খাশোগি হত্যা নিয়ে সিনেট রেজুলেশনে ক্ষেপেছে সৌদি
অনলাইন ডেস্ক | ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১০:৩৯
সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে নিন্দা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে রেজুলেশন পাসের ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সৌদি আরব। বিষয়টিকে ‘নগ্ন হস্তক্ষেপ’ বলে মন্তব্য করেছে দেশটি।
বৃহস্পতিবার এক ভোটাভুটিতে খাশোগি হত্যাকাণ্ডের জন্য সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে দায়ী করে এর নিন্দা জানান যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্যরা।
গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট খাশোগি। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন সৌদির এই সাংবাদিক।
সোমবার সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সিতে (এসপিএ) প্রকাশিত দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “সৌদি আরবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের অভিযোগ ভিত্তিহীন। সৌদি রাষ্ট্রের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ভূমিকায় এটি তাদের নগ্ন হস্তক্ষেপ।”
আন্তর্জাতিক মহল এ ঘটনায় সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেও তাকে লাগাতার সমর্থন দিয়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এক প্রকার সতর্ক করে দেয় সিনেট। এদিন ইয়েমেন যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা বন্ধেও এক রেজুলেশনে একমত হন সিনেটররা।
সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরো বলেছে, “সৌদি নাগরিক সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডের মতো এমন নির্মম ঘটনা কোনভাবেই আমাদের রাষ্ট্রীয় নীতি এবং এর প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমকে প্রতিফলিত করে না। এ ঘটনাকে সৌদি বিচার ব্যবস্থার বাইরে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টাকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।”
প্রসঙ্গত, শুরুতে কনস্যুলেটে খাশোগির নিখোঁজের অভিযোগ অস্বীকার করে করলেও সংবাদমাধ্যমে তুর্কি গোয়েন্দাদের একের পর এক ‘তথ্য ফাঁসের’ মুখে ১৯ অক্টোবর এ হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে সৌদি আরব। যদিও এর সঙ্গে সৌদি যুবরাজের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে তারা দাবি করে।
নভেম্বরের মাঝামাঝিতে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশেই খাশোগিকে হত্যা করা হয়। এই কাজে সহযোগিতা ছিল তার ছোট ভাই যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত প্রিন্স খালিদ বিন সালমানের।
ট্রাম্প প্রশাসন এই প্রতিবেদনের সমালোচনা করলেও সিনেট সদস্যরা সিআইএ প্রধানের সঙ্গে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর ঘোষণা দেন, খাশোগি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সৌদি যুবরাজের জড়িত থাকা নিয়ে তারা নিশ্চিত। এ ঘটনায় তার সম্পৃক্ত না থাকার ‘সম্ভাবনা শূন্য’।
এরপর সিনেটররা গত সপ্তাহের মাঝামাঝিতে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে সেই সঙ্গে যুবরাজ মোহাম্মদকে দায়ী করে ভোটাভুটির আয়োজনের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে একমত হন। এর একদিন পরেই রেজুলেশনটি পাস হয়।
সিনেটররা সংবাদ সম্মেলনে জানান, উপসাগরীয় অঞ্চলে সৌদি আরবের আন্তর্জাতিক নীতি অযৌক্তিক এবং যুবরাজ মোহাম্মদের নেতৃত্ব ব্যর্থ। এছাড়া সৌদি শাসন থেকে যুবরাজের অপসারণ চান এমনও ইঙ্গিত দেন তারা।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১০:৩৯

সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে নিন্দা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে রেজুলেশন পাসের ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সৌদি আরব। বিষয়টিকে ‘নগ্ন হস্তক্ষেপ’ বলে মন্তব্য করেছে দেশটি।
বৃহস্পতিবার এক ভোটাভুটিতে খাশোগি হত্যাকাণ্ডের জন্য সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে দায়ী করে এর নিন্দা জানান যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্যরা।
গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট খাশোগি। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন সৌদির এই সাংবাদিক।
সোমবার সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সিতে (এসপিএ) প্রকাশিত দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “সৌদি আরবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের অভিযোগ ভিত্তিহীন। সৌদি রাষ্ট্রের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ভূমিকায় এটি তাদের নগ্ন হস্তক্ষেপ।”
আন্তর্জাতিক মহল এ ঘটনায় সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেও তাকে লাগাতার সমর্থন দিয়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এক প্রকার সতর্ক করে দেয় সিনেট। এদিন ইয়েমেন যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা বন্ধেও এক রেজুলেশনে একমত হন সিনেটররা।
সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরো বলেছে, “সৌদি নাগরিক সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডের মতো এমন নির্মম ঘটনা কোনভাবেই আমাদের রাষ্ট্রীয় নীতি এবং এর প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমকে প্রতিফলিত করে না। এ ঘটনাকে সৌদি বিচার ব্যবস্থার বাইরে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টাকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।”
প্রসঙ্গত, শুরুতে কনস্যুলেটে খাশোগির নিখোঁজের অভিযোগ অস্বীকার করে করলেও সংবাদমাধ্যমে তুর্কি গোয়েন্দাদের একের পর এক ‘তথ্য ফাঁসের’ মুখে ১৯ অক্টোবর এ হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে সৌদি আরব। যদিও এর সঙ্গে সৌদি যুবরাজের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে তারা দাবি করে।
নভেম্বরের মাঝামাঝিতে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশেই খাশোগিকে হত্যা করা হয়। এই কাজে সহযোগিতা ছিল তার ছোট ভাই যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত প্রিন্স খালিদ বিন সালমানের।
ট্রাম্প প্রশাসন এই প্রতিবেদনের সমালোচনা করলেও সিনেট সদস্যরা সিআইএ প্রধানের সঙ্গে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর ঘোষণা দেন, খাশোগি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সৌদি যুবরাজের জড়িত থাকা নিয়ে তারা নিশ্চিত। এ ঘটনায় তার সম্পৃক্ত না থাকার ‘সম্ভাবনা শূন্য’।
এরপর সিনেটররা গত সপ্তাহের মাঝামাঝিতে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে সেই সঙ্গে যুবরাজ মোহাম্মদকে দায়ী করে ভোটাভুটির আয়োজনের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে একমত হন। এর একদিন পরেই রেজুলেশনটি পাস হয়।
সিনেটররা সংবাদ সম্মেলনে জানান, উপসাগরীয় অঞ্চলে সৌদি আরবের আন্তর্জাতিক নীতি অযৌক্তিক এবং যুবরাজ মোহাম্মদের নেতৃত্ব ব্যর্থ। এছাড়া সৌদি শাসন থেকে যুবরাজের অপসারণ চান এমনও ইঙ্গিত দেন তারা।