সৌদি কনস্যুলেটে ১৫ জন মিলে হত্যা করে খাসোগিকে
অনলাইন ডেস্ক | ৭ অক্টোবর, ২০১৮ ১৯:০৪
জামাল খাসোগি
বান্ধবীকে বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে মঙ্গলবার দুপুরে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে ঢুকেছিলেন জামাল খাসোগি। উদ্দেশ্য ছিল তার বিবাহবিচ্ছেদের একটা সার্টিফিকেট নেয়া। তার পর থেকেই জামাল খাসোগি নিখোঁজ। ছয় দিন পর তুর্কি পুলিশ এখন বলছে, তাকে হয়তো কনস্যুলেটের ভেতরেই খুন করা হয়েছে।
সৌদি ভিন্নমতাবলম্বী জামাল খাসোগির রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়া নিয়ে পাশ্চাত্য এবং মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদমাধ্যমে কয়েকদিন ধরেই তুমুল হৈচৈ চলছিল। কিন্তু এখন তা পুরোদস্তুর হত্যা রহস্যের চেহারা নিয়েছে । খবর: বিবিসি বাংলা।
জামাল খাসোগি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের একজন সমালোচক এবং বেশ কিছুকাল ধরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছিলেন।
অবশ্য খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে- এমন ধারণার পক্ষে কোন প্রমাণ দেয়নি তুর্কি পুলিশ। অন্যদিকে সৌদি কর্মকর্তারা একে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
বিচিত্র এই ঘটনার শুরু মঙ্গলবার। খাসোগির সাথে হাতিস চেঙ্গিজ নামে একজন তুর্কি মহিলার প্রণয় চলছিল। হাতিসকে নিয়েই তিনি ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেট ভবনে এসেছিলেন। মিজ চেঙ্গিজ বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন এবং খাসোগি কনস্যুলেটের ভেতরে যান। খাসোগি আর বেরিয়ে আসেননি।
খাসোগিকে হত্যা করতে এসেছিল ১৫ জন সৌদির একটি দল?
খাসোগিকে পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে কনস্যুলেটের ভেতরেই হত্যা করা হয়েছে- প্রাথমিকভাবে এমনটাই অনুমান করছে তুরস্কের পুলিশ। শুধু তাই নয়, শনিবার দুই অজ্ঞাতনামা সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে তুর্কি সংবাদমাধ্যম ও রয়টার রিপোর্ট করে যে মি. খাসোগির মৃতদেহ কনস্যুলেট থেকে বের করেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্ট একটি সূত্র উদ্ধৃত করে বলেছে, খাসোগিকে হত্যা করতে ১৫ জনের একটি বিশেষ দল পাঠানো হয়েছিল।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এক রিপোর্টে জানিয়েছে, যে সময়টা মি. খাসোগি কনস্যুলেটের ভেতরে ছিলেন, সেই সময়টাতেই প্রায় ১৫ জন সৌদি লোক সেখানে ছিল। মঙ্গলবারই এই ১৫ জন বিমানে ইস্তাম্বুল পৌঁছায় বলে বলা হয়।
তুর্কি-আরব মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান তুরান কিসলাকচি মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন, তুর্কি পুলিশ সৌদি কনস্যুলেটের নিরাপত্তার জন্য বসানো সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করেছে। তাতে জামাল খাসোগি বেরিয়ে যাচ্ছেন এমন কোনো কিছু দেখা যায়নি। কিন্তু এ সময়ই কিছু কূটনৈতিক গাড়িকে কনস্যুলেটে ঢুকতে এবং বেরুতে দেখা গেছে।
ইতোমধ্যেই খাসোগির অন্তর্ধান রহস্যের তদন্ত শুরু করেছেন তুরস্কের কর্মকর্তারা। একটি নিরাপত্তা দল ইতোমধ্যে ইস্তাম্বুল এসেছে। কিন্তু তাকে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে হত্যা করার কোনো প্রমাণ বা কিভাবে তাকে খুন করা হলো- এ ব্যাপারেও কোনো তথ্য দেননি তুর্কি কর্মকর্তারা।
এর আগে সৌদি যুবরাজ প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ব্লুমবার্গ নিউজকে বলেন, তুর্কী কর্তৃপক্ষ কনস্যুলেট ভবন তল্লাশি করতে পারে, এতে কোন বাধা নেই।
কেন সৌদি কনস্যুলেটে এসেছিলেন জামাল খাসোগি?
