খাসোগি হত্যাকাণ্ড
সৌদির ওপর নিষেধাজ্ঞা আনতে চান যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটরা
অনলাইন ডেস্ক | ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২১:১০
সৌদি আরবের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আনতে চান যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটররা। ছবি: টেক্সাস ট্রিবিউন
সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সৌদি আরবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আনতে চান বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সিনেটরা।
বুধবার ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন জোটের হামলায় দেশটির বিরুদ্ধে সিনেটে নিন্দা প্রস্তাব আনতে এক ভোটাভুটি শেষে এমনটা জানান তারা।
রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট পার্টির প্রভাবশালী ১৪ সিনেটরদের একটি শক্তিশালী গ্রুপ বৃহস্পতিবার সিনেটে এ নিন্দা প্রস্তাব আনতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে আলজাজিরা।
গ্যাং অব ফোর্টিন নামে পরিচিত গ্রুপটি দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দলের মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতা এবং পারস্পরিক সহযোগিতায় ভূমিকা রেখে থাকে।
য়ালজাজিরা জানায়, সাউথ ক্যারোলিনার রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম এবং নিউ জার্সির ডেমোক্রেট বব মেনেন্দেজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “জানুয়ারিতে কংগ্রেসের নতুন অধিবেশনে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব আনার কথা পরিকল্পনা করছেন তারা। সেইসঙ্গে দেশটির কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করতে চানও তারা।”
গ্রাহাম সৌদি আরবের উদ্দেশে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিত্রতা ধরে রাখতে চাইলে পরিবর্তন ছাড়া কোন উপায় নেই। এখন আপনাদেরই বুঝতে হবে কোন জায়গায় পরিবর্তন আনতে হবে।”
আল জাজিরা জানায়, এর মাধ্যমে সিনেটররা মূলত সৌদি আরবের ক্ষমতা থেকে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের অপসারণ চান বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের দুই কক্ষেই এ সপ্তাহে সৌদি আরব এবং যুবরাজ মোহাম্মদের প্রতি সমর্থন পরিবর্তনের ইঙ্গিত আসে। দুই কক্ষের প্রতিনিধিদের বক্তব্যেই ওঠে আসে ইয়েমেন যুদ্ধ, তুরস্কে সাংবাদিক খাসোগির হত্যাকাণ্ড সেইসঙ্গে ২০১৭ সালে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরিকে জোরপূর্বক আটকে রাখায় সৌদি আরবের সমালোচনা করেছেন প্রতিনিধিরা।
তাদের মতে, উপসাগরীয় অঞ্চলে সৌদি আরবের আন্তর্জাতিক নীতি অযৌক্তিক এবং যুবরাজ মুহাম্মদের নেতৃত্ব ব্যর্থ।
কংগ্রেসের সদস্যরা বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ইস্তাম্বুলে খাসোগি হত্যাকাণ্ড সম্পর্ক জানতেন। তাদের অধীনেই ২০১৫ সালে ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট অভিযান শুরু করে।”
ডেমোক্রেট সদস্য সিনেটর জিনে শাহিন বলেন, “ইয়েমেনে যা ঘটছে এবং সেখানে যে বিপর্যয় নেমে এসেছে তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।” এই সিনেটর সৌদি আরবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ প্রস্তাবের কো-স্পন্সর।
তিনি বলেন, “এভাবে চলতে দেয়া যায় না। ইয়েমেন যুদ্ধের জন্য যারা দায়ী তাদেরকে জবাব দিতে হবে।”
ডেমোক্রেট সিনেটর ক্রিস মারফি বলেন, “এই প্রস্তাব আনার মধ্য দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন এবং সৌদি আরবের প্রতি একটা সংকেত দিতে চাই। সৌদি আরবের প্রতি যদি ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি পরিবর্তন না হয় তাহলে আমরা এটা (সৌদি আরবের ওপর নিষেধাজ্ঞা) আনতে যাচ্ছি।”
মারফি আরও বলেন, “সৌদি আরব আমাদের বন্ধু। কিন্তু বন্ধু যখন হাঙরের পুলে ঝাঁপ মারে আমরা তো তাদেরকে অনুসরণ করতে পারি না।”
