লেনদেনে পরিচ্ছন্নতা
আহমাদুল্লাহ | ২৩ জুন, ২০২২ ০০:০০
ইসলামি শরিয়তে সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান বিষয় হচ্ছে ইমান-আকিদা। তা শুদ্ধ না হলে একজন ব্যক্তি মুসলমান হতে পারে না। ইমান-আকিদার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ইবাদত-বন্দেগির অধ্যায়। এরপর লেনদেনের স্থান। তবে শরিয়তের অধ্যায়গুলোর একটিকে আরেকটি থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেখার সুযোগ নেই। সব অধ্যায় এক সুতোয় গাঁথা। হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (স্বাভাবিকভাবে) এ কথাটি বলতেন, ‘যার আমানতদারি নেই, তার ইমান নেই। যার প্রতিশ্রুতির ঠিক নেই তার দ্বীন নেই।’ মুসনাদে আহমাদ : ১২৩৮৩
অনুরূপভাবে মুসলিম শরিফের এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, যার উপার্জন হারাম আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেন না। হাদিস : ১০১৫
অন্য হাদিসে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা দিয়েছেন, ‘অজু ছাড়া নামাজ কবুল হয় না; আর আত্মসাতের (অবৈধভাবে উপার্জিত) সম্পদের সদকাও কবুল হয় না।’ সহিহ্ মুসলিম : ২২৪
সুতরাং ইমান-আকিদা ও ইবাদতের সঙ্গে লেনদেনের যোগসূত্র অতি গভীর ও সুদৃঢ়। একজন মুসলমানের গোটা জীবনে লেনদেনের বিধি-নিষেধ সবচেয়ে বেশি পরিমাণ দরকার পড়ে। কারণ মানুষ সামাজিক জীব। সমাজে চলতে হলে তাকে সবার সঙ্গে ওঠা-বসা, লেনদেন করেই চলতে হয়। লেনদেনের মাধ্যমে জীবন যাপন করা ছাড়া কারও পক্ষে ঠিকমতো ইবাদত-বন্দেগি পালন সম্ভব নয়। তাই শরিয়তে লেনদেনের গুরুত্ব অনেক বেশি। এর জন্য বিপুল পরিমাণে স্বতন্ত্র বিধান দেওয়া হয়েছে। শরিয়তে হকসমূহ দুই প্রকার- ১. আল্লাহর হক। ২. বান্দার হক। আল্লাহর হকের ক্ষেত্রে যদি বান্দার কোনো ত্রুটি হয়ে যায়; আর সে তওবা করে নেয় অথবা ক্ষেত্র বিশেষে তওবা ছাড়াও যদি আল্লাহর মর্জি হয়; তবে সে ক্ষমা পেতে পারে। কিন্তু ‘বান্দার হকের ব্যাপারে কেউ ত্রুটি করলে সেটা আল্লাহ ক্ষমা করেন না; যতক্ষণ না অপরাধী নিজেই হকদারের সঙ্গে লেনদেন সাফ করে নেয়।
লেনদেনের বিশেষ গুরুত্বারোপের আরেক দিক হলো এটি আল্লাহ কর্র্তৃক বান্দার পরীক্ষার এক কঠিন ময়দান। কেননা অন্যান্য ময়দানের তুলনায় এখানে বান্দার পার্থিব কল্যাণ ও প্রবৃত্তির চাহিদা একটু বেশিই বিদ্যমান। উদাহরণস্বরূপ-ব্যবসা-বাণিজ্যে বান্দার নিজস্ব উপকারিতা বেশি নজরে আসে। প্রবৃত্তির টানও এই থাকে যে, সত্য-মিথ্যা, জায়েজ-নাজায়েজের দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে যেভাবে লাভ বেশি হয় সে পন্থা অবলম্বন করা। কিন্তু ‘আল্লাহর বিধান বলে, খবরদার! বাহ্যিকভাবে তোমার বিরাট ক্ষতি হয় হোক, তবুও তুমি মিথ্যা, ওজনে কম দেওয়া, ভেজাল অথবা কারও সঙ্গে প্রতারণা করতে পারবে না। আল্লাহ তোমার জন্য যে পথ হালাল করেছেন, তুমি সেটাই অবলম্বন করবে।
