
জন্মগতভাবে প্রত্যেক মানুষই সুখপ্রত্যাশী। সুখের আবাস গড়ার জন্য প্রতিনিয়ত চলছে লড়াই। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা আবার সন্ধ্যা থেকে রাতÑ চক্রাকারে সময়ের যে বৃত্ত তার প্রতিটি মুহূর্তই এই লড়াই প্রবাহিত হচ্ছে। এই পৃথিবীতে কেউ স্বল্প সময়, কেউ দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকে। এই সময়ে নিরাপদ জীবন অতিবাহিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এতে করে আমরা আমাদের মৌলিক লক্ষ্য আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠ থাকতে পারি। যার ফলে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথ সুগম হয়। জীবনের তাগিদে আমরা যে অবস্থানেই থাকি না কেন, সত্য ও ন্যায়ের প্রতি অবিচল থাকলেই প্রকৃত সুখ অনুভব সম্ভব।
প্রকৃতির সুবিন্যস্ত নিয়ম অনুযায়ী একটা সময় জীবন থেমে যায় আর নতুন জীবনের উন্মেষ ঘটে। যা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত। এর কোনো ব্যত্যয় এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে ঘটেনি। অথচ নির্দিষ্ট সময়ের ফ্রেমে বেঁধে দেওয়া এই জীবন নিরাপদ আবহে টেনে নেওয়ার প্রয়াসে প্রতিনিয়ত আমাদের বিশাল কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। নানা কাজে একে অন্যের সঙ্গে মিশতে হয়। কখনো নিজের স্বার্থ, কখনো অন্যের স্বার্থের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হয়। কিন্তু সব সময় একই রকম যেমন যায় না, তেমনি সব মানুষ বা প্রাণীও একই রকম হয় না। আবার কিছু ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় একে অন্যের ক্ষতির মাধ্যমে নিজের সুখ রচনায় ব্যস্ত প্রায় প্রত্যেক প্রাণী। এটা আল্লাহ প্রদত্ত বিধান। কিন্তু এই নিয়মের বাইরেও বিনা প্রয়োজনে অন্যের অনিষ্ট করার নজির প্রাণী সমাজে বিদ্যমান। বিশেষ করে মানুষের মধ্যে, যে কিনা শ্রেষ্ঠ প্রাণী হিসেবে স্বীকৃত। শুধু নিজের সুখের জন্য অন্যের হানি করা মানবধর্ম না হলেও অধিকাংশ মানুষ তা করে অবলীলায়। আমাদের আশপাশে এমনকি পৃথিবীময় এমন অনেক ঘটনা অহরহ ঘটছে, যা শুধু স্বাভাবিক সুখ রচনার চেয়ে বিকৃত মানসিকতার পরিচয়ই বহন করে। সভ্য সমাজে তা কাম্য হতে পারে না।
মানবসমাজ মানেই হওয়া উচিত মহান আল্লাহর নির্দেশিত সরল পথে চালিত নির্ঝঞ্ঝাট জীবন। একে অন্যের প্রতি আন্তরিক, উদার ও সহযোগিতাপ্রবণ থাকা। নিজের প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিয়ে অন্য মানুষকে কষ্ট দেওয়া কিংবা মানুষের ক্ষতি করা অন্যায়। অন্যায় করে কখনো সুখী হওয়া যায় না। যদি কেউ মনে করে থাকে অন্যের চিন্তা না করে যেভাবেই হোক আমি সুখী হবÑতা কখনো সম্ভব নয়। কারণ বিশ্বস্রষ্টার বিধানই হলো একে অন্যের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে হবে। একে অন্যের সহযোগিতার মাধ্যমে রচিত হবে সুখ। সেখানে কেউ একা সুখে থাকার কারণ নেই। তবু কেউ যদি অন্যের অধিকার কেড়ে নিয়ে বা কাউকে কষ্ট দিয়ে সুখী হতে চায় তা হিতে বিপরীতই হয়। পৃথিবীর ইতিহাস সেই বার্তাই মানবসমাজকে দিয়ে আসছে। তা ছাড়া ইসলাম কখনো তা সমর্থন করে না বা শিক্ষা দেয় না।
এ ব্যাপারে একটি হাদিস হলোÑ হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের ক্ষতিসাধন করে বা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে সে অভিশপ্ত।’ -সুনানে তিরমিজি :১৯৪১
