রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সর্বশেষ পরিস্থিতি : পুরো লুহানস্ক এখন ‘মুক্ত’
অনলাইন ডেস্ক | ৩ জুলাই, ২০২২ ১৯:০২
পুরো লুহানস্ক এখন ‘মুক্ত’
গত কয়েকদিন ধরে ইউক্রেনের পূর্ব দিকের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর লিসিচানস্কের ওপর তুমুল হামলার পর, সোমবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে শহরটি এখন পুরোপুরি তাদের সৈন্যদের দখলে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে জানিয়েছেন পুরো লুহানস্ক অঞ্চল এখন ‘মুক্ত’। খবর বিবিসির।
এর আগে, রবিবার রাশিয়া জানিয়েছিল পুরো শহরটি চারদিক থেকে রুশ সৈন্যরা ঘিরে ফেলেছে এবং শহরের কেন্দ্রে এখন ইউক্রেনীয় সৈন্যদের সাথে লড়াই চলছে।
লিসিচিানস্ক শহরের পতনের এই দাবী সম্পর্কে ইউক্রেনের সেনা বাহিনীর পক্ষ থেকে এখনো কিছু শোনা যায়নি। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের মুখপাত্র ইউরিভ সাক বিবিসিকে বলেন লিসিচিানস্ক এখনও তাদের হাতছাড়া হয়নি। তবে তিনি স্বীকার করেন, ইউক্রেনীয় সৈন্যরা সেখানে প্রচণ্ড হামলার মুখে পড়েছে।
বিবিসির পক্ষেও এখনো নিরপক্ষে সূত্রে লিসিচিানস্ক পতনের রাশিয়ার দাবি যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাসের লুহানস্ক এবং দোনেৎস্ক থেকে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের হঠানোই এখন এই যুদ্ধে রাশিয়ার প্রধান লক্ষ্য। পুরো লুহানস্ক নিয়ন্ত্রণের পর এখন রুশ সৈন্যদের দোনেৎস্কের দিকে নজর দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের মুখপাত্র ইউরিভ সাক বলেছেন রাশিয়া লুহানস্ক নিতে পারলেও ডনবাসের ‘যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি’।
তিনি বলেন, দোনেৎস্ক অঞ্চলের ‘অনেক বড় শহর’ এখনও ইউক্রেনীয় সৈন্যদের নিয়ন্ত্রণে।
তিনি বলেন, এই সব শহরে গত দু-তিনদিন ধরে প্রচণ্ড রকম ক্ষেপনাস্ত্র এবং রকেট হামলা হচ্ছে, কিন্তু ‘ডনবাসের যুদ্ধ এখনও বাকি’।
ঐ কর্মকর্তা বলেন, ইউক্রেন ‘যথেষ্ট পরিমাণে’ ভারী কামান এবং অন্যান্য অস্ত্র পেতে চলেছে এবং তখন হারানো এসব অঞ্চল তারা মুক্ত করতে সমর্থ হবেন।
রাশিয়া ভেতরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
ইউক্রেনের সীমান্তের কাছে রাশিয়ার বেলগোরোদ শহরে রোববার রাতে বিস্ফোরণে কমপক্ষে তিনজন নিহত এবং বেশ কতগুলো অ্যাপার্টমেন্ট বিধ্বস্ত হয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে।
ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত থেকে বেলগোরোদের দূরত্ব ৪০ কিমি (২৫ মাইল)। রাশিয়া বলছে ইউক্রেন বেলেগোরোদে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে তাদের বিমান বিধ্বংসী ব্যবস্থা তিনটি ইউক্রেনীয় টোচকা-ইউ দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বস্ত করে দেয় যেগুলোর মাথায় ক্লাস্টার বোমা ছিল। সেগুলোর ধ্বংসাবশেষ একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের ওপর পড়লে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে রুশরা বলছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ বলেন, ‘ইচ্ছাকৃত-ভাবে বেসামরিক লোকজনকে লক্ষ্য করে এই ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছে’।
তিনি বলেন, রাশিয়ার কুর্সক শহর লক্ষ্য করে পাঠানো দুটি ইউক্রেনীয় সামরিক ড্রোন গুলি করে নামানো হয়েছে।
তবে ইউক্রেন বলছে, উসকানি দেয়ার উদ্দেশ্যে রুশরা নিজেরাই এসব হামলার ঘটনা সাজায়।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইউরিভ সাক বিবিসিকে বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে রুশ সেনা কর্মকর্তাদের ফোন কলে আড়ি পেতে আমরা প্রমাণ পেয়েছি অধিকাংশ সময় উসকানি দিতে রুশরা নিজেরাই এসব ঘটনা সাজায়’।
