জামাতে নামাজের পাঁচ লাভ
মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ | ২৪ জুন, ২০২২ ০০:০০
একাকী নামাজ আদায়ের থেকে জামাতে নামাজ আদায়ের গুরুত্ব এবং এর কল্যাণকর প্রভাব অত্যধিক। এ সব কল্যাণকর প্রভাবের কারণে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য জোর উপদেশ দান করেছেন। এখানে জামাতে নামাজ আদায়ের বিপুল কল্যাণকর প্রভাব ও গুরুত্ব থেকে সংক্ষেপে পাঁচটি গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা হলো
সাতাশ গুণ বেশি প্রতিদান : হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে সহিহ্ হাদিসের সূত্রে বর্ণনা করা হয়েছে, জামাতে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে একাকী নামাজের তুলনায় সাতাশ গুণ অধিক সওয়াব পাওয়া যাবে। অপর বর্ণনায় পঁচিশ গুণ অধিক সওয়াব বা প্রতিদানের কথা বলা হয়েছে। সাতাশ বা পঁচিশ যেটিই হোক না কেন, একাকী নামাজের তুলনায় জামাতে নামাজ আদায় অবশ্যই অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
ফেরেশতাদের দোয়া : হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অজু অবস্থায় তার নামাজ আদায়ের স্থানে যতক্ষণ অবস্থান করে, ফেরেশতারা তার জন্য ততক্ষণ পর্যন্ত দোয়া করতে থাকে। তারা দোয়া করে, হে আল্লাহ! তাকে ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! তাকে দয়া করুন।’ সহিহ্ বোখারি
সুতরাং, আপনি যদি শুধু অজু করে মসজিদেও অবস্থান নেন, ফেরেশতারা আপনার জন্য দোয়া করতে থাকবে।
মোনাফেকি থেকে সুরক্ষা : হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘মুনাফেকদের জন্য সবচেয়ে কঠিন হলো নামাজ এশা ও ফজরের নামাজ। যদি তারা এর প্রতিদান সম্পর্কে জানত, তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা (এশা ও ফজরের) নামাজে এসে অংশগ্রহণ করত।’ সহিহ্ বোখারি
বর্ণিত হাদিসে নবী করিম (সা.) মূলত আমাদের সতর্ক করে বলেছেন, এই দুই ওয়াক্তের নামাজ যাদের পক্ষে আদায় করা কঠিন, তাদের মনে মুনাফেকির প্রভাব বিদ্যমান। সুতরাং এই দুই নামাজ জামাতে আদায়ের মাধ্যমে আমরা আমাদের মনকে মুনাফেকি থেকে মুক্ত করতে পারি।
পুরো রাত নামাজ আদায়ের সওয়াব : হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে এশার নামাজ আদায় করবে, সে যেন অর্ধেক রাত নামাজে অতিবাহিত করল। আবার যে ব্যক্তি এশা ও ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করল, সে যেন সম্পূর্ণ রাত নামাজে অতিবাহিত করল।’ জামে তিরমিজি
বর্ণিত হাদিসের আলোকে জামাতে এশা ও ফজর আদায়ের মাধ্যমে আমরা পূর্ণ রাত নামাজ আদায়ের মতো বিশাল প্রতিদান আল্লাহর পক্ষ থেকে পেতে পারি।
গোনাহ মাফ ও মর্যাদা বৃদ্ধি : সাহাবি হজরত আবু সাইদ খুদরি (রা.) বলেছেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) সমবেত সাহাবাদের প্রশ্ন করেন, আমি কী তোমাদের এমন একটি কাজের কথা বলব না, যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের গোনাহকে মাফ করবেন এবং তোমাদের নেকিকে বাড়িয়ে দেবেন? উপস্থিত সবাই বলল, অবশ্যই, আল্লাহর রাসুল! তিনি বললেন, প্রতিবন্ধকতা থাকলেও যথাযথভাবে অজু করে পায়ে হেঁটে মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য অপেক্ষা করতে থাকা।’ ইবনে মাজাহ
সুতরাং জামাতে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আমরা গোনাহগুলোকে আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা করানোর পাশাপাশি আমাদের মর্যাদাকে বাড়িয়ে নিতে পারি।