মানুষকে কষ্ট দেওয়া বলতে আমরা কী বুঝি তা স্পষ্ট হওয়া দরকার। সমাজে জীবন চলার পথে নিজের স্বার্থে আমরা নানাভাবে অন্যের অধিকার ক্ষুণœ করছি। কথা বা কাজের মাধ্যমে কাউকে কোনো না কোনোভাবে কষ্ট দিচ্ছি, কখনো গালি দিচ্ছি, কটু কথা বলছি, বিনা প্রয়োজনে অন্যের সমালোচনা করছি, মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছি, কারও প্রতি কোনো কারণে জুলুম করছি, খাদ্যে ভেজাল দিচ্ছি, ঠকবাজি, মিথ্যা বলা, কথা দিয়ে কথা না রাখা, ঘুষ গ্রহণ, প্রতারণা, রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া, কারও সম্পদ দখল করা, কাউকে আঘাত করা, চুরি-ছিনতাই, হত্যা করা, পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ মেরে ফেলা, ক্ষেতের ফসল নষ্ট করা, বাগানের গাছ ধ্বংস করা ইত্যাদি হাজারো ঘটনা ঘটছে, যা অন্যের প্রতি অবিচার বা কষ্ট দেওয়া। এগুলো সবই আপাত দৃষ্টে একশ্রেণির মানুষের কাছে আত্মসুখ অনুভব মনে হলেও তা ভুল এবং প্রকারান্তরে নিজের প্রতি নিজের জুলুম। কেননা অন্যের প্রতি করা জুলুম কেয়ামতের মাঠে দায় পরিশোধ করা ছাড়া কেউ মুক্তি পাবে না। কেউ অণু পরিমাণ অপরাধ করলেও যেমন তার শাস্তি পাবে তেমনি অণু পরিমাণ পুণ্য করলেও তার প্রতিফল পাবে।
তা ছাড়া সুখ অর্জনেরই শুধু নয়, অনুভবেরও বিষয়। একজন মানুষ কীভাবে সুখী হবে তা তার পারিপার্শ্বিক অবস্থান ও শিক্ষা থেকেই নির্ধারিত হয়। কেউ অন্যের উপকার করে সুখ অনুভব করে থাকে। আবার কেউ অন্যের ক্ষতিসাধন করে নিজে পুলক অনুভব করে। এটা কখনো সুখ হতে পারে না। কারও পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ ধ্বংস করে যে পুলক অনুভব করল সে একা একজন মানুষের ক্ষতিই করল না; করল একটি সমাজের ক্ষতি। কারণ উৎপাদিত মাছ সমাজের বা এলাকার অনেকে খেয়ে তৃপ্তি পেত। এভাবে অন্যের সুখ বা অধিকার কেড়ে নিয়ে, কাউকে কষ্ট দিয়ে শান্তি আসে না। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যেসব লোক বিনা দোষে মুমিন পুরুষ ও নারীকে কষ্ট দেয়, তারা অতি বড় একটা মিথ্যা অপবাদ ও সুস্পষ্ট গুনাহের বোঝা নিজেদের মাথায় তুলে নেয়।’ -সুরা আহজাব : ৫৮
যে ব্যক্তি আমলনামাকে পাপ দ্বারা কলঙ্কিত করেছে, তার কর্তব্য হলো একনিষ্ঠ তওবার মাধ্যমে নিজেকে পাক-পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন করা। তওবার মাধ্যমে দয়াময় আল্লাহর নৈকট্য অর্জিত হয়, তার প্রিয়পাত্র হওয়ার সুযোগ মেলে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তওবাকারীকে ভালোবাসেন এবং তাদেরও ভালোবাসেন যারা পবিত্র থাকে।’ -সুরা বাকারা : ২২২
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) কর্র্তৃক সহিহ মুসলিমে বর্ণিত হাদিসে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘মরু প্রান্তরে তোমাদের কেউ হারানো (বাহন) পশু পাওয়ার পর যে পরিমাণ খুশি হয়, আল্লাহতায়ালা বান্দার তওবার পর এর থেকেও অধিক খুশি হন।’ সৃষ্টিকর্তা মহান রবের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন এবং তার প্রতি ভালোবাসা, আকাক্সক্ষা, দাসত্ব ও গোলামির সঙ্গে দ্রুত অগ্রসর হওয়াতেই রয়েছে বান্দার প্রকৃত জীবন ও সফলতা। আর সর্বোত্তমভাবে দাসত্বের বাস্তবায়ন হয় আল্লাহর কাছে বান্দার তওবাকারী হওয়ার মাধ্যমে। ফলে সে পাপকাজে জড়িত হবে না এবং এটাকে তার চরিত্র বানাবে না। বরং সে দুর্বলতা, পাপ ও পাপের গোলামি থেকে রবের রহমতের দিকে পলায়ন করবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় তিনি তার দিকে প্রত্যাবর্তনকারীদের প্রতি অধিক ক্ষমাশীল।’ -সুরা আল ইসরা : ২৫