আরেক ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা, সেরহি ব্রাডচুক, বলেন, বেলগোরোদে বিধ্বস্ত অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে রকেটের যেসব ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে সেগুলো রুশ পান্টসির বিমান বিধ্বংসী কামান থেকে ছোঁড়া।
এর আগে, এপ্রিলের প্রথম দিকে, রাশিয়া দাবি করেছিল দুটি ইউক্রেনীয় সাঁজোয়া হেলিকপ্টার বেলগারোদের শহরতলির একটি বেসামরিক তেলের ডিপোয় আক্রমণ চালায়। তবে তখনও ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী তেমন হামলার কথা অস্বীকার করেছিল।
‘রাশিয়ার ভেতরে ২৫টি মিসাইল ছুড়েছে ইউক্রেন’
কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিনিধি অ্যালান ফিশার জানিয়েছেন, রাশিয়ার সীমান্তবর্তী শহর বেলগোরোডের বিমানবন্দরের দিকে একটি রাশিয়ান ঘাঁটি লক্ষ্য করে রাশিয়া ২৫টি মিসাইল ছুড়েছে।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে তিনি বলেন, আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন পোস্টের মাধ্যমে ঠিক কী ঘটেছে তা একত্রিত করার চেষ্টা করছি। তবে, আল জাজিরা এই মুহুর্তে দুই পক্ষই দাবি করছে এমন কিছু নিশ্চিত করতে পারছে না।
সব কিছু দেখে মনে হচ্ছে বেলগোরোডের বিমানবন্দরের দিকে একটি রাশিয়ান ঘাঁটি লক্ষ্য করে প্রায় ২৫টি মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। মনে হচ্ছে এই মিসাইলগুলোর মধ্যে কয়েকটি আবাসিক এলাকায় আঘাত করেছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে এ তথ্যই পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গত সপ্তাহে ইউক্রেনের একটি জনবহুল শপিং মল ও গত শুক্রবার ওডেসার আবাসিক ভবনে রাশিয়ার হামলায় ২১ জন নিহতের ঘটনার পর কিয়েভের এই হামলার ঘটনা সামনে এলো।
বেলগোরোড শহরটি ইউক্রেনীয় সীমান্ত থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। সীমান্তবর্তী এই শহরে এর আগেও একাধিকবার হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে শহরটির কর্তৃপক্ষ।
ইউক্রেনে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা সংস্থা বলছে, রাশিয়া তাদের অর্থনীতিতে এমন কিছু পরিবর্তন আনছে যা দেখে মনে হচ্ছে, তারা ইউক্রেনে একটি দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্সটিটিউট অব ওয়ারের গবেষণায় বলা হচ্ছে, ইউক্রেনে দীর্ঘ সময় ধরে সংঘাত চালিয়ে যাওয়ার ধকল যেন সামলানো যায়, সেজন্যে রাশিয়া নিজেদের অর্থনীতিতে পরিবর্তন আনছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ সম্পর্কে ইন্সটিটিউট অব ওয়ার তাদের সর্বশেষ পর্যালোচনায় বলছে, ক্রেমলিন এমন কিছু আইন করার প্রস্তাব করছে, যা মানুষকে রাতের বেলায় বা কেন্দ্রীয় সরকারের ছুটির দিনেও কাজ করতে বাধ্য করবে।
বিশেষ সামরিক অভিযানের জন্য সরকারের জারি করা নির্দেশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে অমান্য করতে না পারে, সেজন্যে এটা আইন করে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।
ইন্সটিটিউট আরও বলছে, রুশ কর্তৃপক্ষ ইউেক্রেনের যাপোরিঝিয়া পরমাণু শক্তি কেন্দ্র রাশিয়ার জ্বালানি ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করতেও ব্যবস্থা নিচ্ছে।
এদিকে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরের লক্ষ্যবস্তু টার্গেট করে রাশিয়া দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত রেখেছে।
বন্দর শহর ওডেসা থেকে একশো কিলোমিটার দূরের মিকোলাইভ শহর একের পর এক বিস্ফোরণে কেঁপে কেঁপে উঠে। এসময় শহরে এয়ার রেইড সাইরেন, অর্থাৎ বিমান হামলার সতর্ক সংকেত শোনা গেছে।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ৩ জুলাই, ২০২২ ১৯:০২