শেয়ার করুন
আহমাদুল্লাহ | ২৩ জুন, ২০২২ ০০:০০

ইসলামি শরিয়তে সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান বিষয় হচ্ছে ইমান-আকিদা। তা শুদ্ধ না হলে একজন ব্যক্তি মুসলমান হতে পারে না। ইমান-আকিদার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ইবাদত-বন্দেগির অধ্যায়। এরপর লেনদেনের স্থান। তবে শরিয়তের অধ্যায়গুলোর একটিকে আরেকটি থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেখার সুযোগ নেই। সব অধ্যায় এক সুতোয় গাঁথা। হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (স্বাভাবিকভাবে) এ কথাটি বলতেন, ‘যার আমানতদারি নেই, তার ইমান নেই। যার প্রতিশ্রুতির ঠিক নেই তার দ্বীন নেই।’ মুসনাদে আহমাদ : ১২৩৮৩
অনুরূপভাবে মুসলিম শরিফের এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, যার উপার্জন হারাম আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেন না। হাদিস : ১০১৫
অন্য হাদিসে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা দিয়েছেন, ‘অজু ছাড়া নামাজ কবুল হয় না; আর আত্মসাতের (অবৈধভাবে উপার্জিত) সম্পদের সদকাও কবুল হয় না।’ সহিহ্ মুসলিম : ২২৪
সুতরাং ইমান-আকিদা ও ইবাদতের সঙ্গে লেনদেনের যোগসূত্র অতি গভীর ও সুদৃঢ়। একজন মুসলমানের গোটা জীবনে লেনদেনের বিধি-নিষেধ সবচেয়ে বেশি পরিমাণ দরকার পড়ে। কারণ মানুষ সামাজিক জীব। সমাজে চলতে হলে তাকে সবার সঙ্গে ওঠা-বসা, লেনদেন করেই চলতে হয়। লেনদেনের মাধ্যমে জীবন যাপন করা ছাড়া কারও পক্ষে ঠিকমতো ইবাদত-বন্দেগি পালন সম্ভব নয়। তাই শরিয়তে লেনদেনের গুরুত্ব অনেক বেশি। এর জন্য বিপুল পরিমাণে স্বতন্ত্র বিধান দেওয়া হয়েছে। শরিয়তে হকসমূহ দুই প্রকার- ১. আল্লাহর হক। ২. বান্দার হক। আল্লাহর হকের ক্ষেত্রে যদি বান্দার কোনো ত্রুটি হয়ে যায়; আর সে তওবা করে নেয় অথবা ক্ষেত্র বিশেষে তওবা ছাড়াও যদি আল্লাহর মর্জি হয়; তবে সে ক্ষমা পেতে পারে। কিন্তু ‘বান্দার হকের ব্যাপারে কেউ ত্রুটি করলে সেটা আল্লাহ ক্ষমা করেন না; যতক্ষণ না অপরাধী নিজেই হকদারের সঙ্গে লেনদেন সাফ করে নেয়।
লেনদেনের বিশেষ গুরুত্বারোপের আরেক দিক হলো এটি আল্লাহ কর্র্তৃক বান্দার পরীক্ষার এক কঠিন ময়দান। কেননা অন্যান্য ময়দানের তুলনায় এখানে বান্দার পার্থিব কল্যাণ ও প্রবৃত্তির চাহিদা একটু বেশিই বিদ্যমান। উদাহরণস্বরূপ-ব্যবসা-বাণিজ্যে বান্দার নিজস্ব উপকারিতা বেশি নজরে আসে। প্রবৃত্তির টানও এই থাকে যে, সত্য-মিথ্যা, জায়েজ-নাজায়েজের দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে যেভাবে লাভ বেশি হয় সে পন্থা অবলম্বন করা। কিন্তু ‘আল্লাহর বিধান বলে, খবরদার! বাহ্যিকভাবে তোমার বিরাট ক্ষতি হয় হোক, তবুও তুমি মিথ্যা, ওজনে কম দেওয়া, ভেজাল অথবা কারও সঙ্গে প্রতারণা করতে পারবে না। আল্লাহ তোমার জন্য যে পথ হালাল করেছেন, তুমি সেটাই অবলম্বন করবে।