আল্লাহতায়ালা আমাদের প্রতি অধিক করুণা করেছেন। তাই তিনি যারা পাপ ও উদাসীনতায় নিমজ্জিত, তাদের সঙ্গেও সুসম্পর্ক বজায় রাখেন, তার দিকে ডাকেন, তাদের জন্য ক্ষমার দরজা উন্মুক্ত রাখেন এবং তাদের ক্ষমার সুসংবাদের প্রতি অত্যন্ত নরম সুরে আহ্বান করেন। তিনি বলেন, ‘বলুন, হে আমার বান্দারা! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছো, আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে হতাশ হয়ো না, নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ -সুরা আয যুমার : ৫৩
ইস্তেগফার তওবার একটি অবশ্যকীয় বিষয় ও তার প্রবেশদ্বার। ইস্তেগফারের বিরাট মর্যাদা রয়েছে।
ইস্তেগফারকারীর বিভিন্ন অবস্থা রয়েছে। আদি পিতা-মাতা হজরত আদম (আ.) ও হজরত হাওয়া (আ.)-এর ইস্তেগফার ছিল পাপের স্বীকারোক্তি এবং আসমান ও জমিনের রবের প্রতি লজ্জশীলতার প্রকাশ। দুই ভাই হজরত মুসা ও হজরত হারুন (আ.)-এর ইস্তেগফার ছিল সম্পর্ক রক্ষা এবং বিশ্বজগতের প্রতিপালকের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সত্যবাদিতার সাক্ষ্যস্বরূপ। আর আল্লাহর দুজন খলিলের (বন্ধু) ইস্তেগফার ছিলÑ অনুগ্রহ ও দয়ার স্বীকারোক্তি। মহান আল্লাহ তার সবচেয়ে বড় অন্তরঙ্গ বন্ধু নবী মুহাম্মদ (সা.)-কে বলেছেন, ‘কাজেই জেনে রাখুন যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো সত্য ইলাহ (উপাস্য) নেই। আর ক্ষমা প্রার্থনা করুন আপনার ও মুমিন নর-নারীদের ত্রুটির জন্য। আল্লাহ তোমাদের গতিবিধি এবং অবস্থান সম্পর্কে অবগত রয়েছেন।’ -সুরা মুহাম্মদ : ১৯
যখন হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) হজরত আয়েশা (রা.)-এর জন্য ইস্তেগফার করেছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন, ‘হে আল্লাহ! আপনি আয়েশার আগের ও পরের এবং প্রকাশ্য ও গোপন গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দিন।’ এ ইস্তেগফার শুনে যখন হজরত আয়েশা (রা.) আনন্দিত হলেন, তখন নবী করিম (সা.) বললেন ‘প্রত্যেক নামাজে এটি আমার উম্মতের জন্য আমার দোয়া।’ আমাদের প্রত্যেকের জন্যই হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইস্তেগফার তথা ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
ইস্তেগফার আসমান থেকে বারী বর্ষিত হওয়াকে সহজ করে। ধন-সম্পদকে সমৃদ্ধ করে, উত্তম সামগ্রী এবং শরীরে শক্তির উৎস জোগায় এবং এটা পরম দয়ালু ও অতি স্নেহময়ের ভালোবাসা লাভের মাধ্যম।
ইস্তেগফার হলো মুমিনদের সঙ্গে ফেরেশতাদের সম্পর্কের সেতুবন্ধন। ইস্তেগফার মহান প্রতিপালক মাবুদের প্রতি অবিশ্বাস ও অকৃজ্ঞতার মতো অপরাধের সরল স্বীকারোক্তি এবং বিশ্বপালনকর্তা আল্লাহর ইবাদতের হক আদায়ে অপারগতা অবলোকন করার নাম। সুতরাং যে ব্যক্তি এ স্বীকারোক্তির ময়দানে তার পবিত্রতা ঘোষণা করবে, সে হবে তাসবিহ পাঠকারী, যে তার মহত্ত্ব বর্ণনা করবে সে হবে তাকবির পাঠকারী, আর যে তার গুণকীর্তন করবে সে হবে প্রশংসাকারী, আর যে তার একত্বের ঘোষণা করবে সে হবে- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পাঠকারী। এ জন্য যে ব্যক্তি তাসবিহ (সুবহানাল্লাহ), তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ) এবং তাকবির (আল্লাহু আকবার) তেত্রিশ বার করে পাঠ করবে এবং একশত বার পূর্ণ করতে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির’ দোয়াটি পড়বে; তার সব গোনাহ মাফ করে দেওয়া হবে, যদিও তা সাগরের ফেনা সমপরিমাণ হয়।
যে ব্যক্তি নামাজ আদায়কারী হয়, বস্তুত সে
