যুবসমাজের মসজিদ-বিমুখতা
মুহাম্মদ ছফিউল্লাহ হাশেমী | ১ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০
যুগে যুগে যুবসমাজই জরাগ্রস্ত পৃথিবীর বুকে এনেছে নবজীবনের ঢল। যুবকদের চোখেই থাকে নতুন পৃথিবী গড়ার স্বপ্ন। পৃথিবীতে মহান আল্লাহ প্রদত্ত অফুরন্ত নেয়ামতের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- যৌবনের শক্তিমত্তা। অফুরন্ত প্রাণশক্তির আধার যুবসমাজই দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার। মহান আল্লাহ প্রদত্ত শাশ্বত জীবনব্যবস্থা ইসলামে যৌবনকালের গুরুত্ব সীমাহীন। এ সময়ের ইবাদত আল্লাহর কাছে খুবই প্রিয়। এ সম্পর্কে নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘সাত শ্রেণির মানুষকে আল্লাহ কেয়ামতের দিন তার (আরশের) ছায়ায় আশ্রয় দেবেন। এর অন্যতম হলো- ওই যুবক যে তার রবের ইবাদতের মধ্য দিয়ে বড় হয়েছে।’ -সহিহ বোখারি
অপরদিকে মসজিদ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম স্থান। নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সম্পর্কে ইরশাদ করেছেন, ‘জনপদসমূহের মধ্যে মসজিদ আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় এবং বাজার তার কাছে সর্বাধিক অপছন্দনীয়।’ -সহিহ মুসলিম
আল্লাহ মসজিদকে জান্নাতের টুকরা বানিয়েছেন। রাসুলে কারিম (সা.) বলেছেন, ‘মসজিদসমূহ আসমানবাসীদের জন্য আলোকস্তম্ভ, যেমন নক্ষত্রসমূহ পৃথিবীবাসীদের জন্য আলোকমালা।’ এ কারণে পৃথিবীর যেকোনো মসজিদ মুসলমানদের কাছে এক বিশেষ মর্যাদা সংরক্ষণ করে। সেখানে গেলে তাদের মনের মধ্যে এক আলাদা ভাবের উদয় হয়। পাপমুক্ত হওয়ার বাসনা জাগে, পবিত্র জীবনযাপনে উৎসাহবোধ করে এবং দীন পালনে উজ্জীবিত হয়। তাই বলা যায়, যুবসমাজের নৈতিক চরিত্র গঠনের ক্ষেত্রে মসজিদের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। মসজিদে যাওয়ার প্রতিদান সম্পর্কে রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি সকাল ও সন্ধ্যায় (নামাজ আদায় করার জন্য) যতবার মসজিদে যাতায়াত করবে, আল্লাহতায়ালা ততবারই তার জন্য জান্নাতে মেহমানদারির সামগ্রী তৈরি করে রাখবেন।’ -সহিহ বোখারি
দুঃখজনক বিষয় হলো, হাল সময়ে অধিকাংশ মুসলিম যুবক মসজিদবিমুখ। আর এ কারণে তারা বিপথগামী হয়ে দেশ ও জাতিকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। মুসলিম জাতির সামনে বিরাট প্রশ্ন যুবসমাজ কেন মসজিদে যেতে আগ্রহী নয়? দু-এক কথার মাধ্যমে এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আদৌ সম্ভব নয়। মুসলিম যুবকদের এ অবস্থা একদিনে তৈরি হয়নি। তবে সবচেয়ে বড় কথা, যেকোনো উপায়েই হোক না কেন, এ অবস্থা রোধ করতে না পারলে মুসলিম উম্মাহর বর্তমান সংকট দূর করা কখনই সম্ভব হবে না।
যে সব কারণে মুসলিম যুবসমাজ মসজিদে যেতে আগ্রহ হারাচ্ছে তার প্রধানতম কারণ- বিজাতীয় অপসংস্কৃতির প্রভাব। বর্তমানে যুবসমাজ ধ্বংসে স্যাটেলাইট, ইন্টারনেট, ফেইসবুক প্রভৃতি যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এসবে আসক্ত মুসলিম যুবকরা মসজিদের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে।
যুবসমাজের মসজিদবিমুখ হওয়ার পেছনে বন্ধুবান্ধবের প্রভাবও ব্যাপক। বন্ধুবান্ধব ও সঙ্গী-সাথীর প্রভাব যুবসমাজের আচার-আচরণ ও কর্মকা-ে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। বন্ধুবান্ধবের পাল্লায় পড়ে অনেক যুবক ধূমপান, মাদকাসক্তি, টিভি, সিনেমা, পর্নোগ্রাফি ইত্যাদি কুঅভ্যাসে জড়িয়ে পড়ে। এসব কারণে তারা মসজিদের প্রতি আগ্রহ হারাতে থাকে। এজন্য আল্লাহতায়ালা সৎবন্ধু ও সত্যবাদী সাথীদের সঙ্গে থাকার নির্দেশ দিয়ে ইরশাদ করেছেন, ‘হে ইমানদাররা! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সঙ্গে থাকো।’ -সুরা তাওবা : ১১৯