পুরো লুহানস্ক এখন ‘মুক্ত’
গত কয়েকদিন ধরে ইউক্রেনের পূর্ব দিকের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর লিসিচানস্কের ওপর তুমুল হামলার পর, সোমবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে শহরটি এখন পুরোপুরি তাদের সৈন্যদের দখলে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে জানিয়েছেন পুরো লুহানস্ক অঞ্চল এখন ‘মুক্ত’। খবর বিবিসির।
এর আগে, রবিবার রাশিয়া জানিয়েছিল পুরো শহরটি চারদিক থেকে রুশ সৈন্যরা ঘিরে ফেলেছে এবং শহরের কেন্দ্রে এখন ইউক্রেনীয় সৈন্যদের সাথে লড়াই চলছে।
লিসিচিানস্ক শহরের পতনের এই দাবী সম্পর্কে ইউক্রেনের সেনা বাহিনীর পক্ষ থেকে এখনো কিছু শোনা যায়নি। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের মুখপাত্র ইউরিভ সাক বিবিসিকে বলেন লিসিচিানস্ক এখনও তাদের হাতছাড়া হয়নি। তবে তিনি স্বীকার করেন, ইউক্রেনীয় সৈন্যরা সেখানে প্রচণ্ড হামলার মুখে পড়েছে।
বিবিসির পক্ষেও এখনো নিরপক্ষে সূত্রে লিসিচিানস্ক পতনের রাশিয়ার দাবি যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাসের লুহানস্ক এবং দোনেৎস্ক থেকে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের হঠানোই এখন এই যুদ্ধে রাশিয়ার প্রধান লক্ষ্য। পুরো লুহানস্ক নিয়ন্ত্রণের পর এখন রুশ সৈন্যদের দোনেৎস্কের দিকে নজর দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের মুখপাত্র ইউরিভ সাক বলেছেন রাশিয়া লুহানস্ক নিতে পারলেও ডনবাসের ‘যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি’।
তিনি বলেন, দোনেৎস্ক অঞ্চলের ‘অনেক বড় শহর’ এখনও ইউক্রেনীয় সৈন্যদের নিয়ন্ত্রণে।
তিনি বলেন, এই সব শহরে গত দু-তিনদিন ধরে প্রচণ্ড রকম ক্ষেপনাস্ত্র এবং রকেট হামলা হচ্ছে, কিন্তু ‘ডনবাসের যুদ্ধ এখনও বাকি’।
ঐ কর্মকর্তা বলেন, ইউক্রেন ‘যথেষ্ট পরিমাণে’ ভারী কামান এবং অন্যান্য অস্ত্র পেতে চলেছে এবং তখন হারানো এসব অঞ্চল তারা মুক্ত করতে সমর্থ হবেন।
রাশিয়া ভেতরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
ইউক্রেনের সীমান্তের কাছে রাশিয়ার বেলগোরোদ শহরে রোববার রাতে বিস্ফোরণে কমপক্ষে তিনজন নিহত এবং বেশ কতগুলো অ্যাপার্টমেন্ট বিধ্বস্ত হয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে।
ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত থেকে বেলগোরোদের দূরত্ব ৪০ কিমি (২৫ মাইল)। রাশিয়া বলছে ইউক্রেন বেলেগোরোদে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে তাদের বিমান বিধ্বংসী ব্যবস্থা তিনটি ইউক্রেনীয় টোচকা-ইউ দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বস্ত করে দেয় যেগুলোর মাথায় ক্লাস্টার বোমা ছিল। সেগুলোর ধ্বংসাবশেষ একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের ওপর পড়লে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে রুশরা বলছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ বলেন, ‘ইচ্ছাকৃত-ভাবে বেসামরিক লোকজনকে লক্ষ্য করে এই ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছে’।
তিনি বলেন, রাশিয়ার কুর্সক শহর লক্ষ্য করে পাঠানো দুটি ইউক্রেনীয় সামরিক ড্রোন গুলি করে নামানো হয়েছে।
তবে ইউক্রেন বলছে, উসকানি দেয়ার উদ্দেশ্যে রুশরা নিজেরাই এসব হামলার ঘটনা সাজায়।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইউরিভ সাক বিবিসিকে বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে রুশ সেনা কর্মকর্তাদের ফোন কলে আড়ি পেতে আমরা প্রমাণ পেয়েছি অধিকাংশ সময় উসকানি দিতে রুশরা নিজেরাই এসব ঘটনা সাজায়’।