ইস্তেগফারকারী হয়। রুকুর বিনম্রতার মধ্যে ইস্তেগফার রয়েছে। সিজদার বিনয়ের মধ্যে ইস্তেগফার রয়েছে। দুই সিজদার মধ্যবর্তী স্থানে রয়েছে বন্দি ও অসহায়ের মতো ইস্তেগফার। নামাজ শেষেও ইস্তেগফার রয়েছে। আর রোজা হলো ধৈর্যশীলদের ও বিশ্বপালনকর্তার পক্ষ থেকে সাহায্যপ্রার্থীদের ইস্তেগফার। রমজান, আরাফা, আশুরা এবং অন্যান্য দিনের রোজার সঙ্গেও মাগফিরাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আর মজলিসের কাফফারার দোয়া- যার মাধ্যমে মজলিসের ভুল-ত্রুটি মাফ করা হয়। তা হলো ‘সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়াবি হামদিকা, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লা আনতা, আস্তাগফিরুকা ওয়া আতুবু ইলাইক।’
নবী করিম (সা.) তার বৈঠকগুলোতে প্রকাশ্যে ইস্তেগফার পাঠ করতেন। ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘একই মজলিসে বসে আমরা নবী করিম (সা.)-এর এই ইস্তেগফারটি একশ’ বার পর্যন্ত পাঠ করতে শুনতাম। হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ক্ষমা করো, আমার তওবা কবুল করো, নিশ্চয় তুমি অতিশয় তওবা কবুলকারী, দয়াবান।’
সাইয়্যেদুল ইস্তেগফারে রয়েছে দোষ স্বীকার, অঙ্গীকার নবায়ন এবং রব ও বান্দার মধ্যে প্রতিশ্রুতি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এই দোয়া পাঠ করবে, দিনে পাঠ করে রাতে মারা গেলে কিংবা রাতে পাঠ করে দিনে মারা গেলে, সে জান্নাতি হবে।’
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আনতা খালাকতানি, ওয়াআনা আবদুকা ওয়াআনা আলা আহদিকা ওয়া ওয়া-দিকা মাস্তাতাতু, আঊজুবিকা মিন শাররি মাছানা-তু। আবুয়ূলাকা বিনিয়ামাতিকা আলাইয়া ওয়া আবুয়ূ বিজাম্বি ফাগফিরলি ফাইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার পালনকর্তা। তুমি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছো। আমি তোমার দাস। আমি আমার সাধ্যমতো তোমার কাছে দেওয়া অঙ্গীকারে ও প্রতিশ্রুতিতে দৃঢ় আছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি আমার ওপরে তোমার দেওয়া অনুগ্রহকে স্বীকার করছি এবং আমি আমার গোনাহের স্বীকৃতি দিচ্ছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা করো। কেননা তুমি ছাড়া পাপসমূহ ক্ষমা করার কেউ নেই।’ -সহিহ বোখারি
মনে রাখতে হবে, মহান আল্লাহ ও সৃষ্টিজীবের মধ্যে আত্মীয়তা ও বংশীয় কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি ইনসাফ প্রতিষ্ঠাকারী ও ন্যায়ভিত্তিক ফায়সালাকারী। বান্দার পাল্লায় অণু পরিমাণ বিষয়ও পরিমাপ করা হবে এবং অপরাধীকে তার পরিণাম ভোগ করতে হবে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পর হলেও। সুতরাং সর্বাবস্থায় আল্লাহকে ভয় করুন, নিয়ত বিশুদ্ধ করুন ও গোপন বিষয় সংশোধন করুন এবং পাপ থেকে দূরে থাকুন; আশা করা যায় আপনারা ক্ষমাপ্রাপ্ত হবেন।
১০ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার, মসজিদে নববিতে প্রদত্ত জুমার খুতবা। অনুবাদ মুহাম্মদ আতিকুর রহমান
কঠিন বিপদ থেকে বাঁচতে যে দোয়া পড়া সুন্নত মানুষের কাছে জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মহান আল্লাহর কাছে সব সময় দুনিয়া ও আখিরাতের নিরাপত্তা প্রার্থনা করা মুমিনের কর্তব্য। তাই হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) সকাল ও সন্ধ্যা নিয়মিত একটি দোয়া পড়তেন। তা হলো-