যুবসমাজের মসজিদের প্রতি অনীহার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দায়ী পারিবারিক কারণ। কেননা পরিবার হচ্ছে, সন্তানের প্রথম পাঠশালা। বাবা-মার কারণে অনেক যুবক ধ্বংসের পথে পা বাড়ায়। অনেক বাবা-মা আছেন যারা নিজেরা নামাজ আদায় করেন এমনকি তাহাজ্জুদ নামাজেও খুবই যতœবান। কিন্তু তাদের যুবক ছেলে-মেয়ে নামাজ আদায় করে কি না সে ব্যাপারে কোনো খোঁজখবর রাখেন না। সন্তানকে মসজিদমুখী করার ক্ষেত্রে বাবা-মা তথা পরিবারের ভূমিকা মুখ্য। এ সম্পর্কে রাসুলে কারিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা স্বীয় সন্তানদের সাত বছর বয়সে নামাজ আদায়ের নির্দেশ প্রদান করো। দশ বছর বয়সে নামাজ আদায় না করলে তাদের প্রহার করো এবং বিছানা পৃথক করে দাও।’ -সুনানে আবু দাউদ
পিতা যদি নিয়মিত সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করেন, তাহলে সন্তানরাও যখন বড় হবে তখন তারাও মসজিদে যাতায়াত করবে। যুবসমাজকে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়ের গুরুত্ব ও মসজিদে যাতায়াতের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানানো অতীব জরুরি। যুবকদের মসজিদের প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে মসজিদের ইমাম ও মসজিদ কমিটির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। যুবকদের সঙ্গে উত্তম আচরণ এবং তাদের মসজিদের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া মসজিদ কমিটির দায়িত্ব। তাছাড়া ইমাম সাহেব মসজিদের যাবতীয় কার্যক্রমের চালিকাশক্তি হিসেবে থাকেন এবং তারা মসজিদের অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেন। যুবকদের সব ধরনের সন্দেহ ও জিজ্ঞাসার যথাযথ জবাব দেওয়া ইমামের অপরিহার্য দায়িত্ব। কেননা বর্তমানে ইসলামের শত্রুরা যুবকদের ইসলাম সম্পর্কে বিভ্রান্ত করতে বিভিন্ন চক্রান্তে লিপ্ত। কাজেই তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে হবে।
পরিশেষে বলা যায়, যৌবনকাল জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্মাণের মোক্ষম সময় এটি। কিন্তু অনেক যুবক যৌবনের উচ্ছলতায় বিবেকবুদ্ধি হারিয়ে ভুল পথে পা বাড়ায়। চরিত্র গঠনের জন্য ইমানের পাশাপাশি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আর যেসব প্রশিক্ষণমূলক কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন তন্মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো- নামাজ কায়েম করা। তাই সমাজের যুবকদের প্রতি পরিবারসহ সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে, যাতে তারা মসজিদমুখী জীবনযাপন করতে পারে। পিতামাতা ও মুরব্বিদের উপদেশ যুবকদের জীবনের পাথেয়। ইসলাম এ ব্যাপারে যথেষ্ট গুরুত্ব প্রদান করেছে। হজরত লোকমান (আ.) তার ছেলেকে দেওয়া উপদেশ অত্যন্ত যতেœর সঙ্গে পবিত্র কোরআন মাজিদে উল্লেখ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আমার প্রিয় বৎস! নামাজ প্রতিষ্ঠা করো, সৎ কাজের আদেশ দাও, অসৎ কাজে নিষেধ করো এবং তোমার ওপর যে বিপদ আসে তাতে ধৈর্যধারণ করো। নিশ্চয় এগুলো দৃঢ় সংকল্পের কাজ।’ -সুরা লোকমান : ১৭
যেকোনো মূল্যে আমাদের যুবসমাজকে মসজিদবিমুখতা থেকে রক্ষা করতে হবে। তাহলেই পথভ্রষ্ট যুবসমাজ আলোর পথে ফিরে আসবে। সমাজ থেকে দূর হবে সব অন্ধকার।