প্রসঙ্গত গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার ঘটনা এবং এর পরবর্তী অনুসন্ধান ও সমালোচনার ধারাবাহিকতায় তৎপর হয়ে ওঠেন সিনেটররা।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২১:১০

সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সৌদি আরবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আনতে চান বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সিনেটরা।
বুধবার ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন জোটের হামলায় দেশটির বিরুদ্ধে সিনেটে নিন্দা প্রস্তাব আনতে এক ভোটাভুটি শেষে এমনটা জানান তারা।
রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট পার্টির প্রভাবশালী ১৪ সিনেটরদের একটি শক্তিশালী গ্রুপ বৃহস্পতিবার সিনেটে এ নিন্দা প্রস্তাব আনতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে আলজাজিরা।
গ্যাং অব ফোর্টিন নামে পরিচিত গ্রুপটি দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দলের মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতা এবং পারস্পরিক সহযোগিতায় ভূমিকা রেখে থাকে।
য়ালজাজিরা জানায়, সাউথ ক্যারোলিনার রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম এবং নিউ জার্সির ডেমোক্রেট বব মেনেন্দেজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “জানুয়ারিতে কংগ্রেসের নতুন অধিবেশনে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব আনার কথা পরিকল্পনা করছেন তারা। সেইসঙ্গে দেশটির কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করতে চানও তারা।”
গ্রাহাম সৌদি আরবের উদ্দেশে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিত্রতা ধরে রাখতে চাইলে পরিবর্তন ছাড়া কোন উপায় নেই। এখন আপনাদেরই বুঝতে হবে কোন জায়গায় পরিবর্তন আনতে হবে।”
আল জাজিরা জানায়, এর মাধ্যমে সিনেটররা মূলত সৌদি আরবের ক্ষমতা থেকে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের অপসারণ চান বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের দুই কক্ষেই এ সপ্তাহে সৌদি আরব এবং যুবরাজ মোহাম্মদের প্রতি সমর্থন পরিবর্তনের ইঙ্গিত আসে। দুই কক্ষের প্রতিনিধিদের বক্তব্যেই ওঠে আসে ইয়েমেন যুদ্ধ, তুরস্কে সাংবাদিক খাসোগির হত্যাকাণ্ড সেইসঙ্গে ২০১৭ সালে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরিকে জোরপূর্বক আটকে রাখায় সৌদি আরবের সমালোচনা করেছেন প্রতিনিধিরা।
তাদের মতে, উপসাগরীয় অঞ্চলে সৌদি আরবের আন্তর্জাতিক নীতি অযৌক্তিক এবং যুবরাজ মুহাম্মদের নেতৃত্ব ব্যর্থ।
কংগ্রেসের সদস্যরা বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ইস্তাম্বুলে খাসোগি হত্যাকাণ্ড সম্পর্ক জানতেন। তাদের অধীনেই ২০১৫ সালে ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট অভিযান শুরু করে।”
ডেমোক্রেট সদস্য সিনেটর জিনে শাহিন বলেন, “ইয়েমেনে যা ঘটছে এবং সেখানে যে বিপর্যয় নেমে এসেছে তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।” এই সিনেটর সৌদি আরবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ প্রস্তাবের কো-স্পন্সর।
তিনি বলেন, “এভাবে চলতে দেয়া যায় না। ইয়েমেন যুদ্ধের জন্য যারা দায়ী তাদেরকে জবাব দিতে হবে।”
ডেমোক্রেট সিনেটর ক্রিস মারফি বলেন, “এই প্রস্তাব আনার মধ্য দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন এবং সৌদি আরবের প্রতি একটা সংকেত দিতে চাই। সৌদি আরবের প্রতি যদি ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি পরিবর্তন না হয় তাহলে আমরা এটা (সৌদি আরবের ওপর নিষেধাজ্ঞা) আনতে যাচ্ছি।”
মারফি আরও বলেন, “সৌদি আরব আমাদের বন্ধু। কিন্তু বন্ধু যখন হাঙরের পুলে ঝাঁপ মারে আমরা তো তাদেরকে অনুসরণ করতে পারি না।”
প্রসঙ্গত গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার ঘটনা এবং এর পরবর্তী অনুসন্ধান ও সমালোচনার ধারাবাহিকতায় তৎপর হয়ে ওঠেন সিনেটররা।