বইয়ে খাশোগি হত্যার ‘নতুন তথ্য’
অনলাইন ডেস্ক | ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১০:১০
সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের প্রায় তিন মাস পর একটি বই প্রকাশিত হয়েছে। কীভাবে, কারা তাকে হত্যা করেছে, সে বিষয়ে নতুন কিছু তথ্য দেওয়া হয়েছে ওই বইয়ে।
‘কূটনৈতিক নৃশংসতা: খাশোগি হত্যার অন্ধকার দিক’ শিরোনামের বইটি লিখেছেন তুর্কির ‘ডেইলি সাবাহ’ পত্রিকার দুই সাংবাদিক। বইটিতে খুনিদের মধ্যে নতুন দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যারা দূতাবাসের নিরাপত্তাকর্মী সেজে ভেতরে ছিল। কিন্তু তারা আসলে সৌদি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য। একজনের নাম সাঈদ মুয়ায়েদ আল-কার্নি। অন্যজন মুফিলস শায় আল-মুসলেহ।
গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট খাশোগি। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি।
বিয়ে সংক্রান্ত কাজে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন খাশোগি। শুরুতে তার নিখোঁজের অভিযোগ অস্বীকার করে সৌদি।
তবে সংবাদমাধ্যমে তুর্কি গোয়েন্দাদের একের পর এক ‘তথ্য ফাঁসের’ মুখে ১৯ অক্টোবর খাশোগি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে বলে স্বীকার করে সৌদি কর্তৃপক্ষ। যদিও এর সঙ্গে সৌদি যুবরাজের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে তারা দাবি করে।
নতুন বইয়ে তৃতীয় একজন ব্যক্তির কথা বলা হচ্ছে। তিনি সৌদি গোয়েন্দা সংস্থার ইস্তাম্বুল ইউনিটের প্রধান আহমেদ আব্দুল্লাহ আল-মুজাইনি।
প্রথম দুজন অর্থাৎ আল-কার্নি এবং মুফিলস শায় আল-মুসলেহ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেননি। কিন্তু লাশ গুম করতে সাহায্য করেন।
১৫ জনের এই দলকে সৌদির ‘হিট স্কোয়াড’ বলা হচ্ছে। সৌদি প্রশাসন দাবি করছে, সবাইকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু বইয়ে দাবি করা হয়েছে, লাশ খণ্ডবিখণ্ড করা ডাক্তার সালাহ আল-তুবেগি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। সৌদি কর্তৃপক্ষই তাকে লুকিয়ে থাকতে বলেছে। জেদ্দার একটি বাড়িতে তিনি পরিবার নিয়ে আছেন।
বইয়ে খুনের বর্ণনা
দূতাবাসে ঢোকার পর হিট স্কোয়াডের প্রধান মাহের আবদুল আজিজ মোতরেব খাশোগিকে বলেন, ‘তাদের কথা মতো কাজ করলে কোনো ক্ষতি করা হবে না।’
রিয়াদে ছেলেকে ফোন করে ‘নিরাপদে আছি’ বলতেও বলা হয়। কিন্তু খাশোগি সেটি বলতে চাননি। তখন তিনি প্রশ্ন করেন, ‘তোমরা কি আমাকে খুন করবে? শ্বাসরোধ করে মারবে?’
