
শীতে ইউক্রেন যুদ্ধের তীব্রতা কমে আসবে যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থার এমন ভবিষ্যদ্বাণী যে আদতে বাস্তব হয়নি তা দেখা যাচ্ছে রণক্ষেত্রে। রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ সামরিক ঘাঁটিতে ইউক্রেনের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে বেড়েছে রুশ হামলার তীব্রতা। একইভাবে কৌশলগতভাবে রাশিয়ার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত রণক্ষেত্র দনবাসে অবস্থান শক্ত করেছে রুশ সেনারা। ইউক্রেনের বাখমুতে অগ্রসর হতে লবণখনির শহর সোলেদারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রাশিয়া। এর মধ্যে ইউক্রেন অভিযানের কমান্ডার আবার বদলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। এদিকে ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী প্যাট্রিয়ট মিসাইল ব্যবস্থা দেওয়ার ঘোষণার জেরে কিয়েভ, নিপ্রোতে রুশ আক্রমণ জোরদার হয়েছে। নিপ্রোতে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হয়েছে কমপক্ষে ৪০ ইউক্রেনীয়। আবার রাশিয়ার অভিযানে মিত্র বেলারুশও ইউক্রেন যুদ্ধে সরাসরি অংশ নিতে পারে এমন শঙ্কা জেগেছে। যুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করা ইউক্রেন এখন আর আগের মতো বুক চিতিয়ে লড়াই করতে পারছে না।
এই পরিস্থিতিতে আরও পশ্চিমা সামরিক সহায়তার আশায় আছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররাও মরিয়া হয়ে উঠেছে।
খেরসনে রাশিয়া পিছু হটার পর দনবাসে রুশ সেনাদের শক্ত অবস্থানে শঙ্কায় আছে ইউক্রেনের মিত্ররা। ইউক্রেনের পরাজয় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর কারণ হতে পারে বলে মিত্র দেশগুলোকে সতর্ক করেছেন পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোরাভিয়েৎস্কি। এসময় তিনি জার্মানি এবং ন্যাটো সামরিক জোটভুক্ত অন্য দেশগুলোকে ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানো জোরদার করার দাবিও জানিয়েছেন। গত সোমবার বার্লিনে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, জার্মানিকে অবশ্যই ইউক্রেনের জন্য ‘লেপার্ড-টু’ ট্যাঙ্ক সরবরাহ করতে হবে। তিনি যোগ করেন, পোল্যান্ড এবং ফিনল্যান্ড কিয়েভকে ট্যাঙ্ক সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কিন্তু সেগুলো প্রকৃতপক্ষে হস্তান্তরের জন্য জার্মানির অনুমোদন প্রয়োজন। পোলিশ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আজকে ইউক্রেন শুধু নিজের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করছে না, বরং ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য যুদ্ধ করছে। আমি জার্মান সরকারকে আহ্বান জানাব যাতে তারা চূড়ান্তভাবে সবধরনের অস্ত্র ইউক্রেনকে সরবরাহ করে।’ ট্যাঙ্ক নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু জার্মানি লেপার্ড দিতে গড়িমসি করছে। আবার ইতিমধ্যে অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং ইউক্রেন যুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে না পারার দায়ভার নিয়ে পদত্যাগ করেছেন জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টিন ল্যামব্রাখট। ইউক্রেনে যুদ্ধের ঘটনায় রুশ নেতাদের বিচারের জন্য একটি বিশেষ আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল গঠনের আহ্বান জানিয়েছে জার্মানি। দ্য হেগ একাডেমি অব ইন্টারন্যাশনাল ল-তে দেওয়া এক ভাষণে এমন আহ্বান জানিয়েছেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক। এদিকে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে আত্মরক্ষায় প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ব্যবহার শিখতে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছে একদল ইউক্রেনীয় সেনা। এ ছাড়া গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শার্মানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল কিয়েভ সফরে গিয়ে ইউক্রেনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছে।
