি। গতকাল সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় দুই দেশের শত শত যুদ্ধবিমান অংশ নিয়েছে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। যদিও এই মহড়া পূর্বনির্ধারিত ছিল। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, ভিজিল্যান্ট স্টর্ম নামের এই মহড়া চলবে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত। ২৪০টি যুদ্ধবিমান এই মহড়ায় অংশ নিচ্ছে। এই প্রথম দেশ দুইটির এত সংখ্যক যুদ্ধবিমান এ ধরনের মহড়ায় অংশ নিচ্ছে। মহড়ার এ পাঁচ দিনজুড়ে যুদ্ধবিমানগুলো প্রায় ১৬০০ দফা আক্রমণ পরিচালনা অনুশীলন করবে।
‘ভিজিল্যান্ট স্ট্রম’ মহড়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার এফ-৩৫ স্টিলথ যুদ্ধবিমানের পাশাপাশি অন্যান্য জঙ্গি বিমানও অংশ নিচ্ছে। এই মহড়ার জন্য অস্ট্রেলিয়া একটি রিফুয়েলিং বিমান মোতায়েন করেছে। মহড়া চলাকালে স্থলে থাকা সাহায্যকারী বাহিনীগুলো আক্রমণের মুখে তাদের ঘাঁটি রক্ষা ও জীবন বাঁচানোর প্রশিক্ষণ দেবে বলে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী জানিয়েছে।
এই মহড়া যখন শুরু হলো তখন শোকাচ্ছন্ন দক্ষিণ কোরিয়া। শনিবার রাতে সিউলের ইতায়েওনে হ্যালোইন উৎসবে ভিড়ের মধ্যে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণহানির বিপর্যয়ের ধাক্কা সামলে না ওঠা পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ায় শোক ঘোষণা করেছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক-ইয়ল। ওই মর্মান্তিক ঘটনায় নিহতদের বেশিরভাগই কিশোর এবং কম বয়সী তরুণ-তরুণী। নিহতদের মধ্যে ১৪টি দেশের অন্তত ২৬ জন বিদেশি নাগরিকও রয়েছেন। আহত হন ১৫ বিদেশিসহ আরও ১৩২ জন।
এদিকে গত শুক্রবারই দক্ষিণ কোরিয়া তাদের ১২ দিনব্যাপী হোগুক ২২ ফিল্ড অনুশীলন শেষ করে। এ মহড়ায় উভচর যানের মধ্যমে তীরে নামা ও নদী পার হওয়ার মহড়া দেওয়া হয়েছে। এসব মহড়ার কিছু অংশে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীও অংশ নেয়।
এসব মহড়াকে উত্তর কোরিয়ায় হামলা চালানোর মহড়া আখ্যায়িত করে এর নিন্দা জানিয়ে আসছে পিয়ংইয়ং। এগুলোকে ওয়াশিংটন ও সিউলের শত্রুতামূলক নীতির প্রমাণ বলে দাবি করেছে তারা। সম্প্রতি এসব যৌথ মহড়ার প্রতিবাদে উত্তর কোরিয়াও পাল্টা মহড়া চালায় এবং সাগরে গোলা নিক্ষেপ করে। চলতি বছর উত্তর কোরিয়া রেকর্ড সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে এবং ২০১৭ সালের পর প্রথমবারের মতো পারমাণবিক পরীক্ষা ফের শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। অপরদিকে ওয়াশিংটন ও সিউল বলছে, উত্তর কোরিয়ার সম্ভাব্য হুমকি থামাতে এসব মহড়ার দরকার।
সবচেয়ে দীর্ঘ যাত্রীবাহী ট্রেন চালিয়ে নতুন একটি বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে সুইজারল্যান্ড। ট্রেনটি আল্পস পর্বতমালার ওপর দিয়ে ২৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রেকর্ড গড়েছে। এ যাত্রীবাহী ট্রেনে ছিল ১০০ বগি। এতগুলো বগির কারণে ১ দশমিক ৯ কিলোমিটার লম্বা ছিল ট্রেনটি। এছাড়া এতে রয়েছে সাড়ে ৪ হাজার আসন। ট্রেনটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় যাত্রীবাহী ট্রেন বলা হচ্ছে।
সুইজাল্যান্ডের প্রকৌশল খাতের অর্জনকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে মূলত এ উদ্যোগ নেওয়া হয়। আর এ আয়োজন করা হয় সুইস রেলওয়ের ১৭৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানকে স্মরণীয় করে রাখতে। গত শনিবার দিনটি উপলক্ষে প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা এ যাত্রীবাহী ট্রেনটি চালিয়েছে দেশটির রিহেটিয়ান রেলওয়ে কর্র্তৃপক্ষ।
ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্বঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়া পূর্ব সুইজারল্যান্ডের প্রেডা থেকে আলভ্যানিউ পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার রেলপথ পাড়ি দিতে ট্রেনটির সময় লেগেছে প্রায় এক ঘণ্টা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রেডা ও আলভ্যানিউর উচ্চতা যথাক্রমে ১ হাজার ৭৮৮ মিটার ও ১ হাজার মিটার। প্রেডা থেকে আলভ্যানিউ পর্যন্ত পুরো রেলপথই খুব অসমতল, বিশেষ করে পুরো লাইনটি ন্যারো গেজ হওয়ায় এ ট্রেনের যাত্রা সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবাক করেছে। এক হাজার ৯১০ মিটার লম্বা ট্রেনটি যাত্রাপথে ২২টি টানেল ও গভীর উপত্যকার ওপর দিয়ে ৪৮টি সেতু পার হয়েছে।
মোট ৭ জন চালক ও ২১ জন প্রকৌশলী এ ট্রেন চালানোয় যুক্ত ছিলেন। প্রথম পরীক্ষায় ট্রেন থামানোর জন্য মূল চালক আন্দ্রেস ক্রামের (৪৬) অন্য চালকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। পরে বিশেষ যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করে একই গতিতে ট্রেনটি পরিচালনায় সক্ষম হন চালকরা। সুইজারল্যান্ডের আগে সবচেয়ে লম্বা যাত্রীবাহী ট্রেনের রেকর্ড ছিল বেলজিয়ামের।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ বেশ কিছু এলাকায় ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। কৃষ্ণসাগরে রুশ নৌবহরে ড্রোন হামলার জন্য ইউক্রেনকে মস্কো দায়ী করার পর গতকাল সোমবার একাধিক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কিয়েভ। টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বলেছে, সোমবার সকালের দিকে দেশজুড়ে বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে অর্ধশতাধিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে রাশিয়া। বিশেষ করে জ্বালানি স্থাপনা লক্ষ্য করে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র বৃষ্টির পর কিয়েভ এবং অন্যান্য শহরে ব্যাপক বিদ্যুৎ ও পানির সংকট দেখা দিয়েছে। কিয়েভের প্রায় ৮০ শতাংশ বাসিন্দা তীব্র পানি সংকটে পড়েছে। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বলেছেন, ‘রাশিয়ার আরেক ঝাঁক ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলোর ওপর আঘাত হানছে।’ দক্ষিণ-পূর্ব জাপোরিজ্জিয়া এবং পশ্চিম ইউক্রেনের লভিভেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর পাওয়া গেছে।
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
প্রথম দুই সেটই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টিও টাইব্রেকারে। সেটির নিষ্পত্তি ঘণ্টার ওপরে। দুটোতেই জয় নোভাক জকোভিচের। তারপরেরটিও জিতে যান এই সার্বিয়ান। ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেনের খেলায় স্পেনের আলেজান্দ্রো ফোকিনার সঙ্গে ৩-০ সেটে জয়লাভ করেন তিনি। যে জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী এই নাম্বার ওয়ান টেনিস তারকা প্রথম সেটে কিছুটা ছন্দহীন ছিলেন। তবে চ্যাম্পিয়নদের ঘুরে দাঁড়াতে তো সময় বেশি লাগে না। জকোভিচও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারপর ফোকিনাকে কোনো সেট জিততে না দিয়েই ম্যাচ শেষ করেন তিনি।
প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ম্যাচটিতে এক পেশে জয় হলেও প্রতিটি সেটেই উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছেন দুজন। সমর্থকেরাও বারবার হয়েছেন রোমাঞ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত নোভাক জকোভিচের সমর্থকেরাই হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগামী সোমবার জকোভিচ শেষ ষোলোর ম্যাচ খেলতে নামবেন। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্লোস আলকারাজকে পেতে পারেন তিনি।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।