শেয়ার করুন
মুহাম্মদ ছফিউল্লাহ হাশেমী | ১ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০

যুগে যুগে যুবসমাজই জরাগ্রস্ত পৃথিবীর বুকে এনেছে নবজীবনের ঢল। যুবকদের চোখেই থাকে নতুন পৃথিবী গড়ার স্বপ্ন। পৃথিবীতে মহান আল্লাহ প্রদত্ত অফুরন্ত নেয়ামতের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- যৌবনের শক্তিমত্তা। অফুরন্ত প্রাণশক্তির আধার যুবসমাজই দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার। মহান আল্লাহ প্রদত্ত শাশ্বত জীবনব্যবস্থা ইসলামে যৌবনকালের গুরুত্ব সীমাহীন। এ সময়ের ইবাদত আল্লাহর কাছে খুবই প্রিয়। এ সম্পর্কে নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘সাত শ্রেণির মানুষকে আল্লাহ কেয়ামতের দিন তার (আরশের) ছায়ায় আশ্রয় দেবেন। এর অন্যতম হলো- ওই যুবক যে তার রবের ইবাদতের মধ্য দিয়ে বড় হয়েছে।’ -সহিহ বোখারি
অপরদিকে মসজিদ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম স্থান। নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সম্পর্কে ইরশাদ করেছেন, ‘জনপদসমূহের মধ্যে মসজিদ আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় এবং বাজার তার কাছে সর্বাধিক অপছন্দনীয়।’ -সহিহ মুসলিম
আল্লাহ মসজিদকে জান্নাতের টুকরা বানিয়েছেন। রাসুলে কারিম (সা.) বলেছেন, ‘মসজিদসমূহ আসমানবাসীদের জন্য আলোকস্তম্ভ, যেমন নক্ষত্রসমূহ পৃথিবীবাসীদের জন্য আলোকমালা।’ এ কারণে পৃথিবীর যেকোনো মসজিদ মুসলমানদের কাছে এক বিশেষ মর্যাদা সংরক্ষণ করে। সেখানে গেলে তাদের মনের মধ্যে এক আলাদা ভাবের উদয় হয়। পাপমুক্ত হওয়ার বাসনা জাগে, পবিত্র জীবনযাপনে উৎসাহবোধ করে এবং দীন পালনে উজ্জীবিত হয়। তাই বলা যায়, যুবসমাজের নৈতিক চরিত্র গঠনের ক্ষেত্রে মসজিদের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। মসজিদে যাওয়ার প্রতিদান সম্পর্কে রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি সকাল ও সন্ধ্যায় (নামাজ আদায় করার জন্য) যতবার মসজিদে যাতায়াত করবে, আল্লাহতায়ালা ততবারই তার জন্য জান্নাতে মেহমানদারির সামগ্রী তৈরি করে রাখবেন।’ -সহিহ বোখারি
দুঃখজনক বিষয় হলো, হাল সময়ে অধিকাংশ মুসলিম যুবক মসজিদবিমুখ। আর এ কারণে তারা বিপথগামী হয়ে দেশ ও জাতিকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। মুসলিম জাতির সামনে বিরাট প্রশ্ন যুবসমাজ কেন মসজিদে যেতে আগ্রহী নয়? দু-এক কথার মাধ্যমে এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আদৌ সম্ভব নয়। মুসলিম যুবকদের এ অবস্থা একদিনে তৈরি হয়নি। তবে সবচেয়ে বড় কথা, যেকোনো উপায়েই হোক না কেন, এ অবস্থা রোধ করতে না পারলে মুসলিম উম্মাহর বর্তমান সংকট দূর করা কখনই সম্ভব হবে না।
যে সব কারণে মুসলিম যুবসমাজ মসজিদে যেতে আগ্রহ হারাচ্ছে তার প্রধানতম কারণ- বিজাতীয় অপসংস্কৃতির প্রভাব। বর্তমানে যুবসমাজ ধ্বংসে স্যাটেলাইট, ইন্টারনেট, ফেইসবুক প্রভৃতি যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এসবে আসক্ত মুসলিম যুবকরা মসজিদের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে।
যুবসমাজের মসজিদবিমুখ হওয়ার পেছনে বন্ধুবান্ধবের প্রভাবও ব্যাপক। বন্ধুবান্ধব ও সঙ্গী-সাথীর প্রভাব যুবসমাজের আচার-আচরণ ও কর্মকা-ে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। বন্ধুবান্ধবের পাল্লায় পড়ে অনেক যুবক ধূমপান, মাদকাসক্তি, টিভি, সিনেমা, পর্নোগ্রাফি ইত্যাদি কুঅভ্যাসে জড়িয়ে পড়ে। এসব কারণে তারা মসজিদের প্রতি আগ্রহ হারাতে থাকে। এজন্য আল্লাহতায়ালা সৎবন্ধু ও সত্যবাদী সাথীদের সঙ্গে থাকার নির্দেশ দিয়ে ইরশাদ করেছেন, ‘হে ইমানদাররা! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সঙ্গে থাকো।’ -সুরা তাওবা : ১১৯