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফওয়া ওয়াল আফিয়াতা ফিদ দুনিয়া ওয়াল আখিরা। আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফওয়া ওয়াল আফিয়াতা ফি দ্বিনি ওয়া দুনিইয়ায়া ওয়া আহলি ওয়া মালি। আল্লাহুম্মাসতুর আওরতি ওয়া আমিন রওআতি। আল্লাহুম্মাহফাজনি মিন বাইনি ইয়াদাইয়া ওয়া মিন খলফি ওয়া মিন আইনি ওয়া মিন শিমালি ওয়া মিন ফাওকি। ওয়া আউজুবিকা বিআজমাতিকা আন উগতালা মিন তাহতি।
অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে দুনিয়া ও আখেরাতে ক্ষমা ও সুস্থতা চাই। হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে দীন, দুনিয়া, পরিবার-পরিজন ও সম্পদের কল্যাণ ও নিরাপত্তা চাই। হে আল্লাহ, আমার দোষত্রুটি গোপন রাখুন এবং আমার ভয়ভীতি থেকে নিরাপদ রাখুন। হে আল্লাহ, আমার ডান-বাম, সামনে-পেছনে ও ওপর-নিচের সব ধরনের ক্ষতি থেকে আমাকে রক্ষা করুন।’
হাদিস : হজরত আবদুল্লাহ বিন ওমর (রা.) বলেছেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) সকালে ও সন্ধ্যায় উল্লিখিত দোয়াটি কখনো পড়া ছাড়তেন না। -সুনানে আবু দাউদ : ৫০৭৪
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩ ধরনের জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর থেকে বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করেছে সরকার। অন্যদিকে উৎপাদন পর্যায়ে তরল করা পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল আমদানিতে প্রতি লিটারে ১৩ দশমিক ৭৫ টাকা করে শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ ছাড়া অন্যান্য জ্বালানি জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েল, লুব বেইজ অয়েল, কেরোসিনের ক্ষেত্রে প্রতি টনে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এত দিন এসব জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ছিল।
আমদানি করা পণ্যের যথাযথ মূল্য নির্ধারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্যের ট্যারিফ মূল্য ও ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাত দুটি হেডিংয়ের আওতায় ১২টি এইচএস কোডের বিপরীতে ট্যারিফ মূল্য এবং একটি হেডিংয়ের আওতায় একটি এইচএস কোডের বিপরীতে ন্যূনতম মূল্য বহাল আছে।
পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাতগুলোর মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিনিয়ত ওঠানামা করার কারণে অতি প্রয়োজনীয় এই পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে এ সুপারিশ করা হয়েছে।
এলপিজি সিলিন্ডারের বিষয়ে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, এলপিজি সিলিন্ডার তৈরির কাঁচামাল ইস্পাতের পাত (স্টিল শিট) ও ওয়েল্ডিংয়ের তার আমদানির করছাড় সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছে। এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনকারীরা কাঁচামালে শুল্ককর ছাড় ১২ বছর ধরে ভোগ করে আসছে। তাই রাজস্ব আহরণের স্বার্থে শুধু দুটি উপকরণে ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য করছাড়ের মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে।
পেট্রোলিয়াম তেল এবং বিটুমিনাস খনিজ থেকে প্রাপ্ত তেলের ওপর বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশ। নতুন বাজেট অনুযায়ী এসবের প্রতি ব্যারেলের দাম ১ হাজার ১১৭ টাকা (লিটার প্রতি ৭.০২ টাকা) হতে পারে। প্রতি টন ফার্নেস অয়েলের সুনির্দিষ্ট শুল্ক ৯ হাজার ১০৮ টাকা (লিটার প্রতি ৯.১০ টাকা) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।