পশ্চিমা নয়া সামরিক সহায়তার ব্যাপারে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, পোল্যান্ড এবং ব্রিটেন নতুন করে ইউক্রেনকে যে উন্নতমানের অস্ত্র দিতে চেয়েছে তাতে যুদ্ধের ফলাফলে কোনো পরিবর্তন আসবে না, বরং যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হবে। পশ্চিমারা যদি কিয়েভকে ট্যাঙ্ক সরবরাহ করে, তাহলে সেগুলোকে ‘জ্বালিয়ে’ দেওয়া হবে।
হিমালয় কোলের দেশ নেপাল ভূপ্রাকৃতিকভাবে দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকে। ২০১৫ সালে এশিয়ার অন্যতম দরিদ্র দেশটিতে স্মরণকালের শক্তিশালী ভূমিকম্পে মানবিক বিপর্যয় ঘটে। রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন এলাকা লন্ডভন্ড হয়ে যায়। চরম অসহায়ত্তের সম্মুখীন হয়েছিল নেপাল। পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি ও দক্ষ জনবলের অভাবে উদ্ধারকাজ হয়েছিল ধীরগতিতে। ভূমিকম্প, তুষারধস ছাড়াও দেশটিতে প্রায় নিয়মিত বিরতিতে বিধ্বস্ত হচ্ছে উড়োজাহাজ। নেপালে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে গেল গত রবিবার। রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে পোখারায় যাওয়ার পথে পোখারা বিমানবন্দরে সিতি নদীর কাছে ইয়েতি এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়। উড়োজাহাজে আরোহী ছিলেন ৭২ জন। চারজন ছিলেন ক্রু। গতকাল মঙ্গলবার নেপাল পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনাস্থল থেকে মোট ৭০টি মরদেহ উদ্ধার করা গেছে। গভীর গিরিখাতে নেমে, ড্রোন পাঠিয়ে চলে উদ্ধার কাজ।
এই দুর্ঘটনা আবারও দেশটির উদ্ধারকাজের দুর্বলতা দৃশ্যমান করেছে। নেপালের স্থানীয় সংবাদ সংস্থা কাঠমান্ডু পোস্টের এক প্রতিবেদনে এসব দুর্বলতাই চিহ্নিত করা হয়েছে। নেপাল সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কৃষ্ণ প্রসাদ ভান্ডারি বলেন, ‘দুর্ঘটনাস্থলটি ছিল দুর্গম। এ কারণে উদ্ধার অভিযান কঠিন ছিল।’ দেশটির ন্যাশনাল সোসাইটি ফর আর্থকোয়েক টেকনোলজির উপনির্বাহী পরিচালক গণেশ কুমার জিমি বলেন, ‘উন্নত দেশে এ ধরনের দুর্ঘটনায় উদ্ধারকাজে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়। সুরক্ষা জ্যাকেট, আলো সরবরাহের সরঞ্জাম, মেগাফোন, কাটার জন্য উন্নত যন্ত্রের সহায়তায় উদ্ধার অভিযান সহজে পরিচালনা করা সম্ভব। স্যাটেলাইটভিত্তিক সরঞ্জাম, নির্দেশক ট্রান্সমিটারের মতো উন্নত সরঞ্জাম থাকলে উদ্ধারকাজ সঠিকভাবে পরিচালনা করা যায়।’
গত বছরের মে মাসে তারা এয়ারের একটি উড়োজাহাজ পাহাড়ে বিধ্বস্ত হয়। ওই দুর্ঘটনায় পোখারা থেকে জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা জমসন যাওয়ার পথে ২২ আরোহী নিহত হন। বিধ্বস্ত হওয়ার ২০ ঘণ্টা পরে উড়োজাহাজটি খুঁজে পাওয়া যায়। সে বছর মুসতাং জেলায় দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজে নিয়োজিত ছিল পর্বত অভিযানকারী সংস্থা সেভেন সামিট ট্রেকস। তাদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিনগমা শেরপা এর আগেও বেশকিছু উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেছেন। বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকায় তিনি উদ্ধারকাজে অংশ নেন। মিনগমা শেরপা বলেন, ‘মুসতাং এলাকায় উদ্ধারকাজ পরিচালনা করতে গিয়ে তারা উদ্ধার অভিযানের সরঞ্জামের ঘাটতি দেখেছেন।’