যুবসমাজের মসজিদের প্রতি অনীহার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দায়ী পারিবারিক কারণ। কেননা পরিবার হচ্ছে, সন্তানের প্রথম পাঠশালা। বাবা-মার কারণে অনেক যুবক ধ্বংসের পথে পা বাড়ায়। অনেক বাবা-মা আছেন যারা নিজেরা নামাজ আদায় করেন এমনকি তাহাজ্জুদ নামাজেও খুবই যতœবান। কিন্তু তাদের যুবক ছেলে-মেয়ে নামাজ আদায় করে কি না সে ব্যাপারে কোনো খোঁজখবর রাখেন না। সন্তানকে মসজিদমুখী করার ক্ষেত্রে বাবা-মা তথা পরিবারের ভূমিকা মুখ্য। এ সম্পর্কে রাসুলে কারিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা স্বীয় সন্তানদের সাত বছর বয়সে নামাজ আদায়ের নির্দেশ প্রদান করো। দশ বছর বয়সে নামাজ আদায় না করলে তাদের প্রহার করো এবং বিছানা পৃথক করে দাও।’ -সুনানে আবু দাউদ
পিতা যদি নিয়মিত সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করেন, তাহলে সন্তানরাও যখন বড় হবে তখন তারাও মসজিদে যাতায়াত করবে। যুবসমাজকে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়ের গুরুত্ব ও মসজিদে যাতায়াতের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানানো অতীব জরুরি। যুবকদের মসজিদের প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে মসজিদের ইমাম ও মসজিদ কমিটির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। যুবকদের সঙ্গে উত্তম আচরণ এবং তাদের মসজিদের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া মসজিদ কমিটির দায়িত্ব। তাছাড়া ইমাম সাহেব মসজিদের যাবতীয় কার্যক্রমের চালিকাশক্তি হিসেবে থাকেন এবং তারা মসজিদের অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেন। যুবকদের সব ধরনের সন্দেহ ও জিজ্ঞাসার যথাযথ জবাব দেওয়া ইমামের অপরিহার্য দায়িত্ব। কেননা বর্তমানে ইসলামের শত্রুরা যুবকদের ইসলাম সম্পর্কে বিভ্রান্ত করতে বিভিন্ন চক্রান্তে লিপ্ত। কাজেই তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে হবে।
পরিশেষে বলা যায়, যৌবনকাল জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্মাণের মোক্ষম সময় এটি। কিন্তু অনেক যুবক যৌবনের উচ্ছলতায় বিবেকবুদ্ধি হারিয়ে ভুল পথে পা বাড়ায়। চরিত্র গঠনের জন্য ইমানের পাশাপাশি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আর যেসব প্রশিক্ষণমূলক কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন তন্মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো- নামাজ কায়েম করা। তাই সমাজের যুবকদের প্রতি পরিবারসহ সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে, যাতে তারা মসজিদমুখী জীবনযাপন করতে পারে। পিতামাতা ও মুরব্বিদের উপদেশ যুবকদের জীবনের পাথেয়। ইসলাম এ ব্যাপারে যথেষ্ট গুরুত্ব প্রদান করেছে। হজরত লোকমান (আ.) তার ছেলেকে দেওয়া উপদেশ অত্যন্ত যতেœর সঙ্গে পবিত্র কোরআন মাজিদে উল্লেখ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আমার প্রিয় বৎস! নামাজ প্রতিষ্ঠা করো, সৎ কাজের আদেশ দাও, অসৎ কাজে নিষেধ করো এবং তোমার ওপর যে বিপদ আসে তাতে ধৈর্যধারণ করো। নিশ্চয় এগুলো দৃঢ় সংকল্পের কাজ।’ -সুরা লোকমান : ১৭
যেকোনো মূল্যে আমাদের যুবসমাজকে মসজিদবিমুখতা থেকে রক্ষা করতে হবে। তাহলেই পথভ্রষ্ট যুবসমাজ আলোর পথে ফিরে আসবে। সমাজ থেকে দূর হবে সব অন্ধকার।