খাসোগির কনস্যুলেটে আসার উদ্দেশ্য ছিল, তার পূর্বতন স্ত্রীকে যে তিনি ডিভোর্স (তালাক) দিয়েছেন- এ মর্মে একটি প্রত্যয়নপত্র নেয়া যাতে তিনি হাতিসকে বিয়ে করতে পারেন।
খাসোগি তার মোবাইল ফোনটি হাতিসের হাতে দিয়ে ভবনের ভেতরে ঢোকেন। হাতিস সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, খাসোগি এ সময় বিমর্ষ এবং মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন- কারণ তাকে ওই ভবনে ঢুকতে হচ্ছে।
হাতিস আরও বলেন, জামাল খাসোগি তাকে বলেছিলেন যদি তিনি কনস্যুলেট থেকে বের না হন- তাহলে তিনি যেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ানের একজন উপদেষ্টাকে ফোন করেন।
হাতিস জানান, তিনি কনস্যুলেটের বাইরে অপেক্ষা করেন মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর একটা থেকে মধ্যরাতের পর পর্যন্ত। কিন্তু তিনি জামাল খাসোগিকে কনস্যুলেট থেকে বেরিয়ে আসতে দেখেননি।
বুধবার সকাল বেলা কনস্যুলেট খোলার সময় তিনি আবার সেখানে উপস্থিত হন। তখন পর্যন্ত মি. খাসোগির কোন খোঁজ তো মেলেইনি, এখনো তিনি নিরুদ্দেশ।
কে এই জামাল খাসোগি?
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের অন্যতম প্রধান সমালোচক হচ্ছেন এই ৫৯ বছর বয়স্ক জামাল খাসোগি।
তিনি আল-ওয়াতান পত্রিকা ও সৌদি টিভির সাবেক সম্পাদক ছিলেন। তিনি সৌদি রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং ঊর্ধ্বতন সৌদি কর্মকর্তাদের উপদেষ্ট ছিলেন। কিন্তু কয়েকজন বন্ধুকে গ্রেফতার করার পর আল-হায়াত পত্রিকায় তার কলামটি বন্ধ করে দেয়া হয় এবং টুইট করা বন্ধ করতে সতর্ক করে দেয়া হয়।
এর পর মি. খাসোগি সৌদি আরব ছেড়ে যুক্তরাষেট্র চলে যান। সেখান থেকে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় লেখালিখি ও বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন।
সালমানের সংস্কার পরিকল্পনা পশ্চিমা দেশগুলোতে প্রশংসিত হলেও ভিন্নমতাবলম্বী, মানবাধিকার ও নারী অধিকারকর্মীদের দমন, বুদ্ধিজীবী এবং ধর্মীয় নেতাদের গ্রেফতার, ইয়েমেনের যুদ্ধ- এসব কারণে সমালোচিত হয়েছেন।
এর প্রতিক্রিয়া কি হতে পারে?
বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, তুরস্ক ও সৌদি আরবের সম্পর্ক এখন তিক্ত অবস্থায় আছে। একজন সুপরিচিত সৌদি ভিন্নমতাবলম্বীকে তুরস্কের মাটিতে রাষ্ট্রীয় মদদে হত্যার ব্যাপারটি প্রমাণিত হলে তা আরো বিরূপ হবে।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই সৌদি রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এ ঘটনা সম্পর্কে ব্যাখ্যা চেয়েছে।
তুরস্কের ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (একে) পার্টিও বলেছে, খাসোগির কী হয়েছে তা ব্যাপকভিত্তিক তদন্তের মাধ্যমে বের করা হবে।
সৌদি আরবের প্রতিক্রিয়া কী?