সবকিছু বোঝার পরও খাশোগি নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করেন। মোতরেব হিট স্কোয়াডের পাঁচজনকে নির্দেশ দেন, নাইলন ব্যাগ দিয়ে শ্বাসরোধ করতে। তখন খাশোগি বলেন, ‘আমার মুখ ঢেকো না। অ্যাজমা আছে।’
খুনিদের সঙ্গে খাশোগি পাঁচ মিনিট লড়াই করেন। এরপর নিথর হয়ে যান। করাত দিয়ে খাশোগির দেহ খণ্ডবিখণ্ড করেন ডাক্তার তুবেগি।
একটি রেকর্ডের বরাত দিয়ে বইয়ে বলা হয়েছে তুবেগি লাশ কাটার সময় বলতে থাকে, ‘আমি কখনো ঠান্ডা শরীরে কাজ করিনি। কিন্তু এটাকে (খাশোগি) সহজে সামলাতে পারব।’
‘সাধারণত লাশ কাটার সময় হেডফোনে গান শুনি। পাশাপাশি কফি খাই।’
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১০:১০

সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের প্রায় তিন মাস পর একটি বই প্রকাশিত হয়েছে। কীভাবে, কারা তাকে হত্যা করেছে, সে বিষয়ে নতুন কিছু তথ্য দেওয়া হয়েছে ওই বইয়ে।
‘কূটনৈতিক নৃশংসতা: খাশোগি হত্যার অন্ধকার দিক’ শিরোনামের বইটি লিখেছেন তুর্কির ‘ডেইলি সাবাহ’ পত্রিকার দুই সাংবাদিক। বইটিতে খুনিদের মধ্যে নতুন দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যারা দূতাবাসের নিরাপত্তাকর্মী সেজে ভেতরে ছিল। কিন্তু তারা আসলে সৌদি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য। একজনের নাম সাঈদ মুয়ায়েদ আল-কার্নি। অন্যজন মুফিলস শায় আল-মুসলেহ।
গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট খাশোগি। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি।
বিয়ে সংক্রান্ত কাজে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন খাশোগি। শুরুতে তার নিখোঁজের অভিযোগ অস্বীকার করে সৌদি।
তবে সংবাদমাধ্যমে তুর্কি গোয়েন্দাদের একের পর এক ‘তথ্য ফাঁসের’ মুখে ১৯ অক্টোবর খাশোগি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে বলে স্বীকার করে সৌদি কর্তৃপক্ষ। যদিও এর সঙ্গে সৌদি যুবরাজের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে তারা দাবি করে।
নতুন বইয়ে তৃতীয় একজন ব্যক্তির কথা বলা হচ্ছে। তিনি সৌদি গোয়েন্দা সংস্থার ইস্তাম্বুল ইউনিটের প্রধান আহমেদ আব্দুল্লাহ আল-মুজাইনি।
প্রথম দুজন অর্থাৎ আল-কার্নি এবং মুফিলস শায় আল-মুসলেহ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেননি। কিন্তু লাশ গুম করতে সাহায্য করেন।
১৫ জনের এই দলকে সৌদির ‘হিট স্কোয়াড’ বলা হচ্ছে। সৌদি প্রশাসন দাবি করছে, সবাইকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু বইয়ে দাবি করা হয়েছে, লাশ খণ্ডবিখণ্ড করা ডাক্তার সালাহ আল-তুবেগি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। সৌদি কর্তৃপক্ষই তাকে লুকিয়ে থাকতে বলেছে। জেদ্দার একটি বাড়িতে তিনি পরিবার নিয়ে আছেন।
বইয়ে খুনের বর্ণনা
দূতাবাসে ঢোকার পর হিট স্কোয়াডের প্রধান মাহের আবদুল আজিজ মোতরেব খাশোগিকে বলেন, ‘তাদের কথা মতো কাজ করলে কোনো ক্ষতি করা হবে না।’
রিয়াদে ছেলেকে ফোন করে ‘নিরাপদে আছি’ বলতেও বলা হয়। কিন্তু খাশোগি সেটি বলতে চাননি। তখন তিনি প্রশ্ন করেন, ‘তোমরা কি আমাকে খুন করবে? শ্বাসরোধ করে মারবে?’
সবকিছু বোঝার পরও খাশোগি নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করেন। মোতরেব হিট স্কোয়াডের পাঁচজনকে নির্দেশ দেন, নাইলন ব্যাগ দিয়ে শ্বাসরোধ করতে। তখন খাশোগি বলেন, ‘আমার মুখ ঢেকো না। অ্যাজমা আছে।’
খুনিদের সঙ্গে খাশোগি পাঁচ মিনিট লড়াই করেন। এরপর নিথর হয়ে যান। করাত দিয়ে খাশোগির দেহ খণ্ডবিখণ্ড করেন ডাক্তার তুবেগি।
একটি রেকর্ডের বরাত দিয়ে বইয়ে বলা হয়েছে তুবেগি লাশ কাটার সময় বলতে থাকে, ‘আমি কখনো ঠান্ডা শরীরে কাজ করিনি। কিন্তু এটাকে (খাশোগি) সহজে সামলাতে পারব।’
‘সাধারণত লাশ কাটার সময় হেডফোনে গান শুনি। পাশাপাশি কফি খাই।’