
পশ্চিম তীরে এ বছরের প্রথম দুই মাসে ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয় ৬২ ফিলিস্তিনি। জবাবি হামলায় প্রাণ যায় ১০ ইসরায়েলির। দুই পক্ষের সংঘাত পৌঁছাতে থাকে চরমে, দেখা দেয় আবারও খণ্ডযুদ্ধের আশঙ্কা। এ পরিস্থিতিতে উত্তেজনা প্রশমনে যুক্তরাষ্ট্র-মিসরের সংশ্লিষ্টতা এবং জর্ডানের মধ্যস্থতায় বৈঠকে বসে ইসরায়েলের সরকার ও ফিলিস্তিনি কর্র্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা। গত রবিবার লোহিত সাগর তীরের আকাবা বন্দরে এই বৈঠকে দুই পক্ষই শান্তি স্থাপনে সমঝোতায় পৌঁছায়।
ওই বৈঠক শেষে একটি যৌথ বিবৃতিতে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলেন, তারা দুই জাতির মধ্যে চলমান উত্তেজনা কমানোর জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে সহিংসতা প্রতিরোধে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে উভয় দেশ।
কিন্তু এ বৈঠকে অংশ নেওয়ায় পশ্চিম তীরভিত্তিক ফিলিস্তিনি কর্র্তৃপক্ষের তীব্র সমালোচনা করেছে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা শাসনকারী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। তাদের দাবি, বৈঠকটি একেবারেই ‘অর্থহীন’। এর ফলে কোনো কিছুরই পরিবর্তন ঘটবে না। তবে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আকাবা বৈঠকে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্তটি পশ্চিম তীরে রক্তপাত বন্ধ করার ইচ্ছা থেকেই এসেছে।
পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনসংক্রান্ত দায়িত্বে থাকা ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ বলেছেন, ‘আমরা বসতি স্থাপনের বিষয়ে কোনো চুক্তি মেনে চলব না। জর্ডানে কী নিয়ে কথা হয়েছে, সে সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই। তবে একটি বিষয় পরিষ্কার, পশ্চিম তীরে জনবসতি স্থাপন থেমে থাকবে না। এমনকি, একদিনের জন্যও নয়। এটি পুরোপুরি আমার কর্র্তৃত্বাধীন।’
এদিকে, রবিবারের শান্তি আলোচনা চলাকালে অধিকৃত পশ্চিম তীরে দুই ইসরায়েলিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সে ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, তারা হামলাকারীকে আটকের চেষ্টা করছে ও পশ্চিম তীরে আরও বেশিসংখ্যক সৈন্য মোতায়েন করেছে।
ইসরায়েলি কর্র্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, নাবলুসের নিকটবর্তী হাওয়ারা গ্রামে গাড়ির ভেতরে গুলি করে হত্যা করা দুজনের মধ্যে একজন সেনাসদস্য ছিলেন। ইসরায়েল সরকার এ ঘটনাকে ‘ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী হামলা’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
ওই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের একটি বড় দল একই গ্রামে প্রবেশ করে ও ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে থাকে। পরে তারা সেখানকার বাড়িঘর ও গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। একপর্যায়ে ইসরায়েলি সেনারাও সেখানে যোগ দেয় ও গুলি ছুড়তে থাকে।
ফিলিস্তিনের দাবি, ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা কমপক্ষে ১৫টি বাড়ি ও বেশ কয়েকটি গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। ‘অযাচিত’ এ হামলায় এক ফিলিস্তিনি নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছে। তা ছাড়া বেশ কয়েকটি পরিবার তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।
সেই ঘটনার রেশ কাটার আগেই গত সোমবার পশ্চিম তীরের জেরিকো শহরে গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন এক আমেরিকান-ইসরায়েলি। তাকেও মহাসড়কে গাড়ির ভেতরে গুলি করা হয়। হামলা-পাল্টা হামলাসহ অস্থিরতা আরও তীব্র হওয়ার মধ্যেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটল বলে গতকাল মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। অবশ্য কোনো ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে হামাসের এক মুখপাত্রের ভাষ্য, দখলদারদের অপরাধগুলোর জবাবে ছুরিকাঘাত, গুলি ও গাড়ির ধাক্কা যথেষ্ট নয়।
আগামী ৯ মার্চ নেপালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা। ২০২২ সালের নভেম্বরে দেশটিতে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় পুষ্পকমল দহলের নেতৃত্বে জোট সরকার গঠিত হয়। এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে সেই জোটের মধ্যে ভাঙন শুরু হয়েছে।
নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির নেতৃত্বাধীন দল সিপিএন-ইউএমএল গত সোমবার জানিয়েছে, দলটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুষ্পকমল দহলের নেতৃত্বে গঠিত জোট সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করবে। ইউএমএল-এর ভাইস চেয়ারম্যান বিষ্ণু পাউদেল বলেন, ‘নেপালের প্রধানমন্ত্রী ভিন্ন পদ্ধতিতে কাজ শুরু করার পর এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড়ে পরিবর্তিত রাজনৈতিক সমীকরণের কারণে আমরা সরকারের জোট থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
পুষ্পকমল ও কেপি শর্মা ওলির জোট ভেঙে যাওয়ার প্রধান কারণ মাওবাদী নেতা নেপালি কংগ্রেস নেতা রাম চন্দ্র পাউদেলকে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য সমর্থন করা। পাউদেলের নেপালি কংগ্রেস একটি বিরোধী দল। তারা ক্ষমতাসীন জোটের বাইরে রয়েছে। এদিকে ওলি পাউদেলের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সুবাস নেমবাংকে সিপিএন-ইউএমএল পার্টির সদস্য মনোনীত করেছিলেন।
এর আগে ২৬ ফেব্রুয়ারি জোট সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে নেপালের উপপ্রধানমন্ত্রীসহ আরও তিন মন্ত্রী পদত্যাগ করেন। পুষ্প পাউদেলকে সমর্থন করায় এ সিদ্ধান্ত নেন তারা।
অথচ নেপালে এখন সবচেয়ে বেশি দরকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। করোনা মহামারীর কারণে অর্থনৈতিক গোলযোগের মধ্যে পড়ে নেপাল। এর পর থেকেই দেশটিতে জিনিসপত্রের দাম বাড়া শুরু হয়। দুই বছর পর আবারও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে অন্যান্য দেশের মতো নেপালেও বেড়েছে সব পণ্যের দাম। নেপালে ৬ বছরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চে ৮ শতাংশের বেশি। এ ছাড়া গত কয়েক বছরে পর্যটকদের আনাগোনা কমেছে দেশটিতে।
নেপালের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গত সোমবার প্রকাশিত কাঠমান্ডু পোস্টের সম্পাদকীয়তে হতাশা প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, মাত্র দুই মাসেই ভাঙনের দ্বারপ্রান্তে নেপালের জোট সরকার। সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, এই জোট আসলে গঠিতই হয়েছিল এক ভঙ্গুর ভিতের ওপর। পুষ্প এবং ওলি দুজনেই আড়াই বছর করে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারতেন। দেশের রাজনৈতিক নেতাদের লক্ষ্য এখন ক্ষমতার রাজনীতিতে, অথচ হওয়া উচিত ছিল দেশের স্বার্থকেন্দ্রিক। কেবল ক্ষমতার ভাগাভাগি প্রশ্নে যখন দেশের নেতাদের সমঝোতা মাত্র দুই মাসও টিকছে না তখন তাদের রাজনীতি নেপালকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে বেক্সিট পরবর্তী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য আইন চুক্তি করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। তার মতে, এ চুক্তি ইইউর সঙ্গে ব্রিটেনের সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যেতে ২০১৬ সালে গণভোটের পর নতুন এই চুক্তিকে যুক্তরাজ্য-ইইউ ছেঁড়া সম্পর্কে নতুন সেলাই বলা যেতে পারে। গত সোমবার পশ্চিম লন্ডনের একটি হোটেলে ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিনের সঙ্গে বৈঠক করেন সুনাক। বৈঠক শেষে উইন্ডসরে এক সংবাদ সম্মেলনে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে কথা বলেন সুনাক এবং ফন ডার লিন। সেখানে সুনাক জানান, উভয় পক্ষ ব্রিটিশ প্রদেশের (নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড) বাণিজ্য নিয়ম সহজ করার বিষয়ে একমত হয়েছে। সেই সঙ্গে তারা কী নিয়ম অনুসরণ করবে তা ঠিক করার আরও বেশি ক্ষমতা প্রাদেশিক সরকারের হাতে দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমরা বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জন করতে পেরেছি। এটা আমাদের সম্পর্কের নতুন একটি অধ্যায়ের সূচনা।’
আয়ারল্যান্ড আলাদা একটি রাষ্ট্র হলেও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড এখনো যুক্তরাজ্যের অংশ। আয়ারল্যান্ড ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের মধ্যে নিবিড় বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে এবং দুই অঞ্চলের মধ্যে কোনো সীমান্ত নেই (ওপেন বর্ডার)। যুক্তরাজ্য ইইউর সদস্য থাকা অবস্থায় দুই আয়ারল্যান্ডের ইইউর একক বাণিজ্যনীতি নিয়ে কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু ব্রেক্সিটের পর অর্থাৎ আয়ারল্যান্ড ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক কী হবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়।
নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড বিষয়ে ইইউর সঙ্গে নতুন চুক্তিকে প্রধানমন্ত্রী সুনাকের জন্য বড় অর্জন হিসেবে ধরে নেওয়া হচ্ছে। মাত্র চার মাস আগে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতায় আসা সুনাক ইইউ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আপসের মাধ্যমে সম্পর্ক আরও উন্নত করতে আগ্রহী বলে মনে করছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। একই সঙ্গে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড বিষয়ে ইইউর সঙ্গে নতুন চুক্তি সুনাকের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। কারণ, তার দল কনজারভেটিভ পার্টিই তীব্র ব্রেক্সিটপন্থি। এখন ইইউর সঙ্গে সমঝোতার সম্পর্ক তার দলের এমপিদের পছন্দ নাও হতে পারে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্বীকার করেছেন, রাশিয়ার সেনাদের হামলায় দোনেৎস্কের বাখমুত শহরের পরিস্থিতি দিন দিন কঠিন হচ্ছে। পশ্চিমাদের ভাষ্য অনুযায়ী, ‘কম গুরুত্বপূর্ণ’ এ শহরটির দখল নিতে গত ৬ মাস অব্যাহত হামলা চালাচ্ছে রুশ বাহিনী। বাখমুতের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে গত সোমবার জেলেনস্কি বলেন, ‘বাখমুতের অবস্থা খারাপ। আমাদের অবস্থান সুরক্ষায় যা রয়েছে, তার সবই অব্যাহতভাবে ধ্বংস করছে শত্রুরা।’ ইউক্রেনে যুদ্ধ বাধার পর যেসব অঞ্চলে তীব্র যুদ্ধ হয়েছে দোনেৎস্কের বাখমুত সেগুলোর একটি। বর্তমানে দোনেৎস্কের বেশির ভাগ অঞ্চল রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে জেলেনস্কি আবারও পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি যুদ্ধবিমান দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যদি পশ্চিমা দেশগুলোর যুদ্ধবিমান ইউক্রেন পায় তাহলে, ‘আমাদের দেশের সব অঞ্চলকে রাশিয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে পারব।’
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বর্তমানে প্রধান বিরোধী দলের নেতা ইমরান খানের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে দেশটির একটি আদালত। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানী ইসলামাবাদের এফ-৮ করাচি আদালত এই পরোয়ানা জারি করে। আলোচিত ‘তোশাখানা মামলা’য় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন। ইসলামাবাদের জুডিশিয়াল কমপ্লেক্সের তিনটি আদালতে চলছে ইমরানের বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রধান চারটি মামলার বিচার কার্যক্রম। চারটি মামলাতেই নিজের আইনজীবীদের মাধ্যমে আগাম জামিনের আবেদন করেছিলেন পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান। জামিন আবেদনগুলোর ওপর শুনানির নির্ধারিত দিন ছিল গতকাল মঙ্গলবার। ডনের প্রতিবেদন অনুসারে, মঙ্গলবার ব্যাংকিং ও অ্যান্টি টেররিজম আদালতের জামিন আবেদনের শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন ইমরান খান। সে দুটি মামলায় তার জামিন মঞ্জুরও করে আদালত। এরপর আরেকটি মামলার শুনানিতে উপস্থিত থাকার জন্য জুডিশিয়াল কমপ্লেক্স ছেড়ে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে যান পিটিআই চেয়ারম্যান। তাই করাচি সেশন জজ আদালতে তোশাখানা মামলার আগাম জামিন আবেদনের শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন না তিনি। উপস্থিত হতে না পারায় ইমরানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
প্রথম দুই সেটই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টিও টাইব্রেকারে। সেটির নিষ্পত্তি ঘণ্টার ওপরে। দুটোতেই জয় নোভাক জকোভিচের। তারপরেরটিও জিতে যান এই সার্বিয়ান। ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেনের খেলায় স্পেনের আলেজান্দ্রো ফোকিনার সঙ্গে ৩-০ সেটে জয়লাভ করেন তিনি। যে জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী এই নাম্বার ওয়ান টেনিস তারকা প্রথম সেটে কিছুটা ছন্দহীন ছিলেন। তবে চ্যাম্পিয়নদের ঘুরে দাঁড়াতে তো সময় বেশি লাগে না। জকোভিচও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারপর ফোকিনাকে কোনো সেট জিততে না দিয়েই ম্যাচ শেষ করেন তিনি।
প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ম্যাচটিতে এক পেশে জয় হলেও প্রতিটি সেটেই উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছেন দুজন। সমর্থকেরাও বারবার হয়েছেন রোমাঞ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত নোভাক জকোভিচের সমর্থকেরাই হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগামী সোমবার জকোভিচ শেষ ষোলোর ম্যাচ খেলতে নামবেন। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্লোস আলকারাজকে পেতে পারেন তিনি।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।