সেই সাইকেল-কিশোরী জ্যোতি কুমারীর প্রশংসায় ট্রাম্পকন্যা
অনলাইন ডেস্ক | ২৩ মে, ২০২০ ১৬:৫৮
লকডাউনে অন্যরাজ্য আটকে পড়েছিল দলিত এক রিকশাচালক ও তার কিশোরী কন্যা। অচল পরিস্থিতিতে মালিকের কাছে রিকশা জমা দিয়ে বেকার হয়ে পড়েন তিনি। ইতিমধ্যে পায়েও আঘাত পান।
সে সময় তার মেয়ে ১৪ বছর জ্যোতি কুমারি সাইকেলে বাবাকে নিয়ে পাড়ি দিলেন ১২শ' কিলোমিটার পথ। দিল্লি থেকে বিহারের দারভাঙ্গা গ্রাম পর্যন্ত চালিয়ে যান সাইকেল।
৫০০ রুপি দিয়ে একটি বাইসাইকেল কিনে জ্যোতি ও তার বাবা দিল্লি থেকে রওয়ানা হন ১০ মে। ছয় দিন রাস্তায় কাটিয়ে ১৬ মে তারা দারভাঙ্গা পৌঁছান।
এই ঘটনা সাড়া ফেলে দেয় পুরা ভারতে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্পও টুইটার করে প্রশংসা করেন জ্যাতি কুমারীর।
তিনি দলিত এই কিশোর দীর্ঘ ভ্রমণের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ভারতের মানুষের ভালোবাসা ও সহনশীলতার এমন সুন্দর মেলবন্ধন কল্পনাতেই সম্ভব।
ইভাঙ্কা ভারতের সাইকেল ফেডারেশনকেও ধন্যবাদ জানান। জ্যোতিকে বিনা ট্রায়ালেই তাদের ফেডারেশনে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
এদিকে ঘরে পৌঁছার পর সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া জ্যোতি কুমারী গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, তিনি ভয় পাননি রাতেও। কারণ তার আশপাশে ছিল পথ চলা শত শত অভিবাসী শ্রমিক। শুধু সড়ক দুর্ঘটনায় যাতে না পড়েন— সে দিকে ছিল নজর। সৌভাগ্যবশত তেমন কিছু ঘটেনি।
জ্যোতি জানান, তাদের কাছে যথেষ্ট টাকা ছিল না। বাড়িওয়ালা ভাড়া চাইছিল, নইলে ঘর ছাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। কারো সাহায্য না পেয়ে তারা গ্রামে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। এক ট্রাকচালক বাড়ি বয়ে নেওয়ার বিনিময়ে ৬ হাজার রুপি চায়। তাই বাধ্য হয়ে সাইকেলে বাড়ির পথ ধরেন তারা।
দিল্লি ছাড়ার সময় তাদের কাছে ছিল ৬০০ রুপি। জ্যোতি দিন-রাত সাইকেল চালিয়েছে, শুধু রাতে ২-৩ ঘণ্টার জন্য কোনো পেট্রল পাম্পে জিরিয়ে নিত। পুরো সফরে তারা মূলত ত্রাণের খাবারের ওপর নির্ভর করেছে।
বাবা-মেয়ে দারভাঙ্গা পৌঁছে রাজ্যজুড়ে খবরের শিরোনাম হয়ে উঠে। তারা অবশ্যই শেকতক বাড়িতে যায়নি, আপাতত কোয়ারেন্টাইনে আছে। গ্রামবাসীরা তাদের খাবার দিচ্ছে। ইতিমধ্যে করোনা পরীক্ষাও হয়েছে। তবে জ্যোতিকে বাড়িতেই কোয়ারেন্টাইন করতে বলা হয়, কারণ সেন্টারে আর কোনো নারী নেই!
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ২৩ মে, ২০২০ ১৬:৫৮

লকডাউনে অন্যরাজ্য আটকে পড়েছিল দলিত এক রিকশাচালক ও তার কিশোরী কন্যা। অচল পরিস্থিতিতে মালিকের কাছে রিকশা জমা দিয়ে বেকার হয়ে পড়েন তিনি। ইতিমধ্যে পায়েও আঘাত পান।
সে সময় তার মেয়ে ১৪ বছর জ্যোতি কুমারি সাইকেলে বাবাকে নিয়ে পাড়ি দিলেন ১২শ' কিলোমিটার পথ। দিল্লি থেকে বিহারের দারভাঙ্গা গ্রাম পর্যন্ত চালিয়ে যান সাইকেল।
৫০০ রুপি দিয়ে একটি বাইসাইকেল কিনে জ্যোতি ও তার বাবা দিল্লি থেকে রওয়ানা হন ১০ মে। ছয় দিন রাস্তায় কাটিয়ে ১৬ মে তারা দারভাঙ্গা পৌঁছান।
এই ঘটনা সাড়া ফেলে দেয় পুরা ভারতে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্পও টুইটার করে প্রশংসা করেন জ্যাতি কুমারীর।
তিনি দলিত এই কিশোর দীর্ঘ ভ্রমণের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ভারতের মানুষের ভালোবাসা ও সহনশীলতার এমন সুন্দর মেলবন্ধন কল্পনাতেই সম্ভব।
ইভাঙ্কা ভারতের সাইকেল ফেডারেশনকেও ধন্যবাদ জানান। জ্যোতিকে বিনা ট্রায়ালেই তাদের ফেডারেশনে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
এদিকে ঘরে পৌঁছার পর সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া জ্যোতি কুমারী গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, তিনি ভয় পাননি রাতেও। কারণ তার আশপাশে ছিল পথ চলা শত শত অভিবাসী শ্রমিক। শুধু সড়ক দুর্ঘটনায় যাতে না পড়েন— সে দিকে ছিল নজর। সৌভাগ্যবশত তেমন কিছু ঘটেনি।
জ্যোতি জানান, তাদের কাছে যথেষ্ট টাকা ছিল না। বাড়িওয়ালা ভাড়া চাইছিল, নইলে ঘর ছাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। কারো সাহায্য না পেয়ে তারা গ্রামে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। এক ট্রাকচালক বাড়ি বয়ে নেওয়ার বিনিময়ে ৬ হাজার রুপি চায়। তাই বাধ্য হয়ে সাইকেলে বাড়ির পথ ধরেন তারা।
দিল্লি ছাড়ার সময় তাদের কাছে ছিল ৬০০ রুপি। জ্যোতি দিন-রাত সাইকেল চালিয়েছে, শুধু রাতে ২-৩ ঘণ্টার জন্য কোনো পেট্রল পাম্পে জিরিয়ে নিত। পুরো সফরে তারা মূলত ত্রাণের খাবারের ওপর নির্ভর করেছে।
বাবা-মেয়ে দারভাঙ্গা পৌঁছে রাজ্যজুড়ে খবরের শিরোনাম হয়ে উঠে। তারা অবশ্যই শেকতক বাড়িতে যায়নি, আপাতত কোয়ারেন্টাইনে আছে। গ্রামবাসীরা তাদের খাবার দিচ্ছে। ইতিমধ্যে করোনা পরীক্ষাও হয়েছে। তবে জ্যোতিকে বাড়িতেই কোয়ারেন্টাইন করতে বলা হয়, কারণ সেন্টারে আর কোনো নারী নেই!