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, খাসোগি একজন সৌদি নাগরিক এবং তার কী হয়েছে তা জানতে তিনি খুবই ব্যগ্র। তারা তুর্কি সরকারের সাথে যোগাযোগ রাখছেন।
‘আমি যা বুঝতে পারছি তা হলে তিনি (খাসোগি) কনস্যুলেটে ঢুকে আবার কয়েক মিনিট বা ঘন্টাখানেক পরই বেরিযে যান, তবে আমি নিশ্চিত নই। আমরা তদন্ত করছি’ বলেন তিনি।
মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, কনস্যুলেট ভবন সৌদি আরবের নিজ ভূখণ্ডের মর্যাদা ভোগ করে। কিন্তু তদন্তকারীরা ভেতরে ঢুকতে চাইলে অনুমতি দেয়া হবে। তাদের কোনো কিছু লুকানোর নেই।
সৌদি আরবে খাসোগির নামে মামলা আছে কিনা জানতে চাইলে যুবরাজ সালমান বলেন, তিনি কোথায় আছেন সেটাই তারা প্রথম জানতে জানতে চান।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ৭ অক্টোবর, ২০১৮ ১৯:০৪

বান্ধবীকে বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে মঙ্গলবার দুপুরে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে ঢুকেছিলেন জামাল খাসোগি। উদ্দেশ্য ছিল তার বিবাহবিচ্ছেদের একটা সার্টিফিকেট নেয়া। তার পর থেকেই জামাল খাসোগি নিখোঁজ। ছয় দিন পর তুর্কি পুলিশ এখন বলছে, তাকে হয়তো কনস্যুলেটের ভেতরেই খুন করা হয়েছে।
সৌদি ভিন্নমতাবলম্বী জামাল খাসোগির রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়া নিয়ে পাশ্চাত্য এবং মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদমাধ্যমে কয়েকদিন ধরেই তুমুল হৈচৈ চলছিল। কিন্তু এখন তা পুরোদস্তুর হত্যা রহস্যের চেহারা নিয়েছে । খবর: বিবিসি বাংলা।
জামাল খাসোগি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের একজন সমালোচক এবং বেশ কিছুকাল ধরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছিলেন।
অবশ্য খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে- এমন ধারণার পক্ষে কোন প্রমাণ দেয়নি তুর্কি পুলিশ। অন্যদিকে সৌদি কর্মকর্তারা একে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
বিচিত্র এই ঘটনার শুরু মঙ্গলবার। খাসোগির সাথে হাতিস চেঙ্গিজ নামে একজন তুর্কি মহিলার প্রণয় চলছিল। হাতিসকে নিয়েই তিনি ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেট ভবনে এসেছিলেন। মিজ চেঙ্গিজ বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন এবং খাসোগি কনস্যুলেটের ভেতরে যান। খাসোগি আর বেরিয়ে আসেননি।
খাসোগিকে হত্যা করতে এসেছিল ১৫ জন সৌদির একটি দল?
খাসোগিকে পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে কনস্যুলেটের ভেতরেই হত্যা করা হয়েছে- প্রাথমিকভাবে এমনটাই অনুমান করছে তুরস্কের পুলিশ। শুধু তাই নয়, শনিবার দুই অজ্ঞাতনামা সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে তুর্কি সংবাদমাধ্যম ও রয়টার রিপোর্ট করে যে মি. খাসোগির মৃতদেহ কনস্যুলেট থেকে বের করেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্ট একটি সূত্র উদ্ধৃত করে বলেছে, খাসোগিকে হত্যা করতে ১৫ জনের একটি বিশেষ দল পাঠানো হয়েছিল।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এক রিপোর্টে জানিয়েছে, যে সময়টা মি. খাসোগি কনস্যুলেটের ভেতরে ছিলেন, সেই সময়টাতেই প্রায় ১৫ জন সৌদি লোক সেখানে ছিল। মঙ্গলবারই এই ১৫ জন বিমানে ইস্তাম্বুল পৌঁছায় বলে বলা হয়।
তুর্কি-আরব মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান তুরান কিসলাকচি মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন, তুর্কি পুলিশ সৌদি কনস্যুলেটের নিরাপত্তার জন্য বসানো সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করেছে। তাতে জামাল খাসোগি বেরিয়ে যাচ্ছেন এমন কোনো কিছু দেখা যায়নি। কিন্তু এ সময়ই কিছু কূটনৈতিক গাড়িকে কনস্যুলেটে ঢুকতে এবং বেরুতে দেখা গেছে।
ইতোমধ্যেই খাসোগির অন্তর্ধান রহস্যের তদন্ত শুরু করেছেন তুরস্কের কর্মকর্তারা। একটি নিরাপত্তা দল ইতোমধ্যে ইস্তাম্বুল এসেছে। কিন্তু তাকে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে হত্যা করার কোনো প্রমাণ বা কিভাবে তাকে খুন করা হলো- এ ব্যাপারেও কোনো তথ্য দেননি তুর্কি কর্মকর্তারা।
এর আগে সৌদি যুবরাজ প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ব্লুমবার্গ নিউজকে বলেন, তুর্কী কর্তৃপক্ষ কনস্যুলেট ভবন তল্লাশি করতে পারে, এতে কোন বাধা নেই।
কেন সৌদি কনস্যুলেটে এসেছিলেন জামাল খাসোগি?