শেয়ার করুন
মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ | ২৪ জুন, ২০২২ ০০:০০

একাকী নামাজ আদায়ের থেকে জামাতে নামাজ আদায়ের গুরুত্ব এবং এর কল্যাণকর প্রভাব অত্যধিক। এ সব কল্যাণকর প্রভাবের কারণে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য জোর উপদেশ দান করেছেন। এখানে জামাতে নামাজ আদায়ের বিপুল কল্যাণকর প্রভাব ও গুরুত্ব থেকে সংক্ষেপে পাঁচটি গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা হলো
সাতাশ গুণ বেশি প্রতিদান : হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে সহিহ্ হাদিসের সূত্রে বর্ণনা করা হয়েছে, জামাতে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে একাকী নামাজের তুলনায় সাতাশ গুণ অধিক সওয়াব পাওয়া যাবে। অপর বর্ণনায় পঁচিশ গুণ অধিক সওয়াব বা প্রতিদানের কথা বলা হয়েছে। সাতাশ বা পঁচিশ যেটিই হোক না কেন, একাকী নামাজের তুলনায় জামাতে নামাজ আদায় অবশ্যই অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
ফেরেশতাদের দোয়া : হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অজু অবস্থায় তার নামাজ আদায়ের স্থানে যতক্ষণ অবস্থান করে, ফেরেশতারা তার জন্য ততক্ষণ পর্যন্ত দোয়া করতে থাকে। তারা দোয়া করে, হে আল্লাহ! তাকে ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! তাকে দয়া করুন।’ সহিহ্ বোখারি
সুতরাং, আপনি যদি শুধু অজু করে মসজিদেও অবস্থান নেন, ফেরেশতারা আপনার জন্য দোয়া করতে থাকবে।
মোনাফেকি থেকে সুরক্ষা : হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘মুনাফেকদের জন্য সবচেয়ে কঠিন হলো নামাজ এশা ও ফজরের নামাজ। যদি তারা এর প্রতিদান সম্পর্কে জানত, তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা (এশা ও ফজরের) নামাজে এসে অংশগ্রহণ করত।’ সহিহ্ বোখারি
বর্ণিত হাদিসে নবী করিম (সা.) মূলত আমাদের সতর্ক করে বলেছেন, এই দুই ওয়াক্তের নামাজ যাদের পক্ষে আদায় করা কঠিন, তাদের মনে মুনাফেকির প্রভাব বিদ্যমান। সুতরাং এই দুই নামাজ জামাতে আদায়ের মাধ্যমে আমরা আমাদের মনকে মুনাফেকি থেকে মুক্ত করতে পারি।
পুরো রাত নামাজ আদায়ের সওয়াব : হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে এশার নামাজ আদায় করবে, সে যেন অর্ধেক রাত নামাজে অতিবাহিত করল। আবার যে ব্যক্তি এশা ও ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করল, সে যেন সম্পূর্ণ রাত নামাজে অতিবাহিত করল।’ জামে তিরমিজি
বর্ণিত হাদিসের আলোকে জামাতে এশা ও ফজর আদায়ের মাধ্যমে আমরা পূর্ণ রাত নামাজ আদায়ের মতো বিশাল প্রতিদান আল্লাহর পক্ষ থেকে পেতে পারি।
গোনাহ মাফ ও মর্যাদা বৃদ্ধি : সাহাবি হজরত আবু সাইদ খুদরি (রা.) বলেছেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) সমবেত সাহাবাদের প্রশ্ন করেন, আমি কী তোমাদের এমন একটি কাজের কথা বলব না, যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের গোনাহকে মাফ করবেন এবং তোমাদের নেকিকে বাড়িয়ে দেবেন? উপস্থিত সবাই বলল, অবশ্যই, আল্লাহর রাসুল! তিনি বললেন, প্রতিবন্ধকতা থাকলেও যথাযথভাবে অজু করে পায়ে হেঁটে মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য অপেক্ষা করতে থাকা।’ ইবনে মাজাহ
সুতরাং জামাতে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আমরা গোনাহগুলোকে আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা করানোর পাশাপাশি আমাদের মর্যাদাকে বাড়িয়ে নিতে পারি।