নেপালের সিভিল অ্যাভিয়েশন পরিষদ বলছে, ১৯৫৫ সালের আগস্ট মাসে দেশটিতে প্রথম উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা ঘটে। এরপর একের পর এক উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় ৯১৪ জন নিহত হয়েছেন।
বাবুই জাতীয় ঠোঁট-রাঙা কুইলিয়া পাখির আক্রমণে দিশেহারা পরিস্থিতিতে পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়া। শত শত হেক্টর জমির ফসল সাবাড় করে ফেলায় প্রায় ৬০ লাখ কুইলিয়া পাখি হত্যার এক অভিযান শুরু করেছে দেশটির সরকার। তবে এই পাখি হত্যা করা হলে তা পরিবেশ ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর জন্য অনাকাক্সিক্ষত পরিণতি ডেকে আনতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা।
আফ্রিকায় ক্রমাগত খরার কারণে দেশীয় প্রজাতির ঘাসের পরিমাণ কমে গেছে। আর এই ঘাসের বীজ কুইলিয়া পাখির প্রধান খাবারের উৎস। ঘাস কমে যাওয়ায় কুইলিয়া পাখি এখন হন্যে হয়ে শস্যক্ষেত্রে হানা দিচ্ছে। যে কারণে কেনিয়ার প্রায় ২ হাজার একর জমির ধান হুমকির মুখে পড়েছে। দেশটিতে ইতিমধ্যে কুইলিয়ার হানায় ৩০০ একর জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। কুইলিয়ার হানা ঠেকাতে দেশটির সরকার এই পাখির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। আবাদি জমির ফসল রক্ষার জন্য হানা দেওয়া ৬০ লাখ কুইলিয়াকে মেরে ফেলার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে দেশটির সরকার। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য অনুযায়ী, কেবল একটি কুইলিয়া পাখি দিনে অন্তত ১০ গ্রাম পর্যন্ত শস্য খেতে পারে। পশ্চিম কেনিয়ার কৃষকরা এই পাখিকুলের কাছে প্রায় ৬০ টন শস্য হারাতে বসেছে। ২০২১ সালে দেশটিতে পাখির কারণে ফসলের বার্ষিক ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৫০ মিলিয়ন ডলার।
পাখিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য কৃষকরা ফেনথিয়ন নামের একধরনের কীটনাশক স্প্রে ব্যবহার করেন। কিন্তু গবেষকরা এই রাসায়নিককে মানুষ ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর ও বিষাক্ত বলে অভিহিত করেন। গবেষকরা বলেছেন, ‘ফেনথিয়নের কারণে প্রাণীরা নির্বিচারে আহত অথবা মারা যেতে পারে। যার ফলে লক্ষ্যবহির্ভূত জীবের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়ে।’ নেচার কেনিয়ার ম্যানেজার ও স্থানীয় পশুপাখিবিষয়ক সংস্থা বার্ডলাইফ ইন্টারন্যাশনালের কর্মকর্তা পল গ্যাচেরু বলেন, কুইলিয়া নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত পদ্ধতিটি কৃষকদের ভালোভাবে জানানো দরকার। কারণ এই কীটনাশকের বহুল ব্যবহারের ফলে মারাত্মক পরিবেশদূষণ এবং অন্যান্য পাখি, সরীসৃপের ব্যাপক মৃত্যু হতে পারে। পাখিবিশেষজ্ঞরা বলছেন, কুইলিয়াকে তাড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত শিকারি পাখি কিংবা কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব কোনো সমাধান এই অঞ্চলে নেই।