খাসোগির কনস্যুলেটে আসার উদ্দেশ্য ছিল, তার পূর্বতন স্ত্রীকে যে তিনি ডিভোর্স (তালাক) দিয়েছেন- এ মর্মে একটি প্রত্যয়নপত্র নেয়া যাতে তিনি হাতিসকে বিয়ে করতে পারেন।
খাসোগি তার মোবাইল ফোনটি হাতিসের হাতে দিয়ে ভবনের ভেতরে ঢোকেন। হাতিস সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, খাসোগি এ সময় বিমর্ষ এবং মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন- কারণ তাকে ওই ভবনে ঢুকতে হচ্ছে।
হাতিস আরও বলেন, জামাল খাসোগি তাকে বলেছিলেন যদি তিনি কনস্যুলেট থেকে বের না হন- তাহলে তিনি যেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ানের একজন উপদেষ্টাকে ফোন করেন।
হাতিস জানান, তিনি কনস্যুলেটের বাইরে অপেক্ষা করেন মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর একটা থেকে মধ্যরাতের পর পর্যন্ত। কিন্তু তিনি জামাল খাসোগিকে কনস্যুলেট থেকে বেরিয়ে আসতে দেখেননি।
বুধবার সকাল বেলা কনস্যুলেট খোলার সময় তিনি আবার সেখানে উপস্থিত হন। তখন পর্যন্ত মি. খাসোগির কোন খোঁজ তো মেলেইনি, এখনো তিনি নিরুদ্দেশ।
কে এই জামাল খাসোগি?
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের অন্যতম প্রধান সমালোচক হচ্ছেন এই ৫৯ বছর বয়স্ক জামাল খাসোগি।
তিনি আল-ওয়াতান পত্রিকা ও সৌদি টিভির সাবেক সম্পাদক ছিলেন। তিনি সৌদি রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং ঊর্ধ্বতন সৌদি কর্মকর্তাদের উপদেষ্ট ছিলেন। কিন্তু কয়েকজন বন্ধুকে গ্রেফতার করার পর আল-হায়াত পত্রিকায় তার কলামটি বন্ধ করে দেয়া হয় এবং টুইট করা বন্ধ করতে সতর্ক করে দেয়া হয়।
এর পর মি. খাসোগি সৌদি আরব ছেড়ে যুক্তরাষেট্র চলে যান। সেখান থেকে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় লেখালিখি ও বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন।
সালমানের সংস্কার পরিকল্পনা পশ্চিমা দেশগুলোতে প্রশংসিত হলেও ভিন্নমতাবলম্বী, মানবাধিকার ও নারী অধিকারকর্মীদের দমন, বুদ্ধিজীবী এবং ধর্মীয় নেতাদের গ্রেফতার, ইয়েমেনের যুদ্ধ- এসব কারণে সমালোচিত হয়েছেন।
এর প্রতিক্রিয়া কি হতে পারে?
বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, তুরস্ক ও সৌদি আরবের সম্পর্ক এখন তিক্ত অবস্থায় আছে। একজন সুপরিচিত সৌদি ভিন্নমতাবলম্বীকে তুরস্কের মাটিতে রাষ্ট্রীয় মদদে হত্যার ব্যাপারটি প্রমাণিত হলে তা আরো বিরূপ হবে।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই সৌদি রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এ ঘটনা সম্পর্কে ব্যাখ্যা চেয়েছে।
তুরস্কের ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (একে) পার্টিও বলেছে, খাসোগির কী হয়েছে তা ব্যাপকভিত্তিক তদন্তের মাধ্যমে বের করা হবে।
সৌদি আরবের প্রতিক্রিয়া কী?
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, খাসোগি একজন সৌদি নাগরিক এবং তার কী হয়েছে তা জানতে তিনি খুবই ব্যগ্র। তারা তুর্কি সরকারের সাথে যোগাযোগ রাখছেন।
‘আমি যা বুঝতে পারছি তা হলে তিনি (খাসোগি) কনস্যুলেটে ঢুকে আবার কয়েক মিনিট বা ঘন্টাখানেক পরই বেরিযে যান, তবে আমি নিশ্চিত নই। আমরা তদন্ত করছি’ বলেন তিনি।
মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, কনস্যুলেট ভবন সৌদি আরবের নিজ ভূখণ্ডের মর্যাদা ভোগ করে। কিন্তু তদন্তকারীরা ভেতরে ঢুকতে চাইলে অনুমতি দেয়া হবে। তাদের কোনো কিছু লুকানোর নেই।
সৌদি আরবে খাসোগির নামে মামলা আছে কিনা জানতে চাইলে যুবরাজ সালমান বলেন, তিনি কোথায় আছেন সেটাই তারা প্রথম জানতে জানতে চান।