আরেক ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা, সেরহি ব্রাডচুক, বলেন, বেলগোরোদে বিধ্বস্ত অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে রকেটের যেসব ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে সেগুলো রুশ পান্টসির বিমান বিধ্বংসী কামান থেকে ছোঁড়া।
এর আগে, এপ্রিলের প্রথম দিকে, রাশিয়া দাবি করেছিল দুটি ইউক্রেনীয় সাঁজোয়া হেলিকপ্টার বেলগারোদের শহরতলির একটি বেসামরিক তেলের ডিপোয় আক্রমণ চালায়। তবে তখনও ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী তেমন হামলার কথা অস্বীকার করেছিল।
‘রাশিয়ার ভেতরে ২৫টি মিসাইল ছুড়েছে ইউক্রেন’
কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিনিধি অ্যালান ফিশার জানিয়েছেন, রাশিয়ার সীমান্তবর্তী শহর বেলগোরোডের বিমানবন্দরের দিকে একটি রাশিয়ান ঘাঁটি লক্ষ্য করে রাশিয়া ২৫টি মিসাইল ছুড়েছে।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে তিনি বলেন, আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন পোস্টের মাধ্যমে ঠিক কী ঘটেছে তা একত্রিত করার চেষ্টা করছি। তবে, আল জাজিরা এই মুহুর্তে দুই পক্ষই দাবি করছে এমন কিছু নিশ্চিত করতে পারছে না।
সব কিছু দেখে মনে হচ্ছে বেলগোরোডের বিমানবন্দরের দিকে একটি রাশিয়ান ঘাঁটি লক্ষ্য করে প্রায় ২৫টি মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। মনে হচ্ছে এই মিসাইলগুলোর মধ্যে কয়েকটি আবাসিক এলাকায় আঘাত করেছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে এ তথ্যই পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গত সপ্তাহে ইউক্রেনের একটি জনবহুল শপিং মল ও গত শুক্রবার ওডেসার আবাসিক ভবনে রাশিয়ার হামলায় ২১ জন নিহতের ঘটনার পর কিয়েভের এই হামলার ঘটনা সামনে এলো।
বেলগোরোড শহরটি ইউক্রেনীয় সীমান্ত থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। সীমান্তবর্তী এই শহরে এর আগেও একাধিকবার হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে শহরটির কর্তৃপক্ষ।
ইউক্রেনে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা সংস্থা বলছে, রাশিয়া তাদের অর্থনীতিতে এমন কিছু পরিবর্তন আনছে যা দেখে মনে হচ্ছে, তারা ইউক্রেনে একটি দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্সটিটিউট অব ওয়ারের গবেষণায় বলা হচ্ছে, ইউক্রেনে দীর্ঘ সময় ধরে সংঘাত চালিয়ে যাওয়ার ধকল যেন সামলানো যায়, সেজন্যে রাশিয়া নিজেদের অর্থনীতিতে পরিবর্তন আনছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ সম্পর্কে ইন্সটিটিউট অব ওয়ার তাদের সর্বশেষ পর্যালোচনায় বলছে, ক্রেমলিন এমন কিছু আইন করার প্রস্তাব করছে, যা মানুষকে রাতের বেলায় বা কেন্দ্রীয় সরকারের ছুটির দিনেও কাজ করতে বাধ্য করবে।
বিশেষ সামরিক অভিযানের জন্য সরকারের জারি করা নির্দেশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে অমান্য করতে না পারে, সেজন্যে এটা আইন করে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।
ইন্সটিটিউট আরও বলছে, রুশ কর্তৃপক্ষ ইউেক্রেনের যাপোরিঝিয়া পরমাণু শক্তি কেন্দ্র রাশিয়ার জ্বালানি ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করতেও ব্যবস্থা নিচ্ছে।
এদিকে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরের লক্ষ্যবস্তু টার্গেট করে রাশিয়া দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত রেখেছে।
বন্দর শহর ওডেসা থেকে একশো কিলোমিটার দূরের মিকোলাইভ শহর একের পর এক বিস্ফোরণে কেঁপে কেঁপে উঠে। এসময় শহরে এয়ার রেইড সাইরেন, অর্থাৎ বিমান হামলার সতর্ক সংকেত শোনা গেছে।