সুইডেন ও ফিনল্যান্ডকে ১৩০ জন ‘সন্ত্রাসীকে’ দেশ থেকে বের করে দেওয়া কিংবা আঙ্কারার কাছে হস্তান্তরের আল্টিমেটাম দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। দেশ দুটির ন্যাটোতে যোগদানের আবেদনে সমর্থন দেওয়া নিয়ে তুরস্কের পার্লামেন্ট সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই ওই সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন এরদোয়ান। নিয়মানুযায়ী, নতুন সদস্য নেওয়ার ক্ষেত্রে ৩০ জাতির এই জোটের সবার সম্মতি থাকতে হয়। তবে তুরস্ক ও হাঙ্গেরি এখনো এ বিষয়ে রাজি হয়নি। তুরস্ক বলছে, সুইডেনকে বিশেষত, প্রথমেই ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে একটি স্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে ; মূলত কুর্দি মিলিশিয়া এবং ২০১৬ সালে তুরস্কে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। গত রবিবার এরদোয়ান বলেন, ‘আপনারা যদি সন্ত্রাসীদের আমাদের কাছে হস্তান্তর না করেন, আপনাদের ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়টি কোনোভাবেই পার্লামেন্টে পাস করাতে পারব না।’
জাতিসংঘের সংস্থা ইউনেস্কো জানিয়েছে, ২০২২ সালে বিশ্বে ৮৬ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। টানা তিন বছর কমার পর গত বছর সাংবাদিক হত্যা আবার বেড়েছে। ২০১৯ থেকে ’২১ সাল পর্যন্ত ৫৮ জন সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন। ২০১৮ সালে ৯৯ সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছিল। ২০২২ সালে মেক্সিকোতে সবচেয়ে বেশি ১৯ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া ইউক্রেনে ১০ ও হাইতিতে ৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তিন-চতুর্থাংশ সাংবাদিক সংঘাত চলছে না এমন জায়গায় খুন হয়েছেন। ৮৬ জনের মধ্যে অর্ধেকের বেশি সাংবাদিক লাতিন আমেরিকান অঞ্চলের। সংঘবদ্ধ অপরাধ, সশস্ত্র সংঘাত ও জঙ্গিবাদের উত্থান নিয়ে কাজ করায় সাংবাদিকরা হত্যার শিকার হয়েছেন। এ ছাড়া দুর্নীতি, পরিবেশগত অপরাধ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিক্ষোভ নিয়ে প্রতিবেদন করার কারণেও সাংবাদিকরা প্রাণ হারিয়েছেন। ইউনেস্কো বলছে, সাংবাদিক হত্যায় দায়মুক্তির হার প্রায় ৮৬ শতাংশ, যা ‘আশ্চর্যজনকভাবে খুবই বেশি’। এ হার গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। প্রাণহানি ছাড়াও গত বছর সাংবাদিকরা আরও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে আছে গুম, অপহরণ, জোরপূর্বক আটকে রাখা, মামলা দিয়ে হয়রানি ও অনলাইন সহিংসতার শিকার হওয়া।
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
প্রথম দুই সেটই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টিও টাইব্রেকারে। সেটির নিষ্পত্তি ঘণ্টার ওপরে। দুটোতেই জয় নোভাক জকোভিচের। তারপরেরটিও জিতে যান এই সার্বিয়ান। ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেনের খেলায় স্পেনের আলেজান্দ্রো ফোকিনার সঙ্গে ৩-০ সেটে জয়লাভ করেন তিনি। যে জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী এই নাম্বার ওয়ান টেনিস তারকা প্রথম সেটে কিছুটা ছন্দহীন ছিলেন। তবে চ্যাম্পিয়নদের ঘুরে দাঁড়াতে তো সময় বেশি লাগে না। জকোভিচও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারপর ফোকিনাকে কোনো সেট জিততে না দিয়েই ম্যাচ শেষ করেন তিনি।
প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ম্যাচটিতে এক পেশে জয় হলেও প্রতিটি সেটেই উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছেন দুজন। সমর্থকেরাও বারবার হয়েছেন রোমাঞ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত নোভাক জকোভিচের সমর্থকেরাই হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগামী সোমবার জকোভিচ শেষ ষোলোর ম্যাচ খেলতে নামবেন। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্লোস আলকারাজকে পেতে পারেন তিনি।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।